নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই ব্লগটি ডাঃ মুশফিক ইমতিয়াজ চৌধুরী দ্বারা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বাংলাদেশ কপিরাইট আইন, ২০০০ এর লংঘন একটি শাস্তিযোগ্য ও দণ্ডনীয় অপরাধ। লেখকের অনুমতি ব্যতীত কোনো আর্টিকেল কোনো গণমাধ্যমে যেমনঃ ম্যাগাজিন, ফেসবুক, ব্যক্তিগত ব্লগ, সামাজিক মাধ্যম, পত্রিকা কিংবা ওয়েবসাইটে প্রকাশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
আজ ১৭ মার্চ, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের মহাস্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী তথা জাতীয় শিশু দিবস। ১৯২০ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ার সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
আজ এই বিশেষ দিনে বঙ্গবন্ধু নিয়ে এদেশের যুবসমাজের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর দ্বারা সুকৌশলে ঢুকিয়ে দেওয়া একটি মিথ্যে প্রচারণা প্রসঙ্গে আলোচনা করবো। এই গোষ্ঠী অভিযোগ তোলে যে, বঙ্গবন্ধু নাকি ইসলাম বিরোধী/ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন ! আসলেই কী তাই ?
প্রকৃত সত্যঃ
১৯৭০ সালে সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে পাকিস্তান বেতারে জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন -
"আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে, আমরা ইসলামে বিশ্বাসী নই, একথার জবাবে আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য, আমরা লেবাসসর্বস্ব ইসলামে বিশ্বাসী নই। আমরা বিশ্বাসী ইনসাফের ইসলামে। আমাদের ইসলাম হজরত রাসূলে করীম (সা)-এর ইসলাম, যে ইসলাম জগতবাসীকে শিক্ষা দিয়েছে ন্যায় ও সুবিচারের অমোঘ মন্ত্র"।
ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে ১৯৭২ সালের ৪নভেম্বর শেখ মুজিবুর রহমান গণপরিষদে বলেন -
"ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মকর্ম করার অধিকার থাকবে। আমরা আইন করে ধর্মকে বন্ধ করতে চাই না এবং করবো না। মুসলমানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, তাদের বাধা দেওয়ার ক্ষমতা এই রাষ্ট্রে কারো নাই। হিন্দুরা ধর্ম পালন করবে, তাদের কেউ বাধা দিতে পারবে না। আমাদের শুধু আপত্তি হলো এই যে, ধর্মকে কেউ রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না। ২৫ বছর আমরা দেখেছি, ধর্মের নামে জুয়াচুরি, ধর্মের নামে শোষণ, ধর্মের নামে বেঈমানি, ধর্মের নামে অত্যাচার, খুন, ব্যভিচার - এই বাংলাদেশের মাটিতে এসব চলেছে। ধর্ম অতি পবিত্র জিনিস। পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না"।
সূত্রঃ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সম্পাদনাঃ ডঃ মিজানুর রহমান মিজান পৃষ্ঠা ১১৬
১৯৭৪ সালের ১৮ই জানুয়ারিতে প্রদত্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন -
"রাজনীতিতে যারা সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে, তারা হীন, নীচ, তাদের অন্তর ছোট। যে মানুষকে ভালোবাসে, সে কোনোদিন সাম্প্রদায়িক হতে পারে না। আপনারা যারা এখানে মুসলমান আছে, তারা জানেন যে, খোদা যিনি আছেন, তিনি রাব্বুল আলামীন, রাব্বুল মুসলেমীন নন। হিন্দু হোক, খ্রিষ্টান হোক, মুসলমান হোক, বৌদ্ধ হোক সমস্ত মানুষ তাঁর কাছে সমান। সেই জন্যই এক মুখে সোশ্যালিজম ও প্রগতির কথা এবং আর এক মুখে সাম্প্রদায়িকতা পাশাপাশি চলতে পারে না। একটা হচ্ছে পূর্ব আর একটা হচ্ছে পশ্চিম। যারা এই বাংলার মাটিতে সাম্প্রদায়িকতা করতে চায়, তাদের সম্পর্কে সাবধান হয়ে যাও"।
সূত্রঃ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সম্পাদনাঃ ডঃ মিজানুর রহমান মিজান পৃষ্ঠা ১৫৭
১৯৭২ সালের ৯ই মে রাজশাহী মাদ্রাসা ময়দানে বঙ্গবন্ধু বলেন -
"আর সাম্প্রদায়িকতা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বাংলাদেশ। মুসলমান তাঁর ধর্মকর্ম করবে। হিন্দু তার ধর্মকর্ম করবে। বৌদ্ধ তার ধর্মকর্ম করবে। কেউ কাউকে বাধা দিতে পারবে না। ইসলামের নামে আর বাংলাদেশের মানুষকে লুট করে খেতে দেওয়া হবে না। পশ্চিমারা ২৩ বছর ইসলামী ট্যাবলেট দেখিয়ে আমাদের লুটেছে। আপনারা জানেন ? খবর রাখেন ? এই বাংলা থেকে ২৩ বছরে তিন হাজার কোটি টাকা পশ্চিমারা আমার কৃষকের কাছ থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে গেছে"।
সূত্রঃ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সম্পাদনাঃ ডঃ মিজানুর রহমান মিজান পৃষ্ঠা ৬৬
১৯৭২ সালের ঐতিহাসিক ৭ই জুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু বলেন -
" চতুর্থত বাংলাদেশ হবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। ধর্মনিরপেক্ষ মানে ধর্মহীনতা নয়।...এ মাটিতে ধর্মহীনতা নাই, ধর্মনিরপেক্ষতা আছে। এর একটা মানে আছে। এখানে ধর্মের নামে ব্যবসা চলবে না। ধর্মের নামে মানুষকে লুট করে খাওয়া চলবে না। ধর্মের নামে রাজনীতি করে রাজাকার, আল বদর পয়দা করা বাংলার বুকে আর চলবে না। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না"।
সূত্রঃ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সম্পাদনাঃ ডঃ মিজানুর রহমান মিজান পৃষ্ঠা ৭৮
১৯৭২ সালের ১২ই অক্টোবর গণপরিষদে প্রদত্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন -
"আর হবে ধর্মনিরপেক্ষতা - ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়।...রাজনৈতিক কারণে ধর্মকে ব্যবহার করা যাবে না। যদি কেউ ব্যবহার করে তাহলে বাংলার মানুষ তাকে প্রত্যাঘাত করবে - এ বিশ্বাস আমি করি"।
সূত্রঃ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সম্পাদনাঃ ডঃ মিজানুর রহমান মিজান পৃষ্ঠা ১০৫
আরেকটি ব্যাপার হলো -
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতাও শেখ মুজিবুর রহমান। বাকশাল গঠন করার পর একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের ২২ মার্চ পাকিস্তান আমলে গঠিত বায়তুল মুকাররম সোসাইটি ও ইসলামিক একাডেমি ঢাকা-কে একীভূত করে "ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ" গঠন করা হয়। এরপরেও শেখ মুজিবুর রহমানকে ধর্মবিরোধী/ধর্মহীন বলে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হয়।
এদিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের পুস্তিকা থেকে জানা যায় -
"জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মুসলিম বিশ্বের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ১৯৭৪ সালে লাহৌরে অনুষ্ঠিত ইসলামি সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) অধিবেশনে যোগদান করেন। ওআইসি সম্মেলনে যোগদান করে ইসলাম ও বাংলাদেশ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু মুসলিম নেতৃবৃন্দের সামনে যে বক্তব্য তুলে ধরেন এতে আরবসহ মুসলিম বিশ্বে বাংলাদেশের ভাব-মর্যাদা সমুন্নত হয় এবং মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দের সাথে সুদৃঢ় ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ে ওঠে"।
সূত্রঃ ইসলামের প্রচার-প্রসারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অবদান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সাফল্যচিত্র : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ২০১৩।
উক্ত পুস্তিকার সূত্রে বঙ্গবন্ধুর ইসলামের প্রচার ও প্রসারের তালিকা নিম্নরূপঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশ সীরাত মজলিশ প্রতিষ্ঠা, হজ পালনের জন্য সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা, সমুদ্রপথে হজ যাত্রীদের জন্য জাহাজ ক্রয়, মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড পুনর্গঠন, বেতার ও টিভিতে কুরআন তিলাওয়াত প্রচার, পবিত্র ইদে মিলাদুন্নবী (সা) শবেকদর শবেবরাত উপলক্ষে সরকারি ছুটি, মদ জুয়া হাউজি ও অসামাজিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ এবং শাস্তির বিধান, ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা নিষিদ্ধকরণ, বিশ্ব এজতেমার জন্য টঙ্গিতে সরকারি জমিজায়গা বরাদ্দ, কাকরাইলের মারকাজ মসজিদ সম্প্রসারণের জন্য জমি বরাদ্দ, রাশিয়াতে প্রথম তাবলিগ জামাত প্রেরণের ব্যবস্থা এবং আরব-ইজ়রায়েল যুদ্ধে আরব-বিশ্বের পক্ষ সমর্থন ও সাহায্য প্রেরণ ইত্যাদি।
এখান থেকে সিদ্ধান্ত টানা যায় যে,
১) বঙ্গবন্ধু ধর্মহীন বা ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন না বরং তিনি মনে প্রাণে একজন মুসলিম এবং পাশাপাশি একজন ন্যায়বিচারক রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে সকলের সমানাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে 'সর্বধর্মবাদ/প্যানথেইজম' এ বিশ্বাসী ছিলেন।
২) ইনসাফ বা ন্যায়বিচারের ইসলামই বঙ্গবন্ধুর অনুসরিত আদর্শ ছিলো।
৩) তুচ্ছ রাজনৈতিক স্বার্থ বা স্বীয় স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ভণ্ডরা ইসলামকে সুকৌশলে যেভাবে ব্যবহার করে এবং ইসলামের অবমাননা করে - বঙ্গবন্ধু তার চরম বিরোধী ছিলেন।
৪) বঙ্গবন্ধুই স্বাধীন বাংলাদেশে প্রকৃত ইসলামের প্রচার এবং প্রসারের পক্ষে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।
৫) ধর্মনিরপেক্ষতার শব্দটির মধ্যে একটা দ্ব্যর্থকতা বা Double Meaning আছে যেটাকে মুজিব বিরোধী সাম্প্রদায়িক তথা ধর্মান্ধ চক্র খুব সুকৌশলে ব্যবহার করে তাঁকে ধর্মনিরপেক্ষ/ধর্মহীন/ইসলাম বিরোধী বলে প্রতিপন্ন করতে চায়। এমনকি এসব করার জন্য তারা তাকে হিন্দু বলেও অপপ্রচারে রত হয় যেখানে বাস্তবতা হচ্ছে ১২০৪ সালে ইখতিয়ারউদ্দীন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজী আসার আগে ১৮কোটি বাংলাদেশীর পূর্বপুরুষদের সকলেই হিন্দু কিংবা বৌদ্ধ ছিলেন, ১জনও মুসলিম ছিলেন না।
পরিশেষে কবির ভাষায় বলতে হয় -
"যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান
ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।
দিকে দিকে আজ অশ্রুমালা রক্তগঙ্গা বহমান
তবু নাই ভয় হবে হবে জয়, জয় মুজিবুর রহমান"।
কবিঃ অন্নদাশঙ্কর রায়
রচনাঃ ৬ই ডিসেম্বর, ১৯৭১।
সকলকে ধন্যবাদ।
১৭ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:০৮
নান্দনিক বুদ্ধিপ্রকর্ষ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
"বক ধার্মিকরা যেমন ভয়াবহ - তথাকথিত এই ধর্মহীনতার শ্রেণীও তার চেয়ে কোন অংশে কম ভয়াবহ নয়" !
আপনার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আমার বক্তব্য হলো -
বকধার্মিকেরা ভয়াবহ তবে ধর্মহীন এবং ধার্মিক - উভয়ের মধ্যে ভালো-খারাপ 'মিশ্রিত' অবস্থায় আছে অর্থাৎ কেউ ভালো কেউ খারাপ। এখানে সাদা-কালো দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে না দেখে মাঝের ধূসর অবস্থাটা অনুধাবন করাটা গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমি মনে করি -
১) বাংলাদেশে ধার্মিক শ্রেণী বলে পরিচিত বিশাল অংশ আসলে উগ্র ধর্মান্ধ।
২) বাংলাদেশে ধর্মহীন শ্রেণীর কেউ কেউ উগ্রতায় বিশ্বাসী যেমনঃ আসিফ মহীউদ্দিন, থাবাবারা রাজীব হায়দার ইত্যাদি।
৩) বাংলাদেশের সকল ধর্মহীনেরাই উগ্র নয়, সকল ধার্মিকেরাই উগ্র নয়।
৪) আমাদের দেশের ধর্মহীন শ্রেণী উগ্র ধর্মান্ধদের দ্বারা অত্যাচারিত ও নিগৃহীত হতে হতে নিজেরাও একসময় উগ্র হয়ে পড়ে।
৫) ধর্মহীনদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ শেখ মুজিবুর রহমান মুসলিম হওয়ার পরেও তাঁর অবদানকে স্বীকার করতে কুণ্ঠিত নয়।
ধন্যবাদ।
২| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:১৮
হাবিব শুভ বলেছেন: আমিও একমত ধর্মের নামে কোন রাজনীতি হতে পারে না। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। প্রতিটা মানুষকেই যার যার ধর্ম পালন করার স্বাধীনতা দিতে হবে। ইসলামে জোর করে অন্যধর্মের মানুষ ইসলাম ধর্মে আনার ইতিহাস নেই। ইসলাম কখনো বলে নি অন্যধর্মের উপর আঘাত হানো। ইসলাম শান্তির ধর্ম।
১৭ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:৪১
নান্দনিক বুদ্ধিপ্রকর্ষ বলেছেন: ১) আমিও একমত ধর্মের নামে কোন রাজনীতি হতে পারে না।
- সহমত।
২) ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়।
- ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রনায়কের সর্বজনীন প্রেক্ষাপট থেকে বুঝেছেন - সকল ধর্মের মানুষের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা এবং ধর্মকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার না করা। 'রাষ্ট্রনায়কের সর্বজনীন প্রেক্ষাপটের' বদলে যদি 'ব্যক্তিগত প্রেক্ষাপট' থেকে চিন্তা করা হয় তবে ধর্মনিরপেক্ষতা মানে শেষ পর্যন্ত ধর্মনিরপেক্ষতাই কেননা এখানে অন্যান্য মানুষের ধর্মে হস্তক্ষেপ করার বিষয়টি অনুপস্থিত। সুতরাং, 'প্রেক্ষাপট' বিষয়টি এখানে গুরুত্বপূর্ণ। প্রেক্ষাপটের ভিন্নতা অনুযায়ী কেউই ভুল নয়।
৩) প্রতিটা মানুষকেই যার যার ধর্ম পালন করার স্বাধীনতা দিতে হবে।
- সহমত।
৪) ইসলামে জোর করে অন্যধর্মের মানুষ ইসলাম ধর্মে আনার ইতিহাস নেই। ইসলাম কখনো বলে নি অন্যধর্মের উপর আঘাত হানো। ইসলাম শান্তির ধর্ম।
- অন্যধর্ম থেকে ইসলাম ধর্মে জোর করে আনার ইতিহাস আছে। উল্লেখ্য যে, ইসলাম আল্লাহ নিয়ন্ত্রণ করছেন না, ইসলামকে নিয়ন্ত্রণ করছে কতিপয় মানুষ যারা ধর্মগুরু, পীর, আলেম ইত্যাদি সেজে বসে আছে। ইসলাম শান্তির ধর্ম বলে কোরানে লেখা আছে কিন্তু বাস্তবে অনেকেই নিজেকে ইসলামিস্ট পরিচয় দিয়ে অশান্তি বিশৃঙ্খলা কায়েম করার চেষ্টা করছে। সমস্যা হচ্ছে, আপনি এবং অনেকেই এদের 'মুসলিম' বলে স্বীকৃতি দেবেন না। আবার এরাও আপনাদের 'মুসলিম' বলে স্বীকৃতি দেবে না। তখন প্রশ্ন দাঁড়াবে - কারা আসলে প্রকৃত মুসলিম ! সমস্যাটা এখানে।
ধন্যবাদ।
৩| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৫
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
কি আবোলতাবল বলছেন?
বংগবন্ধুকে কে কবে ধর্মহীন বলেছে?
৭১ দেশ স্বাধীন ও ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার পর ইসলাম কি বিপন্ন ছিল?
আজান দিয়ে ৫ ওয়াক্ত নামাজ, ৩০ রোজা, দাড়ী রাখা, হজে গমন, জাকাত দেয়া, কোন বিধিনিষেধ ছিল?
ধর্মহীন শ্রেণীর কেউ কেউ উগ্রতায় বিশ্বাসী যেমনঃ আসিফ মহীউদ্দিন, থাবাবাবা।
এরা কবে কার নামাজে বাধা দিছে? কোন মসজিদে ঢিল দিয়েছে।
থাবা কোরানের একটা পাতাও ছিড়েনি, হাতও দেয়নি।
কিন্তু থাবা বিরোধিরাই ফুটপাতের দোকানে আগুন দিয়ে হাজার হাজার কোরান পুড়িয়েছে, এরপর অনুতপ্তও হয়নি।
১৭ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:২৪
নান্দনিক বুদ্ধিপ্রকর্ষ বলেছেন: বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনি লিখেছেন -
ধর্মহীন শ্রেণীর কেউ কেউ উগ্রতায় বিশ্বাসী যেমনঃ আসিফ মহীউদ্দিন, থাবাবাবা।
এরা কবে কার নামাজে বাধা দিছে? কোন মসজিদে ঢিল দিয়েছে।
আমার উত্তরঃ
আসিফ মহীউদ্দিন কিংবা থাবা বাবা রাজীব কারো নামাজে বাধা দেয়নি বা মসজিদেও ঢিল দেয়নি। কিন্তু এরা ধর্মের বিরুদ্ধে শিষ্ট ভাষায় সুস্থ সমালোচনা করার বদলে গালাগালি ও নোংরামির মাধ্যমে অসুস্থ সমালোচনায় রত হয়েছে যার কারণে ধার্মিক শ্রেণীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মডারেট ইসলাম থেকে উগ্রবাদের দিকে ঝুঁকেছে।
ধর্ম নিয়ে শিষ্ট ভাষায় সুস্থ সমালোচনা কাম্য, অসুস্থ সমালোচনা কাম্য নয়।
একইভাবে, ধর্মান্ধ গোষ্ঠীও অশিষ্ট ভাষায় নাস্তিকতা নিয়ে অসুস্থ সমালোচনা করে গেছে।
ফলে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ধর্মান্ধ ও উগ্র নাস্তিক - উভয়েই দোষী।
চোখের বদলে চোখ - এমনটি সুস্থতার লক্ষণ নয়। ধর্মান্ধ গোষ্ঠী যখন অযাচিতভাবে নাস্তিক্যবাদীদের আক্রমণ করে গেছে, তাতে নাস্তিক্যবাদীদের উচিত ছিলো শিষ্টতা ও ধৈর্যের সঙ্গে সেটিকে মোকাবেলা করা। কিন্তু তাদের সবাই না হলেও একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সেটি না করে ইটের বদলে পাটকেল নিক্ষেপ করেছে, নোংরামিতে রত হয়েছে। চরম অবিবেচকের মতো কাজ হয়েছে এগুলো। ধন্যবাদ।
৪| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৫১
নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভালো লাগলো আলোচনা।
ইতিহাসের মহানায়ক এঁর প্রতি শ্রদ্ধায় শ্রদ্ধাঞ্জলি।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
১৭ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫২
নান্দনিক বুদ্ধিপ্রকর্ষ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনাদের সুচিন্তিত মন্তব্য ও শুভকামনা হোক আমার লেখার অনুপ্রেরণা।
৫| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:২৯
দি রিফর্মার বলেছেন: লেখাটি ভালো লাগলো, সেই সাথে আলোচনাও। শুভ কামনা রইল। ধন্যবাদ।
২৬ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:০১
নান্দনিক বুদ্ধিপ্রকর্ষ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনাদের সুচিন্তিত মন্তব্য ও শুভকামনা হোক আমার লেখার অনুপ্রেরণা।
৬| ২৬ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:২৭
শুজা উদ্দিন বলেছেন: 'সর্বধর্মবাদ/প্যানথেইজম মানে কি সঠিক জানেন ?
২৬ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:০৯
নান্দনিক বুদ্ধিপ্রকর্ষ বলেছেন: জিয়াউর রহমান সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন না তাই তিনি বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম ভিত্তিমূল সমাজতন্ত্রকে ব্যাখ্যা করেছিলেন - সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার অর্থে সমাজতন্ত্র।
একইভাবে, বঙ্গবন্ধু ইসলামে বিশ্বাস করতেন তবে গোঁড়া মুসলিমদের 'ধর্মান্ধ ইসলামে' নয় বরং বঙ্গবন্ধুর নিজের চিন্তাধারাগত 'ইনসাফ বা ন্যায়বিচারের ইসলামে'।
সর্বধর্মবাদ বা প্যানথেইজমের সঠিক সংজ্ঞা - এখানে ইস্যু নয়। এখানে ইস্যু বঙ্গবন্ধু একজন রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে সকল ধর্মকে শ্রদ্ধা করতেন এবং সকল ধর্মের মানুষের অধিকার রাষ্ট্রে নিশ্চিত হোক - এমনটি মনে মনে চাইতেন। এটাকে সহজভাবে বোঝানোর জন্য তথা সেক্যুলারিজমের ডাবল মিনিং এড়োনোর জন্য 'সর্বধর্মবাদ/প্যানথেইজম' শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে এটাকে আক্ষরিক অর্থে না নিয়ে ঘটনার প্রসঙ্গ অনুযায়ী ভাবার্থমূলকভাবে নিতে হবে। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:৩৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ১) বঙ্গবন্ধু ধর্মহীন বা ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন না বরং তিনি মনে প্রাণে একজন মুসলিম এবং পাশাপাশি একজন ন্যায়বিচারক রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে সকলের সমানাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে 'সর্বধর্মবাদ/প্যানথেইজম' এ বিশ্বাসী ছিলেন।
২) ইনসাফ বা ন্যায়বিচারের ইসলামই বঙ্গবন্ধুর অনুসরিত আদর্শ ছিলো।
৩) তুচ্ছ রাজনৈতিক স্বার্থ বা স্বীয় স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ভণ্ডরা ইসলামকে সুকৌশলে যেভাবে ব্যবহার করে এবং ইসলামের অবমাননা করে - বঙ্গবন্ধু তার চরম বিরোধী ছিলেন।
৪) বঙ্গবন্ধুই স্বাধীন বাংলাদেশে প্রকৃত ইসলামের প্রচার এবং প্রসারের পক্ষে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।
৫) ধর্মনিরপেক্ষতার শব্দটির মধ্যে একটা দ্ব্যর্থকতা বা Double Meaning আছে যেটাকে মুজিব বিরোধী সাম্প্রদায়িক তথা ধর্মান্ধ চক্র খুব সুকৌশলে ব্যবহার করে তাঁকে ধর্মনিরপেক্ষ/ধর্মহীন/ইসলাম বিরোধী বলে প্রতিপন্ন করতে চায়।
হুম।
বক ধার্মিকরা যেমন ভয়াবহ - তথাকথিত এই ধর্মহীনতার শ্রেণীও তার চেয়ে কোন অংশে কম ভয়াবহ নয়!