নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক আমার ভাবনা........

"ধর্মীয় কুসংস্কারে যারা আবদ্ধ তারা সব সময়েই দরিদ্র থাকে।"

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন(মিঠু)

"ধর্মীয় কুসংস্কারে যারা আবদ্ধ, তারা সব সময়েই দরিদ্র থাকে।" ---ডাব্লিউ এস ল্যান্ডস।

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন(মিঠু) › বিস্তারিত পোস্টঃ

আইসিটিতে বাংলাভাষার প্রয়োগ

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ সকাল ৯:৩৮

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন

জন্মের পর আমাদের মায়ের মুখ থেকে যে ভাষাশুনে আসছি, সেটাই আমাদের মাতৃভাষা। নিজের মায়ের মতোই মাতৃভাষাকে আমরা সবাই ভালবাসি, শ্রদ্ধা করি। ভাষা গবেষণা প্রতিষ্ঠান এথনোলগঃ ল্যাংগুয়েজ অব দ্য ওয়ার্ল্ডের ২০০৯ সালে প্রকাশিত হিসাবমতে, সারা বিশ্বে প্রায় সাত হাজার ৩৫৮টি ভাষা এবং প্রায় ৩৯ হাজার ৪০০টি উপভাষা রয়েছে। মাতৃভাষা বাংলার জন্য একমাত্র জাতি বাঙালীরাই লড়াই করেছে। বঙ্গীয় সমাজে বাংলা ভাষার অবস্থান নিয়ে বাঙালি মুসলমানের আত্ম-অম্বেষায় যে ভাষাচেতনার উন্মেষ ঘটে, তারই সূত্র ধরে ১৯৪৮ সালের মার্চে এ নিয়ে সীমিত পর্যায়ে আন্দোলন হয় এবং ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে তার চরম প্রকাশ ঘটে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৯)। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাতৃভাষাকে বিশেষভাবে সম্মান জানানোর জন্য একটি দিবস আছে। বাঙ্গালীর সেই দিনটি হলো ২১ ফেব্রুয়ারি আর ভাষাটি হলো বাংলা। প্যারিসে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর ৩০তম সাধারণ সভায় ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। আমাদের বাঙ্গালী আর বাংলা ভাষা-ভাষীদের জন্য এটা কতো গর্বের আর সম্মানের বিষয় তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।

সময়ের সাথে সাথে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এর প্রয়োগ সর্বত্র ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ‘তথ্য-প্রযুক্তি’ পরিণত হয়েছে একটি দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর মেরুদন্ড হিসেবে। বাংলাদেশে এর ব্যবহারও ধীরে ধীরে প্রসারিত হচ্ছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার এবং দেশের আপামর জনগণকে এই প্রযুক্তির সাথে পরিচিত করতে হলে অবশ্যই একে সাধারণ মানুষের কাছে সহযবোধ্য করতে হবে। সে লক্ষ্যে এ ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব মার্তৃভাষার অর্ন্তভুক্তি প্রয়োজন। পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম ভাষা বাংলা এখনও অনেক ক্ষেত্রে প্রযুক্তির বাইরে। আশা করা হচ্ছে আগামী দুই-এক বছরের মধ্যেই বাংলা ভাষা প্রযুক্তির সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত হবে। অন্যথায় ডিজিটাল ডিভাইড (বৈষম্য) তৈরী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আশার কথা এই যে, তথ্য-প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা অন্তর্ভুক্ত করতে, বাংলাদেশ গত ৩০ জুন ২০১০ তারিখে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামের ইনস্টিটিউশনাল সদস্য হয়েছে। ইউনিকোড পৃথিবীর প্রতিটি ভাষার প্রতিটি অক্ষরের জন্য একটি একক সংখ্যা/নম্বর বরাদ্দ করে, সেটা যে প্লাটফর্মের জন্যই হোক, যে প্রোগ্রামের জন্যই হোক, আর যে ভাষার জন্যই হোক। ইউনিকোডে বিশাল লিপিসংকেতের সমর্থন থাকায় ক্লায়েন্ট সার্ভার বা বহুমুখী এ্যপ্লিকেশন এবং ওয়েবের গঠনে পুরনো লিপিমালার ব্যবহার না করে ইউনিকোডের ব্যবহার অনেক খরচ কমিয়ে আনতে পারে। ইউনিকোড কোনো বাড়তি প্রকৌশল ছাড়াই একটি সফটওয়্যার বা ওয়েবসাইটকে বিভিন্ন প্লাটফর্ম, ভাষা এবং দেশে ব্যবহারযোগ্যতা দেয়। এটা ব্যবহারের ফলে ডাটা বিভিন্ন সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে আনাগোনা করতে পারে কোনো রকম বিকৃতি ছাড়াই।

‘আমার বর্ণমালা’ নামে ইউনিকোড বেইজড নতুন একটি বাংলা ফন্ট তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলা একাডেমী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প। কম্পিউটার টাইপিং –এ ব্যবহারের জন্য, এটাই হবে বাংলা একাডেমীর তত্ত্বাবধানে বানানো প্রথম ফন্ট। দেশে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান নিজেদের মতো করে অনেক ফন্ট তৈরি ও বাজারজাত করেছে। ফলে যুক্তাক্ষর ও প্রমিত বানান তেমন গুরুত্ব পায়নি। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে ‘নিকস’ নামে একটি ফন্ট তৈরি করা হয়েছে। এ ফন্টটিতেও যুক্তাক্ষরে লেখাসহ কিছু সুবিধা পূর্ণাঙ্গরূপে পাওয়া যায় না বলে শুনা যায়। তবে ‘আমার বর্ণমালা’ ফন্টে ইউনিকোড সুবিধার সঙ্গে প্রমিত বাংলা, যুক্তাক্ষর ও নতুন সংস্করণের প্রযুক্তির সমন্বয় করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলা একাডেমীর অংশগ্রহণ দেরিতে হলেও তা প্রসংশার দাবিদার। কেননা এতে করে কম্পিউটারে বাংলা টাইপিং এর জন্য জাতীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য একটি ফন্ট পাওয়া যাবে।

অপরদিকে, কম্পিউটারে বাংলা ভাষা নানাভাবে লেখা যায়। কেউ বিজয়, কেউ অভ্র, কেউবা অন্য কোন কী-বোর্ড লে-আউট ব্যবহার করে বাংলা লিখছেন। কম্পিউটারে আমরা আমাদের দেশে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের যে কী-বোর্ড ব্যবহার করছি, তাতে ইউএস-ইন্টারন্যাশনাল কী-বোর্ড লে-আউট অনুসরণ করেই ইংরেজি অক্ষরগুলো সাজানো থাকে। অধুনা কয়েকটি ব্র্যান্ড ইংরেজি কী-বোর্ড লে-আউট এর সাথে দ্বৈতভাবে বাংলা বিজয় কী-বোর্ড লে-আউট অনুসরণ করে ইংরেজি অক্ষরের পাশাপাশি বাংলা অক্ষরগুলোকেও তুলে ধরছেন। বাংলা একটি স্বাধীন দেশের একক ভাষা হিসেবে কম্পিউটার টাইপিং এর ক্ষেত্রে এর একক কী-বোর্ড লে-আউট থাকা আবশ্যক। ইউএস-ইন্টারন্যাশনাল কী-বোর্ড লে-আউট এর মত বাংলা লিখার জন্য দেরিতে হলেও বাংলাদেশের ন্যাশনাল (জাতীয়) কী-বোর্ড লে-আউট তৈরি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ন্যাশনাল (জাতীয়) কী-বোর্ড লে-আউট এর ব্যবহার/পরিচিতি/জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তা অনুসরণ করে বাংলা টাইপ করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

খবরের কাগজে দেখলাম, আমদানি করা সব মোবাইল ফোন সেটেই বাংলা কী-প্যাড থাকতে হবে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফেব্রুয়ারি থেকেই মোবাইল ফোন সেট আমদানির ক্ষেত্রে বাংলা কী-প্যাড থাকা বাধ্যতামূলক। এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বিটিআরসিকে ধন্যবাদ। তবে এ ক্ষেত্রে বাংলা কী-প্যাড লে-আউট কি রকম হবে সেটা নির্ধারণ করা হয়নি বলেই মনে হচ্ছে। আমার ধারনা মোবাইল ফোন সেটেও একক বাংলা কী-প্যাড লে-আউট থাকা আবশ্যক। এ বিষয়টি বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করতে পারেন।



[লেখকঃ মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রোগ্রামার, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি), পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, ঢাকা। ই-মেইলঃ [email protected] ]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ সকাল ৯:৩৯

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন(মিঠু) বলেছেন: You Can Read This Article/Column
From: "The Daily Arthoniti Protidin (দৈনিক অর্থনীতি প্রতিদিন)"
Date: 28_02_2013.
Subject: আইসিটিতে বাংলাভাষার প্রয়োগ।

২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ সকাল ৯:৪২

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন(মিঠু) বলেছেন: অথবাঃ Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.