নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেলাশেষে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় আসলাম সামুর তীরে, রেখে যেতে চাই কিছু অবিস্মরণীয় কীর্তি । পারি না আর না পারি, চেষ্ঠার ত্রুটি রাখবো না, এই ওয়াদা করছি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭

একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তমাল আর সুমির পরিণয় - ।। ২য় পর্ব ।।

২৯ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:০৪

যারা ১ম পর্বটি পড়েননি, তাদের জন্য ১ম পর্বের লিংকঃ তমাল আর সুমির পরিণয় - ।। ১ম পর্ব ।।

হঠাৎ কর্কশ আওয়াজে ট্রেন ব্রেক কষায়, কল্পনার জগৎ থেকে বাস্তবে ফিরে এলো তমাল । আরেকটি স্টেশন ধরতে চলেছে ট্রেনটি । সুমি এখনও চোখ বন্ধ করে আছে, সম্ভবত ঘুমাচ্ছে । তমাল আর সুমি হানিমুনে যাচ্ছে । প্রথমে ঢাকা থেকে ট্রেনে করে সিলেট, সেখানে একদিন এরপর প্লেনে করে কক্সবাজার । দুইদিন কক্সবাজার কাটিয়ে এরপর সেন্টমার্টিন । সেখানেও তিনদিনের মত থেকে ফিরতি পথ ধরা হবে । তমাল অবশ্য সিলেট পর্যন্তও প্লেনে যেতে চেয়েছিল কিন্তু সুমির অনুরোধেই এই ট্রেন যাত্রা । হানিমুনে দেশের বাইরে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল তমালের কিন্তু অফিস থেকে মাত্র একসপ্তাহের ছুটিই পেয়েছে সে । তাছাড়া সুমির ভার্সিটিতেও ক্লাস মিস যাচ্ছে । সবকিছু ভেবেই দেশের ভিতরেই হানিমুনের প্ল্যান করা হয়েছে । ট্রেন পুরোপুরি থেমে গেলো স্টেশনে এসে । কোন স্টেশন, নাম দেখার জন্য ট্রেনের বাইরে তাকানোর উদ্যত হতেই সুমির কাশির আওয়াজ শুনলো তমাল । ভালো করে নামটা দেখতেও পেলো না, আবার মাথা ভিতরে ঢুকিয়ে পানির বোতলটা সুমির দিকে দিলো । সুমি পানির বোতলটা নিয়ে প্রথমে মুখে কিছুক্ষণ ছিটিয়ে এরপর পানি খেলো ।

তমালের কেন জানি খুব হাসি পাচ্ছে । সুমির এই সমস্যাটার কথা তার জানা ছিল না, তাছাড়া সুমিও তাকে তেমন কিছু বলেনি আগে । হঠাৎ তমাল ভাবলো, সুমির প্রতি একটু রাগ দেখাতে হবে । সারাক্ষন প্রেম দেখালে পরবর্তীতে এই মেয়ে মাথায় চড়ে বসবে, তখন হবে আরেক জ্বালা । সেই কপট রাগ ভাব নিয়েই তমাল সুমির দিকে তাকালো । সুমি তমালের এই দৃষ্টির সাথে পরিচিত নয় । সুমি ভিতরে ভিতরে একটু ভয় পেয়ে গেলো ।

- এই মেয়ে, তোমার এমন বমি করার স্বভাব আছে, বলোনি কেন ?

তমালের মুখ থেকে এমন প্রশ্ন শুনে সুমি আমতা আমতা করতে লাগলো ।

- ইয়ে মানে, ইয়ে মানে...

সুমির এমন আচরণ দেখে তমালের আরও হাসি পেলো । কিন্তু এমন রাগ রাগ অবস্থা থেকে হঠাৎ হেসে দিলে, নতুন বউ আবার তাকে পাগল ভাবতে পারে । তাই তমাল অনেক কষ্টে হাসি চেপে রাখলো । তবু সে সেই কপট রাগ দেখিয়ে অভিনয় চালিয়ে যেতে লাগলো,

- কি ব্যাপার, কথা বলছো না কেন ?
- (সুমি নিচু গলায় মাথা নিচু করেই বললো) এরকম হয় না তো, এই কারণেই বলিনি ।

ইশ, তমালের খুব মায়া লাগছে এখন এই মেয়েটার জন্য । তার মনে প্রচণ্ড ইচ্ছে হতে লাগলো, সুমিকে এখনই বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলতে, আরে, এ কোন ব্যাপার না । এরকম তো হতেই পারে । আমি আছি না ...... !!! কিন্তু এমনটা বলে ফেললে, সে যে অভিনয় করছে, সেটা ধরা পড়ে যাবে । তাই অনেক কষ্টেই নিজের ইচ্ছেটা দমন করলো সে ।

- হয় না !!?? তো একটু আগে কি হলো ?
- না, মানে, হঠাৎ সিগারেটের গন্ধ আসলো তো নাকে, এই জন্যই হয়তো । আমি আবার সিগারেটের গন্ধ সহ্য করতে পারি না ।
- ইশ !! এসেছে কোন মহারানী !!! উনার জন্য একা একটা ট্রেনের বগি ম্যানেজ করতে হবে, এরপর সেখানে এয়ার ফ্রেশনার স্প্রে করে সুন্দর গন্ধ সৃষ্টি করতে হবে, কারণ মহারানী আরাম করবেন !! তাই না ?

তমালের এই কথাগুলো সত্যি সত্যি সুমির লেগে গেলো । তার হঠাৎ প্রচণ্ড কান্না পেয়ে গেলো । নতুন একটা মানুষ, যার জন্য চিরচেনা নিজের বাড়ি, নিজের বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন সবকিছু ছেড়েছুঁড়ে চলে এসেছে, সেই মানুষটা কিনা তাকে শাসন করছে, ভাবতেই চোখ দিয়ে পানি দিয়ে চলে এলো সুমির । সুমির চোখে পানি দেখে তমাল ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো । এ কি !! তার অভিনয় তো আনন্দের বদলে আরও হিতে বিপরীত হয়ে গেছে, এখন উপায় ?

(বাকী পর্বগুলো ধীরে ধীরে আসবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.