নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।
নানা : হ্যারে লাতি, ইসব কি শুইনছি রে? দ্যাশে ইসব কি হইতেছে?
নাতি : ক্যানরে নানা? তুই আবার কী শুইনতে পাইলি?
নানা : তোরা শিক্ষিত মানুষ, তোগের তো এইসব আগে জানিবার কথা।
নাতি : আরে দ্যাশে ত এখন কতো কিছুই হইতেছে। তুই কুনটার কথা
কইছিস ক তো?
নানা : মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী দালালেরা নাকি পদক পেইয়েছে?
নাতি : ও...। এই কথা! হয় রে নানা। তুই সইত্যই শুইনেছিস।
নানা : দ্যাশে এতো জ্ঞানী-গুনী থাইকতে ইটা হইলো ক্যাবা কইরে ক তো?
কেউ কিচ্ছু প্রতিবাদ কইরলো না?
নাতি : প্রতিবাদ কইরবে ক্যাবা কইরে রে নানা। বেশিরভাগ জ্ঞানী-গুনীরাই
তো মাথা বীমা কইরে রাইখেছে?
নানা : অ্যা....! ইটা আবার তুই কি শুনাইলি? শুইনেছি বাড়ি-গাড়ি, সম্পত্তি
বীমা করা যায়। জীবনবীমাও করা যায়। তাই বইলে মাথাও বীমা?
নাতি : হয় রে নানা। এখন ব্যাবাকই বীমা আর বন্ধকের যুগ। ঐ যে মেসি-
রোনাল্দোর নাম শুইনেছিস না, ফুটবল খেলে। ওরা ওগের পা’ও
বীমা কইরে রাখে। আমাগের দ্যাশের জ্ঞানী-গুণীরাও ওগের নাহাল
মাথা বীমা কইরে রাখে, বুদ্ধি বন্ধক দিয়া রাখে!
নানা : ওরে........লাতিরে......., এটি তুই কী শুনাইলিরে! হ্যারে ইসব বীমা-
বন্ধকের জইন্যে কী কুন আলাদা কুম্পানী খুইলছে নাকি?
নাতি : তুই আছিস নানা ঘরত বইসে তোর পান-তামাক লিয়ে! জগতের
কুনো খোঁজ-খবর রাখিস না। আরে আলাদা কুম্পানী খুইলবে
ক্যানে? কেউ সরকারী দলে মাথা বীমা কইরেছে আবার কেউ
বিরোধী দলে বুদ্ধি বন্ধক রাইখেছে! আবার কেউ কেউ খবরের কাগজ
ওয়ালা-টিভিওয়ালাদের কাছেও রাইখেছে!
নানা : উরেব্বাস! দ্যাশ তো বহুত আগায় গিইছে রে লাতি! তাই বইলে
মুক্তিযুদ্ধের দালালেরা পদক পাইলেও কেউ কিছু কইবে না!
নাতি : আরে নানা, তোরে নিয়া দেখি মহা মুসিবত। কইবে ক্যাবা কইরে,
কইলেই তো সরকারের রোষানলে পইড়বে। আগে যারা পুরস্কার
পাইয়েছে, তাগের সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হইবে। আর যারা পাইবার
লাইনে আছে তারা লাইন হইতে ছিটকাইয়া পড়িবে।
নানা : ওরে বাবা! কতো হিসাব-নিকাশ রে লাতি!
নাতি : অইতো রে নানা। দুনিয়াডা কি ঘরত বইসে তামাক খাওয়ার মতন
সোজা! শুন নানা, আমি যে এতো কথা কইলাম, তুই আবার ইসব
কথা কাউরে কইস না।
নানা : ক্যান? কইলে কি হইবে?
নাতি : আইজকাল আমিও এট্টু-আধটু পইদ্য লিইখতে শুরু কইরেছি। একটা
বইও বাহির কইরেছি।
নানা : তুইও পইদ্য লিইখেছিস! দ্যাশে কি পইদ্য’র আকাল পইড়েছেরে! তা
লিইখেছিস তো বেশ কইরেছিল। তা মুই মুখ বন্ধ রাখিম ক্যানে?
নাতি : ধুরো ছাতা। বুইড়া হইতাছিস আর তোর বুদ্ধিসুদ্ধি পানের ডাবায়
হান্দাইতাছে। আরে এখন হামার বয়স তেইশ। মুই এখন থেইকেই
লাইন মাইরবার তালে আছি। গুরু ধইররেছি। গুরুর সুপারিশে
খুবরের কাগজে পইদ্য ছাপিয়েওছি। যাতে পঞ্চাশ পার হইলে হামিও
একটা সরকারী পদক পাই। ইসব কথা পাঁচ কান হইলে কি পাইবো!
নানা : ও! তোগের দেহি ভেতরে এক রূপ আর বাইরে আর এক রূপ!
নাতি : দশজনের মইদ্যে চইলতে গ্যালে এখন মুখোশ নিয়া চইলতে হয় রে
নানা। তুই মুখোশ নিয়া চলিস নাই বইলেই তো এখন ঘরত বসি
তামাক খাছিস। যদি একটা মুখোশ লিয়া চলতি, তাইলে ব্যাবাক
টাকা-পয়সার মালিক হইতি। দাঁত পইড়েছে, চামড়া ঘুচাইছে তাতে
কি! নাক ডুবাইয়া সূরা খাইয়া চেংড়ি নাচাইতি আর গাইতি-উলাল্লা
উলাল্লা....
নানা : অই থাম থাম। আর শুইনবার চাই না। দ্যাশের হালচাল দেইখা
আমার বাঁচার আশা ফুরাইছে। এই দুনিয়াত মোরা এখন অচল।
এখন কবরে যাইয়ে শান্তিতে ঘুমাইতে পাইরলেই বাঁচি!
নাতি : কবরে যাইয়েও শান্তি পাইবি না নানা। তোর কঙ্কাল চুরি কইরে
বিদেশে পাচার কইরে দিবে।
নানা : লাতিরে..... তোরে একখান কথা কই ভাই। হামার ভিটা বাড়িডা
তোরে আমি লিইখে দিব। তুই হামার একটা কথা রাখিবি?
নাতি : কথাডা কি আগে ক?
নানা : হামি মইরে গেলে তুই হামার দেহডা সুমুদ্দুরে ভাসাইয়ে দিবি।
অনেক দূরের নীল সমুদ্দুরে! হামার দেহখান নীল সমুদ্দুরের পানিতে
ভাইসবে। ভাইসতে ভাইসতে হারাইয়ে যাইবে। মাছেরা মজাক করি
মোর দেহখান খুঁটি খুঁটি খাইবে। মরিবার পর মোর দেহখান আর
মানুষির পাপের কামে নাগিবে না......’
*সকল বুদ্ধিজীবি এক রকম নন। কেউ কেউ আছেন ব্যাতিক্রম। তারা দুঃখ পাবেন না আশা করি।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২১
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন। শুভকামনা নিরন্তর...........
২| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৫
রাকীব হাসান বলেছেন: রাসায়নিক লেখা .......
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৩
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ।
ভাল থাকবেন।
শুভকামনা নিরন্তর..............
৩| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩৪
দীপংকর চন্দ বলেছেন: অনুভূতির সুন্দর প্রকাশ মিশু মিলন!
ভিন্ন স্বাদ!
অনিঃশেষ শুভকামনা জানবেন।
ভালো থাকবেন। অনেক। সবসময়।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৩৬
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ দীপংকরদা।
অনুপ্রাণিত হলাম।
ভাল থাকবেন। শুভকামনা নিরন্তর............
৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:৩১
বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: নানা আর নাতির কথোপকথনে চরম সত্যটাই তুলে ধরেছেন মিশু। এখন পদকের জন্য যোগ্যতার দরকার হয় না। চাটুকারিতা ঠিক মতো করতে পারলে, আর রাজনৈতিক মতাদর্শ মিলে গেলে পদক পাওয়া এখন কোন ব্যাপারই না। নোবেল পুরস্কারেই যেখানে এই সব চলে, আর আমাদের দেশে তা চলবে না, এটা এখন আর ভাবী না। তাই কে পদক পেলো সেটা নিয়ে মাথা ঘামাই নাই।
এটাকে ধারাবাহিক বানিয়ে মাঝে মাঝে সমাজের এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন অসংগতি নিয়ে এমন মজাদার আলাপের মধ্য দিয়ে সত্যটা তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারেন। মন্দ হবে না ধারাবাহিকটা। বিবেচনা আপনার। অমর একুশের শুভেচ্ছা রইলো মিশু।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৫
মিশু মিলন বলেছেন: আপনি আমার মনের কথাটাই বলেছেন প্রিয় বাঙালি। আমি এরই মধ্যে ধারাবাহিক লিখতে শুরু করেছি। ২ নম্বরটা ফেসবুকে প্রকাশও করেছি। মাঝে মাঝেই এটা লিখবো।
"এখন পদকের জন্য যোগ্যতার দরকার হয় না। চাটুকারিতা ঠিক মতো করতে পারলে, আর রাজনৈতিক মতাদর্শ মিলে গেলে পদক পাওয়া এখন কোন ব্যাপারই না। নোবেল পুরস্কারেই যেখানে এই সব চলে, আর আমাদের দেশে তা চলবে না, এটা এখন আর ভাবী না। তাই কে পদক পেলো সেটা নিয়ে মাথা ঘামাই নাই। "
আপনার কথার সাথে আমি একদম একমত। এখন কেউ পুরস্কার পেলেই সবাই তার দিকে সন্দেহের চোখে তাকায়। বোঝার চেষ্টার করে তার লবিং এর জালটা কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। এতোটাই নিচে নেমে গেছে পুরস্কারের মান। সমস্যা হলো আমজনতার অসচেতনতা। কেউ একজন পুরস্কার পেলেই পাবলিক তার বই কিনতে লম্বা লাইন লাগায়। তাকে মাথায় তুলে নাচে।
ভাল থাকুন। শুভকামনা নিরন্তর.......
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৫
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অনেক মজা করে লিখেছেন| ভাল লাগল ব্লগিয় নানানাতী