![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবার মত গল্প কবিতা দিয়েই লেখালেখির শুরু, মুলত লোক সাহিত্যের বিষয়ক লেখা লিখে আমাদের লোকসাহিত্যের জন্য করতে চেয়েছি। বেশকিছু লেখা রয়েছে এই বিষয়ে। তবে সবচে বেশী প্রসার ঘটেছে ই কমার্স বিষয়ক লেখাগুলো। তবে দেশ সমাজ ও রাস্ট্র নিয়ে ইতিবাচক ও গঠনমূলক কিছু লিখতে চাই।
পায়ে হেঁটে দেশ ভ্রমণ: সফরের মজার স্মৃতি ২
জাহাঙ্গীর আলম শোভন
বলছি পায়ে হেঁটে দেশভ্রমনের সময়ের কথা। ১২ ফ্রেব্রুয়ারী থেকে ২৮ মার্চ। যদিও বড়ো ধরনের কোনো কাকতালীয় ঘটনা ঘটেনি। আবার খুব খারাপ কিছুর মুখোমুখিও হয়নি। হয়তো হাজারো মানুষের দোয়াও ভালোবাসা ছিলো বলে, সবই উপরওয়ালার ইচ্চা। সফরের মজার ঘটনাগুলো নিয়ে লেখার আজ দ্বিতীয় পর্ব।
পথের দেখা
এখানে আরেকটি ঘটনা আছে। ফেণীর লেমুয়াতে আমার একটা স্কুলে বাচ্চাদের সাথে সময় কাটানোর কথা ছিলো। তো যেহেতু সকাল বেলায় ফেণী থেকে বের হতে পারিনি। আর স্কুল টাইমে স্কুলের রাস্তা দিয়ে পাড়ি দিতে পারিনি সেজন্য সেটা বাদ দেয়া হয়েছে। তো বারইয়ার হাট এলাকায় গিয়ে একটা দোকানে আমরা হালকা নাস্তা করছিলাম। এক ভদ্রলোক নিজের পরিচয় দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন তিনি আর কেউ নন ওই স্কুলের শিক্ষক যে স্কুলে আমার সময় কাটানোর কথা ছিলো। দিনরাত্রি ডট কম এর শিপনভাই মূলত এর যোগোযোগ সূত্র ছিলেন। ভদ্রলোক তার বাড়ীতে যাওয়ার জন্য এতটাই জোরাজুরি করলেন যে তাকে একরকম হাতেপায়ে ধরে বোঝাতে হয়েছে। সাথে সাথে এও বুঝলাম চট্টগ্রাম এলাকায় যখন এসে পড়েছি এখন এই আতিথিয়েতার উৎপাত উৎপাত সইতে হবে। কারণ একজনকে এড়িয়ে গিয়েও জড়িয়ে যেতে হলো।
[img|http://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/meghbalok007/meghbalok007-1481003001-9eaa86e_xlarge.jpg
পথকাব্য
স্ট্রলার পুশার। এটা যদি কোনো মানুষের পেশা হতো কেমন হতো ভালো কি মন্দ সেটা যাই গোক অন্তত খুব মজার হতো। আগেকার দিনে নাকি ইউরোপে মজার মজার কিছু পেশা ছিলো। যেমন ইদুঁর ধরতো যারে তাদেরকে বলা হতো রাট্য ক্যাচার, তারপর এ্যালার্ম ওয়াচ আবিস্কারের আগে লন্ডন শহরতলীতে মানুষকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয়ার জন্য পেশাদার লোক থাকতো। বাংলাদেশেও থানার দালাল। সচিবালয়ের লবিস্ট এমন সব মজার পেশা রয়েছে। বাইরের দুনিয়া শুনলে হয়তো অবাকই হবে।
আমার স্ট্রলারটা নিয়ে হাঁটার সময় শিশু কিশোরের দল এটা চালানোর জন্য অস্থির হয়ে যেতো। চালানোর জন্য মানে পুশ করার জন্য এটা ধাক্কা দিয়েইতো চালাতে হতো। তাদেরকে আমি চালাতে দিতাম। আর সুযোগ পেয়েই জোরে চালানো শুরু করতো। যদি আবার কন্ট্রোল করতে না পারে সেজন্য আমাকেও তাদের সাথে তখন দৌড়াতে হতো। দূরন্ত কৌশর বলে কথা।
আনোয়ারার গ্রামে
আনেয়ায়ারায় এক গ্রামে একটি বাড়ীতে ছিলাম রাতে। তারিখ ১৯ মার্চ রাতে গোসল করতে চাইলাম। মেজবানরা দুইভাই লুঙ্গি গামছা সাবান আর জগ নিয়ে রেডি হলো পুকুরে চলতে। হায়রে কয় কি? মনে মনে একটু হাঁসলাম। সফরে পুকুরে গোসল করতে হবে এটাতো ভাবিনি। আমাদের গ্রামের বাড়ীতে আগে পুকুরের পানি ভালো ছিলনা। তাই টিউবওয়েলে গোসল করতাম। এখন গ্রামের বাড়ীতে পানি পুকুর সবই ভালো কিন্তু ঘরে গোসলের ব্যবস্থা আছে। এটা গ্রামের বাড়ীর পুরনো পুকুর। পুকুরে মাছ চাষ হতে পারে। চারদিকে গাছপালা মাটিতে পাতা পঁচে থাকবে। এখানে রাতের বেলায় গোসল করা যে কারো জন্য বিব্রত হতে পারে। কিন্তু আমি মজা পেলাম এবং খুশি হলাম। ভালোই হলো সফরে একটা মাত্রা যোগ হলো যে এক জায়গায় পুকুরে গোসল করেছি।
কাছে এসে দূরে?
হাটতে হাটতে চলে এলাম চন্দনাইশের কাছাকাছি। তারিখ এখানে মাইল ফলকে লেখা চন্দনাইশ ১০০ কিলোমিটার, গাছবাড়ীরয়া ৩০০ কিলোমিটার। হঠাৎ আমার বুকের মধ্যে ধক করে উঠলো। হায় আল্লাহ চন্দনাইশ যদি এখনো ১০০ কিলোমিটার বাকী থাকে তাহলে কি হলো। মনের হলো আমি মনে ভুলে উল্টোপথে চলে গিয়েছি অনেক দূর। কাছে গিয়ে দেখলাম যে এটা আসলে হবে চন্দনাইশ ১.০০ কিলোমিটার, গাছবাড়ীরয়া ৩.০০ কিলোমিটার, মানে চন্দনাইশ ১ কিলোমিটার, গাছবাড়ীরয়া ৩ কিলোমিটার, মানে দশমিক এর স্বাস্থ্য খুব খারাপ আরকি।
হাতি চলাচলের পথ
কক্সবাজারে চুনুতির বনের মধ্যে এরকম সাইনবোর্ড লাগানো আছে। কিন্তু পাশে কিছু স্থাপনা দেখে মনে হলো এখান দিয়ে হাতি চলাচল খুব কঠিন। জায়গাটাতে একটু দাড়ালাম। মজা করার জন্য একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই এখানে যে লেখা আছে হাতি চলাচলের পথ, হাতিরা বুঝি এই লেখা পড়ে এখান দিয়ে চলাচল করে। লোকটি বলল আরে না ভাই হাতি কি আর লেখা পড়া জানে এটাতো মানুষের জন্য যাতে মানুষ সতর্ক হয়।
স্বাদের লাউ
চট্টগ্রামের মানুষ এতটাই অতিথি পরায়ন যে কিছু না খাইয়ে ছাড়তে চায়না। টেকনাফে একবাজারে খাবার এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বললাম ভাই আমিতো কাচা শাকসবিজ খাই। সাথে সাথে একটা লাউ আর একটা শষা এনে দিলো। হয়তো মনে মনে অবিশ্বাস করেছিলো। তাদের সামনে একটা লাউয়ের অর্ধেকমতো খেয়ে আবার হাটা। শষা আর বাঁধাকপিতো সফরের সময় নিয়মিত খেয়েছি। কাঁচাসজ্বি খাওয়ার কারণ হলো এনার্জি এবং তৈলাক্ত খাবার থেকে দূরে থাকা। কিন্তু লোকেরা অবাক হতো আবার মজাও পেতো। উত্তরবঙ্গের লোকেরা আমার বাড়ি কোথাও সেটা জিজ্ঞেস করে নিয়ে মনে মনে ভাবতো ফেনী লোকেরা শাকসব্জি কাঁচাই খায়। দু, একজন বলেই বসেছিলো।
একসময় লোকালয় বিলীন হয়ে খোলা আকাশ বেরিয়ে এলো রাস্তাও মেটোপথ আর লবনের মাঠ। দেূরে আবছা দেখা যায় শাহপরীর দ্বীপ পাশে নাফ নদী। লবণ ক্ষেতের মধ্য দিয়ে আঁকাবাকা কাঁচা রাস্তা। আবার উচানিচাও আবার এবড়ে থেবড়েও। কিন্তু ট্যাক্সি এবং ছোট ছোট পিকআপ ভ্যান চলাচল করছে। তাও দেখে মনে হয় উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ পাড়ি দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।
চাঁদের বুড়ি
এই বুড়ির সাথে দেখা । ছোট মেয়েদের আমি আদর করে বুড়ি বলি। মেয়েটির বয়স ৬ কি ৭। ২৯ ফ্রেব্রুয়ারী সেন্টমার্টীন দ্বীপে যাওয়ার সময় জাহাজে। বুড়ির কোমরে তাবিজের সাথে পয়সা লাগানো আছে। সাথে বাপ ছিলো জিজ্ঞেস করলাম কোন মানতের হাকিকত।? বলতে রাজি হলো না। আমি বললাম। এগুলো সব ফেলে দেন। ভূত আসবে না। আর যদি আসে তাহলে আমার নাম বলবেন লেজ তুলে পালিয়ে যাবে। মনে হলো বিশ্বাস করেনি।
বল্লাম দেখেন আমি যেখানে থাকি তার ১০০ মিটারের মধ্যে কোনো ভূত থাকেনা। এইযে আমি এখানে আছি আপনি দেখেন আশপাশে কোনো ভুত নেই। কারণ আমি একবার ভূতের ডিম মামলেট করে খেয়ে ফেলেছি।আরেকবার ভূতের লেজ কেটে কোমরের বেল্ট বানাইছি। এই দেখেন বেল্ট। বেল্ট দেখালাম।
শুনে বুড়িটো হেঁসে দিলো। কিন্তু বাপটা পাত্তা দিলো না।
২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:০৭
ধ্রুবক আলো বলেছেন: হা হা হা..
মজার সফর, পড়ে খুব মজা পেলাম!
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৪৫
বলেছেন: