নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপন মনের আয়নায় দেখা অনুর্বর মস্তিষ্কের অর্বাচীন ভাবনা!

SM MIJANUR RAHMAN

মনের খেয়ালে শব্দ শ্রমিক।

SM MIJANUR RAHMAN › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিষাক্ত জ্ঞান!

২১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৫:৪৫

জ্ঞান বীজ 1) " খোকন যাবে শশুড় বাড়ী টোপর মাথায় দিয়ে।"=> জ্ঞান বৃক্ষ - একেবারে শৈশবেই বিয়ে করা ফরজ।"

জ্ঞান বীজ 2) "লেখা পড়া করে যে গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে।"=> জ্ঞান বৃক্ষ– জীবন মানে গাড়ী-ঘোড়ায় চরা আর লেখা পড়া না জানলে টিকিট চেকার ঠকাবে ।

ফলাফল: সময়ের তেলে 1) ও 2) নং জ্ঞান বৃক্ষের গাছ পাকা ফলের আচার যা ষড়রিপুর বয়ামে প্রজ্ঞা নামে বাজারজাত কৃত:- "মানবকূলের জন্ম নারী আর গাড়ীর জন্য, এই দুইটা যত বেশী ততই জীবন ধন্য!"


পাদটিকা: সেই শিশু কাল থেকেই জ্ঞান বুদ্ধি আমার যতটা কম ভয় ততটাই বেশী। আকাশের তারা গুনে শেষ করা গেলেও আমার ভয়ের উৎস গুনে শেষ করা যাবে না। আর সরস্বতির গোস্বার কারণে বিদ্যা তো আর হলই না। তার উপর ইদানিং আমাকে দিবা নিশি ভয় দেখিয়ে তটস্থ রাখে “পরাজয়ের ডর” নামে এক মাফিয়া।

অগত্যা ভয়ে ভয়ে আমার গুরুকে একদিন আরজি জানালাম, "গুরু তোমার দোয়ায় ধন্য আমি ভয় করি না অকাল মরণ, কিন্তু আমার পরাণ না থাকিলে কে সেবিবে তোমার চরণ?" গুরু ভূঁরু কুঁচকে বললেন, "ভণিতা ছেড়ে বল চাস কি, এর আগে চেয়ে কি পাসনি!" কাঁচুমাচু করে বললাম, "এই মন সুন্দর এক খান অস্ত্র পেতে চায়, সুন্দরেরা দেখতে ছোট ক্ষমতায় নয়।" গুরু তাচ্ছিল্যের সাথে বললেন, "অস্ত্রের ভয় আনে নাকো জয় আনে নিদারন হতাশা, শত্রু বধিতে লাগে না কামান লাগে ভালবাসা।" এবার আমি একটু বিরক্ত হয়ে বললাম, "গুরু তোমাকেও কি করেছে আছর বাঙ্গালী ভূতে, সুযোগ পেলেই মন চায় জ্ঞান আর উপদেশ দিতে!" গুরু এইবারে মাথা চুলকে বললেন, " ওরে অর্বাচীন জ্ঞান হীন চাস রণতুর্য, দিলাম কামান তবে একটা শর্ত প্রযোজ্য!" । মোবাইল কোম্পানির উপর ভয়াবহ রাগ হলেও কামানের আশায় দাঁতে দাঁত চেপে বললাম "একটা কেন ইচ্ছে হলে যত খুশি দেবে, আমি কি ডরাই তোমার শর্ত রাঘবে!" এরপর বীর বেশে কামানের কাছে ঘেঁষে খুঁজে পেলাম শর্ত, মোটেও ছোট নয় মোটা দাগে লেখা তায় করে বেশ গর্ত, "স্বর্গ মর্ত্য যেথা খুশি শত্রু নিধন কর, দূর্বলকে মারলে তুমি নিজেই মরতে পার।"

শর্তাভীত না হয়ে কামানসহ গুরুর কাছে থেকে বিদায় নিলাম। এই প্রথম ভয় না পেয়ে বুক ফুলিয়ে শত্রু নিধনের ব্রত নিয়ে শত্রুর খোঁজে নামলাম। প্রথমেই মনে পরল আমার জানের দুশমন মানুষ নিধনের কথা, কিন্তু মানুষ তো পৃথিবীর সবচেয়ে ভীতু ও দূর্বল প্রাণী! তাহলে তো শর্ত মোতাবেক কামান দাগা যাবেনা! এবার মনে পরল বিশ্বের হিংস্র জীব জানোয়ার এর কথা, কিন্তু এদের বিনাশের জন্য 'মানুষ'ই যথেষ্ট অযথা কামানের দরকার কি? আচ্ছা মৌলবাদ, সন্ত্রাসবাদ, পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ এইগুলোর একটাতে দাগালে কেমন হয়! কিন্তু এরা তো এমনিতেই বুড়া, আজ বাদে কাল এমনিতেই মরবে। তবে কি শত্রুর অভাবে আমার শত্রু নিধনের মহান ব্রত পন্ড হবে?

এইবার একটু চিন্তায় পড়ে গেলেও হঠাৎ মাথায় জিন্জিরা বুদ্ধি খেলে গেল! আবার গেলাম গুরুর কাছে, অনুযোগের সূরে বললাম, "ডিজিটাল যুগে তুমি মোরে দিয়েছ এনালগ কামান, শত্রু নিধন পরের কথা কেমনে রাখিব নিজের মান!" গুরু মূখে কিছু না বললেও হাত ইশারায় আমাকে ওয়ার্কশপ দেখিয়ে দেন, তার মুখভঙ্গি দেখে আমার বুঝতে বাঁকি রইলা না যে আমার আপগ্রেড এর আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।কামানটি আপগ্রেড করে অটো পাইলট, অটো টারগেট লক সিস্টেম ইনস্টল করে ম্যানুয়াল কামানকে ড্রোন কামানে উন্নীত করে নিলাম যাতে কামান নিজেই আমার দুশমনদের লক্ষ্য করে আক্রমন করতে পারে আর একটা প্লাজমা ডিসপ্লেও লাগিয়ে নিলাম যাতে শত্রুর মরণ যন্ত্রণা সরাসরি উপভোগ এবং শত্রুর বিবরন টেক্সট আকারে দেখা যায়।

এইবার ফিরে এসেই মহা আনন্দে নাচতে নাচতে কামানটা বের করে মহাশত্রু নিধনের মহা প্রত্যয়ের ঘোরে কামানের অটোপাইলট অন করে “জীবনের সবচেয়ে বড় শত্রু” অপশন সিলেক্ট করে ফায়ার বাটনে হাত রেখে অপেক্ষারত টার্গেট অটো লক এর জন্য, এমন সময় ডিসপ্লেকে আয়না ভেবে চমকে উঠি কারণ সেখানে ভেসে আছে আমার মাথার নিখুঁত ত্রিমাত্রিক ছবি যার নিচে লাল রং এর বড় বড় হরফে লেখা "বিষাক্ত জ্ঞান"!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.