নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কেও নই

শূণ্য মেঘকাব্য

কেও নই!

শূণ্য মেঘকাব্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি প্রশ্ন: মানুষ হিসেবে আমরা কোথায় আছি?

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৩

নিষ্ঠুরতার উদাহরণ এখন অনেক।মোবাইলে ফেসবুকের পাতায়,খবরের কাগজে,টিভি হেডলাইনে চারপাশের কত নিষ্ঠুরতার খবর দেয়।কিন্তু সময় কই এ নিয়ে ভাববার।এসব এখন এতটাই মেইনস্ট্রিম যে.i হয়তোবা কিছুক্ষণের জন্য মন খারাপ হয় কিন্তু একটু পর আবার স্বাভাবিক জীবনে সব ভুলে যাই। আর এমন হবেই না বা কেন,নিজের উপর দিয়ে না গেলে কোন কিছুই কি গায়ে লাগে নাকি!!

কিন্তু যখন নিজের চোখের সামনে কিছু ঘটে যায় তাকে উপেক্ষা করাটা নিজের কাছেই কষ্টকর।



আজ সিলেটে আমি আর আমার দুই বান্ধবী ঘুরতে বেরিয়েছিলাম।রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম ছিল ( সবসময় থাকে না এমন জ্যাম)। তাই রিকশা এক জায়গা থেকে নড়ছিল না। আমাদের সামনে একটা পানির কন্টেইনার ভর্তি ভ্যান ছিল। গাড়ির চালকের বয়স বেশি না।খুব শুকনো শরীর,তার পক্ষে টেনে নেয়াটা স্বাভাবিকভাবেই কষ্টের হয়।গাড়ি একটু একটু করে আগাচ্ছে।এমন সময় ভারসাম্য হারিয়ে ভ্যানটা উল্টে পড়ে যায়।লোকটা অনেক চেষ্টা করে গাড়ি সামলে নেয়ার কিন্তু পারে না।নিজেই গাড়ির নিচে পড়ে যায়। সাথে পাশে থাকা রিকশাও পড়ে যায়।

ঐ রিকশার প্যাসেঞ্জার নিজের পেটের সাইডে একটু ব্যাথা পায়। এখন তার রাগ হওয়াটা স্বাভাবিক, খুবই স্বাভাবিক। আর ঐদিকে ঐ ভ্যানচালক কোনভাবে উঠে গিয়ে মাফ চাইতে থাকে।বলে ইচ্ছা কইরা করি নাই।মাফ কইরা দেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা।সে গিয়েই ঐ ভ্যানচালক কে ধরে থাপ্পড় মারে। আর গালাগালিরর কথা তো নাই বললাম। সে থাপ্পড়াতে লাগলো আর আমরা এত অল্প সময়ে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে গেলাম।কি হচ্ছিল কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু বুঝে উঠার সাথে সাথেই আমি আমার বান্ধবী আর পিছনের রিকশার একটা ছেলে চিৎকার করে উঠলাম। কি করছেন আপনি এসব।এটা একটা এক্সিডেন্ট ছিল।থামেন বলছি।এভাবে মারবেন না। থামুন। এভাবে কেও কাউকে মারে। কিন্তু কে শুনে কার কথা।লোকটার বয়স ২৩-২৪ হবে আরর দেখতে পপুরোই খাচ্চোর আর মমাস্তান টাইপ। সে তার সমস্ত শক্তি দিয়ে ভ্যানচালক কে আঘাত করতে লাগলো।তার ভাব এমন যে সে যত ব্যাথা পেয়েছে তার কয়েকগুন বেশি ব্যাথা সে সুদে আসলে ফেরতদিবে। সে একপর্যায়ে তাকে ঘাড় ধরে মাটিতে ফেলে দিল।লোকটা গিয়ে পড়লো ভ্যানের উপর। স্পষ্টতই খুব ব্যথা পেল। লোকটা অনবরত গালি দিচ্ছে আর ভ্যানচালক মাফ চাচ্ছে :-(

এদিকে আমরা চিৎকার করছি থামার জন্য।আমাদের রিকশাওয়ালা বলল আপা কিছু বইলেন না।ঝামেলা করবে।লোকটা সুবিধার না। কিন্তু এভাবে একটা লোককে মারছে আর কিছুই বলব না? পিছনের রিকশার ছেলেটিও চুপ থাকে না।এক পর্যায়ে ঐ লোক আমাদের দিকে তেড়ে আসে।ভাব এমন যা করার করব আটাকানোর তোরা কারা। পরিস্থিতি খারাপ হবার আগেই লোকটাকে রাস্তা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।

রাস্তার জ্যাম সরে যেতে থাকে। আমাদের রিকশা এগিয়ে যায়।লোকটা তখনো গালাগাল করতে থাকে। আর বেচারা ভ্যানচালক গাড়ি উঠায় আর বলে ইচ্ছে করে করিনি :-( তার চোখে মুখে দেখা যায় অসহায়ত্ব। হয়তো বা সে দীর্ঘশ্বাস ফেলছিল আর ভাবছিল এই তার নিয়তি।কারণ সে গরীব।গরীবরা মানুষ হয় না।সব দোষ তাদেরই হয়।তাই তাদের সব সহ্য করতে হবে। আমি জীবনে হয়তো কাউকে এত অসহায় দেখি নি।খুব মন খারাপ হয়ে যায়। রাগে দুঃখে চোখ পানি এসে পড়ে। কিন্তু সামলে নেই নিজেকে। অবাক হয়ে ভাবি কি করে একজনকে এভাবে মারতে পারে :-(





আমি জানি দুদিন পর এমনেই ভুলে যাব ব্যাপারটা।এখন লিখতে গিয়ে মন যতটা খারাপ হচ্ছে পরে হয়তো তেমন হবে না। তারপরো লিখলাম।যেন এই লেখা পড়ার পর ক্ষণিকের জন্য হলেও আমারা একটু দাঁড়াই আর চিন্তা করি যে মানুষ হিসেবে আমরা কোথায় আছি আর কই যাচ্ছি।....

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৫৩

আজমান আন্দালিব বলেছেন: আরও নৃশংসতা দেখে দেখে একসময় অভ্যস্ত হয়ে যাবেন।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৭

শূণ্য মেঘকাব্য বলেছেন: হয়তো সময়ের সাথে অনেক কিছুর সাথেই অভ্যাস্ত হতে হবে।কিন্তু আমি হতে চাই না... চাই না কেও হোক!!

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৫

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: :( :( :( :( :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.