নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চেতনার জাগরণ নতুন দিনের বিষ্ফোরণ। আমরা গড়ব নতুন ভূবন, নতুন আশা মনে। এই কথাটির প্রতিধ্বনী বাজুক জনে জনে।

সবার মত গল্প কবিতা দিয়েই লেখালেখির শুরু, মুলত লোক সাহিত্যের বিষয়ক লেখা লিখে আমাদের লোকসাহিত্যের জন্য করতে চেয়েছি। বেশকিছু লেখা রয়েছে এই বিষয়ে। তবে সবচে বেশী প্রসার ঘটেছে ই কমার্স বিষয়ক লেখাগুলো। তবে দেশ সমাজ ও রাস্ট্র নিয়ে ইতিবাচক ও গঠনমূলক কিছু লিখতে চাই।

› বিস্তারিত পোস্টঃ

পায়ে হেঁটে দেশভ্রমণ: তৃতীয় অংশ, ১৫- ২৮ মার্চ, ২০১৬

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:২৮

পায়ে হেঁটে দেশভ্রমণ: তৃতীয় অংশ, ১৫- ২৮ মার্চ মাস
জাহাঙ্গীর আলম শোভন

আমার পায়ে হেঁটে দেশভ্রমণের তারিখ ভিত্তিক বিবরণ লেখার আজ শেষ পর্ব। এক নজরে দেশদেখা ইভেন্ট এর তথ্যগুলো শেয়ার করা যাক। যাত্রা শুরু : ১২ ফ্রেব্রুয়ারী, মোট পথ ১০৩২ কিলোমিটার, অতিক্রান্ত দূরত্ব: ১১৭৬ কিলোমিটার, লক্ষ্যপূরণ: ২৮ মার্চ, শাহপরীর দ্বীপ গোলার চর, মিশন শেষ: ২৯ মার্চ, ছেড়াদ্বীপ সেন্টমার্টটিন , সহযোগিতায়: বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন, পৃষ্ঠপোশকতায়: ট্যুর ডট কম ডট বিডি, ট্রাকিং সার্ভিস: দিনরাত্রি ডট কম, লজিষ্টিক: ওয়ালেটমিক্স লিমিডেট ও কিনলে ডট কম।

১৫ মার্চ
বারইয়ার হাট থেকে বের হয়ে দুপুর নাগাদ লাঞ্চ করতে পেরেছিলাম মিরশ্বরাইতে। আর থাকার জন্য চলে যেতে পেরেছিলাম সীতাকুন্ড পর্যন্ত। আর এখানে থাকার ব্যবস্থা খুব বেগতিক। বেশ কষ্টকরেই থাকতে হয়েছিলো বলা যায়।

১৬ মার্চ
সীতাকুন্ড থেকে ভাটিয়ারী। ভাটিয়ারী এসে একটি হোটেল উঠলাম। খুব অভিজ্ঞতা হলো। না থাক নেতিবাচক বিষয় বেশী শেয়ার করে আপনাদের মন ভারী করতে চাইনা। তবে সীতাকুন্ড ইকোপার্কের সময়গুলো বেশ ভালো কেটেছিলো।

১৭ মার্চ
ভাটিয়ারী থেকে পথচলা শুরু। ভাটিয়ারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মিসেস রুপালী চৌধুরী সাদর অভিবাদন জানালেন তার স্কুলে। স্কুলের বাচ্চাদের সাথে সময় কাটালাম। সেদিন বঙ্গবন্ধুর জন্মদিতে তারা ছবি আকঁছিলো। রাত অবধি চট্টগ্রাম গিয়ে পৌছলাম সেখানেও শিল্পকলা একাডেমী চত্বরে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরেছিলাম।

১৮ মার্চ
চট্টগ্রামে প্রথমত রোটাক্টর ক্লাবের একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং সিটিজি ব্লাড গ্রুপ এর জন্য রক্তদান। এছাড়া অনেকে সাথে দেখা হলো। আমি নিজে সেদিন রেড ক্রিসেন্ট গিয়ে রক্ত দিয়েছিলাম। ৮/৯শ কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে রক্ত দেয়া ছিলো একটা মেসেজ। বিশেষ করে যারা রক্ত দিতে ভয়পায় তাদের জন্য। এমনকি সেদিনও ১৩ কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে রক্ত দিয়েছিলাম আর রক্ত দিয়ে হেঁটেছিলাম ১৭ কিলোমিটার।

১৯ মার্চ
এদিন চট্টগ্রাম রেডিও ফূর্তিতে আমার একটি অনুষ্ঠান ছিলো সেটি সেরে আমি যাত্রা শুরু করলাম কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে। পটিয়া কক্সবাজার যাওয়ার মূলপথ হলেও আমি গেলাম আনোয়ারার দিকে একটু ভিন্ন পথ নিলাম ভিন্ন ফ্লেভারের জন্য। কিন্তু সত্যিই ভিশন সুন্দর ছবি তুলেছিলাম আনোয়ার পথে পথে। রাতটা আনোয়ারা একটা বাড়িতেই কাটাতে হলো।

২০ মার্চ
চন্দনাইশ, পাঁচলাইশ পেরিয়ে কেরানীহাট পর্যন্ত যেতে পেরছিলাম। এর মধ্যে দুপুরের খাবার খেলাম গাছবাড়িয়া সিএমসিআর হাসপাতালে তারা মেহমান হিসেবে বরণ করলো, সাথে একবার মেডিক্যাল চেকআপ করে নিলাম। সব প্যারামিটার ঠিক আছে। রাতে কেরানীহাটে হোটেল হক টাওয়ান ইন এর অতিথি হয়েছিলাম।

২১ মার্চ
কেরানীহাট থেকে বের হয়ে চট্্রগ্রামের গ্রামীন সংস্কৃতির রং দেখে দেখে এগুচ্ছিলাম। মাঝে মাঝে ডাব আর আইসক্রিম খেলাম আর চট্টগ্রামের লোকেরা আমাকে খাওয়ানোর জন্য তাদের বাসায় যাওয়ার জন্য চাপাচাপি করছিলো পরিচিত অপরিচিত সবাই। রাতে ছিলাম চুনুতির সরকারী বাংলোতে।

২২ মার্চ
চুনুতি থেকে শুরু হলো বন পাহাড়ের ভেতর দিয়ে ভিন্নরকম এক দৃশ্যপট ধরে এগিয়ে চলা। এভাবে এক সময় কক্সবাজার সীমানায় প্রবেশ করি। সেদনি চকরিয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের বাংলোতে ছিলাম। ধন্যবাদ তাদেরকে।

২৩ মার্চ
চকরিয়া থেকে ঈদগা। মানে কক্সবাজারের সন্নিকটে। যত কাছাকাছি আসছি ততই আমার উত্তেজনা বেড়ে চলছে। দুপাশে বন বনানী তার মাঝে লোকালয় উচুনিচু পথ, সবুজে ঘেরা চারদিক। নির্জন নিরালায় এরকম পথ ধরে একা হাঁটার সুযোগ মনে হয় আর কখনো হবেনা।

২৪ মার্চ
ঈদগা থেকে কক্সবাজারে শহরে এসে প্রবেশ করলাম তখন সূর্যিমামা অস্তপাটে যেতে ব্যস্ত। অপ্রতাশিতভাবে ফুলেল শুভেচ্চা জানিয়ে বরন করলো প্রেট্রোনাইজ হাউজিং নামে একটি কোম্পানী। হোটেল উপল ম্যানেজার বেশ চটপটে আন্তরিক তিনিও বাগান থেকে তোলা সজিব ফুল গুচ্ছ দিয়ে শুভেচ্ছা জানালেন।

২৫ মার্চ
কক্সবাজার থেকে পরদিন সমুদ্রকুল ধরে রওনা দিলাম টেকনাফের পথে। খুব বেশী দূর যেতে পারিনি। এখন আগের মতো পায়ে ব্যথা নেই। কিন্তু খুব কালো হয়েহিয়েছিলাম রোদে পুড়ে। কারণ হোটেল বেস্ট ওয়েস্টার্ণ এর দাওয়াত নিয়ে এগিয়ে সকালেই দেরী হয়েগিয়েছিলো। রাতে ইনানী রয়েল রিসোর্টে ছিলাম।

২৬ মার্চ
২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। সেদিন আমি যাত্রা শুরু করলাম ইনানী রয়েল রিসোর্ট থেকে। একপাশে পাহাড় অন্যপাশে সমুদ্র এভাবে পথ পাড়ি দিলাম। আজকের দিনটিতে অনেক চ্যালেঞ্জ ছিলো এই জায়গাটাতে পথে দোকান পাট নেই, রাস্তার পাশে নেই গাছপালা, খুব কষ্ট হয়েছিলো। মার্চের উত্তাল দিনে খররোদে হাঁটা মোটেই সুখখর নয়। এই দিন আমি কোনো গন্তব্য ঠিক করে বের হয়নি। আজকের তত্বছিলো যেখানে রাত সেখাতে কাত। । প্রায় ৩৭/৩৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নোয়াখালী বাজার নামে একটি এলাকায় এলাম। রাতে দারুন চাঁদের আলোয় সৈকত থেকেও হেঁটে এসেছিলাম।

২৭ মার্চ
নোয়াখালী বাজার থেকে টেকনাফ। টেকনাফে প্রবেশের পথেই দেখা হয়ে গেলো সাংবাদিক টেকনাফনিউজডটকমের সম্পাদক সাইফুল্যাহ সাইফি ভাইয়ের দুপুরে এসে গেলেন ছোটন ভাই, আমার ফটোগ্রাফার। রাতে আমার সাথে এসে যোগ দিয়েছেন আশরাফভাই ও দিনরাত্রি ডট কমের সিইও সাহ্বা ইউ শিপন ভাই। সেদিন টেকনাফের ঘুরে ফিরে রয়ে গেলাম। রাতে পর্যটন মোটেল নে টং এ।

২৮ মার্চ
আমি সকাল ১১টার দিকে পায়ে হেটে শাহপরীর দ্বীপের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। কিন্তু পথে পথে দেখলাম বেশীরভাগ মানুষ বিষয়টা জানে সিরাজগঞ্জের পর আর কখনো এমনটা হয়নি। সাইফি ভাইয়ের অনলাইন পত্রিাকার বিস্তৃতি দেখে অবাক হলাম। যাইহোক চারটা নাগাদ ছোটনভাই এবং শিপনভাই শাহপরীর দ্বীপে ফৌছে গেলেন।
আমাদের প্রত্যেকের জীবনের এই স্মরনীয় মুহুর্ত আমরা দেশ ও মানুষের প্রতি উৎসর্গ করে শেষ সীমানায় পত পত করে উড়িয়ে দিলাম লাল সবুজের নিশাণ।

২৯ মার্চ
পরের দিন জাহোজে ছড়ে বিছ্চিন্ন অংশটুকু মানে সেন্টমাটিীন দ্বীপে গিয়ে আবারো চূড়ান্ত বিজয় নিশান হিসেবে উড়িয়ে দিলাম ত্রিশলাখ শহীদরে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকা।
এই দীর্ঘ পথযাত্রায় মানুষ দেখেছি, মানুষের জীবন দেখেছি। এমন অনেক কিছু দেখেছি জেনেছি যা অন্যকোনোভাবে ভ্রমণ করলে সম্ভব হতো না। আমি প্রায় হাজার পঞ্চাশেক মানুষের সাথে মিশেছি, কথা বলেছি। তাদের ভাবনা জেনেছি। প্রান্তিক মানুষদের জীবন দেখেছি।

লেখা: জাহাঙ্গীর আলম শোভন
জন্ম: ফেণীতে, পৈত্রিক নিবাস ফেণী, বর্তমান নিবাস ফেণী, অবস্থান ঢাকা
পেশা: বেসরকারী চাকুরে, ইকমার্স ও বিজনেস কনলালটেন্ট। লোকসাহিত্য ও সমাজ উন্নয়ন কর্মী
(সমাপ্ত)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.