![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবার মত গল্প কবিতা দিয়েই লেখালেখির শুরু, মুলত লোক সাহিত্যের বিষয়ক লেখা লিখে আমাদের লোকসাহিত্যের জন্য করতে চেয়েছি। বেশকিছু লেখা রয়েছে এই বিষয়ে। তবে সবচে বেশী প্রসার ঘটেছে ই কমার্স বিষয়ক লেখাগুলো। তবে দেশ সমাজ ও রাস্ট্র নিয়ে ইতিবাচক ও গঠনমূলক কিছু লিখতে চাই।
পায়ে হেঁটে দেশভ্রমণ: দ্বিতীয় অংশ, মার্চ মাস
জাহাঙ্গীর আলম শোভন
১২ ফ্রেব্রুয়ারী বাংলাবান্ধা থেকে যাত্রা শুরু কওে ২৯ ফ্রেব্রুয়ারী পর্যন্ত মির্জাপুর আসতে পেরেছিলাম। ততদিনে শীতের কোমলতা বিদায় হয়ে মার্চেও খরতাপ আস্তে আস্তে বাড়ছিলো। দৈনিক ৩০ থেকে ৩৫ কিলোমিটার হাঁটি। এরমধ্যে সবচে বেশী একদিন ৪৪ কিলো এবং সবচে কম ১৫ কিলোমিটার হেঁটেছি। ৭ দিনের মতো যাত্রাবিরতি ছিলো। তবে যাত্রাবিরতির দিনগুলোতেও ৭/৮/১০/১৫ কিলোমিটার হেঁটেছি। কারণ যে শহওে বিরতি করেছি সে শহরে বিভিন্ন কাজে এদিক সেদিক গিয়েছিলাম। যেহেতু সফরের সময় কখনো গাড়িতে উঠিনি সেহেতু প্রয়োজনে হাঁটতে হয়েছে। তাছাড়া হাঁটার প্রয়োজন হতো কারণ যেদিন মাত্র ৭ কিলো হাঁটি সেদিন দুটোই পাই ফুলে গিয়েছিলো। তাই না হেঁটে থাকার কোনো সুযোগ নেই। এজন্য তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ ১০৩২ কিলো হলেও আমি ১১৭৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছিলাম। এই লেখার প্রথম অংশে ১২ ফ্রেব্রুয়ারী থেকে ২৯ ফ্রেব্রুয়ারী পর্যন্ত দিনলিপি দিয়েছিলাম। বাকী অংশ আজ।
১ মার্চ
টাঙ্গাইল থেকে বের হয়ে একটি স্কুলে ছাত্রীদের সাথে সময় কাটিয়ে শেষতক মির্জাপুর গিয়ে উঠলাম। ক্রমেই ঢাকার কাছাকাছি আসছিলাম মনে হলো উত্তর দেশের সেসব সরল মানুষগুলোর সান্নিধ্যকে হারিয়ে ফেলছি ক্রমাগত।
২ মার্চ
পথ চলছি মির্জাপুর থেকে। এতদিনে পথে পথে মানুষের বিশেষকরে ড্রাইভারদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছি। সিরাজগঞ্জের গাড়ির চালকরা হাত নাড়িয়ে আসা যাওয়ার পথে অভিবাদন জানায়। মুখ তুলে চাইতে গেলে বাতাসে উড়ে যায় আমার মাথার বারান্দা টুপি। রোদে পুড়ে তখন কালো হওয়ার আর বাকী নেই। আশুলিয়া পর্যন্ত যেতে খুব কষ্ট হয়েছে। আশুলিয়া এসে যখন থাকার হোটেল খুঁজে পাচ্ছিলাম না তখন মন চাইছলো রাস্তায় শুয়ে পড়তো। ভাগ্যভালো আশরাফ ভাই শেষবেলায় কয়েককিলোমিটার পথ সঙ্গ দিয়েছেন।
৩ মার্চ
আশুলিয়া থেকে পথচলা শুরু করলাম সকাল ৮টার দিকে। রাতে ভালো ঘুম হয়নি তাই বেশ ক্লান্ত ছিলাম। ভরদুপুরে আমাকে ঢাকায় স্বাগত জানালো গাজীপুরের শিশুর জন্য আমরা সংগঠনের তিন তরুন। রাতে নিজের ঘরেই থাকলাম। এরমধ্যে অবশ্য ছোটনভাই দেখা করতে এসেছেন আর ওয়ালেমিক্স এর হুমায়ন কবীর ভাইসহ এয়ারপোর্টের সামনে অবস্থিত মনোলোভা রেস্তরায় এসে দেখা করলেন সস্ত্রীক।
৪ মার্চ
দুপুর পর্যন্ত ঘুমে গড়াগড়ি দিয়ে কাপড় কেঁচে কাটিয়ে দিলাম। বিকেলে গেলাম পর্যটন মোটেল অবকাশে। এখানকার এক কর্মকর্তা স্বাগত জানালেন। বিকেলে দিনরাত্রি ডটকম এর অফিসে সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে আড্ডা এবং উই ফাইন্ডেশন এর একটা স্কুলে নিমন্ত্রন নিলাম। চমৎকার সময় কাটালাম শিশুদের সাথে।
৫ মার্চ
ঢাকার অভিজ্ঞতা সেই গতানুগিতিক, কিন্তু তাকে রঙীন করে দিলো কিছু উদ্যোগী মানুষ । ফুলেল শুভেচ্ছা, সংবর্ধনা। ভালো লাগলো কারণ আমার জন্য নতুন ছিলো ধরনের অভিজ্ঞতা। সাবেক সচিব খুরশিদ আলম সাগর, দাগনভূঞা যুব ফোরামের মনজুরুল আলম টিপু, তরুন সংঘ এর সোহাগ ভাই মিলে বিশাল একটা অনুষ্ঠান আয়োজন করে ফেলল। উপস্থিত ছিলেন ইক্যাব প্রেসিডেন্ট রাজীব ভাই, ইয়াকুবপুর সমিতির সেক্রেটারী বীরমুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীন, ডিজিটাল সময়ের সম্পাদক খালেদ সাইফুল্যাহ, ট্যুর ডট কম ডট বিডির তিন কর্মকর্তা ও দিনরাত্রি ডট কম এর শিপন ভাইসহ আরো অনেকে।
৬ মার্চ
এইদিন আমার সাক্ষাৎকার ছিলো রেডিও ফুর্তিতে। তারপর গেলাম আমার সফরের স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ট্যুর ডট কম এর অফিসে সেখান থেকে মালিবাগ গিয়ে রাতকাটানোর ব্যবস্থা হলো। আগেরদিন ফকিরাপুল একটা হোটেলে ছিলাম।
৭ মার্চ
ঢাকা ছেড়ে নারায়নগঞ্জে আবার ঐহিত্যকে হাতছানিতে প্রাচীন বাংলা ও লোক ঐতিহ্য এর সাথে পরিচয়। ঢাকা থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার গিয়ে নারায়নগঞ্জ। দুই হুজুর বন্ধু সারাফাত উল্যাহ ও সাইদুল বাশারের সহযোগিতায় ভোর ৫টায় যাত্রা শুরু করে বিকেলেই পৌছে যাই। লোকশিল্প যাদুঘর পরিদর্শন শেসে এখানকার সাত্তার গণবিদ্যালয়ে থাকার ব্যবস্থা হল
৮ মার্চ
সকালে পানাম সিটি ঘুরে বেরিয়ে পড়ি। এখন গরমটা প্রচন্ড বাঁধা হয়ে আসছিলো কিন্তু দিনের ক্ষতিটা সন্ধার পর পুষিয়ে প্রতি তিন দিনে একশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছিলাম। এখন সমস্যা হলো ক্ষতি পোষানো যাছ্ছে না ফলে আমার জন্য একশো কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়া চার দিনের রাস্তা হয়ে গেলো। সেদিন দুটো ব্রিজ পার হয়ে দাউদকান্দি যেতে পেরেছিলাম।
৯ মার্চ
দাউদান্দি থেকে বের হয়ে পথ চলছি। সেদিন চান্দিনা পর্যন্ত যেতে পেরেছিলাম। খুব খুব খুব কষ্ট হয়েছিলো। ফোস্কা, পায়ে ব্যথা, গরম সবমিলিয়ে ত্রাহী অবস্থা ছিলো। কুমিল্লার পথে পথে টমেটো আর বাঙ্গিক্ষেত। কৃষকদের সাথে কথাবলে কষ্ট ভুলে থাকার চেষ্ট করেছি।
১০ মার্চ
মার্চ এর দশ তারিখ তখন কুমিল্লা ময়নামতি শালবহনবিহার দেখছিলাম। আমার সাথে সকাল বেলায় এসে যোগ দিয়েছেন স্বনামধন্য ফটোগ্রাফার ফোকাস ফ্রেম এর রুহুল কুদ্দুছ ছোটন, সামাজিক কাজের জন্য পাগলামন বড়ভাই ডট কম এর মোহাম্মদ আশরাফ আলী। কুমিল্লা ওয়ারসেমিট্রিতে ঘুরে সেদিন বার্ডএ রাত্রিযাপন করেছিলাম।
১১ মার্চ
সকালে বার্ড, কোটবাড়ী এবং শালবন বিহার দেখতে বের হলাম। দর্শনার্রাথীরা আনন্দবিহারকে বোতল চিপসের প্যাক আর টিস্যু পেপার ফেলে নোংরা করছিলো। পরে আমরা কিছুক্ষণ এটা পরিষ্কার করি। সেদিন কুমিল্লায় শুয়াগাজি গিয়েছিলাম।
১২ মার্চ
পরেরদিন মিয়াবাজার কুমিল্রা চৌদ্দগ্রাম হয়ে চৌদ্দগ্রামের শেষ মাথায় ফেণী কাছাকাছি এসে ভিটাওয়াল্ডে রাত্রি যাপন করলাম। মজার ব্যাপার হলো এখানকার তেরটি কক্ষের মধ্যে গেস্ট শুধু একজন সে হলো আমি। আমি একাকীত্বকে উপভোগ করতে পারি। সূতরাং পুরো রিসোট এ একা থেকেই উপভোগ করলাম।
১৩ মার্চ
আমি নিয়মিত আমার ফেসবুক আপডেট দিতে পারছিলাম না। কখনো ক্লান্তি কিন্তু একয়দিন ইচ্ছে করে দিলাম না। আমি কখন কোথায় আছি এটা পাবলিক হয়ে গেলে নিরাপত্তা ঝুকিতে পড়তে পারে বলে মনে হলো।
যাই হোক ফেণী এলাম পরিচিত বন্ধু বান্ধবদের সাথে আগেই যোগাযোগ করা ছিলো। ডিসি মহোদ্বয়ের সাথে কথা বলার পর সার্কিট হাউসে থাকার ব্যবস্থা হলো বিকেলে শরীফ ভূঞা, এমএন জীবন, মেজবাহ, রিপন, মারুফ, কৃষ্ণধনবাবু আরো অনেকে এলো তাদের সাথে সময় কাটিয়ে সন্ধ্যার দিকে চলে গেলাম দৈনিক ফেণীর সময় অফিসে সেখান থেকে ফেনী প্রেস ক্লাব। এর ফাঁকে জেলা প্রশাসক আমিন আল আহসান সাহেবের সাথে চায়ের ফাকে আড্ডা হলো তিনিও ফুল দিয়ে বরন করলেন।
১৪ মার্চ
ফেনী থেকে কিছু দরকারী কাজ সেরে লাঞ্চ এর পর আবার যাত্রা মেজবাহ ও ময়নাভাই মিলে আমাকে এগিয়ে নিয়ে গেলো বারইয়ার হাট পর্যন্ত। এখানে বেশ কয়েকটা হোটেল রয়েছে একটাতে উঠলাম।
চলবে-
২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৫
আহলান বলেছেন: এতো কষ্ট স্বিকার!
৩| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৩
বলেছেন: আমার স্লোগান ছিলো ‘‘দেখবো বাংলাদেশ গড়বো বাংলাদেশ’’। বাল্যবিবাহ দূর, মাদকমুক্ত সমাজগঠন, শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ, দেশীয় সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহার। এসব বিষয়ে জনমত সৃস্টি করার চেষ্টা করেঠি।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩১
আলগা কপাল বলেছেন: তা আপনার এই পদব্রজে বাংলা ভ্রমণের উদ্দেশ্যটা কি? জানালেন না তো। যাইহোক শুভকামনা রইলো।