![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবার মত গল্প কবিতা দিয়েই লেখালেখির শুরু, মুলত লোক সাহিত্যের বিষয়ক লেখা লিখে আমাদের লোকসাহিত্যের জন্য করতে চেয়েছি। বেশকিছু লেখা রয়েছে এই বিষয়ে। তবে সবচে বেশী প্রসার ঘটেছে ই কমার্স বিষয়ক লেখাগুলো। তবে দেশ সমাজ ও রাস্ট্র নিয়ে ইতিবাচক ও গঠনমূলক কিছু লিখতে চাই।
তাফসীর ও কোরআনের ব্যাখা প্রসঙ্গে
জাহাঙ্গীর আলম শোভন
আসমানী কোরআন সমূহের মধ্যে পবিত্র কোরআন আজো অবিকৃত আছে একথা সর্বজন বিধিত। সাথে সাথে কোরআন নাযিল, কোরআন সংকলন, কোরআনের লিপিকরণ, শানে নযুল, পরিবেশ পরিস্থিতি সবই হাদীস ইতিহাস ও রাসুলের বর্ননায় এমনভাবে সংরক্ষিত আছে কোরআনের সত্যতা নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।
কোরআনকে আরো ভালোভাবে বোঝার জন্য তাফসীর শাস্ত্রের উদ্ভব ঘটেছে। পৃথিবীর তাবৎ তাফসীর আজো কোরআন বোঝার জন্য চিন্তাশীল মুসলমানদের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করছে।
সাধারনত আমরা আরব দেশে গেলে সেদেশের প্রচলিত ভাষা শিখে থাকি আর কোরআন বোঝার জন্য শিখি কোরআনিক ভাষা। একটা কথা বাস্তব যে আমাদের বাংলাভাষা যেমন একহাজার বছর আগের চর্যাপাদের সাথে আজকের ভাষার মিল নেই। তেমনি আরবিতে ১৪শ বছর আগের ভাষার সাথে আজকের আরবির কিছু পরিবর্তন রয়েছে ।
কোরআনের ভাষা জানা একজন সাধারণ মানুষের জন্যে যথেষ্ট হতে পারে কিন্তু একজন তাফসীর কারক বা গবেষকের জন্য কোরআনের তাফসীর চর্চার জন্যে এটুকুই যথেষ্ট নয়। তার জানা প্রয়োজন তাফসীর শাস্ত্রের ইতিহাস, তাফসীর শাস্ত্রের মৌলিক নীতি। তাফসীরে তাবারী (৩১০ হি থেকে তাফসীর তাফহীমুল কোরআন (১৯৭২ ঈশায়ী) এবং আবু সলিম আল্লামা আসাদের ‘‘ম্যাসেজ অব দি হোলি কোরআন’’্ পর্যন্ত বারোশ বছরের তাফসীর শাস্ত্রের ইতিহাস সম্পর্কে– ধারণা প্রত্যেক মোফাসসেরেরই থাকতে হবে। এবং যারা ইসলামী বিষয়ে গবেষণা করেন তাদের ক্ষেত্রেও এটা প্রজোজ্য। এটা প্রযোজ্য নাস্তিকদের জন্যও কারণ তারা আজকাল না জেনে ইসলাম সম্পর্কে অনেক কিছু বলেন। এটা জানা প্রয়োজন সেইসব সচেতন মুসলিমদের যারা তাফসীরের পক্ষ ব্ াবিপক্ষ নিয়ে মত প্রকাশ করেন।
উসুলে তাফসীরের ওপর আল্লামা জালালউদ্দিন সুয়ূতীর ‘‘আল ইতকানু ফী উলুমিল কোরআন’’্, শাহ ওয়ালী উল্লাহ মোহাদ্দেসে দেহলভীর ‘‘আল ফাউযুল কবীর’’ এই দুটো বইতে তাফসীর শাস্ত্রের স্বরুপ বিশ্লেষন করা হয়েছে। এছাড়া তাফহীমুল কোরআন এর উপর ছোট একটি বই রয়েছে জনাব হাফেজ মুনিরউদ্দীন আহমদ রচিত।
কোরআন বোঝা ও কোরআন জানার জন্য এবং কোরআনের অনুবাদ সম্পাদনা বা বিবেচনা বা আলোচনা করার জন্য সামসাময়িক কালের তাফসীরগুলো সহায়ক হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্ত ু তাফসীর এর জ্ঞান তাফসীর এর ইতিহাস পযৃালোচনা ছাড়াও প্রথমদিকের তাফসীরগুলো পাঠ করা কোরআনের গভীর জ্ঞান অনুধাবনের সহায়ক হবে।
ইমাম আবু জাফর বিন জরীর ইতিহাসের প্রথম পূর্ণাংগ তাফসীর ‘‘তাবারী জাওয়ামেউল কোরআন আত তাওয়ীলিল কোরআন্,’’ (৩১০ হি”)। প্রথম ফেকার তাফসীর হিসেবে ‘‘জাওয়ামেউল আহকাম্ ইমাম আহমদ বিন আলী রাযীর’’ আহকামুল কোরআন্ ও হাদীস ভিত্তিক বিশাল সংগ্রহ হাফেজ ইমামুদুদ্দীন ইবনে কাছীর এর ‘‘তাফসীরে ইবনে কাছীর’’ (৭৭৪ হি”)। ইমাম রাযীর ‘‘তাফসীর আল কাবীর’’ আল্লামা যমখশারীর ‘‘আল কাশশাফ্ (৫২৮ হি”)। ‘‘জামে আল কুরতুব্-ী আল্লামা আলূসীর রুহুল মাআন্।ী), মাওলানা আশরাফ আলী থানভীর ‘‘বায়ানুল কোরআন, আবুল কালাম আযাদের ‘‘তরজমানুল কোরআন’’
আমাদের দেশে আলেমদের ভিতর বিভক্তি এতবেশী বেশী যে বিভিন্ন ধর্মের লোকদের ধর্মগ্রন্থ যেমন আলাদা হয় আমাদের এখানে ভিন্ন ভিন তরীকার লোকদের তাফসীরও আলাদা। যেমন জামায়াতের – তাফহীমুল কোরআন, আধুনিক মুসলমানদের যিলালিল কোরআন, সাধারণ মানের যারা তাদের তরযমানুল কোরআন আর তাফষীরে ওসমানী, এভাবে সুফিবাদীদের আলাদা, কওমী আলেমদের আলাদা পাঠ্য তাফসীর রয়েছে। আমি যার সাথে একমত নই সে আমার অস্পৃশ্য এ ধরনের ধারনা এ দেশের মানুষকে যেমনি এক হতে দেয়নি। তেমনি ভালো মুসলমান হবার পথেও এটা একটা অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে।
এই সময়ের বিভিন্ন বিষয় ও সমস্যার ব্যাখ্যা সম্বলিত তাফসীর এর মধ্যে সাইয়েদ কুতুব শহীদ রচিত গেলো শতকের ‘‘ তাফসীর ফি যিলালি কোরআন’’
মাওলানা আমীন আহসান এসলাহীর ‘‘তাদাব্বুরে কোরআন, হামিদ উদ্দীন ফারাহীর ‘‘মাজমুয়ায়ে তাফসীরে ফারাহী’’ আল্লামা রশিদ রেজার ‘‘আল মানার’’ শায়খুল ইসলাম শাব্বীর আহমদ ওসমানী ‘‘তাফসীরে ওসমান্।,আল্লামা ইউসুফ আলীর ‘‘দি হোলি কোরআন্’’ যদিও শেষটি আসলে কোরআনের ব্যাখ্যানুবাদ। একজন মোফাসসেরকে বসে বসে সব তাফসীর পড়ে ফেলতে হবে তা নয়। বরং এগুলো সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। তাফসীরকারকরা কি ধরনের দৃস্টিভঙ্গি, সদর্কতা ও ধারা ব্যবহার করে কাজ করেছেন তা জানতে হবে। এবং যখন যে বিষয় জানা দরকার হবে। তখন তাফসীর দেখে তা সম্পর্কে বিভিন্ন সময় ু যুগের আলেমদের ব্যাখ্যা জেনে নিতে হবে।
বর্তমানে দুটো তাফসীরকে যুগোপযোগী ও একান্ত আধুনিক তাফসীর মনে করা হয় সেগুলো হচ্ছে ‘‘তাফহীমুল কোরআন্’’ (১৯৪২-৭২)ও ‘‘তাফসীর ফী যিলালিল কোরআন্’’ (১৯৫৪-৬৪)। এখানে একটা বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে গত ৫০ বছরে বিশ্বে এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে এমন কি মেডিক্যাল সাইন্সে এমন কিছু বিষয়ে সংযোজিত হয়েছে। যেগুলো সম্পর্কে জানা দরকার। যদিও বর্তমান সময়ের প্রসিদ্ধ আলেমগণ এসব বিষয়ের ব্যাখ্যা দিয়ে আমাদের কাছে তুলে ধরছেন তথাপি এসব বিষয়ে নতুন তাফসীরগুলোতে অন্তুভ’ক্ত হওয়া জরুরী। আল্লামা তকী উসমানী, ড. ইউসুফ আর কারযাভী, আহমদ দীদাত, জাকির নায়েক, কামালুদ্দিন জাফরী, শাও ওয়ালী উল্যাহ, মুফতী আবদুল কাইয়ুম প্রমুখ এ ব্যাপারে বেশ এগিয়ে রয়েছেন।
আবার কিছু বিষয় রয়েছে এগুলো নতুন নয় পুরাতন। কিন্তু সে ব্যাপারে এমনকিছু মত আমাদের সামনে এসেছে যে সাধারণ মুসলমানগণ বিভান্তিতে পড়ছেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এসব বিভ্রান্তি কেটে যাচ্ছে। কারণ এই প্রজন্মের মুসলিমরা বুঝতে শুরু করেছেন যে, কোনো কিতাব নয়, মুরুব্বির কথা নয়, মোকছুদুল মোমেনিন নয়, কোরআন এবং সহিহ শুদ্ধ হাদীসের আলোকে আমাদের জীবন গড়তে হবে।
সূত্র:
১. তাফসীর ফি যিলালি কোরআন ভুমিকা থেকে
২. গ্রন্থ: মনীষীদের কোরআন গবেষণা
৩. উইকিপিডিয়া
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫২
ডক্টর ওসমান বলেছেন: চমৎকার বিেশ্লষণ।আল্লাহ্ আপনার জ্ঞান বাড়িয়ে দিক।