![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মনের খেয়ালে শব্দ শ্রমিক।
আমার বিবেচনায় আমাদের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা একেবারেই অশিক্ষিত শিক্ষা ব্যবস্থা। সত্যিকার অর্থে মানুষ তৈরি করতে হলে আমাদের এই অশিক্ষিত শিক্ষাব্যবস্থাকে আগে শিক্ষিত করতে হবে তবেই না আমরা আশা করতে পারি এইসব মানুষ গড়ার কারখানা থেকে সত্যিই মানুষ বেরিয়ে আসবে। কাঠাল গাছে আম ধরে না, তাই কেউ যদি কাঁঠাল গাছ লাগিয়ে তাতে আমের আশা করে এবং আম না পেয়ে হায় হায় করে তবে সেটা কার দোষ ভাগ্যের, বিধাতার, নাকি নিজেরই। আমাদের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা আসলে মানব সভ্যতার ব্ল্যাক হোল যা প্রতিনিয়ত মানবকুলের শক্তি-সামর্থ্যকে শোষণ করে মানবকূলকে দুর্বল করে রাখছে। তবে এই ব্ল্যাকহোল কিন্তু প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট নয় এটা আমাদের নিজেদেরই সৃষ্টি। আর আমরা চাইলেই এই ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহ্বরকে বিলীন করতে পারি অনায়াশেই।
আমরা জামা কাপড় বানানোর কারিগর এর কাছে জামা কাপড় বানাতে দিলে তা ঠিক ঠাক মত হয়েছে কিনা সেটা দেখে নেই, আর যদি ঠিকঠাক মত না হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে কোনো না কোনো ব্যবস্থা নেই। কিন্তু কোনো এক অজ্ঞাত কারণে আমরা মানুষ গড়ার কারখানায় মানুষ বানানোর জন্য যাদেরকে পাঠাই তারা প্রকৃতপক্ষে মানুষ হলো কিনা তা কখনোই যাচাই বাছাই করি না। এমনকি তা যাচাই বাছাইয়ের কোন মাপকাঠিও নাই। আমরা যদি দর্জিকে পাঞ্জাবি বানাতে দেই আর সে যদি ব্লাউজ বানিয়ে দেয় তাহলে কি আমরা তাকে ছেড়ে দেবো? কিন্তু আমরা যে মানুষ গড়ার কারখানায মানুষ বানাতে দেই এবং মানুষ বানানোর জন্য যতরকম এন্তেজাম সব করি কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে কি মানুষ হিসেবে মানুষ গড়ার কারখানা থেকে বেরিয়ে আসে! খুব স্বাভাবিক বিবেচনাতেই এটা স্পষ্ট যে আমাদের মানুষ গড়ার কারখানাগুলো থেকে অধিকাংশই মানুষ হিসেবে বের হয়না। আরো আশ্চর্য বিষয় এই যে এটা নিয়ে আমাদের কারোই কোন মাথা ব্যাথা নেই এমনকি কেউ কখনো কারো কাছে জবাবও চায় না!। কোন এক অন্ধ বিশ্বাসের কারণে বাবা-মায়েরা তাদের নিজের জীবনের সব সুখ ত্যাগ করে সন্তানকে মানুষ বানানোর আশায় সব কিছু বিনিয়োগ করে আর সন্তানেরা তাদের জীবনের সবচেয়ে গৌরবময় সময় মানুষ হওয়ার (অনর্থক) প্রচেষ্টায় ব্যয় করে। বর্তমান পৃথিবীতে এই মানুষ বানানোর আর মানুষ হওয়ার তাবৎ এন্তেজামই মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড় ভুল এবং অপচয় এমনকি আত্মঘাতিও বটে। এই ভুল প্রচেষ্টার ফলে একদিকে যেমন মানবকুলের সময় ও সম্পদের বিশাল অপচয় হচ্ছে তেমনি অপরদিকে মানব মস্তিষ্কে অপ্রয়োজনীয় ও বিষাক্ত জ্ঞান প্রবেশ করছে যা যে কোন ভয়ঙ্কর ভাইরাস এর চেয়েও মারাত্মক। এই বিষাক্ত ভাইরাস এতটাই বিষাক্ত যে এতে আক্রান্ত কেউই তা নিজে বোঝে না কিন্তু এর ক্ষতিকর প্রভাব চলে নিরন্তর। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ বর্তমানে মানবকুল মানব মঙ্গলের চেয়ে মানব ধ্বংসেরর পেছনে অনেক বেশী মেধা, শ্রম ও অর্থ ব্যায় করে ।
©somewhere in net ltd.