![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবার মত গল্প কবিতা দিয়েই লেখালেখির শুরু, মুলত লোক সাহিত্যের বিষয়ক লেখা লিখে আমাদের লোকসাহিত্যের জন্য করতে চেয়েছি। বেশকিছু লেখা রয়েছে এই বিষয়ে। তবে সবচে বেশী প্রসার ঘটেছে ই কমার্স বিষয়ক লেখাগুলো। তবে দেশ সমাজ ও রাস্ট্র নিয়ে ইতিবাচক ও গঠনমূলক কিছু লিখতে চাই।
সমাজে ধনী ও দরিদ্রের অবস্থান ও যাকাত
জাহাঙ্গীর আলম শোভন
মূলত বসবাসকারী প্রতিটি মানুষই আইন ও ধর্মের দৃষ্টিতে সমান। সমাজে ধনী ও দরিদ্র নামে কোন সম্প্রদায় নাই। যেহেতু পৃথিবীতে ভোগের সব উপায় উপকরণ মানুষকে নিজ যোগ্যতার মাধ্যমে আদায় করে নিতে হয়। সেহেতু এইসব উপাদানের পরিমানের মালিকানার উপর মানুষের আধিপত্যের কারণে সমাজে আজ ধনী ও দরিদ্রের স্পষ্ট বিভক্তি রয়েছে। ধনী মানেই তো আমরা আপাতদৃষ্টিতে সম্পদশালী লোককেই বোঝায়। বিত্তবান ব্যক্তি এবং দরিদ্র ব্যক্তি সকলেই এ পৃথিবীর বাসিন্দা একই পৃথিবীর আলো বাতাসে লালিত হওয়ার পরও তাদের মাঝে দুুনিয়াবি কারণে যে ব্যবধান রয়েছে তা চিরদিন ধরে রয়ে গেছে। তবুও অনেক বিষয়ে ধনী ও দরিদ্রের সমান অধিকার। ইসরাম এজন্য ধনী ও দরিদ্রের মাঝে যেমন কোন ফারাক রাখেনি আবার
যাকাতের গুরুত্ব:
আল্লাহ তা’আলা কুরআন মাজীদে নামাযের সাথে সাথে যাকাত আদায়েরও জোর তাগিদ দিয়েছেন।
যাকাত ধনী দরিদ্রের বৈষম্য দূর করে
ইসলাম চিরন্তন বিধান যাকাত। যাকাত ধনী দরিদ্রের বৈষম্য দূর করে। কথাটা একটু ব্যাপক আমাদের সমাজের একজন ধনী ও গরীবের মাঝে বিভিন্ন ধরণের বৈষম্য থাকে।
১। সামাজিক বৈষম্য।
২। মনস্তাত্ত্বিক বৈষম্য।
৩। অর্থনৈতিক বৈষম্য।
যদি শুধু সামাজিক বৈষম্য দূর করে তাহলে কিন্তু যাকাতরে উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে আবার যদি শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করে তাহলেও লোকেরা এর পরিপূর্ণ বিশ্বাস থেকে বঞ্চিত হবে। যাকাত প্রতিটি ক্ষেত্রেই বৈষম্য দূর করে যাকাত দেয়া এবং নেয়ার সাথে সামাজিক মনস্তাত্ত্বিক ও অর্থনেতিক বিষয় কাজ করে ।
* প্রথমে আমি সামাজিক বৈষম্য বিষয়ে ধনী গরীবের অর্থনৈতিক ব্যবধানকেও অস্বীকার করেনি। এজন্যই আমরা ইসলামী অর্থনীতিতে স্বত:সিদ্ধ ব্যবস্থা হিসেবে যাকাতকে দেখতে পাই।
যেহেতু পৃথিবীতে চীরদিন ধনী গরীবের অস্তিত্ব থাকবে সেহেতু আমাদেরকে বিত্তবান ও বিত্তহীনের পারস্পরিক সহাবস্থান, ব্যবধান কমানো এবং পারস্পরিক সহমর্মিতার ভিত্তিতে সমাজ কাঠামো নির্মঅণ করতে হয়। কারণ ধনী এবং দরিদ্র একই সমাজের বাসিন্দা। যেহেতু ধনী ও দরিদ্র কাউকে বাদ দিয়ে সমাজ চিন্তা করা যায় না তাই ধনী ও দরিদ্রের সম্পর্কেও কিছু নির্দেশনা ইসলাম দিয়েছে। ধনী ও দরিদ্রের মাপকাঠি যেহেতু সম্পদ তাই ধনী গরিবের সম্পর্ক ও বিনিময় ও সম্পদের মাধ্যমে হয়। আর ইসলামের যাকাত ব্যবস্থার মাধ্যমেই ধনীদের স্পদে গরীবদের অংশ রয়েছে।
১। যাকাত দাতা ও যাকাত গ্রহীতা যখন ক্ষয়ে জানতে পারে যাকাত দেয়া এবং নেয়া ধর্মীয় বৈধ প্রক্রিয়া এবং যাকাত মূলত ধনীদের সম্পদে গরীবের অধিকার। এটাকে আমরা একটা সামাজিক অধিকারও বলতে পারি। সুতরাং একটি সামাজিক অধিকার চর্চার মাধ্যমে ধনী এব দরিদ্র দুজনের সামাজিক দূরত্ব কমে দু’জনের মাঝে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটবে।
২। যাকাত ব্যবস্থা একটি সামাজিক রীতিনীতি হিসেবে যখন সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে। তখন আনুষ্ঠানিক কিংবা সাধারণ যেভাবেই যাকাত প্রদান করা হোক না কেন সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষ একে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবে নেবে। এর ফলে সামাজিক বন্ধন দৃঢ় হবে এবং জনগোষ্ঠীর পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।
৩। যাকাত প্রদান করা হলে প্রাপ্ত যাকাত এর সুষম বন্টন ও ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে দরিদ্রকে দূর করে সমাজে পারস্পরিক নৈকট্য দূর করে দূরত্ব কমানোর মাঝে বৈষম্য দূর করে।
মনস্তাত্ত্বিক বৈষম্য :
আমাদের সমাজে ধনী গরীব বলে একশ্রেণীর মানুষ যেমন দম্ভ ও অহংকারে থাকে। আবার একশ্রেণীর মানুষের মাঝে হীনমন্যতা কাজ করে। যাকাতের মাধ্যমে উভয় শ্রেণীর মানুষের মনে বাস্তবভিত্তিক ধারণা জন্মলাভ করে। মনস্তাত্ত্বিক দম্ভের কারণে মানুষ যেমন মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করে আবার নিজেকে ক্ষুদ্র ভাবার কারণেও মানুষের চিন্তাশক্তির বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয়। এজন্য অর্থনৈতিক দুরত্ব কমানোর পাশাপাশি মানুসিক দূরত্বও দূর করা উচিত এবং ইসলামী তথা যাকাতভিত্তিক সমাজে যাকাতের দ্বারা তা সম্ভব।
১। যাকাত দেয়অ কোন দান বা ভিক্ষা নয়, তেমনি যাকাত নেওয়া কোন অনুগ্রহ নয়। একজন মুসলিম যখন ইসলামের এই শিক্ষা দ্বারা অনুপ্রাণীত হয়। তখন মনতাত্ত্বিক দিক দিয়ে ধনী ও দরিদ্র ব্যক্তির নৈকট্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
২। ঠিক একই কারণে যাকাত দাতা ও গ্রহীতার মাঝে অর্থনৈতিক ব্যবধান সত্ত্বেও যাকাত ভিত্কি লেনদেনের মাধ্যমে একটি সম্পর্কের যোগসূত্র স্থাপিত হয়। এবং সামাজিকভাবে উভয়ে নিজেদেরকে নিকটতম ও পারস্পরিক প্রতিবেশী হিসেবে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে। এ উপলব্ধি উভয়ের মাঝে দূরত্ব হ্রাস করে।
৩। যাকাত প্রদান এবং গ্রহণের সময় উভয়ের দু’টি বিষয় মনে থাকে। যাকাত দাতার যেমন মনে থাকে যে আগামী বছরও তিনি যাকাত প্রদান করবেন এবং তা দ্বারা দরিদ্র জনগণ উপকৃত হবে আবার যাকাত গ্রহীতও যখন মনে রাখে যে তার আর্থিক অবস্থা পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত তার জন্য যাকাত ওশর খয়রাত জায়েজ ও উপকারী এবং সে এর উপর নির্ভরশীল তখন উভয়েল মাঝে পারস্পরিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত হয়। এই দায়িত্ব বোধ থেকেধনী উপকারার্থে যাকাতের কথা ভাবে এবং দরিদ্র ব্যক্তি যাকাতলব্ধ অর্থ দিয়ে নিজের অবস্থার পরিবর্তনের কথা ভাববে এভাবে ইতিবাচক চিন্তার বিকাশ ঘটে।
অর্থনৈতিক বৈষম্য :
যাকাতের মূল ভিত্তি যেহেতু সম্পদের মালিকানা সুতরাং অর্থনৈতিক বৈষম্যই যাকাতের মূল বিষয়। অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার জন্যই মূলত ইসলামী অর্থনীতিবিদরা যাকাত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বলেন। বর্তমান পৃথিবীতে ক্রমশ অর্থনৈতিক পার্থক্যই সমাজের মানদণ্ড হয়ে যাচ্ছে। যা কিছুতেই কাম্য নয়। একটি শান্তি ও ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য হবে তাতে ধনী ও দরিদ্রের মাঝে বিস্তর ব্যবধান থাকবে না। দরিদ্র মানুষদের ন্যূনতম জীবন যাপনের সুবিধা থাকবে আর ধনীদের অতিরঞ্জিত জীবন যাত্রা থাকবে না। ইসলামের প্রদর্শিত যাকাত ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ব্যবধান একটি প্রক্রিয়ার মাঝে ধাপে ধাপে কমে আসলে তা মানবজাতির কল্যাণের সহায়ক উপাদান হিসেবে কাজ করে। যাকাতের মাধ্যমে কারণ; সম্ভব।
১। যাকাতের ধারণা ধনী ব্যক্তিকে অধিক সম্পদ কুক্ষিগত করতে নিরুৎসাহিত করে। সমাজে প্রচুর লোক যদি এতে প্রভাবিত হয়। তাহলে অধিক মুনাফা ও অধিক সম্পদ জমা না করে অস্বাভাবিক ধনী হওয়ার প্রবণতা কমানো গেলে ধনী ও দরিদ্রের ব্যবধানও কমানো যাবে।
২। যেহেতু যাকাত হলো ধনীদের অর্থ সম্পদে গরীবের অধিকার। সুতরাং ধনীদের সম্পদ থেকে একটা অংশ যখন গরীবের মাঝে সঠিকভাবে বন্টন করে তা দিয়ে দরিদ্র পরিবারের অবস্থায় উন্নয়ন ঘটালে সমাজে ধনী গরিবের দূরত্ব ঘুচবে।
ইসলামের ইতিহাসে খেলাফাতে রাশেদীনসহ যুগে যুগে তা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। শুধু তাই নয় আমাদের দেশেও ধনীদের যাকাত গরীবদের মাঝে সঠিক বন্টন ও ব্যবহারের দ্বারা দরিদ্র বিমোচন সম্ভব।
৩। সম্মিলিত ও সমন্বিত যাকাত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দরিদ্র পুণর্বাসন, বেকার সমস্যার সমাধান, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, গরীবদের জন্য শিক্ষা, চিকিৎসাসেবা পর্যাপ্তকরণ। ঋণ ও সাহায্যের সহজলভ্যতা ইত্যাদি দ্বারা সমাজ ও রাষ্ট্রে দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন সম্ভব। মূলত প্রচলিত দরিদ্র ধারণার ভিত্তিতে জীবন যাত্রার মান ও চাহিদাকে সামনে রেখে মানুষের মৌলিক প্রয়োজনের ভিত্তিতে কর্মপন্থা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন দ্বারা সমাজে বর্তমান গরীব জনগোষ্ঠীর সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে সমাজে ধনী ও গরীবের ব্যবধান হ্রাস করার পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব।
যাকাত ব্যবস্থার মূখ্য দিক হচ্ছে যাকাত দরিদ্র বিমোচনের সর্বোত্তম পদ্ধতি। আর ধনী দরিদ্রের বৈষম্য দূর করার শক্তিশালী উপায় দারিদ্র বিমোচন। দারিদ্র বিমোচনের মাধ্যমেই ধনী দরিদ্রের মৌলিক বৈষম্য দূর করা উচিত।
আল্লাহ বলেন, “যদি তারা (কুফর ও শিরক থেকে) তওবা করে এবং নামায কায়েম করে ও যাকাত দেয় তাহলে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই।” (সূরা আত্ তওবা : ১১)
অর্থাৎ উপরের আলোচিত সমাজাকি মনস্তাত্ত্বিক ও অর্থনৈতিক তিনটি ধারণার ভিত্তিতে দারিদ্র বিমোচনের যাকাত ভিত্তিক কৌশল গ্রহণ করতে হবে। এবং কৌশলের বাস্তবায়নের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও চাহিদা পূরণের লক্ষ্যমাত্রা বিচার করা অতীব জরুরী।
২| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১৭
বলেছেন: একটা কথা পরিষ্কার হচ্ছে। ধর্মীয় বিধান অস্বীকারকারী কিছু লোককে সমাজে মুক্তমনা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার নিরন্তর প্রচেষ্টা চলছে। আমি বলে আসছি যে, এরা আসলেই প্রকৃত হিংস্র ও প্রতিক্রিয়াশীল। কেউ একজন একটা লেখা লিখবে। তারা সেটার সাথে একমত হতে পারে নাও হতে পারে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যখন দেখবেন তারা ক্ষোভ ঝাড়ছে। উপদেশ দিচ্ছে। যুক্তিহীনভাবে কথা বলছে। তাদের কাছে ২শ বছর আগের সমাজতন্ত্র আধুনিক, ১৪ শ বছরের বলে ইসলাম খেত। মজার ব্যাপার হলো এদের না আছে কোনোিআদর্শ না আছে নিজস্ব কোনো চিন্তা ক্ষমতা। কিন্তু জগতের সকল কিছুর প্রতি এদের আবেগতাড়িত ক্ষোভ প্রবল। কিছুটা জঙ্গি ও ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের মত। যদি দেশে এরা সংখ্যাগুরু হতো। তাহলে ধর্মপালনের অভিযোগে এরা মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারতো।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১২
চাঁদগাজী বলেছেন:
এসব কথার দাম আছে আফগানিস্তানে ও পাকিস্টানে