নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেলাশেষে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় আসলাম সামুর তীরে, রেখে যেতে চাই কিছু অবিস্মরণীয় কীর্তি । পারি না আর না পারি, চেষ্ঠার ত্রুটি রাখবো না, এই ওয়াদা করছি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭

একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

টয়লেট কিংবা বাথরুম ব্যবহার রুচির বহিঃপ্রকাশও নির্দেশ করে । এমন কিছু কি করা উচিৎ যা নিজের সাথে সাথে নিজের পরিবারের মান-সম্মানকেও ঝুঁকির মুখে ফেলে ?? X( X((

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩০

বাংলা ভাষায় সম্বোধনের ধরন তিনটি । "আপনি", "তুমি" এবং "তুই" । আমাদের দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজির ক্ষেত্রে অবশ্য সম্বোধন একটিই "YOU" । ইংরেজিতে যেমন YOU লিখলেই তুমি, তুই, আপনি সবই বুঝায় কিন্তু এর কারণে কনফিউশনে তৈরিও হয় ভীষণ । বাংলা ভাষায় এই কনফিউশন তৈরি হয়না । আমরা বাঙালিরা অবশ্য এসব কনফিউশনের ধার ধারি না । আমাদের কাছে সম্বোধনগুলো শুধুমাত্র আবেগের বহিঃপ্রকাশ মাত্র ।

হঠাৎ করে কোন ছেলের যদি কোন মেয়ের সাথে পরিচয় হয়, হোক সে সমবয়সী কিংবা বয়সে বড়, সরাসরি আপনি সম্বোধনটা চলেই আসে । অবশ্য বয়সে ছোট হলে তুমি বলতেও সময় লাগে না । এরপর সময়ের পরাক্রমে এই আপনিগুলো সব তুমি হয়ে যায় । তবে তুই সম্বোধনটা কখনই আসে না এইক্ষেত্রে । মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই । আসলে আমার এতগুলো কথা বলার অর্থ সম্বোধন নিয়ে কাহিনী লেখা নয় বরং একটা উপদেশমূলক কথা বলার জন্য ।

যারা বাড়ির বাইরে বিভিন্ন প্রয়োজনে হোস্টেলগুলোতে কিংবা মেসগুলোতে থাকে, পড়াশুনার কাজে ভার্সিটির হলগুলোতে থাকে তারা ভালোকরেই জানে টয়লেট কি ধরনের বিড়ম্বনার ব্যাপার । এমনকি এই টয়লেটের সাথে যুক্ত হয় বাথরুমের ব্যাপারটাও । এই বিষয়টা অবশ্য ছেলে-মেয়ে সবার জন্যই সত্য । অনেকে মিলে একসাথে এক জায়গায় থাকার কারণে এবং বিভিন্ন জায়গার মানুষের মানুসিকতা বিভিন্নরকম হওয়ার কারণে এই টয়লেট ও বাথরুম দিয়েও মানুষের রুচির বহিঃপ্রকাশ ঘটে । বাথরুম ব্যবহার করে অযথা নোংরা করা, টয়লেটে ঠিকমত পানি না দেওয়া কিংবা পানি দিতে কৃপণতা করা ইত্যাদি আরও গভীরের কথা নাইবা বলি । এই বিষয়টা অবশ্য রাস্তাঘাটে পাবলিক টয়লেটগুলোতেও দেখা যায় । সেখানে টাকা দিয়ে টয়লেট ব্যবহার করতে হয় বলে নানান কিসিমের মানুষ নানানভাবে সেই টয়লেটের ব্যবহার-সদ্ব্যবহার করে । কেউ কেউ আবার ইচ্ছা করেই টয়লেট নোংরা করে চলে আসে, যেন টাকা দিয়ে সে পুরোপুরি টয়লেটের মালিকই হয়ে গেছে । এই কথাগুলো আমরা সবাই কমবেশি জানি ।

কিন্তু সমস্যা আরও আছে । আমাদের মধ্যে অনেক শিক্ষিত-অশিক্ষিত মানুষ সেই ব্যাপারের বিরোধিতা করার চেষ্ঠা করে । এদেরকে সাধারণ সচেতন নাগরিকের ক্যাটাগরিতে ফেলানো যায় । তবে এই সচেতন নাগরিকগুলোই আবার সেই কাজের বিরোধিতা করতে গিয়ে নানানভাবে সেই বিরোধী মনোভাব প্রকাশ করে । টয়লেটের গায়ে গালাগালি, তুই-তোকারি করে তিরস্কার, মা-বাবাকে নিয়ে অতি অশ্লীলকথা বলা, এমনকি বোন-বউ-কন্যা নিয়েও বাজে কথা বলতে ছাড়ে না এই সচেতন নাগরিকের ক্যাটাগরির লোকজন । কতটা আজব এই ঘটনা !!! আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, আমি হয়তো পাবলিক টয়লেটের কথা বলছি । জী না, আমি হোস্টেল কিংবা মেস কিংবা হলের টয়লেটেও এমন অনেক লেখা নিজের স্বচক্ষে দেখেছি । আমি নিজেও অবাক হয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের মত এত উঁচু একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হয়েও কিভাবে লিখতে পারে এই অশ্লীল কথাগুলো এরা !!! আমি মানছি যে যারা বাথরুম কিংবা টয়লেট নোংরা করে, এরা খারাপ । তাহলে এই সচেতন নাগরিক ক্যাটাগরির মানুষগুলো কি মশাই ? এরা তো শুধু খারাপ না জঘন্য ।

আমার নিজের সাথে হয়েছে এমন একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করি তাহলে । আমি একটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হলের চারতলায় থাকি । এই চারতলা অন্যান্য তলাগুলোর চেয়ে নতুন আর বেশ ছিমছাম । প্রথম যখন হলে উঠি তখন এক-দুই বছর কোন ঝামেলা নেই । ২ বছর শেষ হতে না হতেই এক ব্যাচের কয়েকজন নেমে যেয়ে যখন নতুন ব্যাচের কয়েকজন উঠলো, তখনই খেয়াল করলাম টয়লেট বেশ নোংরা হচ্ছে । মোটামুটি কে এটা নিয়মিত করছে, এটা বুঝা না গেলেও আমরা চারতলার করিডরের সবাই একদিন নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে একে অন্যকে এই কাজটি করতে মানা করে দিলাম । ফলস্বরূপ বেশ কয়েকদিন টয়লেট আর নোংরা হলো না । কিন্তু আবার কয়েকদিন পরে যা তাই । একজন অভিনব এক উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করলো । সে করলো কি কাগজে খুব জ্ঞানী জ্ঞানী ভাষায় "তুই কি বলদ ? তুই কি শিক্ষিত না ? তুই কি ভার্সিটির স্টুডেন্ট না ? যদি শিক্ষিত হয়ে থাকিস তাহলে পানি দিয়ে যা ভালোভাবে" ইত্যাদি লিখে তিনটি টয়লেটের দরজায় লাগিয়ে দিলো । একবার ভাবুন তো, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের টয়লেটের দরজায় এমন কাগজও লাগানোর প্রয়োজন হলো !!! কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় তো সিনিয়র-জুনিয়রের আখড়া । এখানে তো যাকে তাকে তুই-তোকারি করা যায় না ইচ্ছা হলেও । ফলস্বরূপ দেখা গেলো, পরেরদিনই কয়েকজন মিলে উদ্যোগ নিয়ে সেই কাগজ ছিঁড়ে ফেলা হলো । এরপর ধীরে ধীরে টয়লেটগুলোও অপরিস্কার হওয়া কমে গেলো নিয়মিত হলের টয়লেট পরিস্কার করা মামাদের কল্যাণে ।

সমস্যা হচ্ছে, শিক্ষিত যে ব্যক্তি অপরকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য কাজটি করলো, তার কি নিজের তুই-তোকারি করাটা ঠিক হয়েছিল ? সে যদি ভদ্রভাবে কথাগুলো উপস্থাপন করতো, খুব কি ক্ষতি হতো ? এভাবেই আমরা অপরকে শিক্ষিত করে তুলতে গিয়ে নিজেরা অশিক্ষিত হয়ে যায়, যা খুবই দুঃখজনক । পরবর্তীতে আমি অন্য আরেকটি ক্ষেত্রে এই "আপনি" সম্বোধন করে পরীক্ষা করেছিলাম যে ফল আসে কি না । আশ্চর্যরকম ফল পেয়েছি আমি হাতেনাতে । সে গল্প না হয় আজ থাক ।

টয়লেট কিংবা বাথরুম ব্যবহার রুচির বহিঃপ্রকাশের একটি অংশ । আপনার পরিবারেরও পরিচয় মেলে এই ক্ষেত্রে । কি দরকার শুধু শুধু নিজের সাথে সাথে পরিবারকেও বদনাম করা ?? একবার ভেবে দেখুন তো ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.