একজন মাশরাফি।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৩২

যখন কাউকে ভালো লাগে তখন তার প্রতিটি কর্মকাণ্ডই ভালো লাগে। যখন কাউকে খারাপ লাগে তখন তার প্রতিটি কর্মকাণ্ডই খারাপ লাগে।
এই তো গত জাতীয় নির্বাচনের আগেও মাশরাফির ভক্তদের অভাব ছিল না। কিন্তু নির্বাচনের পরেই পরিসংখ্যানটা বদলে যায়। এখন ম্যাশের সমালোচকদের অভাব নেই। প্রতিটি পদে-পদে ম্যাশ এখন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এই তো বিবিপিএল এর সেমিফাইনালে ঢাকা প্লাটুনের হয়ে হাতে ১৪টি সেলাই নিয়েও তিনি খেলেছেন। করেছেন বোলিং-ব্যাটিং, ধরেছেন একটি অসাধারণ ক্যাচও। এই ঘটনাটি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। সবাই মাশরাফিকে “আনপ্রফেশনাল” বলে আখ্যায়িত করছে। অথচ এই ব্যাপারটা যদি নির্বাচনের আগে হতো তাহলে সবাই বলতো, “আসলেই ম্যাশের ডেডিকেশন লেভেল অনেক উপরে। ম্যাশের তুলনা হয় না। সত্যিই ম্যাশ একজন ক্রিকেট যোদ্ধা। ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসার আরেকটি নজিরবিহীন উদাহরণ দিলো ম্যাশ।”

এক নির্বাচনে ম্যাশের প্রতি সাধারণ জনগণের দৃষ্টিভঙ্গির অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। নির্বাচনে ম্যাশের অংশগ্রহণ নিয়ে সবাই বেশ ক্ষুব্ধ হয়ে আছে। কিন্তু কেউই এটা ভাবছে না যে, যেখান থেকে প্রস্তাব এসেছিল তা ফিরিয়ে দেওয়ার কোনো উপায় ছিল না। অনিচ্ছার সত্ত্বেও ম্যাশকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হয়েছিল। এক নির্বাচনের কারণে এখন প্রতিটি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের নেতিবাচক সমালোচনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ম্যাশকে। কিন্তু সত্যটা কেউ আমরা বুঝতে কিংবা জানতে চাচ্ছে না।

“আনপ্রফেশনাল” হ্যাঁ ভাই, ম্যাশ আনপ্রফেশনাল। কেননা ক্রিকেটকে সে কখনোই প্রফেশনাল ভাবেনি। ক্রিকেটকে সে সবসময় নিজের জীবন ভেবেছে। আর জীবনের একটা নিয়ম হলো শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়ে যাওয়া। তাই তো পায়ে সাতটি অপারেশনের পরেও সে খেলে যাচ্ছে। অথচ আজ আমাদের কাছে মাশরাফি আনপ্রফেশনাল।
আজ আমরা সমালোচনা করছি তার পারফরম্যান্স নিয়েও। অথচ আমাদের লিডিং উইকেট টেকার ম্যাশ। বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত সফল অধিনায়ক ম্যাশ। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সোনালী দিনগুলো তাঁর অধিনায়কত্বেই এসেছে। তাঁর অধীনে বাংলাদেশ দেশের বাইরে প্রথম ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতেছে। দেশের বাইরে ত্রিদেশীয় সিরিজের কাপ স্পর্শ করতে পেরেছে। তবুও আজ ম্যাশ প্রতিটি কর্মকাণ্ডে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। যার একমাত্র কারণ নির্বাচন।

যে দেশে গুণীর কদর নেই সেই দেশে গুণী জন্মায় না।
ভালোবাসি এই আনপ্রফেশনাল ম্যাশকে।

০ টি +০/-০