নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিশু মিলন

মিশু মিলন

আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।

মিশু মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিষাদ সঙ্গম

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:২৯

গত কয়েকদিন যাবৎ শরতের ভ্যাবসা গরমের পর আজ রাতের বৃষ্টি আর জোলো বাতাস সুনীলের শরীরে উস্কানি দিচ্ছে, অনুভূতির নেতিয়ে থাকা সলতেয় কামের আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছে, ক্রমশ উত্তাপ ছড়াচ্ছে তার সারা শরীরে। খালি গায়ে লুঙ্গি পরে কোলবালিশটা দু-পায়ের মাঝে রেখে বিছানায় কাত হয়ে শুয়ে আছেন সুনীল। নবনীতা বাতি বন্ধ করে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিতেই কোলবালিশটা পিঠের কাছে রেখে নবনীতাকে বুকের কাছে টেনে নেন সুনীল, তার দেহাভ্যন্তরে ধীরে ধীরে জ্বলতে থাকা কামাগ্নির শিখা লক লক করে উঠে নবনীতাকে গ্রাস করতে চায় যেন! ত্রিশ-চল্লিশ মিনিট আগে নবনীতা স্নান করেছে, শরীরে এখনো সাবানের স্নিগ্ধ গন্ধ। নবনীতার গায়ে ম্যাক্সি, পরনে ছায়া। নবনীতাকে প্রায় বুকের ওর টেনে আনেন সুনীল, গলায় নাক রেখে দীর্ঘ স্বাস নেন, চুমু খান। নবনীতার চুলে মুখ ঢেকে যায় সুনীলের। হঠাৎ বিছানায় পড়ে থাকা নবনীতার মোবাইলে সুরেলা রিংটোন বেজে ওঠে। ফোন ধরে না সে, সুনীলের চুলে-গালে আদর করতে থাকে। সুনীলের দুই ঠোঁটের ফাঁকে এখন তার ঠোঁট। রিংটোন থেমে যায়। সুনীল দুই হাতে নবনীতার ম্যাক্সি খুলে ফেললে স্তনদ্বয় থেবড়ে থাকে সুনীলের বুকের ওপর। নবনীতা সুনীলের লুঙ্গির গিঁট খোলে, দুই পা দিয়ে কায়দা করে লুঙ্গি নামিয়ে দেয় পায়ের কাছে, সুনীল দুই পায়ের সাহায্যে লুঙ্গি ছুড়ে দেয় বিছানার একপাশে, বিছানায় কোনায় ঝুলতে ঝুলতে লুঙ্গিখানা পড়ে যায় মেঝেতে।

সুনীল নবনীতাকে বিছানায় চিৎ করে শুইয়ে দেন, নবনীতার ছায়ার গিঁট খুলে নিচের দিকে নামিয়ে পা দিয়ে বের করে ছায়াটা বিছানার একাপাশে রেখে নগ্ন ঊরুতে চুমু খান এবং জিভ দিয়ে চাটতে থাকেন। সামান্য বিরতি দিয়ে নবনীতার ফোনের রিংটোন আবার বেজে ওঠে। এবার নবনীতা ডান হাত বাড়িয়ে ফোনটি হাতে নেয়, স্ক্রীনে তিথির নাম দেখতে পায়। এতো রাতে ফোন করেছে কেন ও? করুক, কাল সকালে কলব্যাক করা যাবে। নবনীতা ফোনটা রেখে দেয়।

সুনীলের জিভ নবনীতার ঊরু থেকে নাভিতে উঠে এসেছে। সঙ্গমের সময় আগ্রাসী হয়ে ওঠেন সুনীল, যেন কুস্তির ময়দানে নামেন, প্রচণ্ড জোরে নবনীতার শরীর চেপে ধরেন, খামচে দেন, কামড় দেন, চুল টানেন, পিঠে কিংবা নিতম্বে চড়ও মারেন! নবনীতার সারা শরীর চটকান এবং চাটেন। সুনীলের লালায় নবনীতার শরীর চটচট করে, গা ঘিন ঘিন করে। বিয়ের পর প্রথম প্রথম তার খুব অস্বস্তি হতো, ব্যথা লাগতো, সঙ্গমের পর স্নান করে তারপর ঘুমাতো। কিন্তু মাঝরাতে কিংবা ভোররাতে সুনীলের আবার কাম জেগে উঠলে আবারও সে একইভাবে তার শরীর চাটতো। একরাতে কতোবার আর স্নান করা যায়? শেষে স্নান করা বাদ দিয়েছে। আস্তে আস্তে সুনীলের এই অভ্যাসের সঙ্গে সে নিজেও অভ্যস্ত হয়ে গেছে। সঙ্গমের সময় সুনীলও নবনীতার কাছ থেকে আগ্রাসী আচরণ পছন্দ করেন।

আবার ফোনের রিংটোন বেজে ওঠে, নবনীতা ঘাড় ঘুরিয়ে মোবাইলের স্ক্রীনে তিথির নাম দেখতে পায়। এতোবার কেন ফোন করছে ও, তাও এতো রাতে? এবার সুনীল বলে, ‘কে ফোন করছে?’
‘তিথি।’
‘ধরবে?’
‘না।’

মিথ্যে বলতে হয় নবনীতাকে, তিথির ফোন নয়। তিথি নামে সত্যিই একজন বান্ধবী আছে তার। কিন্তু তিথির সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই অনেকদিন। তিথি নামের আড়ালের মানুষটির নাম কাকলি। কাকলি তার প্রাক্তন ননদ, তার প্রথম বর বিভাসের ছোট বোন। বিভাসকে ভালবেসে বিয়ে করেছিল নবনীতা, এগারো বছর আগে। তখন বিভাসের বয়স ছিল সাতাশ, তার চব্বিশ। বিয়ের পর বিভাসদের যৌথ পরিবারে তার অসুবিধা হচ্ছিল, কাকিল ব্যতিত বিভাসের পরিবার এবং বিভাসের সঙ্গে তার ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সম্পর্কটা এমন তিক্ততায় রূপ নেয় যে তারা ডিভোর্স করার সিদ্ধান্ত নেয়। ডিভোর্সের মাঝখানে বাধা ছিল তাদের এক বছরের ছেলে অপূর্ব। অপূর্বকে বিভাস রাখতে চেয়েছিল, নবনীতা দেয়নি। বিভাস জানতো যে আদালতে গেলে সে হেরে যাবে, তাই আর ছেলেকে নিয়ে টানাটানি করেনি। কিন্তু যে ছেলেকে নিজের কাছে রাখতে পারবে না, সেই ছেলেকে ভবিষ্যতে তার উত্তরাধিকার রাখতেও চায়নি। ফলে ডিভোর্সের সময় বিভাস নবনীতাকে শর্ত দেয় যে, অপূর্ব’র সকল দায়িত্ব নবনীতার এবং ভবিষ্যতে অপূর্ব কোনোদিন উত্তরাধিকার দাবী করে তার সম্পত্তির ভাগ নিতে পারবে না। অভিমানী নবনীতা বিভাসের সব শর্ত মেনে নেয়। নিজের ছেলেকে সে বিভাস এবং ওর পরিবারের ছত্রছায়ায় রাখতে চায়নি।

বিভাসের বোন কাকলির সঙ্গে বিয়ের আগে থেকেই ভাল সম্পর্ক ছিল নবনীতার। তাদের ডিভোর্সের সময় খুব কেঁদেছিল কাকলি। কাকলি’র সঙ্গে সেই সম্পর্ক আজ এতো বছর পরও অটুট আছে। প্রায়ই কথা হয় কাকলি’র সঙ্গে। ডিভোর্সের মাস ছয়েক পর আবার বিয়ে করে বিভাস। বিভাসের এখন তিন মেয়ে, কোনো ছেলে নেই। এসব কাকলির মুখেই শুনেছে নবনীতা।

নবনীতাও বিয়ে করে তার থেকে তেরো বছরের বড় সুনীলকে। সুনীলেরও আগে সংসার ছিল। স্ত্রী মারা যায় এক মেয়েকে রেখে। নবনীতার বাবা চেষ্টা করেছিলেন কোনো অবিবাহিত ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে, কিন্তু তেমন ছেলে পাওয়া যায়নি। ছেলেসহ ডিভোর্সি মেয়েকে কোনো অবিবাহিত ছেলে বিয়ে করতে চায়নি। শেষ পর্যন্ত এক মেয়ের বাবা বিপত্নীক সুনীলকে পাওয়া যায়। বিয়ের সময় সুনীল শর্ত দিয়েছিল যে তার যেহেতু ছেলে নেই, অপূর্বকে তিনি নিজের ছেলে হিসেবেই মানুষ করবেন। তার পরিচয়েই বড় হবে অপূর্ব। ভবিষ্যতে কোনোদিন অপূর্ব’র জন্মদাতা পিতার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা চলবে না। শর্ত মেনেই তাদের বিয়ে হয়। সুনীলের বয়স এখন আটচল্লিশ, নবনীতার পঁয়ত্রিশ। অপূর্ব এ বছর দশে পা দিয়েছে, সুনীলকেই সে বাবা বলে জানে, বাবা বলে ডাকে। সুনীলের ঔরসে নবনীতার এক মেয়ে হয়েছে।

সুনীল এখন মুখ মৈথুন করছেন, আর সুখের আতিশয্যে মৃদু শীৎকার করছে নবনীতা। সঙ্গমকালে নবনীতা আগে শীৎকার করতো না, দাঁতে দাঁত চেপে থাকতো আর ঝাল লাগলে মানুষ যেমনি শোষায়, তেমনি শোষাতো। তা পছন্দ নয় সুনীলের। সঙ্গমের সময় কীভাবে জোরে জোরে শীৎকার করতে হয় তা পর্ণোগ্রাফি দেখিয়ে নবনীতাকে শিখিয়েছেন সুনীল।

সুনীলের মুখ মৈথুনে নবনীতার সারা শরীরে যেন এখন আগুন জ্বলছে! সে দু-হাতের মুঠোয় সুনীলের চুল মুঠো করে ধরছে আছে, শীৎকারের ফাঁকে ফাঁকে দাঁত দিয়ে নিজের ঠোঁট চেপে ধরে সুনীলের কাঁধ খাঁমচে ধরছে।

মোবাইলে একটা মেসেজ আসার শব্দ হয়। উপেক্ষা করতে চাইলেও কৌতুহল জাগে নবনীতার, বাম হাতে সুনীলের চুল মুঠো করে ধরে ডান হাতে মোবাইলটা নিয়ে দ্যাখে তিথির নাম। মেসেজটা ওপেন করে পড়তে শুরু করে সে-

‘বৌদি, ছোড়দা আর আমাদের মাঝে নেই। রাতে ভাত খাবার পর বুকে ব্যথা উঠেছিল, তারপর জ্ঞান হারায়। হাসপাতালে নিতে নিতেই শেষ। তুমি তো জানো, ছোড়দার এ পক্ষে তিন মেয়ে। যতোই ছাড়াছাড়ি হোক, অপূর্ব তো আমাদের বংশেরই সন্তান, ওর শরীরে তো ছোড়দার রক্তই বইছে। ছেলে থাকতেও ছোড়দা চিতায় উঠে ছেলের হাতের আগুন পাবে না? তা হয় না বৌদি! বড়দা যাচ্ছে তোমাকে আর অপূর্বকে আনতে। তোমার পায়ে পড়ি বৌদি, তুমি বড়দাকে ফিরিয়ে দিয়ো না। অপূর্বকে নিয়ে চলে এসো। একদিন তো সত্যিই ছোড়দাকে তুমি ভালবাসতে, সেই ভালবাসার টানেই না হয় এসো। যে চলে গেছে তার মৃতদেহটির ওপর আর অভিমান করে থেকো না। ছোড়দাকে ছেলের হাতের মুখাগ্নি থেকে বঞ্চিত কোরো না। দোহাই বৌদি, তুমি অপূর্বকে নিয়ে এসো।-কাকলি’

নবনীতা ফোনটা রেখে দেয়। বিভাস নেই! তার একমাত্র পুত্রের জন্মদাতা পিতা আর এই পৃথিবীতে বেঁচে নেই! না থাকুক সম্পর্ক, তবু অপূর্ব’র জন্মদাতা আছে, এটা ভাবতেই এতোদিন এক ধরনের স্বস্তি পেতো নবনীতা। আর আজ? আজ তার পুত্র অপূর্ব পিতৃহারা হয়েছে। পিতৃহারা অপূর্ব’র জন্য তার বুকের ভেতর হাহাকার করে ওঠে। আর তার নিজের হৃদয়ের কোথাও কি বিভাসের জন্য এতোটাকু ভালবাসা ঘাপটি মেরে নেই? আত্মপ্রশ্নের উত্তর পায় নিজের ভেতর থেকেই- আছে তো, বিভাসের জন্য তার হৃদয়ের একটা জায়গা আছে, যে জায়গা কখনোই দখল করতে পারেননি সুনীল! আজ বিভাস পৃথিবীতে বেঁচে না থাকলেও তার হৃদয়ে বিভাসের জন্য জায়গা থাকবে আমৃত্যু। শীৎকারের বদলে নবনীতার গলা থেকে কান্না ছিটকে বোরোতে চায়, সঙ্গমের আনন্দাশ্রু’র পরিবর্তে তার চোখে থৈ থৈ করে বেদনার অশ্রু।

তার শরীরের উপরে উঠে এসে এখন মৈথুনে-মর্দনে-চুম্বনে উত্তাল সুনীল। নবনীতার মনের বাগানে ফুটন্ত কামপুষ্প অকস্যাৎ লজ্জাবতী পাতার মতো গুটিয়ে গেলেও প্রকৃতির নিয়মে দেহকুঞ্জের কামপুষ্প ফুটেই থাকে। তার কামসরোবরে অবিরাম ডুবসাঁতার কাটে কামচরা পাখি! তবু তার সঙ্গমসুখ ডুবে যায় বিষাদের ফেনিল উল্লোলে!

ঢাকা।
অক্টোবর, ২০১৮

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: সঙ্গমই জীবনের সব আনন্দ নয়।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫০

মিশু মিলন বলেছেন: হুম। ধন্যবাদ।

২| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৭

সাইন বোর্ড বলেছেন: গল্প বলার ঢঙটা অসাধারন ! কাহিনীর বিন্যাসও চমৎকার !

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১২

মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.