নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিখতে জানতে ও ছড়িয়ে যেতে চাই।

মোঃ জোবায়ের বাপ্পী

আমি বাপ্পী। জন্মস্থান বরিশাল। বেড়ে উঠা চট্টগ্রাম।

মোঃ জোবায়ের বাপ্পী › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ পুরান ঢাকার চকবাজার ট্রাজেডি।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৭

"পুরান ঢাকার চকবাজার ট্রাজেডি"
মোঃ জোবায়ের বাপ্পী
………
মুরগির মাংস, সবজি ও ডাল দিয়ে ভাত খেতে বসেছে আসাদ। এগুলোই আজকের মেন্যু। সপ্তাহে দুদিন এই মেন্যু থাকে। আসাদের খুব ফেভারিট একটা মেন্যু। একটু ডাল মিশিয়ে মাংসের এক টুকরো নিয়ে ভাত মুখে দিতেই যাচ্ছে ঠিক তখনই সাইরেনটা বেজে উঠলো। আসাদ ভাত রেখেই দিল দৌঁড়। তাড়াতাড়ি পোষাক পরে আসাদ ও তার টিম রওনা দিল জীবন মরণ লড়াইয়ে। আসাদের মত অনেককেই না খেয়েই রওনা দিতে হয়েছে। আজম চাচা এসে রেখে যাওয়া ভাতের প্লেট গুলো ফ্রিজে তুলে রাখলো। তাঁর জন্য এটা প্রায় দিনের ঘটনা। সাইরেন বাজলেই যে সবাইকে সবকিছু ছেড়ে দৌঁড়াতে হয়। আসাদ হল একজন ফায়ার সার্ভিসের অফিসার।
আসাদের টিম চলছে পুরান ঢাকার চকবাজারের দিকে। সেখান থেকে ফোন এসেছে। কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লেগেছে। আসাদের কাজই এটা। আগুন লাগলেই দৌঁড়। আসাদের টিম ঘটনাস্থলে চলে এলো। আগুনের বিভীষিকা দেখে আসাদ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়ে দিল তাদের আরও সাহায্য প্রয়োজন। ছয়টা গাড়ি নিয়ে আসাদের টিম এসেছে। আরও ইউনিট ডাকা হয়েছে। আসাদ তার টিমের প্রধান। "Move fast, move fast. Hurry up boys. আমরা তিন টিমে বিভক্ত হব। এক টিম এদিক থেকে পানি ছুড়বে। আরেক টিম ঐ দিকে থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড ছুড়বে। আর তোমরা এরিয়া ক্লিয়ার কর। কোনো সিভিলিয়ানসকে আসতে দিবে না।" ইতোমধ্যে পুরো এরিয়া জুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের নিজস্ব হাই ভোল্টেজের লাইট জ্বালানো হয়েছে। তাছাড়া আগুনের আলোতে চারদিকে এমনিতেই আলোকিত হয়ে আছে। আসাদের নির্দেশনা পেয়ে সবাই কাজে লেগে পড়লো। কেউ পাইপ টানছে, কেউ জোড়া দিচ্ছে। আর কেউ পানি ছাড়ার আদেশের অপেক্ষা করছে। আরেক দল সাধারণ মানুষকে এরিয়ার বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছে।

সুফি সাহেব বিরিয়ানি নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন। পুরান ঢাকার সবচেয়ে ফেমাস বিরিয়ানি। ছেলে আবদার করেছে খাওয়ার। বাসা থেকে অনেক দূরে এই বিরিয়ানির হোটেলটা। সারাদিন কর্মক্ষেত্র থেকে এসে দূরে যেতে কারই বা ভালো লাগে! তবুও একমাত্র ছেলের আবদার ফেলে দিতে পারেননি। তারওপর স্ত্রীও ছেলের সাথে সুর মিলিয়েছে। বিরিয়ানি নিয়ে ফেরত আসার সময় রাস্তা বন্ধ হওয়ায় বাকি পথ হেঁটেই আসতে হচ্ছে। হঠাৎ অনেকগুলো ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যেতে দেখে সুফি সাহেব অবাক হয়ে গেলেন। মনে মনে ইন্নালিল্লাহ বললেন। এক ট্রাফিক পুলিশ থেকে জানতে চাইলেন কি হয়েছে। জবাবে ট্রাফিক পুলিশ বলল, "চকবাজারের কেমিক্যাল গোডাউনে বিশাল আগুন লাগছে।" সুফি সাহেব বিরিয়ানির প্যাকেট নিয়ে চোখ বন্ধ করে ছুটলেন বাসার দিকে। তাঁর বাসা চকবাজারে। কাছাকাছি আসতেই পুলিশের বেড়িবাঁধ। তিনি কেঁদে কেঁদে অনেক বললেন আমার পরিবার ভেতরে। আমাকে যেতে দিন। তবুও তাঁকে যেতে দেয়া হল না।

রুমের চারদিকে আগুন দাউ দাউ করছে। রুমে আছে এক দম্পতি। স্ত্রী গর্ভবতী। স্বামী কোনো কূল পাচ্ছে না স্ত্রীকে নিয়ে বেরোনোর। আগুনের তান্ডবে রাস্তাই বুঝা যাচ্ছে না। যেদিকে চোখ যাচ্ছে সেদিকেই আগুন আর আগুন। মৃত্যু অবধারিত দেখে স্ত্রী মায়া জড়ানোর কণ্ঠে বলল, "ওগো তুমি চলে যাও। আমি তো এই অবস্থায় হাঁটতেও পারব না।" স্ত্রীর চোখে হতাশা দেখে স্বামী কিছু বলার সাহস পেল না। মৃত্যুকে চোখের সামনে দেখলে তখন নীরবতা এমনিতেই চলে আসে। স্বামীর বুকের মধ্যে আর্তনাদের চিত্‍কার শুরু হল। সে তার স্ত্রী সন্তানকে বাঁচাতে পারবে না। স্ত্রী ও আগত সন্তানকে নিয়ে এমন নিষ্ঠুর পরিস্থিতির সামনে দাঁড়াতে হবে তা কখনোই ভাবেনি। সে চুপচাপ স্ত্রীর পাশে এসে শুয়ে পড়লো। স্ত্রী কেঁদে কেঁদে বলতে লাগল, "তোমার দুটা পায়ে পড়ি। তুমি চলে যাও।" স্বামী কিছু বলল না। স্ত্রীর কপালে চুমু দিয়ে পেটে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লো। আর মনে মনে বলল, "স্যরি সোনামণি, তোর এই অভাগা বাবাকে মাফ করে দে। সে তোদেরকে বাঁচাতে পারলো না।"

আগুন নিচ থেকে উপরে, এক বিল্ডিং থেকে অন্য বিল্ডিংয়ে ক্রমাগত ছড়িয়েই যাচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ইতোমধ্যে চলে এসেছে। উপরে তাকালে শুধু আগুন পানির খেলা দেখা যাচ্ছে। এই খেলায় আগুন হার মানতে নারাজ। আর পানি জয়ের দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। চারদিকে শুধু আর্তনাদ ও আহাজারির শব্দ শুনা যাচ্ছে। আসাদের জন্য এই শব্দ ও আগুনের দৃশ্য চিরচেনা। তার দলবল আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু আগুনের তাপ কমার কোনো লক্ষণ দেখছে না। আগুন এক সময় থেমে যাবে। কিন্তু তখন বাঁচানোর আর কিছুই থাকবে না। তাই থামাতে হবে এখনই। আসাদ তার ইউনিটকে নানান নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে। কখনো উপর থেকে আবার কখনো নিচ থেকে পানি ও কার্বন ডাই অক্সাইড নিক্ষেপ করছে তারা। ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে পুরো এরিয়া। অন্ধকার যেন আরও ঘনীভূত হতে লাগল। মাস্ক নিয়ে কাজ করছে তারা। শত বাঁধা পেরিয়ে এই যুদ্ধ শেষ করতেই হবে তাদের। আগুন না থামিয়ে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হবে এই আগুন পানির যুদ্ধ। আসাদ সহ বাকিরা এই ট্রেনিংই পেয়েছে।

আদনান ও সিফাত লোকজন নামাতে ব্যস্ত। আন্টি এদিক থেকে নামুন, আংকেল এদিক থেকে, ভাইয়া এদিকে আসেন, আপু মাথায় হাত দেন এসব কথা আদনান ও সিফাত আগুন থেকে বাঁচাতে বিল্ডিংয়ে আটক পড়া লোকজনদের উদ্দেশ্যে বলছে। সিফাত এসে ফারুককে বলল, "তুই ওদিকে যা। আমি রুম ফ্ল্যাট নাম্বার ছয়ে যাচ্ছি।" জবাবে ফারুক হেসে বলল, "যেদিকেই যাব দুজনে একত্রে যাব।" সিফাত জানে রুম ফ্ল্যাট নাম্বার ছয় এতক্ষণে আগুনের কবলে পড়ে গেছে। তাই ফারুককে দূরে সরিয়ে দিতে চাইল। কেননা এটা ভয়াবহ। ফ্ল্যাটটা থেকে বাচ্চার চিত্‍কার শুনা যাচ্ছে। তাই সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো তাতা। দুজনে একত্রে ফ্ল্যাট নাম্বার ছয়ে ঢুকলো। বাচ্চার শব্দ অনুসরণ করে রুমে এলো। আগুন দেখে ছোট শিশুটাও যেন মৃত্যুকে দেখতে কান্না করছে। বাচ্চাটার দিকে এগিয়ে এসে কোলে নিল। আগুনে বিধ্বস্ত একটা আলমারি তাদের দিকে হেলে পড়লো। দুজনে বাচ্চাটাকে বুকে মাঝে ঘিরে ধরলো।

ইতোমধ্যে ঢাকার সব ইউনিট চলে এসেছে। রাত পেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আগুন থামার নাম গন্ধও নেই। সব অফিসারদের মাথায় দুশ্চিন্তার ছাপ। আশেপাশের এলাকার মানুষই উদ্বিগ্ন। আগুন তো। ছড়ানোর ক্ষমতার সে পুরানো খেলোয়াড়। যার প্রমাণ ইতোমধ্যে চকবাজারে সে দিয়েছে। পুরো চকবাজার এখন আগুনের ধ্বংসাত্মক খেলায় ধ্বংসের শেষ মুখে। আসাদ ও তার টিম অনবরত কাজ করেই যাচ্ছে। আশপাশের পুকুর থেকেও পানি নেয়া শুরু হয়েছে। আসছে পানির রিজার্ভ গাড়িও। আসাদ তার টিমকে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজগুলো সে নিজে করছে। এটা আসাদের অভ্যাস। লিডার হিসেবে সে সবসময়ই বাকিদের সেইফ রাখার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজগুলো নিজে করে। আসাদ বলে, "আমি জানি আমাদের এই কাজে সাদা কাপড়টা সবসময়ই মাথায় থাকে। তবুও আমার দলের মধ্যে যদি কাউকে সাদা কাপড় পরানো হয় তবে আমি চাই সেটা আগে আমাকে পরানো হোক।"

এই আগুন খেলার শেষ করে তবেই দম নিবে এমনই প্রতিজ্ঞা করেছে আসাদ সহ সকল ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা। কিছুক্ষণ পর আকাশ পথও তাদের সাথে যোগ দিল। হেলিকপ্টার করে পানি ও কার্বন ডাই অক্সাইড ছুড়া হচ্ছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে মোট ৩২টি ইউনিট চকবাজারের আগুনের সাথে এই লড়াইয়ে যুক্ত হয়েছে। অদম্য সাহসিকতার সাথে তারা আগুনের সাথে লড়ে যাচ্ছে। ঘন্টার পর ঘন্টা তারা লড়ছে। আগুন পানির এই খেলায় একটা সময় আগুন স্তিমিত হতে লাগল। আকাশ পথ থেকে হেলিকপ্টার, মাটি থেকে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা একাধারে কাজ করে যাচ্ছে। একটা সময় আগুন থেমে গেল। জয় হল পানির। কিন্তু ততক্ষণে আগুন তার সাথে নিয়ে গেছে অনেক শেষ নিঃশ্বাস, ভবিষ্যৎ ও স্বপ্ন। শুরু হল উদ্ধার অভিযান।

আসাদ তার দলকে দুভাগে বিভক্ত করল। টিম এ এবং টিম বি। আসাদ বলল, "টিম এ, আমরা এখন এই বিল্ডিংয়ে ঢুকে উদ্ধার কাজে করব। আর টিম বি গাড়ি সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত থাকবে। সবাই কন্টাকে থাকবে। লেট'স গো।" টিম এ আসাদের সাথে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে বিল্ডিংয়ে ঢুকে পড়লো। টিম বি পানি ও সিঁড়ি নিয়ে প্রস্তুতি হয়ে থাকলো। টিম এ একে একে প্রতিটি তলা থেকে অনেক লাশ উদ্ধার করতে লাগল। আগুনের নিষ্ঠুর খেলায় প্রতিটি দেহ পুড়ে ছাই স্বরূপ হয়ে গেল। চেহারা বুঝার উপায় নেই। যতগুলো লাশ চোখের সামনে পড়ছ্র সব উদ্ধার করা হচ্ছে। হঠাৎ আসাদের চোখ একটা পোড়া রুমের দিকে আটকে গেল। আগুনে পুড়ে ভেঙে গেছে বেডটা। সেই ভাঙা বেডটার উপর দুটা দেহ একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আছে। আগুন তাদের জীবন নিয়ে পালিয়েছে। আসাদ একটু সামনে গেল। শারিরীক গঠন দেখে বুঝতে পারলো একটা পুরুষ আরেকটা স্ত্রী। পুরুষ ও মহিলার হাত গুলো মহিলার পেটের উপর। আসাদ আরেকটু লক্ষ্য করে বুঝতে পারলো মহিলাটা গর্ভবতী ছিল। আসাদ তার টিম ডেকে লাশ দুটো জানালা দিয়ে তাদের যান্ত্রিক সিঁড়ির মাধ্যমে নিচে নামালো। আসাদ তাদের তাদের ইউনিটে থাকা ডাক্তারকে বলল, "তাড়াতাড়ি চেক করে দেখ, সন্তানটা বেঁচে আছে কিনা?" আসাদ জানে বাঁচার আশংকা একদমই নেই। তবুও মনের সন্তুষ্টি। পরীক্ষা করে না সূচল উত্তর এলো। পরিবেশটা থমথমে হয়ে উঠলো। অনাগত শিশুটাও আগুনের হাত থেকে বাঁচলো না। প্রকৃতির কি নিষ্ঠুর খেলা। আসাদ, "Ok, guys, Move fast." বলে সবার মধ্যে তাড়না সঞ্চালন করলো। আসাদ জানে এটা ইমোশনের জায়গা নয়। এখনো তো এমন অনেক লাশ উদ্ধার করা বাকি আছে।

সাইনবোর্ডটা পুড়ে গেছে। শুধু চা শব্দটা দেখা যাচ্ছে। ভেতরের পরিস্থিতি চিত্‍কার করে জানান দিচ্ছে এটা একটা চায়ের দোকান। চারটা লাশ একত্রে পোড়া অবস্থায় পেল আসাদ ও তার টিম। রাখা হল লাশ ঘরে। উদ্ধার করার এক পর্যায়ে এক বিল্ডিংয়ের পঞ্চম তালায় দুটা লাশ দেখে আসাদ থমকে গেল। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আছে। পুড়ে লাশ দুটা একাকার হয়ে গেছে। আসাদের টিম তাদেরকে আলাদা করার চেষ্টা করতে লাগল। আলাদা করার যা দেখল তা দেখে আসাদ আর তাকিয়ে থাকতে পারেনি। অন্যদিকে ফিরে বলল, লাশ ঘরে রেখে আসো। আসাদের চোখ টলমল করছে। তার দলের অনেকের চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো। ছেলে দুটাকে আলাদা করার পর তারা ছেলে দুটোর মাঝে একটা শিশুকে দেখতে পেল। শিশুটাও মৃত। ছেলে দুটা হল আদনান ও সিফাত।

অনেক মর্মান্তিক মুহূর্তের পর উদ্ধার অভিযান শেষ হল। লাশ ঘর থেকে সবাই লাশ শনাক্ত করছে। আদনান-সিফাতের মাঝে শিশুটিকে দেখে আদনানের লাশের পাশে বসে এক মহিলা কেঁদে উঠে বলল, "আমার ছেলেটা শহীদ হয়েছে। সবাইকে বাঁচানোর পথ দেখিয়েছে। আর শেষে একটা নিষ্পাপ জীবন বাঁচাতে নিজের জীবন দিয়েছে। আল্লাহ তুমি ওরে বেহেস্ত নিও।"
এক বোন এক পোড়া লাশের শরীরের পেঁচানো গামছা ধরে কেঁদে বলল, "ভাইয়ারে আর কি আমার চুল টেনে দিবি না! একটা বার চুল টেনে দে না।" সুফি সাহেব তার স্ত্রী সন্তানের লাশের পাশে বসে কাঁদতে লাগলেন আর বলতে লাগলেন, "বাবারে, উঠ বাবা মানিক আমার, তোর জন্য প্রতিদিন বিরিয়ানি নিয়ে আসবো। উঠ বাবা। এই তুমি উঠো না। আমাদের মানিকরে খাওয়াই দিবা না? তোমরা উঠো না।" লাশ শনাক্ত করে ফোন দিচ্ছে স্বজনেরা। দাফন যে করতে হবে। এ যে নিয়তির খেলা।
শত শত মানুষ চোখে পানি, বুকে পাথর নিয়ে তাদের পরিবার পরিজনদের লাশ শনাক্তে ব্যস্ত। এক একটি জীবনের সাথে পুড়েছে এক একটি ভালবাসার গল্প,
সাহসিকতার গল্প, ভবিষ্যতের স্বপ্ন, আশা আকাংখা।
আসাদের মুখে ক্লান্তির ছাপ। আগুনের সাথে জিতেও যেন সে হেরে গেছে। দেহে শক্তি নেই। কোনোমতে যেয়ে গাড়িতে উঠলো। একই অবস্থা তার দলের প্রতিটি সদস্যের। আসাদরা অভ্যস্ত এমন দৃশ্যের সাথে। জয় পেলেও প্রতিবার তাদের মুখটা মলিন হয়ে বাসায় ফিরে। আসাদরা আমাদের সম্পদ, আমাদের বীর, আমাদের গর্ব। স্যালুট জানাই আপনাদেরকে #বাংলাদেশ_সিভিল_ডিফেন্স_ফায়ার_সার্ভিস। আসাদ আবার আসবে তার এই রূপী নিয়তি ডাকে সাড়া দিতে, আগুনের সাথে যুদ্ধ করতে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.