![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তিথি প্রীতিভাজনেষু, ঠিক এইরকমই একটা রাত, যার কৈশোর কেটে গেছে দূরন্ত অবহেলায়, এখন যার দূর্দান্ত যৌবন...তোকে দেয়া গেল। সঞ্জীবদার নিজের ছায়া, বাড়িয়ে দেয়া হাত, এবং তার নিরব হাতছানি উপেক্ষা করার অনিচ্ছুক সাহস- আর সেই ভলভো বাসটার দ্রুত চলে যাওয়া- দেখতে দেখতে অনেকটা পথ অতিক্রান্ত আজ! সময়ের দাবী বন্ধুত্ব আজ নিত্য অভ্যাস কিনা সে ভাবনা নিন্দুকের ঘাড়ে চাপিয়ে চল পেরিয়ে যাবো অবহেলার হিমালয়। কোন কথা আজ নয়, কারণ আমরা আজ জেনে যাবো আগের মত কিছু নেই। আজ গানের তালে হাওয়ার নাচ, বুকে স্বাধীনতার স্বপ্ন.....এইসবসহ বেরিয়ে যাবো সমুদ্র-স্নানে। মুক্তি আজ আমাকে ইশারায় অভিসারের আহবান জানাচ্ছে। একবার যদি সুযোগ পাই, আমিও আলিঙ্গন করবো মুক্তির স্বাদ। নীলাচলের পাদদেশে বাধা ঘরের ধারটায় আজ ফুটেছে অনেক রঙমাতাল অর্কিড আর তার খুব কাছে একটা মাত্র ক্যাকটাস! কিন্তু আমি আজ উপলব্ধি করি কাঁটা বাদ দিলে ক্যাকটাসের ফুলের তোড়ায়ও ভালবাসা হয়। একদিন বহুদিন পরে যদি একটা দিন আমার হয়, কথা দিচ্ছি সেই দিনটা তোদের...শুধু রাতটুকু আমার নিজস্ব। কারণ তোরাতো অন্তত জানিস, ভালবাসা পেলে-আর একবার যদি ভালবাসা পাই তাহলে আমি আকাশ ছুঁবো! কারণ বুকে আমার সাগরদোলার ছন্দ। তবুও ভাবনার গভীরে একটা অক্টোপাস এমনভাবে জড়িয়ে রাখে, আমি শ্বাস নিতে পারি না। তবুও জানি একদিন এই চাঁদের সঙ্গী রাতটার মত হারতে হারতে জিতে যাবো আমি, তুই, সে, তারা অথবা আমরা সবাই.......................
আজ বড় ঝড়-জলের রাত। বিকাল থেকেই রাতের আঁধার নেমে আসছে চারদিকে, পশ্চিমের আকাশে কাল মেঘের ঝাপ আর সাথে সাথে শোঁ শোঁ বাতাস। যেন উড়িয়ে নিবে সব! নিজেই লুঙ্গি গুটিয়ে বাইরের বেড়ার ধারে নালা কেটে দিয়ে আসলাম, ডীপটিউবওয়েলের মুখটা ঢেকে দিলাম ভাঙা টিনের টুকরা দিয়ে। বিদ্যুৎ চলে গেছে বাতাস ছুটতেই, বারান্দায় বসে আছি জবুথবু হয়ে। আজকাল শরীর খুব অকেজো হয়ে গেছে, একটু ভেজাতেই হাঁচি ছুটে গেছে ভালমতন। ভিতর থেকে স্ত্রী ঘ্যানঘ্যান করছেন, 'যা পারেন না, করতে যান ক্যান! কি দরকার আছিল!' আমি চুপ করে বসে থাকি। ঘর থেকে আসা হারিকেনের আবছা আলোয় বাইরের ঝাপ ধরা অন্ধকারটা আরেকটু ঘন হয়েছে। মালা নি:শব্দে চায়ের কাপ রেখে ভিতরে চলে গেল। এইসব রাতে বাবা বহু দূরের মানুষ হয়ে যায় মালা বোঝে।
এইরকম বাদলা আর ঝড়ের রাতে নিজেকে স্থির রাখাটা কষ্টকর আমার জন্য। আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো এমনি সব রাতেই ঘটেছিল একে একে। সাত বছর বয়সে বাবাকে হারানো, ষোল বছরে আদরের ছোট বোনকে, আটাশে যেয়ে মা'কে হারালাম, একইসাথে পেলাম বড়ছেলেকে-এমনি সব বাদলা ছিল সেইসব রাতে। মাত্র তিন বছর বয়সে এক ঝড়ের রাতে মেঝ ছেলেটা চলে গেল ডায়রিয়ায়, বিনা চিকিৎসায়। এত পাওয়া আর হারানোর স্মৃতি আমাকে বড় অস্থির করে দেয় এইসব বাদলার রাতে। আমি আর আমার মাঝে থাকি না। এর মাঝেও আরো একটা রাত আমাকে কাঁটার মত বিঁধে কেবল। আমি কাউকে বলতে পারি না, সহ্যও করতে পারি না। আপ্রাণ চেষ্টাও আমাকে বাঁচাতে পারে না সে স্মৃতির তাড়না থেকে।
আমার সংস্কার, সমাজ-সংসারের ভয়, কাপুরুষতা আমার হাত-পা বেঁধে রেখেছিল। আমি সিংহ হয়ে উঠতে পারি নি, গর্তে মুখ লুকিয়েছিলাম ইঁদুর হয়ে।
তেত্রিশ বছর আগের বানভাঙা এক রাতে আমি নিশাপুর স্টেশনে গিয়ে নামলাম। সর্দার বাড়ি থেকে নিতে আসার কথা থাকলেও কেউ আসে নি তখনও, কেই-বা আসবে এই বাদলা ঠেলে! তাই বর্ষণ ধরে না আসা পর্যন্ত আমি বসে রইলাম স্টেশন মাস্টারের ঘরেই। শেষ-মেষ রাত দশটায় গরুর গাড়ি নিয়ে লোক এল। থিকথিকে কাদায় ডুবে থাকা রাস্তা ভেঙে সর্দার বাড়ি পৌঁছাতে বেজে গেল বারটা। নাসিম সর্দার অত রাত অবধি জাগেন না, তবে তাঁর স্ত্রী জেগে ছিলেন। পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়ে পা ধোয়ার পানি দেয়া, গরম খাবার পরিবেশন সমস্ত কাজের তদারকি করছিলেন। তাঁর আতিথেয়তায়, আদর-যত্নে যারপরনাই মুগ্ধ, কৃতজ্ঞ আমি, কারণ ডিগ্রী পর্যন্ত মানুষের বাড়ি পশুর মত জীবন কাটিয়েছি; এত যত্ন কেউই আমাকে করে নাই। তাই খাওয়া শেষে মুখ ফুটে সে কৃতজ্ঞতার প্রকাশ করেই ফেললাম। কিন্তু তখনই তাঁর সুললিত, কিশোরীকন্ঠের উচ্চ হাসিতে অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম খুব। তিনি কোনক্রমে মুখে কাপড় গুজে হাসি থামিয়ে বললেন, 'আমারে এত ধইন্যবাদ দেওনের কিছু নাই মাস্টার সাব। আমি আপনের জইন্য কিছুই করি নাই। করছি নিজের জইন্য।'
তারপর আমাকে একরাশ বিস্ময়ে ডুবিয়ে তিনি বিদায় নিলেন তখনকার জন্য। পরেরদিন দেখা হল নাসিম সর্দারের সাথে। হঠাৎ টাকা আর ক্ষমতা পেয়ে যাওয়া মানুষটার শিক্ষা আর ভব্যতা ছাড়া সবই ছিল। পান চিবুতে চিবুতে আমাকে বলল, 'শুনো মাস্টার, আইছো, ঠিকমত কাজ কর, কাজে ফাঁকি দিও না। মাসের শেষে বেতনতো ঠিকই নিবা। ট্যাকাটা হালাল কইরা ন্যাও। বুঝলা কি কইছি?' লজ্জায়, অপমানে আমার কান লাল হয়ে গেলেও আশ্রয়ের কৃতজ্ঞতায় একান্ত বশংবদ আমি মাথা নুইয়ে সম্মতি জানাই।
কাজ শুরু করি কাজের প্রতি ভালবাসা থেকেই। স্কুলের বাচ্চারা আর তাদের বাপ-মায়েরা আমাকে কোন এক বিচিত্র কারণে অসম্ভব পছন্দ করতো। তাই আমার কাজে কোন সমস্যাই ছিল না। দুপুরের পরে বাড়ি ফিরে নিজের মত পড়াশোনা করতাম। ভিতর বাড়ি থেকে ঝি খাবার নিয়ে আসতো, খাওয়া শেষে আবার নিয়ে যেতো। এর মাঝে আর সর্দার গিন্নীর সাথে দেখা বা কথা হয় নি আমার। তবে কখনো কখনো তাঁর উচ্চকন্ঠের হাসি বা গানে সচকিত হয়েছি, বিস্মিত হয়েছি। এভাবেই কেটে গেল পুরো দেড়টা মাস।
আশ্বিনের শেষের এক বিকালে খেতে বসেছি। বাইরে ঝি অপেক্ষা করছে ঝুটা বাসন-কোসন নিয়ে যাওয়ার জন্য। বাইরে সর্দার গিন্নীর গলা পেলাম, 'মাস্টার সাব, একটা কথা ছিল আপনের সাথে। আসবো?' খাওয়া ফেলে ত্রস্তে উঠে দাঁড়ালাম, কারণ অনুমতির তোয়াক্কা না করে তিনি ঢুকে পড়েছেন ঘরে। তেইশ বছরের আমি তখন পর্যন্ত কোন নারীর চোখে চোখ রাখি নি। কিন্তু চোখ লুকোনোর আগেই তাঁর গভীর কাল দুটো চোখে বাঁধা পড়ে গেলাম। সমস্ত মুখ জুড়ে মায়াভরা ছলছলে দুটো চোখ! 'আরে বসেন বসেন। খাওয়া ফেলায় উঠলেন ক্যান!' সরে যাওয়া আঁচল টেনে দিয়ে বলেন তিনি।
আমার বসা হয় না। বিব্রত কন্ঠে বলি, 'বলেন ভাবীসাব, কি করবো আপনার জন্যে?'
'মাস্টার সাব, আমিতো লিখতে পড়তে জানি না। আমার ছোট ভাইটা চিঠি লিখে পাঠাইছে। আপনে ওইটা পইড়া শুনাবেন, আর তারপরে চিঠির উত্তর লিখা দিবেন।'
বিনীত ভঙিতে মাথা নাড়ি আমি, 'জ্বী আচ্ছা ভাবীসাব।'
তিনি কিছুক্ষণ তীব্র দৃষ্টিতে চেয়ে থাকেন, তারপরে বলেন, 'সবেরে মাথায় উঠনের সুযোগ দিয়েন না। পরে আর নামাইতে পারবেন না। নিজেরটা নিজেই বুঝন লাগে। আর আমার নাম নয়ন। আমারে নয়ন বইলেন, ভাবীসাব না।' নয়ন চলে যায় ঝড়ের মত।
তবে তারপর থেকে প্রায়ই সে আসতে লাগল, বিচিত্র সব আবদার নিয়ে। আশ্রয়দাতার স্ত্রী, আমার না করবার উপায়ও ছিল না। আর বলতে নেই, নয়ন বউয়ের ওইসব আবদার আমার ভালও লাগতো খুব। সবে সতের কি আঠার হয়েছে তার, ছিপছিপে লাউয়ের ডগার মত দেহ, শ্যামবর্ণের মেয়েটা যে কী অপরূপ সুন্দরী! তারপরেও সর্দারের আদর পায় না নয়ন বউ। সে যে বাঁজা। চার বছরে এখনও পারল না আলো জ্বালতে সর্দারের ঘরে। এই অপরাধে হাসি-খুশি বউটা সারাদিন গঞ্জনা সয়। একটু হাসলে কি কথা কইলেই সর্দারের বুড়ি মা খনখনে গলায় চিৎকার করে উঠতো, 'মাগী চিক্কুর পাইরা হাসতেছে দেখ! মান-ইজ্জত সব খাইল বাড়ির। আবার গান গায় নডী মাগী! চুপ! চুউপ!' কখনো এসব চিৎকারে পাগলি মেয়েটা দ্বিগুণ উৎসাহে হেসে উঠতো, আর কখনো থেমে যেতো আচমকাই। তারপরও সংসারে সব কাজ করতো একলা হাতে, খনখনে বুড়িটার সেবা-যত্নেও কোন ঘাটতি ছিল না কোনদিন।
মাঝে মাঝেই ভরদুপুরে নয়ন বউ হানা দিতো আমার ঘরে, 'ও মাস্টার, আপনের ওই লাল বইটা থিকা একটা গল্প পইড়া শুনান দেখি।' আর নাহয় হাতে করে নিয়ে আসতো একটা সুগন্ধি পান, 'ও মাস্টার বহুৎ তো পড়ালেখা হইসে, ধরেন একটা পান খান। সুগন্ধি মশলা দেওয়া।' আমার বিপন্ন চেহারা দেখে আবার হেসে পড়তো খিলখিল করে, 'ভয় নাই গো মাস্টার, ভয় নাই। আমি আপ্নেরে মন্ত্র পড়া পান দেই নাই। হি হি হি।' আমি মুগ্ধ চোখে দেখতাম, এবং প্রচন্ডভাবে ভয়ও পেতাম। নয়ন বউ আমার ঘরে, এটা যদি বুড়ি কোনভাবে টের পায় তাহলে রক্ষা নাই কারো। কোন কোন দিন বুড়ির মাথা বেশি গরম হলে সে সর্দারের কাছে সত্য-মিথ্যা কত কথা যে লাগাতো! আর যত রাতই হোক, রাগে সর্দার পাগল হয়ে যেতো। অক্ষম আমি দাঁতে দাঁত চেপে শুনতাম নয়ন বউয়ের করুণ বিলাপ।
নয়ন বউয়ের গভীর কাল দুটো চোখে কবে হারিয়েছিলাম সে হিসেব আমি রাখি নি। তবে ধরা পড়েছিলাম চৈত্রের এক সাঁঝে। আমি বাজার যাবো বলে বের হয়েছি ঘর থেকে, শুনি পুকুরঘাটে নয়ন বউয়ের গলা, মৃদু কন্ঠে কি যেন গান গাইছে। নিজেকে সংবরণ করতে পারলাম না। পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলাম সেদিকে। স্নান সেরে নয়ন বউ তখন মাত্র শুকনো কাপড়টা গায়ে জড়িয়েছে। সম্মোহিতের মত আমি চেয়ে রইলাম তার নদীর মত বাঁকানো সেই পিঠের দিকে। নয়ন বউ বুঝি টের পেয়েছিল সে দৃষ্টি। ঝট করে ঘাড় ঘুরাল। আমার সরে দাঁড়ানোর শক্তিও ছিল না, সেই অক্ষম-অথর্ব আমাকে ঠোঁট বাঁকানো তীব্র ব্যঙ্গাত্মক একটা হাসি দিয়ে নয়ন বউ পাশ কাটিয়ে চলে গেল।
সে রাতে আমার ঘুম হল না। সারারাত ছটফট করে কেটে গেল। রবিঠাকুর কুড়ে খেলেন মগজ,
নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে
রয়েছো নয়নে নয়নে
হৃদয় তোমারে পায় না জানিতে
রয়েছো হৃদয়ে গোপনে
ঘুম হল না তারপরের রাতেও, তারপরের রাতেও না। গত তিনদিন নয়ন বউকে আর দেখি নি আশে পাশে। না জানি সে কি ভেবেছে আমাকে! না জানি কত ক্ষেপেছে আমার ওপরে। এমনও ভয় হল যদি সর্দারকে বলে দেয় আমার কথা! তবে তো আমার আশ্রয় হারাবো, হারাবো এত কষ্টে পাওয়া চাকরিটাও। চারদিন পরে নয়ন বউ এল, জবুথবু হয়ে, সর্বাঙ্গ চাদরে মুড়ে। জ্বরে কাবু হয়ে ছিল এ কয়দিন, আরো ক্ষীণ হয়েছে তার ক্ষীণ তনু। কিন্তু ওই চোখের উজ্জ্বলতা বুঝি বেড়েছে কয়েকগুণ, ঠোঁটে সেই তীব্র শ্লেষ! 'কি মাস্টার, ঘুমাও নাই বুঝি সারা রাইত! চোখের নিচে কালি পড়ছে দেখি।' সে এখন আরো সাহসী, আরো বেপরোয়া। আপনি-তুমির ভেদ ভুলেছে। 'মাস্টার তুমি গান বান্ধছো আমারে নিয়া?'
ভুলে বুঝি উচ্চস্বরেই গেয়েছিলাম গানটা। সভয়ে পিছিয়ে বলি, 'না নয়ন বউ, ওটা রবি ঠাকুরের গান।' নয়ন বউ হাসে, 'তুমি আমারে ভুলায়ো না মাস্টার। তুমিতো কবেই ডুবছো।'
'ঘরে যাও নয়ন বউ।'
'ভয় কি মাস্টার? তোমার তো আর কলঙ্ক হইবো না। ডুইবা মরলে ওই কলঙ্ক আমারই। চল মাস্টার, পলাই যাই।' নয়ন বউয়ের তপ্ত শ্বাস পড়ে আমার মুখের ওপর। আমি মুখ ঘুরিয়ে নেই, 'না, নয়ন বউ। তা হয় না। লোকে কি বলবে!'
'লোকে কি কইবো তুমি সেই ভয় পাও মাস্টার! লোকেরে ডরাও!' সর্বনাশা দুই চোখে আমাকে জ্বালিয়ে দিয়ে নয়ন বউ ঝড় তুলে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে।
নয়ন বউয়ের ভাগ্য খারাপ, আমারও। সোজা গিয়ে পড়ল সর্দারের মায়ের সামনে, 'মাগী, বারবাড়িত তোর কি এত কাম বেহান-হাঞ্জে? কই গেসিলি!' পাগল হয়ে নয়ন উল্টো উত্তর করে বসল, 'তোর কি মাগী? আমি যেইখানেই যাই, ছোঁকছোঁক কইরা গন্ধ শুইখা হাজির হইবো। কুত্তার লাহান স্বভাব।'
নয়ন বউয়ের ভাগ্য খারাপ সে জবাব দিয়েছিল। ওই রোগা শরীরে শাশুড়ি-স্বামীর দুই দফা প্রহার সইতে হল তাকে। কিন্তু নয়ন বউ তখন বেপরোয়া। পরদিন নাসিম সর্দার বাজারে যেতেই রক্তলাল চোখে সে এসে হাজির হল আবারও। 'মাস্টার, তুমি ক্যামনে প্রাণে বাইন্ধা সহ্য করলা? একবারও মনে হইল না তোমার নয়নের কত কষ্ট! মাইরা সমস্ত শরীরে দাগ বসায় দিসে সর্দার হারামীডা।'
চোখের জল ঠেকিয়ে বলি, ' ঘরে যাও নয়ন বউ। আর এসো না। পাপ হয়।'
'পাপ হয় মাস্টার! কিসে পাপ হয়? ভালবাসলে পাপ হয় না কো।'
নয়নের জ্বরতপ্ত মুখ, অগোছাল চুল, ছলছল চোখের দিকে তাকিয়ে আমার দিশা লোপ পায়। আমি আলতো হাতে তার গালে ছুঁই। আবেশে চোখ বুজে ফিসফিস করে নয়ন বলে, 'ছুঁইয়ো না মাস্টার, পাপ হয়।'
আমি যেন বিষধর সাপের ছোবল খেয়ে ঝটকা মেরে হাত টেনে নিলাম। নয়ন বউ হেসে উঠল হিস্টিরিয়াগ্রস্তের মতন। হাসতেই থাকল হেচকি তুলে, চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগল টপটপ করে। তবু তার হাসি থামে না। 'পাপ মাস্টার! কিসে পাপ হয়! দুফুরবেলায় পরের বউয়ের লগে গপ করলে পাপ হয় না মাস্টার? পলায় পলায় তার শরীর দেখলে পাপ হয় না! এতকিছু পারো মাস্টার, তুমি তার হাতটা ধরে পালায়ে যাইতে পারো না! তোমার কলজেটা এত ছোট ক্যান মাস্টার?'
হ্যাঁ নয়ন বউ, আমার কলজে সত্যি বড্ড ছোট। আমাকে যে বিশাল এক সংসারের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে এখানে আসতে হয়েছে। আমার উপরেই এতগুলো মানুষের খাওয়া-পরা নির্ভর। ভালবেসেছি বলেই নিজের সুখের কথা স্বার্থপরের মত ভাবলে আমার চলে বল? আমি যে পারি না অমন দায়িত্বজ্ঞানহীন হতে। আমার যে পায়ে শিকল বাধা।
সে রাতেও মদ্যপ নাসিম সর্দার নয়ন বউকে ঠ্যাঙাল তার মায়ের কথায়। নয়ন বউ কেবল চিৎকার করে বলতে লাগল, 'গজব পড়বো, আল্লাহর গজব পড়বো।' কিন্তু তার ক্ষীণ, দুর্বল কন্ঠ চাপা পড়ে গেল সর্দারের গর্জনে, 'চোপ মাগী, এক্কেবারে চুপ। আরেকটা আওয়াজ দিলে খুন কইরা ফালামু।'
পরের তিন দিন নাসিম সর্দার বাড়ি ফিরল না, নয়ন বউয়েরও কোন সাড়া-শব্দ নেই। ঝি-চাকরের কাছে শুনেছিলাম সে খুব অসুস্থ, শয্যাশায়ী। রোগা শরীরে এত অত্যাচার সহ্য হয় নি।
তারও এক সপ্তা পরের কথা। প্রায় সারারাত চলেছে কালবোশেখীর তান্ডব। পুরো গ্রাম বিধ্বস্ত, লন্ডভন্ড। এর মাঝেই সর্দারবাড়িতে যেন ভেঙে পড়েছে সারা গাঁয়ের মানুষের ঢল। ভেতর বাড়িতে সর্দারের মায়ের খনখনে স্বরের বিলাপ শোনা যাচ্ছে,' রাক্ষুসী মাগী, আমার পোলাডারে খাইল। হারামজাদী, নডী মাগী। বাচ্চা বিয়ানীর ক্ষ্যামতা নাই, নষ্টামী কইরা বেড়াবি ব্যাডাগো লগে। তোরে ঘরে আনাডাই ভুল হইসিল। আগো আমার বাপধন গো!'
হাতে হাতকড়া, কোমরে দড়ি, চারদিকে পুলিশ বেষ্টিত হয়ে নয়ন বের হয়ে এল বাড়ি ছেড়ে। নয়নকে দেখে নিস্তব্ধ জনতা। নয়ন পরাজিত মানুষের মত মাথা নিচু করে বের হয় নি, তার মাথা উঁচু ছিল, জ্বলজ্বল করছিল দুই চোখ। তবে সে কাউকেই দেখছিল না, একবারের জন্য পথের ধারে দাঁড়ানো আমার চোখে চোখ পড়ল তার। যেন ওই ধারাল দুই চোখে কেটে টুকরো টুকরো করে দিল নয়ন আমাকে, ঠোঁটে তেমনি সেই ব্যঙ্গ আর শ্লেষের হাসি। আমি সেই দৃষ্টির সামনে দাঁড়াতে পারি না, মাথা নামিয়ে নেই। চিরদিনের জন্য ছোট হয়ে যাই নয়নের কাছে, নিজের কাছে।
মালা বারান্দায় বেরিয়ে আসে নি:শব্দ পায়ে, আলতো হাত রাখে আমার কাঁধে, 'বাবা, ঘরে চল। রাত হয়েছে অনেক।' মেয়ের হাতে হাত রেখে আমি ঘরে ঢুকি। পরাজিত একজন মানুষ, এমনি সব ঝড়জলের রাতে যে বারবার ভেঙেচুড়ে যায়, ছোট হতে হতে ধূলায় মিশে যায়।
সে রাতেও কালবোশেখীর তান্ডব ছিল, ঝড়-জলে ডুবে ছিল চারদিক। গভীর রাতে নয়ন বউ এসেছিল আমার কাছে। হাতে তখনও তাজা রক্ত, দুই চোখ জ্বলছে ধক ধক করে। 'চল মাস্টার, চল আমার সাথে। তুমিতো বহু আগেই ডুবছো। মরণে আর ভয় কি! দুইজনে একসাথেই ডুইবা মরি।'
কিন্তু আমার তবু ভয় ছিল। আমি ফিরিয়ে দিয়েছিলাম নয়নকে। পারি নাই হাতে হাত রেখে ডুবে মরার সাহস অর্জন করতে।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৪৪
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: ধন্যবাদ সানজিদা।
২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:১৩
ঘুমন্ত আমি বলেছেন: প্লাস এবং ভালোলাগা
০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৪৬
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: ধন্যবাদ ঘুমন্ত আমি।
শুভেচ্ছা।
৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৩৮
নেক্সাস বলেছেন: তৃতীয় প্লাস লন...
০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৪৭
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: ধন্যবাদ নেক্সাস।
৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:০৮
চাটিকিয়াং রুমান বলেছেন:
০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৪৮
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: কি হল রুমান!
৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:২০
রাজসোহান বলেছেন: দুর্দান্ত
০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৫০
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: থ্যাংকু
৬| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৪০
নীল অপরািজতা ফুল বলেছেন: পইরা খুউব ভাল্লাগসে আবার কিসু কিসু জায়গার জন্য খারাপও লাগসে খুউব....মানুষের জীবন কেমনে যে বদলায়া যাই
০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৫৫
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: ঠিকই বলেছেন নীল অপরাজিতা। মানুষের জীবন কেমনে যে বদলায়া যায়!
ধন্যবাদ আপনাকে।
৭| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৪৮
এইযেদুনিয়া বলেছেন: মানিক বন্দোপাধ্যায়ের পুতুল নাচের ইতিকথার কথা মনে পড়ে গেল।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৫৮
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: হ্যাঁ আপু, লিখতে গিয়ে আমিও কুসুমকে দেখছিলাম বারবার।
৮| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৫০
মেঘ বলেছে যাবো যাবো বলেছেন: উমমম... আরো বোধহয় ভালো করা যেতো লেখাটা।
কাহিনী একটু টিপিক্যাল হয়ে গেছে সেটা সমস্যা না, সমস্যা হলো এক্সিকিউশনটাও টিপিক্যাল হয়ে গেছে। আসলে খুব সিম্পল কাহিনীকেও শুধুমাত্র ভালো এক্সিকিউশন দিয়ে উতরে দেয়া যায়, জানোই তো। যাই হোক, এত লম্বা চওড়া কথা বলা আমার সাজে না, লেখালিখির আমি বুঝি তো ছাই!
০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:০৭
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: হুম, ভাল করা যেতো। কিন্তু কিছুতেই এটাকে সাইজ করতে পারছিলাম না, আর ওদিকে চেপে বসে ছিল ঘাড়ে বিরক্তিকরভাবে। তাই যেভাবেই হোক, ঝেড়ে নামালাম আর কি!
এত ফরমালিটি করো না তো আমার সাথে। যা মনে হবে তাই বলো।
৯| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:০৮
ফাইরুজ বলেছেন: এত ভিরু মানুষের কখনো উচিত নয় 'মন' এর মত এত দামি জিনিস নিয়ে খেলা। গল্পের নায়ক কে সামনে পেলে মাইর দিতাম। চমত্কার লেগেছে আমার কাছে পড়তে, যদি নায়ক কে ধার ছাড়া বটি দিয়ে কুচি কুচি করে কাটতে ইচ্ছা করতেছিল গল্পটা পড়বার সময়।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:১২
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: আহারে, এভাবে বলতে হয় না। তারও যে কিছু বাধ্য-বাধকতা ছিল!
ধন্যবাদ ফাইরুজ।
শুভ রাত!
১০| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:০৯
মাহবু১৫৪ বলেছেন: ৯ম ভাল লাগা
০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:১৩
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মাহবু।
১১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৪৫
অর্ক হাসনাত কুয়েটিয়ান বলেছেন:
জলে ডুবি ডুবি বলে
ডুব দিলাম না হায়রে,
মরন ভয়ে ডুবি নাই আমি
মরন ভয়ে ডুবি নাই
ডুব দিলাম না
০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৪৯
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: মরন ভয়ে ডুবি নাই আমি
মরন ভয়ে ডুবি নাই
কারো কারো মরন ভয়ও থাকে না অর্ক।
শুভ রাত!
১২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৫৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগেনাই। ভেবুর সাথে একমত। টিপিক্যাল কাহিনী। ডায়লগগুলাও বাংলা সিনেমার মত। তবে একটা চরম সেনসুয়াল ব্যাপার আছে, যেইটা টানসে
০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:০৭
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: সব লেখাতো ভাল হয় না। কিছু লেখা টিপিক্যাল কাহিনী নিয়ে হতেই পারে, তাই না?
১৩| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:০০
শিশিরের শব্দ বলেছেন: চরম!
০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:১১
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: ধন্যবাদ শিশিরের শব্দ।
১৪| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:০৭
ত্রাতুল বলেছেন: শেষ হল এইতো!
০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:১২
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: কিন্তু তেমন তো হল না।
১৫| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:২৩
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: কঠিন কঠিন কথার মারপ্যাঁচ নয়, সহজ কথায় খুব ভালো লিখেছেন ।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৩৫
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: ধন্যবাদ গিয়াসলিটন।
শুভেচ্ছা।
১৬| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৪১
মাহমুদা সোনিয়া বলেছেন: amar valo lagse! Jeno ashe pasher e kono ak ghotona.. Valo thakun apu
০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৫৬
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: ধন্যবাদ সোনিয়া।
শুভকামনা।
১৭| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১:১০
আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
অসাধারণ গল্প বিন্যাস আপনার।
পুরো গল্পে কোথাও জড়তা ছিলোনা।
মানিক বন্দোপাধ্যায়কে ও মনে পড়লো খুব।
আপনি আসলেই অসাধারণ লিখেন, আপু।
এতোদিন অনেক কিছুই মিস করে ফেললাম।
ভালোলাগা এবং শুভ কামনা।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:১৬
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ দূর্জয়।
ভাল থাকবেন অনেক।
১৮| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১:৫৩
নস্টালজিক বলেছেন: নয়ন বউ এর ক্যারেকটার-টা ভালো লাগসে!
অভিনন্দন!
০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:১৮
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
১৯| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ ভোর ৪:৪৬
মুনসী১৬১২ বলেছেন: নয়নের ডায়লগ গুলো টানছে--
চলুক==
০৯ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৪:১৯
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: ধন্যবাদ মুনসী।
শুভেচ্ছা।
২০| ১০ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১:১৩
মিথী_মারজান বলেছেন: অনেক সুন্দর করে লিখেছেন।
চমৎকার লাগল।
১০ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১:৫৭
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মিথী।
শুভ রাত!
২১| ১০ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ২:৫৭
নাআমি বলেছেন: টিপিক্যাল কাহিনী হলেও আমার কাছে খুব ভাল লাগল গল্প, আসলে আমাদের চারপাশের সব কিছু নিয়েই তো চলছে আমাদের এ জীবন ! বাস্তবতার ছোঁয়া না থাকলে কি আর লেখার সার্থকতা ?
রবিঠাকুরের কথা গুলি দারুন লাগে, নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে রয়েছো নয়নে নয়নে হৃদয় তোমারে পায় না জানিতে রয়েছো হৃদয়ে গোপনে
ভোরের একরাশ শুভেচ্ছা......ভাল থাক কন্যা....
১০ ই নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:১০
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: এত সুন্দর করে বলার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
তুমিও ভাল থেকো অনেক।
২২| ১০ ই নভেম্বর, ২০১১ ভোর ৬:৪৬
নিথর শ্রাবণ শিহাব বলেছেন: দারূন লেগেছে। ভাল লাগা ভাল লাগা ও + রেখে যাচ্ছি। পরে এসে নিয়ে যাবো
১০ ই নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:১০
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ শিহাব।
শুভেচ্ছা রইল।
২৩| ১০ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:১১
দীপান্বিতা বলেছেন: অসাধারণ!
১০ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:০৫
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
২৪| ১০ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:২৬
তাসনোভা আফরিন বলেছেন: অসম্ভবরকম ভাল লাগলো
১০ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:০৬
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: ধন্যবাদ আফরিন।
শুভেচ্ছা।
২৫| ১০ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:০৬
ফারহানা ইয়াসমিন সুমি বলেছেন: ভালো লিখেন আপনি।
১০ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:১১
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সুমি।
২৬| ১০ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:১৩
রাত্রি২০১০ বলেছেন: আজকে কোন ঝড় নাই মনের ঝড় ছাড়া! গল্পে কি যেন একটা আছে, মনটা বিষন্ন!
ভাল থেক।
১০ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:১৩
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: মনের ঝড়টা আসতে দিয়ো কখনো কখনো। সব ধুয়ে মুছে যাক।
ভাল থেকো রাত্রি।
২৭| ১১ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:১৫
জলমেঘ বলেছেন: দারুন লাগলো আপু; অসাধারণ লিখেছেন। ফেলে আসা স্মৃতিগুলো কখনো কখনো কাল বৈশাখীর চেয়েও ভয়ংকর। অনেক ভালো লাগলো আপু।
১১ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৩১
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ জলমেঘ।
শুভকামনা রইল।
২৮| ১১ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৪৩
ইশতিয়াক আহমেদ চয়ন বলেছেন: অসাধারণ লিখেছেন আপি !! +++++
১১ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৫৩
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ চয়ন।
ভাল থাকবেন।
২৯| ১২ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১:৪৮
নিমা বলেছেন: অনেক ভাললাগা
ছোট আপা কেমন আছ?
১২ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ২:৩১
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ চন্দ্রকন্যা।
বহুদিন পরে দেখলাম তোমাকে। এইতো আছি ভাল। তুমি ভাল তো?
৩০| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:৩৫
রেজোওয়ানা বলেছেন: এমন ঘটনাই তো ঘটে
আমার কাছে বেশ ভাল লেগেছে......
১৪ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:০৮
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
ভাল থাকবেন।
৩১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১১ সকাল ১১:১৭
anisa বলেছেন: ভালো লাগলো খুব
শুভেচ্ছা নিও।
১৫ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:১৯
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু।
ভাল থাকবেন।
৩২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:৩৭
অভ্রমালা বলেছেন: খুব সুন্দর গল্প। অনেক ভালো লাগলো আপনার লেখা।
১৬ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৪৪
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ অভ্রমালা।
শুভেচ্ছা রইল।
৩৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৩৫
মেমনন বলেছেন: ভালো লেগেছে।
১৯ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৪১
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মেমনন।
শুভ রাত!
৩৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:৩৬
ভুল উচ্ছাস বলেছেন: এত্ত বড় !! পরে পরমু। তয় ভালোলাগা অক্কনি দিয়া যাইতে আছি, অনেক কষ্ট কইর্যা লিকচেন।
মোর বাড়ি যাইয়েন কইলাম মনে কইর্যা।
১৯ শে নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:৪৬
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: ধন্যবাদ ভুল উচ্ছাস।
আবার আসবেন।
৩৫| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:০৪
ভুল উচ্ছাস বলেছেন: অবশ্যই আসবো আপু। সেই তখন থেকে আপনার লেখাই তো পড়তে আছি।
১৯ শে নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:১০
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক ভাল লাগল শুনে।
ধন্যবাদ আবার।
৩৬| ২১ শে নভেম্বর, ২০১১ সকাল ১০:৫৩
রিমঝিম বর্ষা বলেছেন: বেশ অনেকদিন আগে একটা গল্প লেখার ব্যর্থ চেষ্টা করেছিলাম। আমি ঝড়-বৃষ্টির রাতে পাওয়া না পাওয়া গল্প। সেই গল্প নিজের কাছেই গ্রহনযোগ্যতা পায়নি বলে হারিয়ে গেছে আমার ল্যাপির কোন এক কুঠুরিতে।
তোমার এই লেখাটা পড়তে গিয়ে সেটার কথা মনে পরলো। তুমি আবার বোলনা সেটাকে নিয়ে আসার জন্য।
ভীষণ ভালো লাগা সমুদ্র কন্যা।
২৩ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৫৬
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: তোমার সেই গল্পটা সত্যি পড়তে ইচ্ছা হচ্ছে যে আপু!
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
শুভেচ্ছা অফুরন্ত।
৩৭| ২১ শে নভেম্বর, ২০১১ সকাল ১১:১৩
বিদ্বৎকল্প বলেছেন: ও নয়ন কি যে কষ্ট হচ্ছে তোমার জন্য!
২৩ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৫৭
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: অনেক অনেক কষ্ট নয়নের জন্য!
ধন্যবাদ বিদ্বৎকল্প।
৩৮| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:০৮
মুকুট বিহীন সম্রাট বলেছেন: সমুদ্র আপনার এই নিয়ে বেশ কয়টা লেখা আমি খুব মনযোগ দিয়ে পড়েছি,আমার পোস্টে আমি বলেছিলাম এগুলো আপনার সৃষ্টি,সমুদ্রের মতই বিশাল আর গভীরতা রাখে লেখা গুলো।
এক বিধাতার সৃষ্টি মানুষ একেক জন একেক রকম হয়,একেক জন একেক রকম দায়িত্ব নিয়ে পৃথিবীতে বাস করে।জীবনটাকে কেউ ভোগ করে আর কাউকে জীবন ভোগ করে।এখানে অনেক লেখক আছেন যারা বাঁচার জন্য লেখে আপনি লেখার জন্য বেঁচে থাকুন।
শুভ কামনা
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৪৯
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: লেখালেখিকে কখনো সেভাবে গুরুত্ব দেইনি। সময় কাটানো বা মাঝে মাঝে নিজেকে কিছুটা হালকা করার জন্যই ব্লগে আসা, কিছু লেখার চেষ্টা করা। আপনারা এমন করে বললে নিজেকে খুব বিপন্ন লাগে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা নিরন্তর।
৩৯| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:১৩
বৃষ্টিধারা বলেছেন: তুমি সব সময় ভালো লেখো .....
তবে,এই লেখা টা অন্য লেখাগুলোর মট করে কেন যেন টানলো না । এরপর ও বলি,ভালো লেগেছে কিন্তু পড়তে । এক টানে পড়ে ফেলেছি,থামতে হয় নি ।
শুভ কামনা ।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:৫৬
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: এই লেখাটা ঠিক লেখা ভাল হবে তা ভেবে লিখিনি। গানটার ঘোরে লিখেছিলাম। গানটা আমার অসম্ভব রকম ভাল লেগেছে। তাই হয়তো লেখার বাকি বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল করা হয় নি। ভাল লাগা জানানোর জন্য ধন্যবাদ বৃষ্টিধারা।
ভাল থেকো।
৪০| ২০ শে নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:২৮
ফ্রাস্ট্রেটেড বলেছেন:
পাইসি দা ফাউন্ড
একটানে পুরোটা পড়ে ফেললাম। অনেক ভাল লিখেছেন। তবে কিছু ঘষামাজা করার সুযোগ ছিল হয়তো, বিশেষ করে একটি ঘটনা থেকে আরেকটিতে যাওয়ার সংযোগক্ষেত্রে। আর কাহিনীটা আরেকটু... যাই হোক, যেটুকু আছে সেটুকু ও অনেক সুন্দর হয়েছে।
গল্পে ভাললাগা জানিয়ে গেলাম। হু আ এর "বৃষ্টিবিলাস" এ এইরকমই একটি স্মৃতির কথা বলা আছে (যতদূর মনে পড়ে) , মাঝে মাঝে সময়গুলো কেমন যেন পুনরাবৃত্তি করে শুধু, একটি রাত আগের কত রাতের কথা বলে যায়। ভাল লিখেছেন।
শুভকামনা।
অটঃ আপনার অন্যান্য লেখাগুলিও পড়ছি আস্তে ধীরে, তবে কমেন্ট না করার সম্ভাবনা আছে। পুরাতন লেখায় কমেন্ট করতে ভাল্লাগেনা, বাসি বাসি লাগে :-< :-< :-<
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:৪১
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: ঘষামাজা করার সুযোগ ছিল অবশ্যই, কাহিনীও অনেক অন্যরকম হতে পারতো। আমি লেখার আগে যেমন ভেবেছিলাম গল্পটা মোটেই তেমন হয়নি। এটা আমার একটা আক্ষেপ। লেখার পর থেকে ভেবেছি যে এটা আবার লিখবো, যেমন কল্পনা করেছিলাম সেভাবে। কিন্তু সেটাও করা হয়ে ওঠে নি।
আসলে গানটা এমনভাবে মাথায় চেপে বসে ছিল, ঝেড়ে না ফেলা পর্যন্ত শান্তি পাচ্ছিলাম না। আমি ঘন্টার পর ঘন্টা কম্পিউটারের সামনে বসে থেকেছি শুধু শুরু করা চেষ্টায়। শেষ পর্যন্ত যা হয়েছে, তাতেই মনকে সান্ত্বনা দিয়েছি আর কি।
অটঃ পুরানো লেখাগুলো পড়ার চেষ্টা করেছেন জেনে ভাল লাগল। কমেন্ট করতে ইচ্ছা না হওয়াই স্বাভাবিক। আমিও কমেন্টের ব্যাপারে প্রচন্ড অলস। মোটামুটি সব লেখাই পড়া হয় ব্লগে, তবে লগ ইন করতেই ইচ্ছা করে না। আর করলেও কমেন্ট খুব একটা করি না। ভাল লাগে না। এই যে দেখেন নিজের ব্লগের কমেন্ট রিপ্লাই কতদিন পরে দিচ্ছি!
শুভকামনা ফ্রাস্টেটেড। ভাল থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:০৭
সানজিদা হোসেন বলেছেন: ভাল লাগলো