নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অবিশ্রান্ত

দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি, তাই যাহা আাসে কই মুখে

নেজাদ

অন্যরকম

নেজাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানতে পারি না আজও

০৩ রা জুলাই, ২০১৩ সকাল ৭:৪৬

তোমাকে হারিয়েছি চিরতরে

সে কথা কিছুতেই মানি না

মানতে পারি না আজও।





কি করে মেনে নেব বল,

যখনি ঘুম থেকে উঠি

তখন ভাবি এই বুঝি মোবাইলে

কোন খুদে বার্তা এসে অপেক্ষা রত, এতগুলো কল করার পরও কেন রিসিভ করিনি,

কেন এখনও ঘুমিয়ে আমি।

আর সে আছে আমার অপেক্ষায়

কি যেন বলবে,

নিশ্চয়ই নতুন কিছু নয়, তার পরও

দিনের শুরুতে সেগুলো আমাদের কাছে নতুন,

মনে হয় একথা বলা হয় নি কখনও!







তোমার কলের সেই রিং টোনটা আর

কখনো বেজে ওঠে না।

কিন্থু লোকের ভীড়ে যখন

অন্য কারও মোবাইলে সেটা বেজে ওঠে

তখন অবচেতন এই মনে মুহূর্তে

মোবাইলটাকে স্পর্শ করে

এই বলে

তার কল এসেছে যেমনি আসত

যথা নিয়মে।





আর যখন দেখি ফোন দেখার পূর্বেই

অন্য কেউ সেটা রিসিভ করেছে

তখন বুঝি তুমি নেই,

কালের স্রোতে তুমি ভেসে গেছ

অন্য কালে,

যে কালের শুধু রাত হয় অথবা হয় দিন,

তাই তুমি বুঝ না এখন রাত শেষে

দিন এসেছে অথবা দিন শেষে রাত,

আর তাই তোমার অপেক্ষারও শেষ হয় না

আর আমিও তোমাকে পাই না এই রাত দিনের প্রবাহমান জীবনে।







সেদিন হসপিটালে দেখেছি তোমার

অসাড় দেহখানি

যা কদিন আগেও ছিল চঞ্চল, উচ্ছৃঙ্খল

কিন্তু আজ তার অব্যক্ত মুখখানি

ক্ষণ ক্ষণ ভঙ্গি পাল্টে হৃদয়ের জমে থাকা

পাহাড় সম কথাগুলো ঝর্ণা হয়ে

দু’চোখ ভাসিয়ে

আমাকে সিক্ত করে বলে যাচ্ছে-

আরও কিছুদিন বাঁচতে চাই

তোমার ভালবাসার গভীরতা মাপতে চাই

আমাকে লুকিয়ে রাখ তোমার ভালবাসার

অতল গভীরে

যেখান থেকে কোন কিছুই আমাকে

আলাদা করতে পারবে না তোমার থেকে।

কথা দাও,

আমাকে লুকিয়ে রাখবে,

খুঁজে পেতে দেবে না কাউকে

কথা দাও,কথা দাও!!





জানি কতটা ভালবাস আমায়

ভালবাস কল্পনার শত রঙে আমাকে আঁকতে

আপন মনে, মনের অজান্তে শতশত ছবি

যেখানটা রঙধনু করে খেলা, করে মেলা।





বলেছিলাম,তাকে কি বাঁচানো যায় না ডাক্তার?

তুমি তো কত জনকেই না মৃত্যুর হাত থেকে টেনে আন

এই জীবন নগরীতে

তবে তার বেলা কেন তোমার এই অপারগতা?

আমি তাকে হারাতে চাই না,

চাইনা এক মুহূর্তের জন্য তাকে

চোখের আড়াল করতে.

সে আমার সকল কাজের প্রেরণা,

এক গোপন শক্তি।





কিন্তু না, কেউ পারলনা

তাকে মৃত্যু নগরী থেকে টেনে আনতে,

সবাইকে কাঁদিয়ে, শোকের চাদর বিছিয়ে

চলে গেল পৃথিবীর এই সসীম সীমান্ত ছেড়ে

ভালবাসার হৃদয়টাকে নিয়ে অসীমে

আর ফেলে গেল তার এত দিনকার বন্দি খাঁচা,

যাতে ছুঁয়ে দিলে আর শিহরণ জাগে না,

নড়েও ওঠে না,

কেবল নির্বাক, নিশ্চল, স্থির চিত্রের মত যেন বলে যায়,

আমার আজ কোন অভিমান নেই,

নেই কোন অভিযোগ বরং

যখন খুশি আমাকে স্মরণ করো,

ডেকো আমায় পাবে তুমি

যেমন

নীল আকাশে সূর্যের সামনে হঠাৎ

এক খন্ড মেঘের মত,যা কেবল

অল্প সময়ের জন্য ছাঁয়া দিতে

পারে রৌদ্রে ক্লিষ্ট কোন পথিককে,

তবুও তো পারে!





দূরারোগ্য ক্যান্সার বাসা বেঁধেছিল তার ভেতরে

যেখানে ছিল কেবল আমার বসবাস,

আমি কিংবা সে কেউ জানতে পারিনি,

আমাদের মাঝে কে যেন এসেছে

দুজনকে আলাদা করতে চিরতরে।

কিন্তু যখন জানতে পারলাম তখন

বড় দেরি হয়ে গেল।



পুরোটা গ্রাস করে ফেলেছে তাকে

সেই নীরব ঘাতক,

কেবল বেঁচে ছিল কটি দিনের তরে।

শান্ত্বনাময়, অপলক নেত্রে চেয়ে থাকা

আর অতীতের দিকে ফিরে দেখা আর

বারবার হিসাব মেলানো।





না,

কিছুতেই মিলছে না

আমার জীবনের হিসাব-নিকাশ।

কারণ, কেবল তার বিনাশে

এ হিসাব-নিকাশ মিলবে না।

আমি যেদিন তাকে সত্যিই পাব

কেবল সে দিনই মিলবে আমার

সেই প্রথম দিনগুলোর হিসাব-নিকাশ

তার আর আমার জীবনের শত চাওয়া-পাওয়া,

স্বপ্নের বাসা বাঁধা আর

বারবার ভাঙ্গা।



আমি এখন বড় ব্যস্ত

আমার হিসাব-নিকাশ কবে মিলবে,

কিভাবে মিলবে।

পথ না জানা পথিক যেমন কোন

অসীম অরণ্যে খুঁজে ফিরে সেই

সীমান্ত, যা তার গন্তব্য অথবা

কোন পথিক, দিকহীন মরুভূমির বুকে

অনন্ত হেঁটে চলা

বিরতিহীন, ক্লান্ত-শ্রান্ত ওষ্ঠাগত জীবনকে নিয়ে

যেটা এখন তার কাছে বড় বোঝা।



আজ আমার জীবনটাও যেন ক্রমশঃ

হয়ে আসছে বড় বোঝা

কারণ, গোলাকার এই পৃথিবীর সর্বত্র

খুঁজে ফিরছি অবচেতন মনে তাকে

মিছামিছি খুঁজে পাবার

কিন্তু বারেবারে খুঁজে পাই

এই পৃথিবীর কেন্দ্র।





বুঝি, সে আমার সীমান্তের বহুদূরে

সেই সীমান্ত কোন জীবিত আত্নার পক্ষে

অতিক্রম করা সম্ভব নয়, সম্ভব কেবল তার পক্ষে

যে তার দেহটাকে ফেলে রেখে যেতে পারবে

এই অসাড় পার্থিব জীবনে আর

পাড়ি জমাতে পারবে তার আত্নাকে নিয়ে অসীমে,

মহালোকে, মহাশূন্যতায়।



তাই আমি কেবল,

পৃথিবীর কেন্দ্রে ফিরে আসি বারবার

কিন্তু সেই সীমান্ত অতিক্রম করতে পারিনি,

পারছি না আজও।



কারণ আমি যে বেঁচে আছি

তার স্মৃতি আর এক ভ্রান্ত বিশ্বাস নিয়ে

তাকে হারাতে পারি না,

পারব না কোন দিন।





মেহেদী হাছান

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

ফার্মেসী বিভাগ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.