![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইচ্ছে হয় ভোর সন্ধ্যাবেলা অন্নদার সঙ্গে এক কাপ চা খাই। সিগারেটে সুখ টান দিতে দিতে একবার ঘুরে আসি মধুপুর। তারপর ভিতর-বাহির খুব করে দেখি- আনন্দমঠ। অন্নদা-আনন্দমঠ এক মনে হয় দুটো শব্দকে। কোথায় জানি মিল আছে। আমি মিল খুঁজতে খুঁজতে অন্ধকারে হারিয়ে যাই। কয়লার ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে স্টেশনে এসে থামে লোকাল ট্রেন। পেট ভর্তি গিজগিজ করে মানুষ। মরা প্লাটফর্মে নেমে যায় একজন নাবালিকা। কানের পর্দা ফাটিয়ে চলে যায় ট্রেন। আমি বালিকাকে চোখ ভোরে দেখি। মনে হয় আমার হারানো পারুল বালা। এই বুঝি দৌড়ে চিবুক চুমিয়ে বলবে- কেমন আছো কুশলদা? পারুল বালার কুশল- কুশল মিনজি, আজ আর কুশল নেই। তাকে দেখলেই নাক চেপে ধরে মানুষ। থুতু ফেলে। পাগলা ধরবে। দ্রুত পালিয়ে যায় পারুল বালারা। জোর হাঁটা দ্যায় নাবালিকা। আমি চমকে উঠি। জিগ্যেস করি- কুশল, তবু ভালো আছিস তো? ওটা তোর পারুল না। ওরা তোর পারুল না! এই নগর, আমাদের অন্নদা, অন্নদার জমিদারি আমাকে খুব মাত করে রাখে। আমি তা নিয়ে সুখী নই। ভালো নই কখনো। মন খারাপের দিনে গাল দিই- চারানার ন্যাতাদের। সময় মত চুদে দিই সব শালাদের। হারিয়ে যাই মেঘেদের দলে।
২.
কোনো ভিড় নেই। দিন-দুপুরে ঘুমায় স্টেশন মাস্টার। আমি ঘুমাই না। জেগে থাকি। দেখি গাঁজায় টান দিয়ে যায় সুদর্শন- সঙ্কোচহীন। চোখের ইশারায় হারিয়ে যায় কোনো কবিতার জুটি। আমি দেখতে থাকি। সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে। সলতের আলোয় জ্বলে ওঠে ল্যাম্পপোস্ট। কোথাও কোনো কাক থাকে না। ঘরে ফেরে সব পাখি। সব চা মুত হয়ে যায়। মুত নিয়ে বাড়ি ফেড়ে হাটুরে। মতির দোকানে উপুত হয়ে ঘুম দ্যায় কেতলি। আমি কেতলির গান ধরি-
‘টুংটাং শব্দে
বেজে যায় বারোটা
ঘরে ফেরে সব লোক ;
দিন ভর জব্দে
হেশেলের অব্দে
কেতলি ঘুমায়- এক ঢোক।
কাপ আর চামুচে
গামছায় ঘাম মুছে
কেতলির ঘুম ;
রাত বাড়ে
আড়ে ঠারে
পারুলের চুম।
কাম কাম গন্ধে
নেশাখোর ধন্ধে
জুড়ে বসে জোঁক ;
দিন ভর জব্দে
হেশেলের অব্দে
কেতলি ঘুমায়- এক ঢোক...
৩.
জোঁক জোঁক শব্দ করতে করতে চোক চোক শব্দ শুনি। কড়াইগাছটার নিচে গোল হয়ে বসে ন্যাতাদের পোলা। মাগী চোদার গল্প করে। আমি কান খাড়ায়ে শুনি। খিলখিল করে হাসি উঠে আসে। আমি হাসি। ওরা কয়- পাগলা গান ছাইড়া হাসতাছে দ্যাখ ! গানডা তো ভালই আছিলরে। ডাকমু না কি ওরে। একটা সিগারেট দিই, গান কোক। কেউ জানি ক্ষেপে যায়। কয়- তোরা কি পাগলার লগে রাত কাটাইবার আইছ? মালডারে উঠাই লয়া আইবি কহন, হেইডা ক মাদারচোদেরা। আমার ধোন কিন্তু আইফেল টাওয়ার হইয়া আছে। আমি পাগল থেকে কুশল হই। পারুলের মুখ ভাসে। শুয়োরের মতো উঠে আসে চেয়ারম্যানের মুখ। ল্যাম্পপোস্ট নিভে যায়। অন্ধকার হয়ে হয়ে উঠে রাত। প্লাটফর্মে জমে থাকে কিছু ক্ষত। কেউ দ্যাখে না। টুকরো টুকরো হয়ে থাকে পারুল। কেউ জানে না। ‘মাল একখান মাল, মালরে মাল !` খুব করে কানে বাজে । আমি হিংস্র হই। কুশল পাগলা হয়। পাগলা হয় কুশল। অজানা ভয়ঙ্কর প্রাণী ছুটে যায়। ছত্রভঙ্গ হয় আসর। নিভে যায় ল্যাম্পপোস্ট। মাস্টার থেকে যায় ঘুম ঘুম। এক্সপ্রেস ছুটে যায়। সকালে খবর বেরোয় ট্রেনে কাটা পড়ছে চেয়ারম্যানের পুত ! পাগলা হাসে । কুশল হাসে- বিলায় রাশি রাশি পারুল ফুল। গান গায়-
‘একে একে জ্বেলে যাবে
আমাদের ল্যাম্পপোস্ট
জেনে যাবে একে সব
প্লাটফর্মে থাকে ঘোস্ট ;
জানবে একদিন জানবে
মানবে একদিন মানবে
হিস্টোরি ইজ রি-পোস্ট ;
নো কোশ্চেন
নো কমেন্ট
ভয় পাবে ;
মরতে মরতে সব জানবে
প্লাটফর্ম অ্যান্ড ল্যাম্পপোস্ট
লিভ ইন দ্য ঘোস্ট...
বাস্তব ঘটনাপুঞ্জি ও কল্পনার আস্তরন । গল্প না মুক্তগদ্য জানি না। ব্যববহৃত গানগুলো সুর করে গাইতে পারেন যে কেউ
২| ১১ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৭
সালমান মাহফুজ বলেছেন: রচনাটা পড়ে ভালোলাগার বদলে মুগ্ধতা জানাতে ইচ্ছে করছে ।
গল্পের ডানায় ভর করে যেন একটা কবিতা উড়ে চলেছে । দারুণ সম্ভবনাময় গদ্যভঙ্গি !
৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:০৩
এস ওয়াই গ্লোবাল এলটিডি বলেছেন: পোস্টটি পড়ে অনেক ভাল লাগল । শুভ কামনা রইল নতুন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য।
৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:১১
মীর রবি বলেছেন: ধন্যবাদ সবাইকে
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:২১
রাতু০১ বলেছেন: ‘একে একে জ্বেলে যাবে
আমাদের ল্যাম্পপোস্ট।
চমৎকার ভাললাগা।