নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেলাশেষে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় আসলাম সামুর তীরে, রেখে যেতে চাই কিছু অবিস্মরণীয় কীর্তি । পারি না আর না পারি, চেষ্ঠার ত্রুটি রাখবো না, এই ওয়াদা করছি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭

একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভৌতিক কিছু রহস্য আজীবন রহস্যই থেকে যায়........... :|| :||

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৪৩

বারান্দার দরজাটা যখন ক্যাচ ক্যাচ করে খোলে কিংবা বন্ধ হয়, তখন আধাভৌতিক একটা ব্যাপারের উদ্ভব হয় এই বাসাটাতে । কল্লোল তার পরিবার নিয়ে এই নতুন বাসাটা ভাড়া নিয়েছে গত মাসে । পরিবার বলতে তার বাবা-মা আর ছোট একটি বোন । কল্লোলের বাবা রিটায়ার্ড সরকারী কর্মকর্তা আর মা গৃহিণী । ছোট বোনটা পার্শ্ববর্তী একটি স্কুলে ক্লাস নাইনে পড়ে । কল্লোল একটি বেসরকারী ব্যাংকে ঢুকেছে আজ প্রায় তিন বছর । ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে ইকোনমিক্সে পাশ করার পর চাকরীটা পেতে তাকে খুব বেশি বেগ পোহাতে হয়নি ।

নতুন বাসাটাতে উঠার সময়ই তারা শুনেছিল এই বাসাটা নাকি বেশ কয়েক মাস ভাড়াই হয়নি । কি জানি, অনেক কথাই শুনেছে । কিন্তু বোনের সুবিধা আবার তার সুবিধা মিলে কল্লোল এই বাসাটা ভাড়া না নিয়ে আর পারেনি । প্রথম দশ-পনেরো দিন সব ঠিকই ছিল কিন্তু হঠাৎ এই কয়েকটা দিনেই বেশ ঝামেলা হচ্ছে । রাতের বেলা ছাদ থেকে নিয়মিত বিরতিতে ঠুকঠাক শব্দ, হঠাৎ হঠাৎ বাতাস ছাড়াই ছাদের কাপড় শুকানোর বাঁশগুলোর একটা আরেকটার সাথে ধাক্কা লেগে শব্দ হওয়া, দরজার অস্বাভাবিক ক্যাচ ক্যাচ আওয়াজ ইত্যাদি অনেক রকমের সন্দেহজনক কাণ্ড ঘটছে বাড়িটিতে । এই তো দুই দিন আগেও কল্লোলের ছোট বোন আফিফা বললো, রাত জেগে পড়ার সময় ওর মনে হইছে অনেক দূর থেকে কেউ জানি ওকে ডাকছে । কল্লোলের বাবা-মা মুরব্বী মানুষ । তাদের আমলে এই জিনিসগুলো হলে হয়তো মানাও যেতো কিন্তু এখনকার আধুনিক যুগে এই কথাগুলো কেউ বিশ্বাসই করবে না । কল্লোল এই কথাগুলো জানে ।

আজ কল্লোলকে অনেক রাত জাগতে হবে । সেই রাতের পর আফিফা রাত জেগে আর পড়াশুনা করে না । বরং সে ভোরে উঠেই পড়াশুনা করে । ব্যাংকে কালকে আর্জেন্ট একটি এসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে । এই এসাইনমেন্টের উপর নির্ভর করছে বড় একটি প্রজেক্টে ব্যাংকের টাকা ইনভেস্ট করার পসিবিলিটি । সে জুনিয়র হলেও শাখা ম্যানেজারের বেশ বিশ্বস্ত, তাই এই এসাইনমেন্ট করার দায়িত্বটুকু সে-ই পেয়েছে । তাই কল্লোল একেবারে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে কাজ করতে বসলো দশটার পরপরই । রাত বারোটার দিকে কল্লোল একটি বিশ্রাম নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলো অথচ কাজ অর্ধেকও হয়নি তার । এই বাড়িতে আসার পর সবাই রাতজাগা ছেড়ে দিয়েছে, তাই এগারোটা বাজতেই সবাই ঘুমের ঘোরে তলিয়ে পড়েছে । কল্লোলের এখন এক কাপ চা খুবই প্রয়োজন । কিন্তু সে তো চা বানাতে পারে না । তাহল উপায় ? সে যখন চা কিভাবে বানানো যায় সেটা নিয়ে ভাবছিল তখনই হঠাৎ কাপে করে চা নিয়ে হাজির হলো আফিফা ।
- এই নে, ভাইয়া, তোর চা ।
- তুই কিভাবে জানলি ?
- কি জানলাম ?
- এই যে আমার চা পান করতে খুব ইচ্ছে হচ্ছিল ।
- আমি তো বুঝিনি । আমারও চা পান করতে ইচ্ছে হচ্ছিল । একা একা পান করার চেয়ে দুইজন মিলে করাই তো ভালো হবে, সেটা ভেবেই চা নিয়ে আসলাম তোর জন্য ।
- (চায়ে এক চুমুক দিয়ে) বাহ, চা টা তো বেশ ভালো হয়েছে । তুই আবার চাও বানাতে পারিস নাকি ?
- হ্যাঁ, পারি পারি, আরও কত কি পারি, তুই জানিস না শুধু ।
- তা তুই এত রাত জেগে ? পড়াশুনা আছে নাকি ?
- না ।
- তাহলে ?
- আমার খুব ভয় করছে ।
- ভয় করছে মানে ?
- আমার রুমে হঠাৎ করে বজ্রপাতের শব্দ পেলাম । সারা ঘর যখন আলোকিত হয়ে গেলো, তখন রুমের কোনায় কে যেন বসে কাঁদছিল, তাই দেখলাম ।
- কি বলিস উল্টাপাল্টা ? কে আসবে আবার বাড়িতে ? তুই নির্ঘাত ভুল দেখেছিস । যা ঘুমাতে যা । নিশ্চয়ই দুঃস্বপ্ন দেখেছিস ।
- না, ভাইয়া, আমি নিশ্চিত ঐটা দুঃস্বপ্ন না । তুমি একবার গিয়ে ঘুরে এসো গিয়ে, আমি এখানেই আছি ।
- আচ্ছা, দাড়া, তাহলে আমি দেখেই আসি ।

কল্লোলের বুক টিপ টিপ করে কাঁপছে । তবুও সে কোনরকমে সাহস করে আফিফার রুমে গিয়ে ঢুকলো । রুমের বাতি জ্বালানো মাত্রই জোরে চিৎকার দিয়ে কল্লোল বেহুশ হয়ে গেলো । তার চিৎকার শুনে আফিফা ও তাদের বাবা-মা সবাই কল্লোলের কাছে দৌড়ে আসলো । অনেক বার মুখে পানি ছিটানোর পর কল্লোলের জ্ঞান ফিরলো ।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঐ বাসাটা ওরা ছেড়ে দিয়েছে । কারণ কল্লোল রুমের বাতি জ্বালানো মাত্রই দেখেছিল আফিফা শুয়ে আছে । অথচ ও একেবারেই নিশ্চিত আফিফাকে চা পান করা অবস্থায় রেখেই ও এই রুমে ঢুকেছিল । এমনকি কল্লোল নিজের চায়ের কাপের অর্ধেক চা সহ-ই পেয়েছে । সে সবাইকে এই কথা বললে তখনই সিদ্ধান্ত হয় ঐ বাসাটা ছাড়ার । তবে সেদিন আসলে কি হয়েছিল, এই ব্যাপারটা হয়তো আজীবন রহস্যই থেকে যাবে ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:২৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সেই ছাদে হাঁটাহাঁটি, সেই রাতের ডাক, সেই আদিম কাহিনী- সেইম স্টোরি /:)

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৮

মোশারফ হোসেন ০০৭ বলেছেন: ভূতেরাও আধুনিক হয়ে গেছে নাকি ভাই !!! জানতাম না তো :D B-)

২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৫

পাগলাগরু বলেছেন: এই গল্প পাবলিক খাইবো না। আরেকটু হার্ডকোর লেখেন

৩| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:১৭

HARUNUR-RASHID বলেছেন: ভালোই তো!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.