নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।
চিকু’র সাধারণত মন খারাপ হয় না, বাল্য-কৈশোর-যৌবনের শুরুর দিকে সে যখন ভাঙারি টোকাতো তখন প্রায়ই চুরির অভিযোগে মার খেত, মার খেয়ে চোখ-মুখ ফুলে যেত কিংবা রক্ত বেরিয়ে যেত, মার খাবার সময় সে ব্যথা পেয়ে বিকট চিৎকারে কান্নার অভিনয় করত যাতে বেশি না মারে; তারপর ঘটনাস্থল থেকে কেটে পড়তে পারলেই তাকে আর পায় কে, ছড়ে যাওয়া জায়গায় থুথু ছিটিয়ে কিংবা রক্ত বস্তায় মুছে বস্তাটা কাঁধে ফেলে আবার ভাঙারি টোকনো শুরু করত এবং যথারীতি নতুন করে চুরির ধান্দা করত; সেই সময়ে প্রায়ই সে অন্য টোকাইদের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ত, একটু-আধটু মারামারি নয়, রীতিমতো রক্তারক্তি কাণ্ড হয়ে যেত, তবু কখনো তেমন মন খারাপ হতো না চিকু’র!
এখন চিকুর বয়স বাইশ, চিকু নামটি ওর বাবা-মায়ের দেওয়া নাম নয়, বাল্যকালে যেসব ছেলেদের সঙ্গে পার্কের কোনার দিকে গিয়ে ডান্ডির নেশা করত, সেইসব ছেলেরাই ওকে চিকু নামে ডাকতে শুরু করে ওর শরীর তখন অতিশয় শীর্ণ ছিল বলে। এখনও যে চিকুর স্বাস্থ্য খুব ভালো তা নয়, তবে আগের মতো অতিশয় শীর্ণ নয়, তবু ওর চিকু নামটি রয়েই গেছে। এখন রাস্তা-ঘাটেই চিকুর দিবারাত্রি কাটে, ঘুমায় কখনো কোনো ফুট ওভারব্রিজের ওপর, কখনো পার্কের বেঞ্চে; এই যত্রতত্র ঘুমানোর জন্য মাঝে মাঝে পুলিশের ঠ্যাঙানিও খায় খায়, অপরাধী সন্দেহে দু-বার তাকে জেলও খাটতে হয়, তবু তার মন খারাপ হয় না কখনো।
কিন্তু আজ চিকুর মন খারাপ, সাতসকালে পোস্টার লাগাতে গিয়েছিল সে। ও হ্যাঁ, চিকু এখন আর রাস্তা ঘাটে ভাঙারি টোকায় না, চুরিও করে না, এখন সে পোস্টার সাঁটায়, রাজনৈতিক পোস্টার থেকে শুরু করে সাবানের বিজ্ঞাপনের পোস্টার, সব রকমের পোস্টার সাঁটায় ঢাকা শহরের রাস্তায় ঘুরে ঘুরে; এই পোস্টার সাঁটাতে গিয়েই আজ তার মন খারাপের মতো ব্যাতিক্রমী ঘটনাটি ঘটেছে।
সারাদিন ঘটনাটি তার মাথার মধ্যেই ছিল, ঘটনাটিকে সে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারেনি, যখন-যেখানে গেছে তাকে অবিরাম খুঁচিয়েছে ঘটনাটি। এখন এই রাতের বেলা যাত্রী ছাউনীতে শুয়ে শুয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে সে একই কথা ভাবছে।
সকালে সে যখন সেগুনবাগিচায় একটা বাড়ির দেয়ালে পোস্টার সাঁটাচ্ছিল তখন হঠাৎ উপর থেকে তার গায়ে থুথু পড়ে, সে সঙ্গে সঙ্গে ওপর দিকে তাকায়, আর তখনই বারান্দা থেকে টুথব্রাশ হাতে থাকা লোকটি আরেকবার তার দিকে থুথু ফেলে গর্জে ওঠে, ‘খানকির পোলা তর মায়ের….’
এর পরের শব্দটি আর মনে আনতে চায় না সে, এর পরের শব্দটি ভীষণ কুৎসিত, এই শব্দটির জন্যই তার মন খারাপ।
ছেলেবেলায় চিকুর বাবা রফিকুল্লাহ কখনো তার কাছে তার মায়ের গল্প বলেনি। তার বয়স যখন পাঁচ বছর, যখন সে আর তার বাবা ওসমানী উদ্যানের এক কোনে তাঁবু খাঁটিয়ে রাত্রি যাপন করত, তখন একদিন সে তার বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘বাবা, সবার মা আছে, আমার মায় কই?’
বাবা বলেছিল, ‘তর মায় মইরা গেছে।’
বাবাকে অবিশ্বাস করার কোনো কারণ ছিল না তার, কেননা বাবা-ই ছিল পৃথিবীতে তার একমাত্র আপনজন, তাই সেদিন থেকে সে জানত যে তার মা মারা গেছে। কিন্তু যেদিন তার বাবা গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারের কাছে দুই বাসের চিপায় পড়ে চিড়ে-চ্যাপ্টা হয়ে মরে গেল আর তার পৃথিবীটা একার হয়ে গেল, এর পরদিনই ওসমানী উদ্যানে তাদের তাঁবুর কাছেই তাঁবু খাঁটিয়ে ঘুমাতো আছিয়া নামের একজন ভ্রাম্যমান যৌনকর্মী, সে যাকে আছিয়া খালা বলে ডাকতো, সেই আছিয়া খালা আফসোস করে বলেছিল, ‘মা মাগিডা হ্যার নাঙ্গের লগে ভাগলো, অহন বাপডাও মইরা গেল পোলাডারে এতিম কইরা। অহন পোলাডার কী অইবো!’
তার বয়স তখন নয় বছর; আছিয়া খালা তাকে বুদ্ধি দিয়েছিল বোতল, কাগজ, ইত্যাদি টুকিটাকি জিনিসপত্র কুড়িয়ে বিক্রি করার, বিক্রি করার জন্য ভাঙারির দোকানও সে-ই ঠিক করে দিয়েছিল। তখন তাই করত চিকু, যা আয় হতো আছিয়া খালাকে দিত, বিনিময়ে আছিয়া খালা তাকে খেতে দিত, জামা-কাপড় দিত। বাবা মারা যাবার পরদিন আছিয়া খালার কথাটি সে ভোলেনি, একদিন সে আছিয়া খালাকে জিজ্ঞস করেছিল,‘খালা, আমার মা কার লগে ভাগছে?’
আছিয়া অবাক হয়, সে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হবে তা হয়ত ভাবেনি, সেদিন নেহাতই কথার বশে বলে ফেলেছিল ওর মায়ের ভেঙে যাবার কথাটা। আছিয়া তার দিকে কিছুক্ষণ থম মেরে তাকিয়ে থাকার পর বলেছিল, ‘হুইনা তুই কী করবি, তর ভাঙ্গা কপাল তো আর জোড়া লাগবো না!’
সে আবার বলেছিল, ‘কও না খালা, আমি তো আ হ্যার কাছে যাইতাছি না।’
আছিয়া বলেছিল, ‘এক রিক্সাওয়ালার লগে ভাগছে তর মায়, তর বয়স তহন তিন বছর।’
ব্যাস এটুকুই, মায়ের প্রতি রাগে-ঘৃণায় আর কোনোদিন মায়ের কথা মুখেও আনেনি সে।
আছিয়া খালা একদিন রাতে কাজে গিয়ে ভোরবেলায় আর ফিরল না, সারাদিনেও না, আর কোনোদিনই না।
তারপর থেকে সে আর কারো আশ্রয়ে থাকেনি; একাই থাকত কখনো পার্কে, কখনো ফুটপাতে, কখনোবা ফুটওভার ব্রিজে।পুলিশের তাড়া খেয়ে তার রাতে থাকবার জায়গা বারবার বদলেছে। যা রোজগার হতো তাই দিয়ে হোটেলে ভাত খেত।
মায়ের স্মৃতি তার মনে নেই, তার তিন বছর বয়সের সময় তাকে আর তার বাবাকে ফেলে মা চলে যায়। এরপর বাল্যকালে বাবা মারা যাবার পর সে যখন আছিয়া খালার কাছ থেকে তার মায়ের পরপুরুষের সঙ্গে পালিয়ে যাবার কথা শোনে, তখন সেই অদেখা মায়ের প্রতি তীব্র ঘৃণা জন্মায় তার, এতোটাই তীব্র যে মা শব্দটা শুনলেই তার গায়ে আগুন জ্বলে উঠত যেন!
কিন্তু এত বছর পর আজ সকালে অন্যের মুখে সেই মায়ের সম্বন্ধে কুৎসিত গালি শুনে সারাদিন তার মনটা বিষন্ন ছিল, আর এখন শুয়ে শুয়ে মায়ের শূন্যতা অনুভব করে তার চোখের কোনা দিয়ে জল গড়িয়ে নামছে।
রোজকার মতোই খুব ভোরে ঘুম ভাঙে চিকুর, গতকালের মন খারাপের মেঘ উধাও হয়ে যায় রোজকার ব্যস্ততায়। ঘুম থেকে উঠে সে সোজা চলে যায় প্রেসে, ওর আগেই ভ্যানওয়ালা জাকির পৌঁছে যায়। দুজনে পোস্টারের বান্ডিল নিয়ে ভ্যানে সাজায়, আঠার বালতি জাকিরই নিয়ে এসেছে। চিকু ভ্যানের সামনের দিকে উঠে পাশে রাখা আঠার বালতি ধরে রাখে।
একটু পর পর ভ্যান থামিয়ে পোস্টারে আঁঠা লাগায় জাকির আর চিকু দেয়ালে, গাছে, বিদ্যুতের খুঁটিতে পোস্টার সাঁটায়। শহরের বিভিন্ন সড়কে এবং অলিতে-গলিতে পোস্টার সাঁটিয়ে ওরা যখন মানিকমিয়া অ্যাভিনিউয়ে আসে তখন সকাল, দু-একটি বাস চলছে, অন্যান্য গাড়িও চলছে, ভ্যান চলছে, কিছু মানুষ প্রাতঃভ্রমণেও বেরিয়েছে। জাকির ভ্যান থামিয়ে পোস্টারে আঁঠা লাগায় আর চিকু মোটা পামগাছগুলোতে একটার পর একটা পোস্টার সাঁটাতে থাকে। পামগাছে পোস্টার সাঁটানোর সময় চিকুর পিছন থেকে হঠাৎ একজন লোক তাকে ধমকে ওঠে, ‘ওই বেওকুব ফকিন্নির বাচ্চা, কই পোস্টার লাগাইতাছস?’
চিকু ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকায়, মধ্যবয়সী এক লোক, গায়ে সাদা পাঞ্জাবী, পরনে সাদা পাজামা, মাথায় সাদা টুপি, মুখে দাড়ি। একটু আগেই সে চলন্ত ভ্যানে বসে জাকিরের সঙ্গে হাত বদল করতে করতে গাঁজা টেনেছে, ‘ফকিন্নির বাচ্চা’ বলে গালি দেওয়ায় সে-ও চড়া মেজাজে বলে, ‘গাছে পোস্টার লাগাইতাছি তাতে আপনার কী!’
‘গাছে লাগাইতাছস! ফকিন্নির বাচ্চা গাছে কী ল্যাহা আছে সেইডা দ্যাখছসনি?’
দুজনের তর্ক-বিতর্ক শুনে পথ চলতি দুই তরুণ দাঁড়িয়ে পড়ে, চিকু আরো মেজাজ চড়িয়ে বলে, ‘আপনে কী হ্যাডার সায়েব অইয়া পড়ছেন যে ফকিন্নির বাচ্চা কইয়া গালি দেন! গাছে কী ল্যাহা আছে হেইডা জানি না, আমার পোস্টার লাগানোর কাম, আমি পোস্টার লাগামু।’
লোকটি এগিয়ে গিয়ে জোরে থাপ্পড় মেরে বলে, ‘ফকিন্নির বাচ্চা আল্লাহ’র নামের ওপর পোস্টার লাগাইতাছস, আল্লাহরে অবমাননা করতাছস, এতো বড় অপরাধ কইরা আবার গলা উঁচাইয়া কতা কস!’
আল্লাহ’রে অবমাননা করার কথা শুনে পথ চলতি আরো একজন লোক দাঁড়িয়ে পড়ে, আগের দুজন লোক গাছে লাগানো পোস্টারের দিকে তাকিয়ে দেখে লাস্যময়ী এক নারী একখানা সাবান হাতে নিয়ে হাসছে আর পোস্টারের চারপাশে দৃশ্যমান সাদারঙে লেখা আরবী বর্ণমালার কিছুটা অংশ। আজকাল ঢাকা শহরের অনেক গাছে এবং বিভিন্ন দেয়ালে আরবী বর্ণমালায় নানারকম লেখা দেখতে পাওয়া যায়, আবার বাংলা বর্ণমালায় আরবী শব্দ লিখেও বিভিন্ন গাছে পেরেক মেরে লাগানো হয়। চিকুর মতো ভাতের জন্য লড়াই করা মানুষের সময় কোথায় এসব দেখার!
একজন এগিয়ে গিয়ে সদ্য আঁঠা লাগিয়ে সাঁটানো পোস্টারটি টেনে তুলে ফেলে দিতেই আরবী বর্ণে লেখা আল্লাহর সম্পূর্ণ নাম উন্মোচিত হয় আর সে মুখে বলে, ‘নাউজুবিল্লাহ, করছে কী হালায়!’
আরেকজন বলে, ‘হালায় একটা কাফের, জবাই দেওনের কাম!’
চিকু বলে, ‘আল্লাহ’র নাম না কিয়ের নাম তা আমি ক্যামনে জানমু, আমি কী লেহাপড়া জানি নি! আর গাছে আল্লাহ’র নাম ল্যাহনের কাম কী! আল্লাহ’র নাম ল্যাহা থাকবো মসজিদে। এমনে জাগায়-বেজাজায় আল্লাহ’র নাম ল্যাখলে তো হ্যার ওপর পাখপাহালীতে হাগবো!’
‘আস্তাগফিরুল্লাহ!’ মধ্যবয়সী লোকটি যেন এবার আঁৎকে ওঠেন, তিনি হুঙ্কার দেন, ‘আল্লাহর নামে খারাপ কতা কইছস, ফকিন্নির বাচ্চা তরে আজ জবাই কইরা ফ্যালামু।’ বলেই লোকটি চিকুকে কিল-লাথি মারতে শুরু করে।
চিকু দুই হাত দিয়ে কিল-লাথি প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে বলে, ‘পোস্টার লাগাই বইলা আমি দুইডা ভাত খাই, আমি না খাইয়া থাকলে আল্লাহ কি আমার খাওন পরন দিব? দিব না!’
দুই তরুণ এবং অন্য লোকটিও যেন এই মুহূর্তের অপেক্ষাতেই ছিল, তারাও এলোপাথারি কিল-ঘুষি-লাথি মারতে থাকে চিকুকে। একজন বলে ওঠে ‘নারাই তাকবীর’ অন্যরা বলে ‘আল্লাহু আকবর’।
অবস্থা বেগতিক দেখে জাকির ভ্যান নিয়ে কেটে পড়ে। চথ চলতি মানুষেরা বলে, ‘ছিনতাই করছে নাকি?’
একজন তরুণ বলে, ‘না, হালায় নাস্তিক, আল্লাহর নামে খারাপ কতা কইছে, ইসলাম অবমাননা করছে।’
‘পিডান হালারে!’ বলে তারাও এগিয়ে এসে কিল-লাথি মারতে শুরু করে হয়ত এই ভেবে যে একটা ইসলাম অবমাননাকারী নাস্তিককে পিটালে নিশ্চয় কিছুটা সোয়াব পাওয়া যাবে!
চিকু শুরুতে কিল-লাথি প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলেও, মারপিটকারীর সংখ্যা বাড়তেই নিঃসঙ্গ অভিমূন্য’র মতো তার প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে, সে মাটিতে পড়ে যায় চিৎ হয়ে, তার চোখে মানুষের মুখগুলো ঝাপসা হয়ে আসে, আকাশটা ঝাপসা হয়ে আসে, কানে আবছা শুনতে পায়- ‘নারাই তাকবীর’, ‘আল্লাহু আকবর’!
ঢাকা।
জানুয়ারি, ২০২২
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:২৬
মিশু মিলন বলেছেন: হ ভাই, পৌত্তলিক কুরায়েশদের- আল্লাহু আকবর!
২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: ধর্মই তো দেশটারে খাইলো রে ভাই।
ধর্মের চেয়ে ধার্মিকেরা ভয়ঙ্কর বেশি।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:২৬
মিশু মিলন বলেছেন: হুম সেটাই, ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০১
সাসুম বলেছেন: আল্লাহর নামের উপর পোস্টার লাগায়! শালার নাস্তিকের বাচ্চার সাহস কত দেখছেন ভাই? একদম জবাই দেওন ফরজ এগুলারে।
নারায়ে তাকবীর, আল্লাহ আকবর।