![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৈত্রিক সূত্রে আমি রাজাকারের নাতি। মাতৃক সূত্রে আমি মুক্তিযোদ্ধার নাতি। শুনেছি মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকাররা ধর্মের নাম নিয়ে অধর্ম করত। আর মুক্তিযোদ্ধারা অধর্মকে ভালোবেসে সবার তরে কাজ করত। তাদের কাছে ধর্ম নয়, মানবতাই ছিল বড়। কিন্তু রাজাকারদের কাছে ধর্মের চেয়ে অধর্ম সবচেয়ে বড় ছিল।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের কাঠের দোতালা দালান ছিল। উপরের তলায় দাদা-দাদী, বাবা-চাচা ও ফুফুরা বাস করত। আর নিচের তলায় রাখা হত সকল মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র। অর্থাৎ, নিচতলা ছিল অস্ত্রাগার।
কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার দাদা ও তার সহযোগী বন্ধুরা সবাই রাজাকারদের তোষামেদ করত। রাজাকারের ক্যাম্পটা খুব কাছে থাকায় আর কোন উপায় ছিলনা। যদি ঘাড়তেরা আচরণ করা হত তবে পাকীরা জেনে ফেলত অস্ত্র ভাণ্ডারের কথা তাহলে বরঞ্চ মুক্তিযোদ্ধাদের বিপদ হত। তো এইভাবেই আমার দাদা রাজাকারের দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। যেহেতু তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের অংশ নেননি এবং মুক্তিযুদ্ধাদের অস্ত্র টিকিয়ে রাখার জন্য পাকীদের তোষামেদ করেছিলেন তাই তিনি উত্তম রাজাকার।
অন্যদিকে আমার নানা মুক্তিযুদ্ধের সময় কমান্ডার হয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তিনি কোন ধরনের মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট চাননি। তিনি চেয়েছিলেন সম্মান। সেই সম্মাননা অবশ্য তিনি বঙ্গবন্ধুর হাতের গোল্ড মেডেল ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকেই পেয়েছিলেন।
আজ আমার নানা-দাদা কেউই বেঁচে নেই। সবাই মারা গেছে। কিন্তু লোকজনের তাদের উভয়ের প্রতিই শ্রদ্ধাবোধ ছিল। কেউ রাজাকার ছিল বলে, আর কেউ মুক্তিযোদ্ধা ছিল বলে। আমিও উভয়কেই ভালোবাসতাম।
কিন্তু, বর্তমান সময়ে কোনটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আর কোনটা রাজাকারের চেতনা সেটা নিয়ে আমি গোলক ধাঁধাঁয় আছি। কেউ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার হয়ে বিভিন্ন লুটতরাজ, রাহাজানি, খুন-ধর্ষণ করছে। আর কেউ রাজাকারের চেতনার ট্যাগ মাথায় নিয়ে সত্য প্রচার করে যাচ্ছে।
তবে সত্যিকার অর্থে এই চেতনাগুলোর মাঝে প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের মনমানসিকতা যেমন নেই, তেমনি যাদেরকে রাজাকার ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে তাদের মাঝেও বিন্দুমাত্র রাজাকারী চেতনা নেই। সত্য কথা হলঃ দেশপ্রেমের সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। দেশপ্রেম হয়ে গেছে চেতনা ব্যবসায়ীদের নাস্তিক্যবাদ প্রেম, ভারতপ্রেম, ভারতের দালালী। আর ধর্ম প্রেমটা এখন শুধুমাত্র জামাত-শিবিরের নিজস্ব সম্পত্তি। আর কেউ এটার দাবীদার হতে পারবেনা। আর যাই বলেন আমি কিন্তু এই নানা-দাদার নাতি হওয়ায় গর্ববোধ করি। কারণ এরা নিজের কথা ভাবেনি ভেবেছে অন্যের কথা।
২| ২৩ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:০৮
নিয়েল হিমু বলেছেন: কয়েক লাইন আরেকটু ডিটেল বলা দরকার ছিল ।
৩| ২৩ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১:১১
মাইন রানা বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধের অস্ত্র রক্ষায় যদি তিনি রাজাকারদের তোষামদও করে থাকেন তবুও তিনি মুক্তিযুদ্ধ। এটা ছিল দেশের জন্য, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তাঁর কৌশল
৪| ২৩ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৭
মাহমুদুর রাহমান বলেছেন:
৫| ২৩ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৪
একজন ঘূণপোকা বলেছেন: কাদের সিদ্দিকীরে দেখে বুঝেন না কোনটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর কোনটা রাজাকারে চেতনা।
৬| ২৩ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:৪০
বিজ্ঞানী সিমুল বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:৫৬
খাটাস বলেছেন: আজিব ঘটনা , কিন্তু ভাল লাগল। আপনার দাদা নানা কে শ্রদ্ধা জানাই।
আপনি বলেছেন, কেউ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার হয়ে বিভিন্ন লুটতরাজ, রাহাজানি, খুন-ধর্ষণ করছে। আর কেউ রাজাকারের চেতনার ট্যাগ মাথায় নিয়ে সত্য প্রচার করে যাচ্ছে
প্রথম কথা টা ঠিক, কিন্তু দ্বিতীয় কথা টা ঠিক না। আপনার ভাষায় যারা রাজাকারের ট্যাগ নিয়ে সত্য প্রচার করছে, তারা শুধু বর্তমানের সরকারের কিছু অপরাধ এর সত্য তুলে ধরছে, আবার মানুষ কে বিভ্রান্ত ও করছে। কিন্তু আপনার ভাষায় রাজাকারের ট্যাগ পাওয়া গোষ্ঠী কেও ই ৪২ বছর আগের সত্য টা প্রচার করছে না বা সেই ব্যাপারে কোন ব্যাখ্যা ও দিচ্ছে না।
ভাল থাকবেন।