নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কবিরা গাছের মতো, অন্য কবির ছায়ায় বাড়ে না।

মিছিলখন্দকার০০৭

কবি

মিছিলখন্দকার০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবিতা

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৫:২২

পড়ে আছি

.............

হুলস্থুল শীত পৃথিবীতে



গুটিয়ে আসা কুয়াশায়

পাতা ঝরা গাছের শোকের তলায়

বিস্ময়বোধক চিহ্ন হয়ে পড়ে আছি,

প্রলম্বিত ভোর-

নড়লেই ভেঙে যাচ্ছে ঝরা পাতার কোমর!



রুগ্ন ফুসফুস

................

কিসের আভাস দূরে জাল ফেলে আছে?

পাতার পাঁজর ভেঙে হেঁটে যায় কারা?

মর্মরিত ধ্বনি আসে, আর চুপচাপ

পৃথিবীর মধ্য রাত ভেঙে যায়- যেন

নিরীহ কদম হলো নৈশব্দের খুনী

যখন বাতাস, কোনো কথা বলছিল না!



আজ আমি তাহার ঘুমের মধ্যে ঢুকে

রোপন করব ভাবি তুলসির চারা

মুক্ত করে দেব যতো পাললিক পাখি

মিশিয়ে রাখব রংধনু, নদীর পানিতে!

স্বপ্নের ভেতরে ঢুকে বসে রব, যেন

ভোরে তার চোখের কুয়াশা ধুতে এসে

তলিয়ে গেলেই তাকে তুলে নিতে পারি!



অথচ কাদের পায়ের আওয়াজে সেতো

স্বপ্নে যেতে পারছেই না, আমি পারতেছি না

তার স্বপ্নে ঢুকতে কোনোমতে, পাতা জানে-

শরশর করে কাঁপে তার বুক, এই

আমার মতোই তার রুগ্ন ফুসফুস!



আত্মমৈথুন

........................

তাহলে এবার যদি কুয়াশার জামা পড়ে নিই

বুক থেকে ফসকে গিয়ে ভেঙে ফেলি যাদুর আয়না

নিজেরই করতল খেয়ে ফেলি ঘুমে, স্মৃতিহীন শেষ রাতে

আর স্পর্শের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছুটে যাই,

কারও শেকড়ে গিয়ে বসি

আর খসে ফেলি সমূহ চাদর

কান্নার কাছে চাই অক্ষম নিরাময়



দূরে খা খা বারান্দায় টেবিলে রাখা কার চশমা তাকিয়ে থাকে

বলে, এবার শীতের পর বসন্ত ফিরবে না

আর ঘড়ির চিৎকারে জেগে দেখি,

সময়ের গিরি খাদে নিজেরই পতন-



আত্মমৈথুনে পুনরায় জন্ম নিতে চেয়ে

মনে পড়ে করতল হারানোর শোক!



আক্ষেপ

...............

হলো না বাণিজ্যে যাওয়া

নদীর কিনারে বসে শুনি

কতো জাহাজের গর্বিত সাইরেন!



তারা সব তারা

....................



তারা সব তারা হয়ে আছে! থাক!

কাকে কাকে চেনা যায়, ঠাহর করে দেখা যাক

পড়ি, মুখস্ত করছি তাদের

এবার উধাও হলে না পাই যদি আর ফের!



কাজ-কাম

............

সমগ্র জীবন যেন পাহাড়

বাঁচি যেন নুড়ি আর পাথর চিবিয়ে,

নদীর তুফান ধরা দেহ

বাঁধ দিয়ে নিবিয়ে দিয়েছো তার স্রোত!



মায়ের মৃত্যুদিন

................

দুই দিন প্রবাহিত হওয়ার পর ভাবি,

ওই দিন আমি কী কী করেছিলাম



সেদিন মহাবিশ্বে শৈত্যপ্রবাহ ছিল

আর আমি হঠাৎ হারিয়ে যাওয়ার এক কবির

নান্দনিক ফিরে আসার খোয়াব নিয়ে উদিত হয়েছিলাম

বিলম্বিত ভোরে



রেল লাইনের আড়াআড়ি কাঠামো

ও ট্রেনের আসা-না আসার প্রতি মনোযোগ গেঁথে গেঁথে

প্রকৃতপক্ষে বেঁচে থাকার অশ্লীল আকাঙ্খা নিয়ে ঢ়ের লেটে

পৌঁছেছিলাম

যেখানে আদতে পৌঁছানো হয় না-

আর আট ঘণ্টা ধরে মেধা পঁচালাম বেশ



দুপুরে মাখন-মাখানো রুটি,

ধোঁয়ার ভ্রান্তি আর চায়ের চাঞ্চল্যও

উস্কে দিলো না সে দিনের প্রকৃত আভাস



বিকেলে পৃথিবীর যে কোনো সবজি বাজারে

আমিষের দর কষাকষির পর

নিজস্ব অনাচারে কয়লা করে ফেলা সন্ধ্যা



আর ঘুমের হাতে গুম হবার মুখে

গহীন রাত অব্দি

আবিদ আজাদের কবিতার ক্ষেতে আমি উবু হয়েছিলাম



আজ দুই দিন ভেসে এসে

বিস্ময়ের চৌকাঠে কপাল ফাটিয়ে ভাবি-

সাতাশির পর থেকে সব দিনইতো আসলে সমান!



২৯ ডিসেম্বর, ২০১৪



কবিতাগ্রন্থের নাম

..........................

একটা নামের তালাশে কী আশ্চর্য!

শুক্রবারের বগলের মধ্যে অতর্কিতে ঢুকে যায়

সোমবারের বা হাত

রাতের উরু চুলকে ঘাঁ বানিয়ে ফেলে

ডান হাতের নিরীহ নখ

দাঁতে ছিড়ে ফেলে ভোর রাতের কামিজ



আর রাস্তায় তখন মানুষের ছায়া নিয়ে খেলছে

শীতকালীন পুলিশ

নাপিতের চাকু উঠেছে পাণ্ডার পকেটে

সুযোগের পাতে তুলে গণতান্ত্রিক উপায়ে

সিনেমার এক্সটাকে কামড়ে খেলো

যার দুইটা আঙুল

(এর কিছুই দেখল না মরা গলি, ঘুম)



অথচ একটা নামের জন্য কিনা

সন্তর্পনে মদের গেলাসে

ডুবে গেলো এন্টার্কটিকা

ভাবনাকে চুলকাতে পাখা ঘষল পেঙ্গুইন

কোথাও বেজে উঠল শেয়াল-সাইরেন



রোদের কঞ্চিতে খোঁচা মারল পাড়ার সকাল



নাম কি জোনাক ফুল?



পাখির ইশারা

..................

ডালের গল্পে পাতা ঝরে গেলে শীত নামে বিবিধ উপায়ে। যাবতীয় কুয়াশা জানা হয়ে ওঠে জীবনের! আর মানুষ জানতে-বুঝতে গিয়ে হারিয়ে ফেলা; না থাকা কতো কিছু!



ডানে বাঁক নেয়া নদী ভুলে যায় তার লেজ, সমুদ্র নিশ্চুপ হয়ে থাকে। মৎসগন্ধী রাতের মধ্যে ছুরি চালায় ধীবরের হাঁক! দল বেধে গিয়ে দেখে অপার জলের গান, স্ফীত হয়ে ওঠে কারও বুক। পাহাড়ের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলে শৈত্যপ্রবাহ। এদিকে যারা সন্ধ্যার অস্তমান সূর্যের পতনে ম্লান, রাতের বিকেল অব্দি বিচে, চায়ের পেয়ালা হাতে তারা কথাটথা।



সামুদ্রিক হাওয়ার উৎপাতে জানালা বন্ধ করে পর্দা টেনে দেয়া তাদেরই কারও নির্ভুল আঙুল! শরীরের উস্কানিতে ছুড়ে ফেলা পোশাক-পালক। আর ক্লান্তি সেলাই করা ঘুম, আর স্বপ্নে ফুরিয়ে যাাওয়া সকাল; চিরকাল!



এখানে ভাবনার পর্দা ছেঁড়া ট্রেনের সাইরেনে জাগা সন্দেহে ফুটে যাওয়া পাখির ইশারা! নিয়তই!



ভোজ

...............

আমরা একে অপরকে খেয়ে ফেলছি

অজ্ঞাত জীবনের ভোজে!



পর নারীর শ্রীতে কাতর

.............................

তাকে আমি গোধূলীর ঝরে পড়া পালক দিতে চাই

আর বিকেলকে বলি পা চালাতে দ্রুত



পাখির সাথে আত্মীয়তা গড়ে ডানাকে লিখতে বলি

আকাশের ইতিহাস



সন্ধ্যকে বলি সহানুভূতিশীল হতে

বলি, অতোটা হয়েছে যারা পর নারীর শ্রীতে কাতর

মাঝ রাতে হলে তারা কেন বউয়ের কিচিরমিচির পেতে চায়?



শিমুল তুলাকে সাথে নিয়ে তাদের বোঝাও!



মনের মধ্যে

...............

খারাপ মিশে কী যেন হয়ে আছে! এসব তো ভালো নয়- ওহে মন, ওহে খারাপ ব্রাদার!



একজন গাছ

.................

মাঝরাতে একজন গাছকে আমি নিঃশব্দে বাগানে ফিরতে দেখতাম! তাহলে দিনে সে কোথায় থাকতো, পঁছিশ বছর পরের এক বিকেলে এও এক প্রশ্ন হয়ে উড়তে দেখি ঢাকার আকাশে!



সোনার খনি

...................

কারা সে সোনার খনি থেকে ফিরতে ফিরতে ভাবে, সূর্যেও একদিন ঘুরন মেশিন! তারা সোনা তোলে, পরিশোধন করে, মুখে তার বর্জ্র লেগে আছে! হাতের ফোস্কায় কয়েকটা সূর্য উদিত হয়।



তাওতো পৃথিবীতে অমানিশা, ঘুমাতে বলছে মানুষেরে। ভাবনা সে, যাবে যে কোথায়! সোনার খনির শ্রমিক, তার মুখে রাত, সোনার সাথে তার হৃদ্যতা গড়ে ওঠে না্য়!





রাতের উত্তাপ থেকে

.......................

ছাইয়ের মধ্যে ডুবে যাই। আমাকে গাইছে কারা ঘুমে ঢুকে শুনি!



এখনো রয়েছে চাপা আগুনের গতি

রাতের উত্তাপ থেকে উদ্ধার করোগো ডুবুরি।



ফুলের সুগন্ধ নিতে বাগানে ভিড়ছে বানিজ্য তরী,

সে তরীতে আমাকেও তুলে দিতে হবে?



নিজের কিনারে শুয়ে থাকা,

সাইরেনে খানখান হলেই খোয়াব

অংশত উধাও হয়ে যাই



রাতের উত্তাপ থেকে উদ্ধার করোগো শিকারী!



ভ্রান্ত বিকেলে

................

যে কোনো ভ্রান্ত বিকেলে

কলইয়ের ক্ষেত পাড় হয়ে

অন্য এক পৃথিবীর নদীর পাড়ে চলে যাই।

যেখানে বালি হাঁস উড়ে যাচ্ছে বালিহাঁসের নিয়মে

কিছুটা আড়াল খুঁজে কাশবনে পাপড়ি মেলছে মেয়েছেলের শরীর



তাদের দ্বৈত চোখের জলাভূমিতে লাগা হাওয়া চঞ্চল

বসন্তের প্ররোচনা মেয়েটার বুকে নিয়ে যায় ছেলেটার হাত

আর পূর্ব পৃথিবীর বিগত প্রেমিকের চুমুর ঝাঁপটায় কাঁপে

তার অভূতপূর্ব ঠোঁঁট!



নিশাগামী

...................

আমার সকল সাধ কেন যে নিশাগামী ইদানিং-

এই প্রশ্নের মধ্যে তার থাকাটা সমীচীন ভেবে,

আমি প্রশ্ন থেকে খেই হারিয়ে নিশাভিমুখে চলে যাই।

দেখি, সে রাত্রির পালক খুলছে টেনে টেনে

শিগগিরই এর মাঝ থেকে কীযে বের করে আনে!



কে জানে, আমাকে না বের করে আনে মহীয়সী!



এইসবে পৃথিবীর প্ররোচনা আছে

............

জীবন আসলে মৈথুন-

সময়ের সাথে এই মিথস্ক্রিয়া

এই মনের মধ্যে যতো খারাপের নুড়ি নিয়ে

বিষণ্নতার ঢাল বেড়ে গড়াতে গড়াতে নেমে রাত্রির জরায়ুতে,

পুড়িয়ে ও পুড়ে তার শোকের পোষাক খুলে ভোর বের করা।



লোকজনের চলাচল শুরু হওয়ার পরের পথ ধরে

চলে যাওয়া নিজের স্রোতের থেকে কার বা ঘূর্ণিঝড়ে,

গলা ধরে শুয়ে থাকা কার গোপন বাড়িতে!

এইসবে পৃথিবীর প্ররোচনা আছে জেনে

ভাষার পাখিকে উড়াল শেখানোর মুগ্ধতা নিয়ে

সুন্দরের আভাস কুড়াতে এই মেলে ধরা চোখ,

যা দেখেছে কিছু তার ঘটেনি কখনো!



অনর্থের হাওয়া

.................

এই যে অনর্থের হাওয়া, কী প্রাঞ্জল অর্থহীন কমলালেবুর পৃথিবী। বিকেলে দুলতে থাকা তন্ময় শর্ষে ফুল। রাত্রিকালীন অনুতাপ, ঘুমের মধ্যে লাগা বিছার শরীর।



যেন সবই শাপের ফনায় নাচা জীবিকার ঝুঁকি। ভেতরে ভেতবে সবই এতো ক্রুর, এতো ধোঁয়া! সহজ জলের ভেতর এতো কুটিল প্রবাহ! জীবন ডুবিয়ে সে নাকি ভাসিয়ে তোলে মৃত্যুর প্রদাহ!



এসব ভাবনার মধ্যে বেদেনীরা আসে-যায় শ্রীমন্ত ঘাটে। আমার বুকের মধ্যে তারা পাতে সংসার। তারা সব ‘সিংগা লাগাইতে আসে’, ‘দাঁতের পোকা তুইলতে আসে’, সহজ বিষয়তো নয় এই আসা-যাওয়া!



আমাদের জয়ের দিনে, কেন যে বিপক্ষের এমন হেরে যাওয়া!



জীবনের বিস্ময়বোধ

........................

সে কোন অবাকযাত্রায় চোখের আভাসে

সান্ধ্যভাষা নিয়ে বসে থাকা

বনের বাংলো বাড়িতে!



শার্সিতে ধুলোর দাগ- নৈঃশব্দ চিড়ে ফেলা পাখির আওয়াজ

তাহলে জীবন, বিস্ময়বোধক চিহ্নের নামে পাললিক ওড়াউড়ি!



বনের মধ্যে এই বাতাসের সব কথা বোঝার আগেই

সে ইচ্ছায় ঝরে যাবে পাতা! কেউ তার খোঁজও নেবে না!



আর এমন রোদের জল, স্বতঃস্ফূর্ত ফুল

লতার-গাছের, পাখির-পতঙ্গের, হরিণের-সাপের দেশে

মানুষ নম্র হয়ে ওঠে, ফোটে বুঝি মানুষের মন।

কিছুটা একার মতো একা হওয়া

কিছুটা মৃত প্রসবা গাভীর মতো দুঃখ হওয়া

কিছুটা দুপুরের মতো খাঁখাঁ হওয়া

গ্রীষ্মের মতো নিজের ভেতরে নিজে ঝিঁঝিঁ হয়ে ওঠা ।



আসলে যদিও এই বন নেই,

গাছ নেই, পাতা ঝরা নেই

বনের মধ্যে কোনো কংক্রিট বাড়ি নেই

বাড়ির মধ্যে কোনো জানালা নেই, জানালায় ধুলো নেই

তার পাশে কারও আর বসে থাকা নেই

বসে থাকার দিকে কোনো ধাবমান পাখির চিৎকার নেই



অথচ জীবনের ভ্রান্তি ও বিভ্রম আছে! বিস্ময়বোধ আছে!

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:০২

বৃতি বলেছেন: আসলে যদিও এই বন নেই,
গাছ নেই, পাতা ঝরা নেই
বনের মধ্যে কোনো কংক্রিট বাড়ি নেই
বাড়ির মধ্যে কোনো জানালা নেই, জানালায় ধুলো নেই
তার পাশে কারও আর বসে থাকা নেই
বসে থাকার দিকে কোনো ধাবমান পাখির চিৎকার নেই

অথচ জীবনের ভ্রান্তি ও বিভ্রম আছে! বিস্ময়বোধ আছে!


চমৎকার সবগুলো কবিতাই! অনেক শুভেচ্ছা :)

২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:২১

এম এ কাশেম বলেছেন: দারূণ কথার মিছিলে
আমি ও এলাম চলে

শুভ কামনা কবি।

৩| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:২৯

শাহরীয়ার সুজন বলেছেন: ভালো লাগলো।

৪| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:১৮

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: চমৎকার কবিতা| দু পর্বে দিতে পারতেন| ভাল লেগেছে| মাঝে করতেছি শব্দট কানে ঠেকল

৫| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:২৩

নিলু বলেছেন: লিখে যান

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.