![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ দুপুরে ক্ষেতে একটু কাজ করছিলাম। গ্রামের একটি ছেলে, যে কিছুদিন আগেও পেট ভরে তিনবেলা খেতে পারতো না, মোটর সাইকেল চালিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছে। বাবার এক পায়ে সমস্যা থাকার কারণে কোন কাজ কর্ম করতে পারেনি, তাই ৩ ছেলে ও ২ মেয়ের ঘরে সব সময় টানা পুরান লেগেই থাকতো। তাই, ছেলে ৩জনই অল্প বয়সেই কাজে নেমে পড়ে এবং সাংসারিক কাজে ব্যয় করেও কিছু টাকা জমিয়ে এই মোটর সাইকেলটা কিনে ফেলে।
মানুষের ছোট্ট এই জীবনে কত কিছুই ঘটে যায়! একজন আরেকজনের জীবনকে অবলোকন করে তার জীবনের স্বার্থকতা খুজেঁ। যদিও অন্যের জীবনের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির সাথে নিজের জীবনের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির তুলনা করে মানুষ সুখী বা দুঃখী হয়ে যায়, কিন্তু প্রকৃত সুখী পুরো দুনিয়ায় কেউ আছে বলে মনে হয় না। কাউকে দু’দন্ড শান্তি দেয়, নাটোরের বনলতা সেন, কাউকে পাহাড়-পর্বত, কাউকে বা অর্থকড়ি।
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের মতো করে বললে বলতে হয়, আমরা আধুনিক হয়েছি, তবে মন থেকে নয়, মানুষ দেখানোর জন্য। এখন কারো পকেটে ১ টাকা না থাকলেও ১০ টাকা ধার করে ১ কি.মি রাস্তা গাড়ি চেপে যাবে। মানুষের সময়ের দাম বেড়ে গেছে বললেও ভুল হবে, কারণ এই মানুষগুলোর বয়জেষ্ঠরা চা-স্টলে বসে হাজার হাজার ঘন্টা সময় নষ্ট করছে আর ছোটরা অনলাইন গেম এর মাধ্যমে। আর কেউ কেউ বা সময় নষ্ট করছে এদেকে নিয়ে লেখার মাধ্যমে। অথচ আমাদের কেউ এক কিলো রাস্তা হাঁটতে প্রস্তুত নই।
আজ আমার হাঁঠতে ইচ্ছে করছে। পকেঁটে টাকা নেই বা বেগম রোকেয়ার মতো চিন্তা করে নয়, এমনিতেই। নারায়ণখোলা থেকে আমার বাড়ি এক কিলোর বেশি হবে না। সুতরাং হাঁটাই যায়। কিন্তু হাঁটতে পারছি না, মানুষ কি বলবে ভেবে! প্রথমেই যে ছেলেটার কথা বললাম, সে বাইক চালিয়ে যাচ্ছে দেখে জন কয়েক খারাপ ভাষায় বলাবলি করছিলো। তাদের মতে গরিবের সাধ আহ্লাদ থাকবে কেন?
আমাকে হাঁটতে দেখলে এরা আরো অনেক কিছুই বলাবলি করবে। দাদা নাকি তাঁর যৌবনে না খেয়ে, না পরে তাঁর সম্পদ তৈরি করেছে। সুতরা একদল বলবেই, দাদার মতো হাড়-কিপটেমি শুরু করে দিলি? যা হোক, তাতে আমার কিছু যায় আসে না, আবার যায়ও আসেও। হুডির টুপি মাথায় চেপে হাঁটতে শুরু করলাম।
মানুষজন হয়তো আমাকে দেখে কৃপণ, গরীব বা অসহায় ভাবতে শুরু করবে এবং নিজেদেরকে আমার চেয়ে সুখী ভাবতে থাকবে। আর আমি হাঁটতেই থাকবো।
©somewhere in net ltd.