নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।
অন্ধকারের বিদায় রাগিণী বাজছে গোলকের মা’র মোরগ আর দুখিরামের মায়ের কণ্ঠে, মোরগের কণ্ঠটা কর্কশ হলেও খুব একটা বিরক্তিকর নয়, মানিয়ে যায় ভোররাতের সাথে; আর দুখিরামের মায়ের কণ্ঠে আদুরে সুর, সাথে করতালের সঙ্গত। কার্তিক মাসে লক্ষ্মীপূজা পেরোলেই টহল দিতে আসে দুখিরামের মা, কার্তিক থেকে ফাল্গুন টহলের মরশুম, এ সময় মাসে অন্তত একবার দেখা যায় তাকে। তারপর ফাল্গুনের পর সে-ই যে ডুব দেয়, আবার উদয় হয় লক্ষ্মীপূজার পরে, এ মরশুমে আজই প্রথম।
বাঁশঝাড়ের পাশের হালটের ওপর লাটিমগাছের তলায় সাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কেউ, খোলা জায়গার অন্ধকার ফ্যাকাশে হতে শুরু করলেও লাটিম গাছের ছায়া আর ঝাড়ের বাঁশ হালটের ওপর ঝুঁকে থাকায় ওখানটায় গাঢ় অন্ধকার, দূর থেকে বোঝা যায় না, কেবল কাছে গেলেই অন্ধকারে মিশে থাকা অবয়বটি আলাদা ভাবে চোখে পড়ে, আরও কাছে, একেবারে অন্ধকারে গা ডুবালেই বোঝা যায় মানুষটা কুমদ বিশ্বাস। উত্তরমুখো হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও কুমুদ বারবার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাচ্ছেন হালটের দক্ষিণ দিকে, গাছের ছায়ার বাইরে ঘাসের জামা পরা অথচ বুকখোলা হালটের যে জায়গাটা কিছুটা উজ্জ্বল, ওদিক দিয়ে হয়ত কারো আসার কথা, হয়ত কুমুদ অপেক্ষারত।
বাঁশঝাড়ে পাখ-পাখালির নড়া-চড়া, ডানার আড় ভাঙার শব্দ, কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়ত কলরবে মেতে উঠবে ওরা। কুমুদ মাথার মাফলার খুলে পুনরায় টাইট করে বাঁধলেন, যাতে কোনও ভাবেই কানে বাতাস ঢুকতে না পারে, কানে বাতাস ঢুকলে তার আবার কান টাটায়, শীত এলেই সাইকেল চালালে অথবা জোরে হাঁটলে শুরু হয় কান টাটানি, নাক দিয়ে জল পড়ে, কখনও কখনও গলাটাও ব্যথা করে। তাই ফাল্গুন মাস বুড়িয়ে না যাওয়া পর্যন্ত তাকে মাফলার ব্যবহার করতে হয় অতি সতর্কভাবে।
অবশেষে অন্ধকার ঠেলে দুটো নারীদেহ ক্রমশ তার কাছে আসতে লাগল হালটের দক্ষিণ দিক থেকে। একজনের বসন সাদা, আরেকজনের কালচে। স্বস্তি পেলেন কুমুদ। নারী দু-জন কাছে এসে দাঁড়াতেই তিনি চাপা স্বরে বিরক্তি উগড়ে দিলেন, ‘এতক্ষণ লাগে, না! মিয়া মানষির না আছে সময় জ্ঞান, না আছে কাণ্ডজ্ঞান!’
বিপরীতে কোনো স্বরের প্রতিবাদ শোনা গেল না, অজুহাতও নয়।
সাইকেলে উঠে লম্বা বাঁ পা মাটিতে ঠেকিয়ে কুমুদ বললেন, ‘ওঠ।’
দু-জন নারীর একজনের বয়স পঞ্চাশের মতো, আরেকজনের উনিশ। পঞ্চাশের পরনে সাদা থান, উনিশের সালোয়ার কামিজের ওপর চাদর। অন্ধকারে চাদরের রঙ বোঝা যাচ্ছে না। মাথায় চাদরের ঘোমটা, নাক-মুখ চাদরে ঢাকা।
আদেশ পেয়ে সাইকেলে উঠার আগে মাকে জড়িয়ে ধরল দোলা, উনিশ বছরের মেয়েটি। সাদা থান পরা ঘোমটা মাথার প্রৌঢ়া দোলার মা, মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘কোনো ভয় নাই মা, মনে বল রাখ।’
বিরক্ত হয়ে কুমুদ বললেন, ‘দুনিয়া জয় করিছে তো, আবার আদর বুলায়! জলদি ওঠ ছেমরি!’
মাকে ছেড়ে একবার নাক টানল দোলা, চাদরে নাক মুছল, তারপর সাইকেলের পিছনে উঠে বসল।
প্রৌঢ়া কুমুদের মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘সাবধানে যাইয়ো।’
অপ্রশস্ত হালট ধরে চলতে শুরু করল সাইকেল। পিছনে ঘোমটা মাথায় প্রৌঢ়া মুখে আঁচল চেপে ফুঁপিয়ে উঠলেন! বাঁশঝাড়ের পাখ-পাখালি দয়ারামপুর মাজারের মুরিদদের মতো জিকির তুলল।
হালট ছেড়ে ঢাল বেয়ে রাস্তায় উঠল সাইকেল, মাটির রাস্তা। রাস্তাটা সমতল নয়। আশ্বিনের শেষের ভারী বৃষ্টিতে কাদা হয়েছিল খুব। সেই কাদা শুকিয়ে এখন রাস্তার বুক বেশ অসমতল, মসৃণ হতে আরও সময় লাগবে।
অসমতল রাস্তা, এ কারণে যেমনি সতর্কভাবে দৃষ্টি রাখতে হচ্ছে রাস্তার বুকে, তেমনি প্যাডেল ঘোরাতেও শক্তি ক্ষয় হচ্ছে। তেরো মাইল কাঁচা, তারপর চার মাইল পাকা রাস্তা পেরিয়ে তবেই জেলা শহর। এই তেরো মাইল পেরোতেই গায়ের রক্ত জল হয়ে যাবে!
হাতে টিমটিমে আলোর হারিকেন নিয়ে দুখিরামের মা নিচপাড়া থেকে ছোট রাস্তা ধরে বড় রাস্তার দিকে এগিয়ে আসছেন গুনগুন স্বরে গান গাইতে গাইতে। দুখিরামের মায়ের কোনো ভয়-ডর নেই, হাতে হারিকেন নিয়ে মাঝরাতের পর পথে বের হন। ঝোপঝাড়ে ব্যাঙ লাফের, গাছ-গাছালিতে পাখির ডানা ঝাঁপটানোর কিংবা পুকুরের জলে মাছের ঘাই মারার শব্দ হলেও বলেন, ‘হরি নাম কর, হরি নাম কর; হরিনামে উদ্ধার পাবি। আমার পাছে লাগিস নে!’
তার ধারনা অপদেবতারা ব্যাঙ, পাখি, মাছ ইত্যাদির ছদ্মবেশেই রাতের বেলা মানুষের কাছে আসে!
চলতে পথে সাপ-ব্যাঙের সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটে প্রায়ই, সত্যিকারের সাপ-ব্যাঙ মনে হলেও দাঁড়িয়ে ওদের উদ্দেশে বলেন, ‘হরি নাম কর, হরি নাম কর; হরিনাম করলিই এই দেহ থেকে উদ্ধার পাবি! এহন আমার পথ ছাড় দিনি!’
নিচপাড়ায় টহল শেষ, দুখিরামের মা এখন এপাড়ায় ঢুকবেন।
কুমুদ মনে মনে ভাবলেন, ভাগ্যিস তারা সময় মতো আসতে পেরেছে, আরেকটু দেরি হলেই দুখিরামের মায়ের সাথে রাস্তায় দেখা হতো; কেলেঙ্কারি হতে সময় লাগত না! দুখিরামের মায়ের বড় রাস্তায় উঠতে এখনও মিনিট দুয়েক সময় লাগবে, আর বড় রাস্তা এবং ছোট রাস্তার মিলনস্থল পেরোতে তাদের এক মিনিটও লাগবে না।
গ্রামের শেষ সীমান্ত পেরিয়ে হাঁফ ছাড়লেন কুমুদ; যাক, অন্তত গ্রামটা তো পার হওয়া গেল! সাইকেলের গতি কিছুটা মন্থর হলো। বড় বড় নিঃশ্বাস নিতে এবং ছাড়তে লাগলেন তিনি, নাকে ভেসে এল পচা গন্ধ! গুইসাপ-টাপ পচেছে কোথাও! মাছ ধরার জন্য পাতা কারেন্ট জালে গুইসাপ জড়িয়ে গেলে লোকে পিটিয়ে মারে!
এখন চারপাশ বেশ ফর্সা, দু-দিকের ফাঁকা মাঠের বুকে কুয়াশার মলম, জল শুকিয়ে গেছে, কোথাও ইরি ধানের বীজতলা ফেলায় সবুজ চারা গজিয়েছে, কোথাও বীজতলার জায়গা তৈরি করা হয়েছে। বাতাসে দারুণ শীত!
কুমুদের গায়ে একটা ঢোলা শার্ট, ওপরে হাফহাতা সোয়েটার, পরনে কালো প্যান্ট, পায়ে চামড়ার কালো জুতো। মাফলার কানের সুরক্ষা দিলেও ঊরুতে কামড় বসাচ্ছে শীত! সেই ঝালটা ঝাড়লেন দোলার ওপর, ‘সুখ পালো মদনলাল, খাটে মরে রামগোপাল! যে শালা কামডা করছে, সে তো এহন দিব্যি আরামে ল্যাপ মুড়ি দিয়ে ঘুমাতেছে, আর শীতে মরতেছি আমি!’
দম নিয়ে দোলার ক্ষতের ওপর আবার এক চিমটি লবণ ছিটালেন, ‘বাড়ি ভর্তি কাকাত-জ্যাঠাত অতোগুলো তাগড়া বৌদি তোর, কারো ঘরে ঢুহে গোপনে মায়াবড়ির পাতার তে এট্টা করে গিলে ফেলতি কয়দিন, তালি-ই তো এই ভ্যাজালডা হতো না! সে বুদ্ধি নাই, আছে কেবল...!’
দোলা নীরব। তার চোখের দৃষ্টি কখনও মরে উল্টে থাকা নিথর ঢোঁড়ার মতো শিশির সিক্ত রাস্তার বুকে, কখনও মাঠের জমিনে কিংবা বীজতলার ঘেরের বাঁশের ওপর বসে পাখনার শিশির ঝাড়তে থাকা শীতকাতুরে ফিঙের ওপর, কখনওবা কুয়াশা মোড়া ঝাপসা দূরের গ্রামের দিকে। কিন্তু অন্তর্দৃষ্টি তার দেহাভ্যন্তরে আরেক দেহে। মাস তিনেকের কিছু বেশি সময় পার হয়েছে, কিন্তু এরই মধ্যে দেহের ভেতর আরেক দেহের নড়াচড়া টের পাচ্ছে সে। ভেতর থেকে প্রায়শই নড়ে-চড়ে ওঠে। কী করে? হাত-পা গজিয়েছে? খেলে? নাকি সাঁতার কাটে? পোয়াতি মানুষের পেট ভরা নাকি জল থাকে, তারই ভেতর নাকি আপন খেয়ালে সাঁতার কাটে অনাগত আগন্তুক! অদ্ভুত ব্যাপার!
কী মোহে পড়ে একদিন তার সাথে....! তারপর কী যে মায়া! খেতে বসলে, ঘুমুতে গেলে, ঘুম থেকে জেগে উঠলে, কেবল তার কথাই মনে পড়ত। তাকে এক নজর দেখার জন্য মনটা চঞ্চল হয়ে থাকত; তার শরীরের ঘ্রাণ নেবার তীব্র আকাঙ্ক্ষার ঘোরে থাকত ঘ্রাণেন্দ্রিয়, তার শরীরের একটু স্পর্শ পাবার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে থাকত শরীরটা। এরপর সেই মায়ার টানে আরও কয়েকদিন...! অমনি দেহের ভেতর আরেক দেহ বাড়তে লাগল, জীবনের মাঝে আরেক জীবন! যে দেহটি সে কোনোদিন দ্যাখেনি, যে জীবনের সাথে তার কখনও কথা হয়নি, অথচ সেই জীবনের প্রতি তার কী দরদ, কী মায়া! এই ভোরের কুয়াশার মতো নিবিড়ভাবে আচ্ছন্ন করে আছে তার অনুভূতির সবুজ সতেজ বন, অনাগত আগন্তুকের মুখে ‘মা’ডাক শোনার কী তীব্র বাসনা তার মনে!
গত রাতেও শুয়ে শুয়ে নিজের হাতের আদর বুলিয়েছে ঈষৎ ফুলে ওঠা পেটে। মনে মনে ভেবেছে- সময়ের বাতাসে পেট আরও ফুলবে পদ্মার বুকের নৌকার পালের মতো! নতুন জীবনের পাল! আচ্ছা, সে এখন কত বড় হয়েছে? সে কী আদর বোঝে, খিলখিলিয়ে হাসে? দুষ্টুমি করে না? হয়ত করে, করে বলেই হয়ত ভেতর থেকে অমন ঢুঁস দেয়! আসুক না, এই ঢুঁসের শোধ নেবে কান মলে দিয়ে! না, কান মলবে কেন? আদর করবে, ওলে সোনা বলে বুকে জড়িয়ে ধরবে, আদরে আদরে গাল লাল করে দেবে! অথচ ভোরবেলা মা তাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে শুনিয়েছেন কী ভয়ঙ্কর কথা! সাইকেলের ঝাঁকুনিতে ভাবনার কুয়াশা কাটে দোলার। না, পাল আর উড়বে না! কখন-ই উড়বে না! তার চোখের জলে তৃষ্ণা নিবারণ করছে চাদর।
কুমুদ বলেই চলেছেন, ‘এহন নিজির বউ পরিচয় দিয়ে পাড়ার অব্বিয়েতো মিয়ার প্যাট খালাস করাও, তাও আবার প্রথম পক্ষের না, দ্বিতীয় পক্ষের বউ কয়ে চালাতি হবি! কী ঠ্যাহা পড়ছে আমার! নেহাত তোর মা আসে কাঁদে-কাটে পড়ছে সূর্য’র মা’র কাছে, সূর্য’র মা’র আবার দয়ার শরীর, বারবার আমারে অনুরোধ করল তাই যাতেছি।’
ভোরবেলা মা যখন দোলাকে জানিয়েছেন গর্ভপাত করানোর কথা, তখন থেকেই তার মন বড় কাঁদছে। জামার ওপর দিয়ে পেটে হাত রাখলো দোলা, না, এখন তার নড়াচড়া বোঝা যাচ্ছে না। আচ্ছা, সে কি আঁচ করতে পারছে কিছু? সে কি বুঝতে পারছে আর কয়েক ঘণ্টা পরই তাকে মেরে ফেলা হবে? তার অপুষ্ট শরীরটাকে মাতৃগর্ভ থেকে টেনে-হেঁছড়ে বের করে ফেলে দেওয়া হবে কোনো আস্তাকুড়ে! তাই কি অভিমান করে এখন আর সাড়া দিচ্ছে না?
হাঁচির মতো বিরক্তি ঝরে পড়ে কুমুদের মুখ থেকে, ‘ক্যান রে বাবা, তোর অত সখ জাগে, তয় তুই বিয়ে বয়। সুকেশ এট্টা ভাল ছাওয়ালের সম্বন্ধ আনছিল তোর জন্যে। তহন কলি আমি পড়বো। কলেজে ভর্তি হলি। আরে বাবা, গরিব মানষির মিয়া তুই, তায় বাপ নাই। তোর এত পড়াশুনার দরকার কী! উনি বেগম রোকেয়া হবেন! তা পড়বি যদি এমন কাণ্ড ঘটালি ক্যান! তহন বিয়ে হলি, আজ তোর এই গতিক হতো? এই কথা কোনোভাবে যদি পাঁচ কান হয়, তোর কি আর জীবনে বিয়ে হবি? কলাম মানুষটা কিডা ক, ধরে বিয়ে দিয়ে দেই। তোরা মা-বেটিতে মুহি কুলুপ আঁটে বসে আছিস, মুখটা পর্যন্ত খুললি না!’
মাঠ পেরিয়ে এখন জনপদে ঢুকে পড়েছে সাইকেল। চারপাশটা একদম পরিষ্কার, যদিও সূর্য এখনও ওঠেনি, তবে রক্তাভ আভা ছড়িয়ে আবির্ভাব জানান দিচ্ছে। একটার পর একটা গ্রাম পিছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে সাইকেল। গ্রাম জাগতে শুরু করেছে, লোকজন উঠে গোয়ালের গরু-ছাগল বের করে গোড়ায় দিচ্ছে, কেউ কেউ রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ব্রাশ কিংবা নিমের ডাল দিয়ে দাঁত মাজছে, কেউ লুঙ্গি তুলে রাস্তার ধারে বসে জলবিয়োগ করছে, বাড়ির মহিলারা কেউ ছাইগাদায় ছাই অথবা গোবর গাদায় গোবর ফেলছে, কেউ উঠোন ঝাঁট দিচ্ছে, কেউবা কলতলায় বসে গত রাতের এঁটো থালা-বাসন মাজছে, চাদর গায়ে দিয়ে বারান্দায় ঝিম মেরে বসে আছে কোনো বৃদ্ধ কিংবা কোনো ঘর থেকে ভেসে আসছে ছোট্ট শিশুর ঘুম ভাঙা কান্না। সাতসকালে গ্রামের মধ্যে আগন্তক দেখে একনজর তাকিয়েই পুনরায় নিজের কাজে মন দিচ্ছে তারা।
এ পথে কুমুদ যাতায়াত করেন না, অনেক বছর আগে একবার এ পথে এসেছিলেন। অবশ্য দু-চারজন চেনা মানুষ আছে এসব গ্রামে, এখন তাদের সামনে না পড়লেই হয়।
সাতসকালে সাইকেলে অপরিচিত দু-জন মানুষকে দেখে একজন বয়স্ক লোক জিজ্ঞাসা করলেন, ‘বাড়ি কনে?’
কুমুদের বলতে ইচ্ছে হলো, ‘তাতে তোমার কী?’কিন্তু বিরক্তি চাপলেন এই ভেবে যে, সাথে একটা মেয়ে, এরা কী থেকে কী ভাববে আর কিসে জড়িয়ে ফেলবে তার ঠিক কী! তিনি যত ঝানু মহুরি-ই হোন, এ এলাকায় তার দাপট নেই। ঠিকানা বললেন কুমুদ, এমনকি পুনর্বার প্রশ্নে গন্তব্য কোথায় তাও বলতে হলো। কিছুদূর এগিয়ে আরও একজনের কাছে পরিচয় জানাতে হলো। কুমুদের মনে হলো এই গ্রামটা ছাড়তে পারলে বাঁচা যায়, মানুষের যা কৌতুহল, আবার কে কী জিজ্ঞাসা করবে কে জানে!
জনপদ পেরিয়ে আবার ফাঁকা মাঠ। অনেকক্ষণ মুখ বুজে থাকার পর কুমুদ বাঁ হাতের জামার হাতায় নাকের জল মুছে বললেন, ‘তোর বাবা কী ভালো মানুষ ছিল, আর তার মিয়া হয়ে তুই কী কামডা করলি! এই জন্যেই মানুষ কয়, প্যাটে থাকতি বাপ মরলি সেই সন্তান জাত হয় না, হয় বেজাত। তোর বাপ যহন মরল তহন তোর মা ছয় মাসের পোয়াতি।’
দোলা কুমুদের কথার কোনো প্রতিবাদ-প্রত্তুত্তোর করল না, কেবল নীরবে চোখের জল ফেলতে লাগল, কুমুদ তা বুঝতেও পারলেন না।
‘আমার মিয়া দু-ডেরে দ্যাখ, মাটি নড়ে তবু ওরা নড়ে না! আর সূর্য? তেইশ বছর বয়স হয়ে গেল, আজ পর্যন্ত কোনো মিয়ার সাথে কতা কওয়া দূরে থাক মুহির দিকে চোখ তুলে তাহায় না, বড় মানষির সাথে কতা কওয়ার সময় মাটির দিক তাহায়ে কতা কয়!’সন্তানগর্ব প্রচ্ছন্ন হয়ে উঠল কুমুদের কণ্ঠস্বরে।
কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর হঠাৎ কুমুদ সাইকেল থামিয়ে বললেন, ‘নামেক।’
বিনা বাক্যব্যয়ে সাইকেল থেকে নামল দোলা। সে নামার পর কুমুদ নিজেও নেমে সাইকেলটাকে স্ট্যান্ডে দাঁড় করালেন, তারপর খানিকটা দূরে গিয়ে রাস্তার ঢালে নেমে একটা বাবলা গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে প্যান্টের চেইন খুলে শীতে ঝিম মেরে থাকা শিশ্ন বের করতেই ফুঁসে উঠে ধোঁয়া ওঠা জল উগড়ে দিল। দু-ফোঁটা পড়ল তার বাঁ-হাতের আঙুলেও, প্যান্টে মুছে সোয়েটারের নিচ দিয়ে হাত ঢুকিয়ে বুক পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট বের করে সিগারেট ঠোঁটে চেপে প্যাকেটটা পুনরায় যথাস্থানে রাখলেন, প্যান্টের পকেট থেকে ম্যাচলাইট বের করে সিগারেট জ্বাললেন। ম্যাচলাইট পুনরায় পকেটে ঢুকিয়ে প্যান্টের চেইন লাগিয়ে রাস্তার ঢাল থেকে উঠলেন নাক-মুখ দিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে।
দোলা দাঁড়িয়ে আছে সামনের বিস্তীর্ণ মাঠের দিকে তাকিয়ে। কুমুদ কাছে এসে দাঁড়িয়ে ধোঁয়া ছেড়ে বললেন, ‘এই কুমুদ মউরির ক্ষমতা সম্বন্ধে তোগের কোনো ধারণা নাই, দিনকে রাত রাতকে দিন করে দিবার পারি আমি! এহনও সময় আছে একবার খালি নামডা ক। দ্যাখ ক্যামনে ঘাড়ে ধরে বিয়ে করাই। এই কুমুদের আঙুলের ইশারায় বাপ বাপ করে বিয়ে করবেনে।’
উত্তরের অপেক্ষায় সিগারেটে টান মেরে দোলার মুখের দিকে তাকালেন কুমুদ, দোলা স্থির চোখে তাকিয়ে আছে শূন্যে, ওর চোখে ভাসছে কুমুদের দিনকে রাত আর রাতকে দিন করার কুৎসিত ছবি।
কুমুদের মুখ থেকে একই সাথে বেরোল ধোঁয়া আর কথা, ‘কোন শালার বিটা নামডা ক তো? হিন্দু না মুসলমান? মুসলমান হলি তো আর কোনো কতা নাই। কিন্তু হিন্দু হলি ক, তারপর দেহিস এই কুমুদ মউরি কী করবার পারে!’
আবার দোলার মুখের দিকে তাকালেন কুমুদ, তার একই রকম নির্লিপ্ত চেহারা আর চোখের দৃষ্টি দেখে বিরক্ত হলেন, ‘এই তুই কতা কবার পারিস নে! মুখ দিয়ে কতা বাইর হয় না, আবার ঠিকই...! যে যত ভ্যাবলা, তার কাপড় তত উদলা!’
ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল দোলা।
‘ধুর ছেমরি! খালি পারে ফ্যাচ ফ্যাচ করে কাঁদবার!’
ধমক দিয়ে হাতের সিগারেট মাটিতে ফেলে জুতোর তলায় পিষলেন কুমুদ। তারপর সাইকেলে উঠে ধমকের সুরে বললেন, ‘ওঠ।’
আবার সাইকেল চলতে লাগল। কুমুদের মেজাজটা খিঁচে গেছে হঠাৎ। এমন মোক্ষম একটা কেস বিনা লাভে ডিসমিস হয়ে যাচ্ছে, তাও আবার ডিসমিস করতে হচ্ছে তাকেই! নামটা বললে বিয়েটা তো দিতেনই, কোর্ট-কাছাড়ির ভয় দেখিয়ে ছেলেপক্ষ থেকে মোটা টাকাও খসাতে পারতেন। সূর্য’র মায়ের পীড়াপীড়ি, আর দোলার মায়ের কান্নাকাটিতে কিচ্ছু হলো না!
অল্পক্ষণ পরেই সামনে পড়ল ছোট্ট গাঙ, গাঙের ওপর সাঁকো। দু-জনকেই নামতে হলো সাইকেল থেকে।
‘সূর্য’র মা’র জন্যেও জীবনে এত কষ্ট করি নাই!’
বলেই কুমুদ সাইকেল কাঁধে তুলে এগিয়ে গেলেন সাঁকোর দিকে। সাইকেল কাঁধে নিয়েও বেশ সাবলীলভাবেই হাঁটছেন তিনি শিশিরভেজা সাঁকোর ওপর দিয়ে, স্যান্ডেল হাতে নিয়ে পিছনে সতর্কভাবে সাঁকোয় পা ফেলছে দোলা। কুমুদ নিজের চলার গতি না থামিয়েই বললেন, ‘সাবধান, আবার পা পিছলে গাঙে ডুবে মরে আমারে ডুবোসনে!’
কুমুদ সহজেই সাঁকো পেরিয়ে গেলেও দোলা এখনও সাঁকোর মাঝখানে। কুমুদ ওপার থেকে বিরক্ত চোখে তাকালেন দোলার দিকে, আরেকটি সিগারেট ধরালেন, তখনই দোলার পা সম্পূর্ণ থেমে গেল তলপেটে নড়াচড়া অনুভব করে! নড়ছে, আবারও, আবারও...! কী বলছে ও! কী বলতে চায় ও! ওকে মেরে ফেলতে নিষেধ করছে?
‘কিরে, আবার থামলি যে! জলদি পাও চালা...।’কুমুদ গলা হাঁকলেন।
গাঙের শীতল বাতাস আর তলপেটের নড়াচড়া দোলার সমস্ত শরীরে অসহ্য ভালোলাগার মদিরা ছড়িয়ে দিল যেন! তবু তাকে পা চালাতে হলো কুমুদের পুনর্বার ধমক খেয়ে।
দোলা সাঁকোর বাঁশ ধরে একেক কদম এগোচ্ছে আর গাঙের সমস্ত জল যেন কুণ্ডলী পাকিয়ে একটি শিশুর রূপ ধারণ করে হাত-পা ছুড়ে তাকে ডাকছে। গাঙের বাতাস শিশুর অদৃশ্য হাত হয়ে তার খয়েরি রঙা চাদরের প্রান্ত ধরে টানছে, হাহাকার করছে! শিশুর কচি মুখের পবিত্র অরদ হাসির মতো গাঙের বুকের উদ্গত ধোঁয়ার মায়াজাল বেষ্টন করছে তাকে, দোলা সেই মায়াজাল বেষ্টিত হয়ে পুনরায় দাঁড়িয়ে পড়ল সাঁকোর শেষ মাথায়, বাঁ পা মাটিতে ফেলতে গিয়ে আবার টেনে নিলো। তাকাল কুমুদের ধোঁয়া নিঃসৃত ধূর্ত মুখের দিকে।
‘হাঁ করে চায়ে আছিস ক্যান? জলদি আয়।’এবার খেঁকিয়ে উঠলেন কুমুদ।
কুমুদের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল দোলা, তার মাথায় এখন চাদরের ঘোমটা নেই, চূর্ণ চুলগুলো উড়ছে গাঙের শীতল ঝিরিঝিরি বাতাসে। কুমুদও তাকিয়ে আছেন তার মুখের দিকে। দু-দিকে মৃদু ঘাড় নাড়ল সে। সিদ্ধান্তটা কঠিন এবং তাকে এক অসম লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হবে জানে সে। পাড়া-পড়শি কিছুদিন জাবর কাটার উপাদান পাবে, টিপ্পনী কাটবে, হেঁশেল থেকে চায়ের দোকানে তাকে নিয়ে মুখরোচক আলোচনা হবে, শ্বাশত প্রেম আর মিলনের বিপরীতে দাঁড়িয়ে কিছু মানুষ তার মাথায় পরিয়ে দেবে এক কদর্য অদৃশ্য অবতংস- চরিত্রহীনা অথবা দুশ্চরিত্রা, কেউ বলবে দু-নম্বর মাল! তার নামের আগে-পিছে অজস্রবার উচ্চারিত হবে এইসব অবতংস। অসম লড়াই আর এই কদর্য অবতংসের ভয় উপেক্ষা করে তবু ফিরবে সে, নারী জীবনের যে চিরন্তন অমূল্য অবতংস ধারণ করছে সে তার গর্ভে, ফিরবে তার জন্য। তাকে পৃথিবীর আলো দেখাতেই হবে, তার মুখে শুনতেই হবে মধুর শব্দ- ‘মা’! ‘মা’শব্দটা কানে বাজতেই শক্তি আর আত্মবিশ্বাস প্রবল হলো তার। তার প্রতিকূলে যাই ঘটুক, গর্ভজাত সন্তান তো তার পক্ষেই থাকবে, ভুমিষ্ঠ হয়েই যে সুতীব্র স্বরে কেঁদে উঠবে শিশুটি সেই স্বরই হবে তার পক্ষের জোরালো স্লোগান! তবে আর পরোয়া কিসের!
দৃঢ় কণ্ঠে বলল দোলা, ‘ফিরে চলেন।’
বলেই আর দাঁড়াল না সে, পিছন ফিরে আগের মতোই সতর্কভাবে পা ফেলতে লাগল সাঁকোর বাঁশে।
‘এই দাঁড়া, ফিরে যাব মানে!’ কুমুদের মুখে বিরক্তি আর বিস্ময়।
পা থামিয়ে ঘাড় ফেরাল দোলা, ‘আপনি না কোলেন আমার বিয়ে দেবেন?’
‘আমি তো কইছি, তোরাই তো মা-বেটি মুখ খুললি না।’
‘তাইলে আসেন, দ্যাকপো আপনি কেমন দিনকে রাত রাতকে দিন করবার পারেন!’
‘হুদাই আমারে শীতের মইদ্যে এত পথ খাটালি ছেমরি?’
‘চলেন, সোজা আপনার সাথে গিয়ে শ্বশুরবাড়ি উঠব। তারপর আপনারে গরম চা বানায়ে খাওয়াবো।’ মৃদু হেসে আবার পা চালাল দোলা।
‘শ্বশুরবাড়ি উঠবি মানে? আগে কবি তো মানুষটা কিডা, বুড়া না কানা?’
‘বুড়াও না, কানাও না, টগবগে জোয়ান।’ না তাকিয়ে, না থেমেই বলল সে।
‘জাত না বেজাতের, হিন্দু না মোসলমান?’
নিমেষের জন্য পিছনে ঘাড় ফিরিয়ে বলল, ‘মানুষ।’
কুমুদ সিগারেটের উচ্ছিষ্টটুকু শিশিরমাখা দূর্বাঘাসের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে সাইকেল কাঁধে তুলে সাঁকোয় পা রাখলেন, ‘আচ্ছা ছেমরি তো! তা মানুষটা কিডা, নাম কী?’
পুনরায় চলা থামিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে কুমুদের মুখের দিকে তাকাল দোলা। মুখে কিছুই বলল না, মৃদু হেসে ঘাড় ফিরিয়ে গাঙের অপর পারের গাছ-গাছালির ওপর দিয়ে পুব আকাশে সদ্য উদিত রক্তিম সূর্য’র দিকে তাকাল!
ঢাকা।
সেপ্টেম্বর ২০১৫
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৬
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা..........
২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৬
হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার!
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১২
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ।
শুভকামনা.......
৩| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:২৬
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: খুব সুন্দর বর্ণনার ভঙ্গী। ভালো লেগেছে খুব
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১৫
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা নিরন্তর.........
৪| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৬
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
লেখাটি ৭ম বাংলা ব্লগ দিবস ২০১৫ উপলক্ষে আয়োজিত লেখা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ায় আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৪
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন, শুভকামনা নিরন্তর..............
৫| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০৯
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: অনেক সুন্দর লেখা । অভিন্দন আপনাকে বিজয়ী হওয়ার জন্য।
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৬
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ।
ভাল থাকবেন, শুভকামনা রইলো............
৬| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫০
আরজু পনি বলেছেন:
কুমুদের পোলা সূর্য...
পড়ে তাই মনে হলো...দোলা সূর্যের বাড়িই রওনা হলো তবে !
অসাধারণ লিখেছেন !
বিজয়ী হ্ওয়ায় অভিনন্দন রইল ।
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৭
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
যথার্থ ধরেছেন আপনি।
ভাল থাকবেন, শুভকামনা নিরন্তর.................
৭| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অসাধারণ লিখেছেন !
বিজয়ী হ্ওয়ায় অভিনন্দন রইল
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০৯
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ।
শুভকামনা নিরন্তর..............
৮| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩১
রুদ্র জাহেদ বলেছেন: আরজুপনি বলেছেন:
কুমুদের পোলা সূর্য...
পড়ে তাই মনে হলো...দোলা সূর্যের বাড়িই রওনা হলো তবে !
সাবলীল বর্ণনায় অসাধারন লিখা।অভিনন্দন। আপনাকে সুপ্রিয় লেখক-ব্লগার
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১০
মিশু মিলন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন। শুভকামনা নিরন্তর..............
৯| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১০
সকাল রয় বলেছেন: আপনার লেখনি অসাধারণ হয়____
একবার শুরু করলে শেষ না করে উঠা যায়না____
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১১
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
আপনি নিজেও একজন গুণী লেখক-কবি।
ভাল থাকুন, শুভকামনা নিরন্তর........
১০| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৬
এমডি এআর মুবিন বলেছেন: গল্প পড়ে তো আমি অভিভূত! এত চমৎকার ও সাবলীল হয় নাকি!
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৮
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
অনুপ্রাণিত হলাম।
ভাল থাকবেন, শুভকামনা রইলো.............
১১| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:১৩
প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল গল্প। ধন্যবাদ
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৪
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ।
শুভকামনা............
১২| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৬
হাসান মাহবুব বলেছেন: অভিননন্দন!
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪১
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ সুপ্রিয়।
শুভকামনা নিরন্তর.............
১৩| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৩
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১২
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন। শুভকামনা.............
১৪| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৩৯
মিথুন আহমেদ বলেছেন: অসাধারণ.।.।.।.। চমৎকার। খুব ভালো লাগল। ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছুর আশায় থাকলাম।
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১২
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
ভাল থাকবেন। শুভকামনা নিরন্তর.............
১৫| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫৭
পুলহ বলেছেন: হার্ডকোর সাহিত্য! অসাধারণ।
ছবি আকতে সবসময় রং-তুলি লাগে না, অক্ষর দিয়েও যে মাঝে মাঝে অপূর্ব সব চিত্র তৈরি করা যায়- আপনার গল্প তার একটা বড় প্রমাণ!
ভালো থাকবেন লেখক। শুভকামনা জানবেন !
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০১
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। অনুপ্রাণিত হলাম।
সেই সাথে আপনাকে অভিনন্দন!! আপনার গল্পের অর্ধেক পড়েছি, বাকিটা আজ পড়বো।
অনেক অনেক ভাল থাকবেন। শুভকামনা নিরন্তর..............
১৬| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৮
সোমহেপি বলেছেন: অভিনন্দন !
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫৪
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ।
শুভকামনা..........
১৭| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫১
ফারহান মুক্তাদির বলেছেন: অসম্ভব সুন্দর আইডিয়া এবং লিখনি।
২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:২২
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
ভাল থাকবেন। শুভকামনা নিরন্তর.............
১৮| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৯
আজিজার বলেছেন: "আর সূর্য? তেইশ বছর বয়স হয়ে গেল, আজ পর্যন্ত কোন মিয়ার সাথে কতা কওয়া দূরে থাক মুহির দিকে চোখ তুলে তাকায় না"
তখনই ধারনা করছিলাম, এই ব্যাটা সূর্যই একাজ করেছে। প্রথম হওয়ার জন্য অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১১
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
ভাল থাকবেন। শুভকামনা নিরন্তর..............
১৯| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৪২
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
অবতংস-সর্বস্ব মানুষ্য সমাজে যুদ্ধ নিত্য কখনো আপনজনে কখনো অনিশ্চিত ভবিতব্যে ৷ তবু স্বপ্ন জিয়ে রেখে আগামীর রক্তিম পথচলা ৷আশায় বেঁচে থাকা পরম্পরায় ৷নিম্নবর্গের অল্পবয়সী জীবনে নিয়ত দৃঢ়পদই পথিকের একান্ত নিজস্ব আইডেন্টিটি ৷
বর্ণনাৈশৈলী ছোঁয়ে গেল ৷স্বীকৃতির দায়িত্ব বাড়ুক সৃজনে ৷
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:২৬
মিশু মিলন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য। ভীষণ অনুপ্রাণিত হলাম।
ভাল থাকবেন। নতুন বছরের শুভেচ্ছা.....শুভকামনা...............
২০| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১৭
তাসলিমা আক্তার বলেছেন: অসম্ভব রকমের ভালো লাগলো
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২০
মিশু মিলন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
ভাল থাকবেন। শুভকামনা রইলো...........
২১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০২
বিজন রয় বলেছেন: ভাল লাগল।
++
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১১
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ।
শুভকামনা রইলো...........
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৫
মাকড়সাঁ বলেছেন: ভাল লাগলো খুব ।