নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চেতনার জাগরণ নতুন দিনের বিষ্ফোরণ। আমরা গড়ব নতুন ভূবন, নতুন আশা মনে। এই কথাটির প্রতিধ্বনী বাজুক জনে জনে।

সবার মত গল্প কবিতা দিয়েই লেখালেখির শুরু, মুলত লোক সাহিত্যের বিষয়ক লেখা লিখে আমাদের লোকসাহিত্যের জন্য করতে চেয়েছি। বেশকিছু লেখা রয়েছে এই বিষয়ে। তবে সবচে বেশী প্রসার ঘটেছে ই কমার্স বিষয়ক লেখাগুলো। তবে দেশ সমাজ ও রাস্ট্র নিয়ে ইতিবাচক ও গঠনমূলক কিছু লিখতে চাই।

› বিস্তারিত পোস্টঃ

যাকাত ও ইনফাক

১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪২

যাকাত ও ইনফাক
জাহাঙ্গীর আলম শোভন


প্রারম্ভিকা:
পৃথিবীতে একজন মানুষ যখন জন্মগ্রহণ করে তখন সে থাকে অসহায় ও পরনির্ভরশীল। পৃথিবীর মায়া মমতা আর ভালোবাসা পেয়ে ধীরে ধীরে গড়ে উঠে তার দেহ ও মন। পৃথিবীতে মানুষ পদার্পণ করে শূন্যহাতে নিঃস্ব হয়ে এবং মানুষের কর্মগুণ ও মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অপার দয়ায় মানুষ পৃথিবীতে ধনজ্ঞান ও সম্মান অর্জন করতে সক্ষম হয়।

মানব সভ্যতার ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, মানুষ যতই সভ্য হলো ততই মানুষের মাঝে সম্পদ বিষয়ক সমস্যাগুলো তৈরী হলো। যখন মানুষকে খাবার নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি তখন সম্পদ কুক্ষিগত রাখার কথা মানুষ ভাবেনি একই কারণে ধনী দরিদ্রের প্রশ্নও অবান্তর ছিলো। প্রকৃতির বিশাল ভান্ডার থেকে মানুষ তার প্রয়োজন মিটিয়ে নিতো। যুগের পরিবর্তনের সাথে মানুষ তার প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিশেষ করে খাদ্য সংগ্রহ করে তা জমা করে রাখার প্রবণতা শুরু করে। আর সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখার এই প্রক্রিয়ায় মানুষকে দুইভাবে বিভক্ত করে ফেলল। সম্পদশালী ও সম্পদহীন অথবা বিত্তশালী ও বিত্তহীন।

পৃথিবীতে অনেক চিন্তা নায়কেরা এই অসম পদ্ধতি থেকে মানুষকে মক্তি দিতে চেয়েছেন। কিন্তু অত্যন্ত বাস্তব কারণে তা সম্ভব হয়নি। কেননা সম্পদ হাসিল করার জন্য মানুষকে প্রতিনিয়ত সংগ্রহ করতে হয়। লড়তে হয় যোগ্যতার সাথে আর তাতেই সফলতা আসে এবং মানুষ প্রতিপত্তির অধিকারী হয়। সমাজে কেউ সম্পদ হাসিল করলে তার হাসিলকৃত সম্পদ অন্যকেউ দখল করে নেবে এই পদ্ধতি ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। ইসলামের ন্যায়ভিত্তিক সমাজ চেতনার ভিত্তিতে সমাজের বিত্তহীন ব্যক্তিরা বিত্তবানদের অর্জিত সম্পদে অংশ পাবে এটাই ইসলামের নৈতিক বিধান। কুরআনে এসেছেÑ
“যখন ফলবান হয় তখন তোমরা তার ফল খাও, তোমরা ফসল তোলার দিনে (যে বঞ্চিত) তার হক আদায় করো, কখনো অপচয় করো না, কেননা আল্লাহ তা’য়ালা অপচয়কারীকে পছন্দ করেন না।” (সূরা আল আনয়াম : ১৪১)
ইসলাম মানুষের সার্বিক চাহিদা ও সমস্যার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে। মানুষের জীবনের বহুমুখী চাহিদা আর নানাবিধ ক্ষেত্রে ইসলামের রয়েছে সুষ্পষ্ট দিক নির্দেশনা। মানুষের অর্থনৈতিক বিষয়ে ইসলামের স্বতন্ত্র সাম্য ও কল্যাণবাদী নির্দেশনা হাজারো বছর ধরে মানুষকে শান্তির পথ দেখিয়ে আসছে। আজ থেকে ১৪শত বছর পূর্বে নাযিল হওয়া কোরআন ও সুন্নাহয় যে বিজ্ঞানভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থার রূপরেখা প্রকাশ করা হয়েছে তা বিংশ শতকে এসেও অর্থনীতিবিদও সমাজবিজ্ঞানীদের প্রতিনিয়ত ভেবে তুলেছে। ঝুঁকিবিহীন ও ভারসাম্যপূর্ণ ইসলামী অর্থ ব্যবস্থার সৌন্দর্য ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

যাকাত হলো সে কল্যাণময় অর্থ ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ধনী ও দরিদ্রের সেতু বন্ধন। যাকাত মানুষকে ইহকালীন জীবনে শান্তি ও পবিত্রতা দান করে আর পরকালীন জীবনের জন্য বয়ে আনে মুক্তি পুরস্কারের সংবাদ। মানুষের জন্য এর চেয়ে সুখের বিষয় আর কি হতে পারে!
যাকাত কি ও কেন ?
যাকাত-মূলত আরবী শব্দ। শব্দটি গঠিত হয়েছে এবং মূল ধাতু থেকে। প্রখ্যাত প্রাচ্যবিদ তার সুপরিচিত আরবী-ইংরেজী অভিধান মুজামুল লুগাতুল আরাবিয়্যাতুল মুআসিরাতে এর আভিধানিক অর্থ লিছেছেনÑ

"To thrive, to grow, increase, to be pure in heart, to be fit, to purity, Honesty, Crasten, Integrity, Guiltless, Blamless, Sinless, Justify, Righteousness."

শব্দগুলোর অর্থ আমাদের কাছে পরিস্কার। ইবনুল আরবী তাঁর লিসানুল আরব এবং ইমাম রাগিব ইস্পাহানী তাঁর ‘আল মুফরাদাত’ এ যাকাতের যেসব অর্থ লিখেছেন এ ইংরেজী শব্দগুলোতে সে অর্থগুলো সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
যাকাত মূলত একটি বড় ইবাদত। তাই যাকাতদাতা আল্লাহর ভালবাসায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে তাঁরই সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে যাকাত প্রদান করে। যাকাত প্রদানের মাধ্যমে যাকাত দাতার অর্থসম্পদ এবং তার মন ও আতœা পবিত্র হয়ে যায়। যাকাত প্রদানের মাধ্যমে মুমিনের অন্তর থেকে কৃপণতা কুটিলতা দূর হয়ে যায়।

দু:খীজনের প্রতি দয়ায় তার হদয় প্রশস্ত এবং উদার হয়ে উঠে। এর ফলে তার সম্পদ ও আতœা শুদ্ধতা লাভ করে, সংহতি অর্জন করে আর আল্লহ তার সম্পদে দান করেন প্রবৃদ্ধি। এ কারণেই আল্লাহর হুকুমে নিজ সম্পদের নির্দিষ্ট অংশ দান করাকে ‘যাকাতে’ বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন,
“তোমরা নামায প্রতিষ্ঠা করো যাকাত দাও, রাসূলের আনুগত্য করে, আশা করা যায় তোমাদের প্রতি করা ও (অনুগ্রহ) করা হবে।” (আন সূর: ৫৬)
ইসলামী শরীয়ায় যাকাত শব্দটিই সর্বাধিক ব্যবহত হয়েছে। নিসাবোত্তীর্ণ সম্পদ থেকে নির্ধারিত হারে প্রদান করাকেই যাকাত বলা হয়। তবে এ উদ্দেশ্য কুরআনে এবং হাদীসে দু’টি শব্দ ব্যপকভাবে ব্যবহুত হয়েছে। সেগুলোর একটি হলো ‘সাদাকা’ আর অপরটি ‘ইনফাক’।

কুরআন মজীদে ‘যাকাত’ শব্দটি বিভিন্ন গঠন প্রক্রিয়ায় ৫৮ বার ব্যবহত হয়েছে। এর মধ্যে অর্থনৈতিক যাকাত অর্থে ব্যবহুত হয়েছে ৩০ বার। ২৭ বার সালাতের সাথে যাকাতের সাথে যাকাতের উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ বার যাকাত প্রদান করো বলে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বাকী ২১ বার যাকাত প্রদান করা এবং যাকাত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা মুমিনদের ও ইসলামী রাষ্ট্রের কাজ বলে উল্ল্রেখ করা হয়েছে।
‘সাদাকা’ শব্দটি এক বচনে এবং বহু বচনে কুরআন মজীদে ১৪ বার ব্যবহৃত হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকবারই তা যাকাত অর্থে ব্যবহুত হয়েছে। হাদীসে যাকাত অর্থে ‘সাদাকা’ শব্দটি বহুবারই ব্যবহুত হয়েছে।
‘ইনফাক’ শব্দটি বিভিন্ন গঠন প্রক্রিয়ায় কুরআন মজীদে ৭৩ বার ব্যবহুত হয়েছে। এর মধ্যে অনেকবারই তা ব্যবহুত হয়েছে ‘যাকাত’ অর্থে।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


জাকাত ফাকাত ফলো মানুষকে ভিক্ষুক বানানোর ভাবনা।

২| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


যারা অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছেন, তাদের বই পড়েন; আফগানীদের মত পাথরের মাঝে বাস করলে তো যাকাত ফাকাতের কথাই বলবেন।

৩| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: “তোমরা নামায প্রতিষ্ঠা করো যাকাত দাও, রাসূলের আনুগত্য করে, আশা করা যায় তোমাদের প্রতি করা ও (অনুগ্রহ) করা হবে।” (আন সূর: ৫৬)

ওয়াকিমুস সালাতা ওয়াতুজ যাকাত..

আমাদের ইসলামের ঝান্ডাধারী নেতৃত্বতের অবহেলা, ইসলামী মৌলিক বিধানকে প্রতিষ্ঠিত করার দায়হীনতা এর জন্যে বহুলাংশে দায়ী। তারা এর জণ্য প্রয়োজনীয় উদৌগ গ্রহন না করার দায়ে আল্লাহর দরবারে অবশ্যই দায়ী থাকবেন।

সুন্দর লেখার মাধ্যমে স্মরণ এবং দায়বোধ জাগিয়ে দেয়ায় ধন্যবাদ।

@চাঁদগাজী আপনার অর্বাচীনতা সবজায়গায় না ফলালেই নয়? আপনি কি আল্লাহকে অস্বীখার করেন?
আপনি যদি নাস্তিক হন ঘোষনা দিন। নয়তো সরাসরি আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে কিছু বলা থেকে বিরত থাকুন। কারো মূর্খতার জন্য ইসলাম দায়ী নয়।
যাকাতের উপর আপনার চেয়ে বহু পন্ডিত ব্যক্তি বর্গ ভলিউমের পর ভলিউম বই লিখে হবেষনা করে দেখেছে এটা কত উত্ত অর্থনৈতিক সাম্য স্থিতিমীলতা আর সামাজিক সাম্যতার মাধ্যম।

আপনাদের কথিত এমডিজি আর এসডিজি যা বিগত ১৫ এবং সামনের ৫০০ বছরেও পারবে না- যাকাত ভিত্তিক অর্থনীতি তা মাত্র বছরান্তেই করে দেখাতে পারে।
অর্বাচীনতা জ্ঞান নয়।

@ লেখক আবারো ধণ্যবাদ আপনাকে সু-লিখিত প্রবন্ধের জন্য।

৪| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫০

চাঁদগাজী বলেছেন:

@ বিদ্রোহী ভৃগু ,

"@চাঁদগাজী আপনার অর্বাচীনতা সবজায়গায় না ফলালেই নয়? আপনি কি আল্লাহকে অস্বীখার করেন?"

ভ্যাটিকানে গিয়ে যাকাত দেয়ার চেস্টা করেন, আপনিই হবেন সবার চেয়ে গরীব; আল্লাহ কি ওদের সৃস্টি করেনি, শুধু আপনাকে করেছে? আপনারা খারাপ লোক।

৫| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: @ চাঁদগাজী - আপনার কাছে ভ্যাটিকান, ভোগবাদ, পূজিবাদ, ধনী দরিদ্রের বৈষম্যময় কর্পোরেট সিস্টেম আদর্শ হতে পারে। কোন মুসলমানের কাছে নয়। আর যাকাত বিষয়টাতে গরীব ফকিরি দিয়ে কি বুঝাতে চান?

প্রচলিত পূজিবাদের বিরুদ্ধে সাম্যবাদের এক ঘোষনা যাকাত। আপনি কি দান আর যাকাতকে গুলীয়ে ফেলছেন? আফাগিনদের মতো পাথরে বাস করার সাথে যাকাতে কি সম্পর্ক? ইসলামের অন্যতম মৌলিক ইবাদতের একটা যাকাত। আপনার মতো কোন ব্যক্তি মতামত বা পছন্দ অপছন্দের উপর নির্ভরশীল কোন ধারনা নয়।

যাকাত কোন ফকিরকে দেয়ার টাকা নয় বা গরিবকে দেয়ার অর্থ নয়। তার অন্য নাম আছে- ফিতরা, সাদকা, সহ অন্যান্যগুলো।

আপনি পূজিবাদী এবং তার সমর্থক হলে আপনার যাকাতকে পছন্দ হবেই না। কারণ যাকাত আপনাকে বাধ্য করবে মানুষ হতে।
আগে যাকাত সম্পর্কে জানুন পরে কমেন্ট করুন।

পোষ্ট পড়লেই কমেন্ট করতে হবে এমন বাধ্যবাধকতাতো নীতিমালায় নেই। ;)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.