নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিখতে জানতে ও ছড়িয়ে যেতে চাই।

মোঃ জোবায়ের বাপ্পী

আমি বাপ্পী। জন্মস্থান বরিশাল। বেড়ে উঠা চট্টগ্রাম।

মোঃ জোবায়ের বাপ্পী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বোর্ড পরীক্ষা ও তারপর

১৮ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১১:৪১

এসএসসি বা এইচএসসি কিংবা অন্য কোন বোর্ড পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশের পর অনেকেই আত্মহত্যা করে এমনটা আমরা শুনতে পাই। অথচ এই আত্মহত্যা পিছনে কে বা কারা দায়ী তা আড়ালেই থেকে যায়। ছেলেটি বা মেয়েটি ব্যর্থতার জন্য আত্মহত্যা করেনি, সে আত্মহত্যা করেছে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, পাড়াপড়শি, বন্ধু-বান্ধবদের কটুক্তি, অপমান, লাঞ্ছনা এসব সহ্য করতে না পেরে। মূলত এর জন্য তারাই দায়ী। সফলতা সব সময় দ্রুত আসে না। মাঝে মাঝে দেরি করেও আসে। কিন্তু আমাদের আত্মীয়-স্বজন কিংবা অন্যান্যরা সফলতা তাৎক্ষণিক চায়। যা সম্ভব নয়। সফলতা সময়ের সাথে ধীরে ধীরে আসে। আমি এমন অনেককে দেখেছি যারা বইয়ের ধারে কাছেও যায় না, তারা এসব বোর্ড পরীক্ষায় ভালো পাশ করে। আবার এমন অনেককে দেখেছি যারা সারাক্ষণ বইয়ের সাথে সংযুক্ত থাকে। তবুও ফেল করে বসে কিংবা প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল পায় না। তার মানে এটা নয় যে তারা জীবনে ব্যর্থ। তাদের দ্বারা কিছু হবে না। ভাগ্য বলেও একটা কথা আছে।

এটা সত্য যে আমাদের বাবা-মা আমাদেরকে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করান, অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া খরচ জোগাড় করেন। তাই বকাঝকা করার অধিকার তাদের আছে। ফেল করার পর সবাই ধিক্কার জানায়, সবাই নানান কথা শোনায়। কিন্তু এটা বোঝার চেষ্টা করে না, যে মানুষটা পরীক্ষা দিয়েছে সেও মনেপ্রাণে চেয়েছে ভালো পাস করতে, বন্ধুদেরকে গিয়ে বলতে আমিও ভাল পাশ করেছি। তার মনেও কষ্ট জমে আছে। তারা প্রিয় বন্ধুটি গোল্ডেন পেয়েছে অথচ সে ফেল। তার মনের মধ্যেও সংকোচবোধ কাজ করছে কীভাবে বন্ধুদেরর সামনে গিয়ে দাঁড়াবে? পাশের বাসা ছেলেটিও ভালো পাস করেছে অথচ সে ফেল। এখন কিভাবে তার সম্মুখীন হবে? এমন আরও অনেক চিন্তা ভাবনা তার মাথার মধ্যে ঘুরপাক করছে। ডিপ্রেশনের সেও পড়ে আছে। এমন সময় বাবা মায়ের কিংবা আপন মানুষ জনের সাপোর্ট খুব বেশি প্রয়োজন হয়। অথচ বর্তমানে কি হয়, আমাদের বাবা-মা কিংবা আপনজনেরাই বকাঝকা, গালমন্দ করে আমাদেরকে আরও দূর করে দেয়। এতে আরও গভীর ডিপ্রেশনে ফেলে দেওয়া হয়। ফলাফল স্বরূপ একটি আত্মহত্যার কাহিনী সৃষ্টি হয়।

ছেলেটি লাশের সামনে বসেই বাবা-মা কিংবা আপনজনেরা অঝোরে কাঁদতে থাকে। অথচ ছেলেটি বেঁচে থাকা অবস্থায় সবাই ধিক্কার জানিয়েছিল। বলেছিল, তোকে দিয়ে আর হবে না, তুই পারবি না, তুই লেখাপড়া ছেড়ে দে, তুই রিক্সা চালা, টেক্সি চালা, ঠেলাগাড়িতে ঠেল এমন আরো অনেক কথা বলে ছেলেটির অন্তরকে জর্জরিত করে দেওয়া হয়েছে। যার ফলাফলস্বরূপ ছেলেটি শেষ বিছানার খাটে শুয়ে আছে। অথচ জীবিত থাকতে আমরা তাকে কেউ একটু সান্ত্বনা দেইনি।

হ্যাঁ ব্যর্থতার কষ্ট অনেক তীব্র। মোটিভেশন দেওয়া কিংবা অনুপ্রেরণা দেওয়া খুব সহজ। যে ব্যর্থ হয়েছে, সেই জানে ব্যর্থতার গ্লানি টানা কতটা কষ্টের! তবুও বলবো কোন এক মহান ব্যক্তি বলেছিলেন, failure is the pillar of success. আমি বলবো না এ কথাটা কতটুকু সত্য। তবে এক নজর বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের দিকে তাকালে বাণীটির সত্যতা দেখা যায়। আমি শুধু এটুকুই বলবো, ব্যর্থতায় হতাশ হয়ে ভুল পদক্ষেপে যাওয়া কোনো মতেই সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না। আমি শুধু এটুকুই বলবো আর একটিবার চেষ্টা করি। আর একটি বার ঘুতে দাঁড়ানোর প্রয়াস করি। জীবন যে ধাক্কাটা আমাদেরকে দিয়েছে সে ধাক্কার একটা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করি। হ্যাঁ আমরা পারবো। আমরা আশরাফুল মাখলুকাত। সৃষ্টির সেরা জীব। বনের বাঘটাও তার প্রথম শিকারে ব্যর্থ হয়েও হতাশ হয়ে পড়ে না। আবার সে চেষ্টা করে। আবার ব্যর্থ হলেও হতাশ হয় না‌। পুনরায় আবার চেষ্টা করে। এভাবে চেষ্টা করতে করতে একসময় সে সফল হয়। তবে আমরা তো সৃষ্টি সেরা। আমরা কেন একবার ব্যর্থ হয়ে চুপ হয়ে যাব? শেষ করে দিব জীবন কেন?

হ্যাঁ এই মুহূর্তে পাশে কেউ দাঁড়াবে না কিংবা দাঁড়াবে না। যাই হোক না কেন নিজেকে নিজের পাশে দাঁড় করাতে হবে। আমার একজন প্রিয় ব্যক্তি বলেছেন, “আপনি নিজেই নিজের প্রিয় বন্ধু।” অতএব যখন কেউ আপনার পাশে থাকবে না। তখন নিজেকে নিজের পাশে রাখবেন। ইনশাআল্লাহ একদিন আপনি ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। সফলতা আপনার কাছে আসবেই, যদি আপনার লক্ষ্য দৃঢ় থাকে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুলাই, ২০১৯ সকাল ১১:৩৮

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: শিক্ষামূলক লেখা। ধন্যবাদ

২৮ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৯

মোঃ জোবায়ের বাপ্পী বলেছেন: ধন্যবাদ শ্রাবু ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.