নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিখতে জানতে ও ছড়িয়ে যেতে চাই।

মোঃ জোবায়ের বাপ্পী

আমি বাপ্পী। জন্মস্থান বরিশাল। বেড়ে উঠা চট্টগ্রাম।

মোঃ জোবায়ের বাপ্পী › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পের নামঃ রাজার রাণী

১২ ই জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:২৮

গল্পের নামঃ রাজার রাণী।
লিখেছেনঃ মোঃ জোবায়ের বাপ্পী।
প্রথম পর্ব।

গাছগাছালিতে ছেয়ে আছে পুরো গ্রামটি। পাতার ফাঁক দিয়ে সূর্যের কিঞ্চিত আলো এদিক সেদিক ছড়িয়ে পড়ছে। মেঠো পথের মাঝে পা ফেলে হেঁটে যাচ্ছে এই গ্রামের সবচেয়ে বড় শিল্পপতি লোক; আসাদ। সাথে আছে তার পিএ জয়নাল ও এই গ্রামের 'আমিন' লিয়াকত মোল্লা। যারা জায়গা জমির মাপামাপি করে তাদেরকে আমিন বলা হয়। আসাদ যখনই গ্রামে আসে লিয়াকত তার সাথে থাকে। এই গ্রামে আসাদের জায়গাজমির দেখাশোনা লিয়াকত-ই করে। আসাদের গ্রাম ছেড়েছে দশ বছর হয়েছে। দুই বছর থাকতেই বাবাকে হারিয়েছে। ষোলতে পা দিতেই মাকেও হারায়। চাচার কাছে ভিটেবাড়ি বিক্রি করে পাড়ি জমায় শহরে। কিছুদিন চাকরি করে তারপর এক ধনাঢ্য ব্যক্তির সহায়তায় ইমপোর্ট-এক্সপোর্টের ব্যবসা শুরু করে। সততা ও সৌভাগ্যের কারণে আজ সে কোটিপতি। টাকার সাগরে ভাসলেও ভুলেনি নিজের ভিটেবাড়ি। তাই তো চাচার কাছ থেকে দ্বিগুন দাম দিয়ে কিনে নেয় বাবা-মায়েরর শেষ স্মৃতিটা। গ্রামে না এলেও শহরে বসেই বাড়ির আশেপাশের জায়গা-জমি একের পর এক কিনে নেয়। শুধুমাত্র রেজিস্ট্রেশনের সময় অফিসে সাইন করে দেয়। ফলপ্রসূ আজ সে এই গ্রামের সবচেয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তি।
আসাদ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এক রূপসীর দিকে। নাম নূরী। উঠান জুড়ে ধান শুকাতে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নূরী সহ আরও কিছু পিচ্চিরা মিলে পা দিয়ে ধান নেড়ে দিচ্ছে। এটা গ্রাম্য একটি পদ্ধতি। পিচ্চিদের সাথে নূরীও যেন পিচ্চি হয়ে গেছে। তাদের সাথে মিলেমিশে দুষ্টামি করছে আর ধানের মধ্যে ছুটাছুটি করছে। একে অপরকে ধান ছুড়ে দিচ্ছে যেন সমুদ্রের মধ্যে নেমে পানি ছিটিয়ে দিচ্ছে। নূরী খিলখিল করে হাসছে আর ধান মাড়াচ্ছে। এই হাসি যেন আসাদকে আটকে রেখেছে। আসাদের এই দৃশ্য পলকহীন দৃষ্টিতে উপভোগ করছে। যা জয়নাল ও লিয়াকতের চোখ এড়ায়নি। লিয়াকত বলল, “সোবহান তালুকদারের মেয়ে। খুবই নম্র-ভদ্র। আপনার সাথে খুব মানাবে।” আসাদ নিজেকে সংযত করে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো। তার পাশে যে দুটো লোক ছিল তা যেন সে ভুলেই গিয়েছিল। আসাদ বলে উঠলো, “আরে ধুর কি যে বলেন।”
- আপনি শুধু হ্যাঁ বলুন। বাকি সব আমি ব্যবস্থা করব।
একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আসাদ বলল, “না চাচা, আমি চাই না আমার সন্তানেরা আমার মতোই নিরক্ষর হোক। শিক্ষার মূল্য কত তা আমি এখন হাড়ে হাড়ে বুঝি। আমি যখন আমার কোনো ম্যানেজারকে উপদেশ দেই তখন তারা আড়ালে কি বলে জানেন? তারা বলে, টাকার এত ক্ষমতা যে মূর্খ থেকেও জ্ঞান নিতে হচ্ছে। আমি চাই আমার সন্তানেরা যেন এই পরিস্থিতির সম্মুখীন না হয়। তাই ওদের জন্য শিক্ষিত মায়ের ব্যবস্থা করতে চাই।” এবার লিয়াকত হাসি দিয়ে বলল, “তাহলে তো নূরী একেবারেই আপনার উপযুক্ত।”

লিয়াকতকে দেখে সোবহান ভ্রুকুচকে তাকালো। বর্তমানে জায়গা জমি নিয়ে কোনো বিবাদ নেই। তবে লিয়াকতের আগমনের কারণ কি? বিনা মেঘে যেমন বজ্রপাত হয় না। লিয়াকতও তেমনই অহেতুক কোথাও পা মাড়ায় না। একটা লম্বা সালাম দিলো লিয়াকত। জবাব দিয়ে সোবহান সোজা তার আসার কারণ জানতে চাইলো।
- তালুকদার ভাইডি, সব কথা কি হুগনা মুহে কওন যায়? কিছু কথা মিষ্টি মুহে কইতে হয়। ভাবীরে কও শরবত দিতে।
অনিচ্ছার সত্ত্বেও লিয়াকতকে শবরত দেওয়া হলো। শরবত খেয়েই লিয়াকত তার কথা শুরু করলো।
- অনেক তো পড়াইলা মাইয়ারে। এবার কি বিয়েশাদীর ব্যাপারে কিছু ভাবছো?
লিয়াকতের উপস্থিতির কারণ এবার সোবহান বুঝলেন। উত্তর দেওয়ার আগেই লিয়াকত আরও বলল, “আমার কাছে খুব ভালা একখান পাত্র আছে। শহরে বাড়ি গাড়িও আছে। নূরী সেখানে রাণীর মতো থাকবে।”
- ছেলে নিশ্চয়ই আধবুড়ো কেউ।
- আরে না ভাইডি। ছেলেরে আমনে চেনেন। আমগো গ্রামেরই। রফিক সিকদারের ছেলে আসাদ। বয়স সাতাইশ কি আটাইশ হইবো। এই বয়সে ছেলেপুলে নিজ পায়ে দাঁড়ানোর লাইগা ছুটাছুটি করে। অথচ এই ছেলে টাকার সাগরে ভাসতাছে। বুঝোই তো, সব উপরওয়ালার লীলাখেলা।

গ্রামেজুড়ে আসাদের জায়গা-জমি অনেক। সেই সুবাদেই আসাদকে চিনে। তবে সোবহান এই ব্যাপারে লিয়াকতকে কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি। সে সরাসরি বলে দিয়েছে নূরীর মতামত জেনে তারপর জানাবে। সোবহান সবসময়ই নূরীকে সাপোর্ট দেয়। নূরীর স্বপ্ন ছিল উচ্চশিক্ষিত হওয়া। মেয়ের এই স্বপ্ন পূরণের যাত্রায় সোবহান কোনো ত্রুটি করেনি। নূরীও গর্বের সাথে বলে আমার বাবার মতো বাবা এই গ্রাম কেন, দেশ জুড়েও নেই। বাবার সমর্থনেই আজ নূরী উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছে। অথচ তার বয়সী মেয়েরা দুই-তিনটা সন্তান নিয়ে সংসারও করছে।
রাতে খাবারের সময় সোবহান কথাটা তুলল।
- তোর লাইগা একখান ভালা প্রস্তাব আইছে। যদি তুই রাজি থাহস তো কথা আগে বাড়ামু। নইলে নাই।
নূরী হ্যাঁ-না কিছু বলল না। নিজের রুমে চলে গেল। পিছু পিছু তার মাও এলো। কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলার পর বেরিয়ে এসে সম্মতির ইশারা দিলো। সোবহান বেশ খুশি হলো। পরেরদিন সকালে নতুন পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে বাজারের উদ্দেশ্যে বের হতে লাগল। এমন সময় নূরী এসে বলল, “এত ধনী ছেলে আমাদের সাথে কেন আত্মীয়তা করতে চাচ্ছে?” এই কথা সোবহানের সব হাসিখুশি উড়িয়ে দিলো। কথাটা আসলেই ঠিক। বিয়ে তো আর ছেলে খেলা নয়। অর্থের দিকে তাকিয়ে মেয়ের জীবন তো নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। অনেক ভাবনার পর সোবহান বিয়ের ব্যাপারে সম্মতি জানিয়ে দিলো। কেন জানি তার মন সাই দিচ্ছে না। তবে লিয়াকত হাল ছাড়েনি। আপ্রাণ চেষ্টা করে অতঃপর রাজি করিয়েছে। লিয়াকতের একটা কথাতেই নূরী রাজি হয়েছে। “ছেলে শিক্ষিত স্ত্রী চায় যাতে তার সন্তানেরা সুশিক্ষিত হয়ে বেড়ে উঠে।”

বিয়েটা হয়ে গেল। সপ্তাহখানেক গ্রামে থেকে আসাদের সাথে নূরী শহরে পাড়ি জমালো। শহরের সবকিছুর সাথে নূরী অভ্যস্ত। কেননা পড়ালেখার স্বার্থে জীবনের অর্ধেক সময় শহরেই কাটিয়েছে। নূরী বর্তমানে এমবিএ পড়ছে। সামনেই তার পরীক্ষা। তবুও সে বিয়েতে সম্মতি দিয়েছে যার একমাত্র কারণ তার বাবা। এই মানুষটা আজ পর্যন্ত বিয়ের কথা বলেনি। কতশত প্রস্তাব এসেছিল তার ইয়াত্তা নেই। সোবহান সবসময়ই বলত এখন মেয়ের পড়াশোনার সময়, বিয়ের নয়। সেই বাবা যখন বিয়ের কথাটা বলল তখন নূরী না করতে পারলো না।
আসাদ কিছু হিসাব নিকাশ করছে। নূরী এক কাপ কফি এনে দিলো। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো। তারপর বলল, “দু মাস পর আমার এমবিএ পরীক্ষা আছে। তুমি যদি অনুমতি দিতে……”
- তুমি যতদূর পড়েছ তাতেই সন্তানদের ভালো শিক্ষা দিতে পারবে। আর প্রয়োজন নেই।
নূরী আর কিছু বলল না। অর্থবিত্তের সিঁড়ি বেয়ে আসাদ হয়তো অনেক উপরে উঠেছে কিন্তু তার মনমানসিকতা আজও নিচু। আসাদ এক সন্দেহপ্রবণ দৃষ্টিতে নূরীকে দেখে। সারাক্ষণ তাকে চোখেচোখে রাখে।

নূরীর কিছু বন্ধুবান্ধব এসেছে তার সাথে দেখা করতে। পুরো ঘর দেখে সীমা বলল, “একেবারে রাণীর মতো রাজমহলে আছিস দেখি। তা ভাইয়া কই?”
- সে তো এখন অফিসে।
- এত ব্যস্ত থাকলে হবে? নতুন বউকে একটু সময়ও তো দিতে হবে।
নূরী হাসলো। কাজের মেয়েটি নাস্তা পানি দিয়ে গেল। কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে তারা চলে যেতে চাইলো। কিন্তু নূরী দুপুরের খাবার খেয়ে যাওয়ার জন্য আটকিয়ে রাখলো। জয় বারবার বলল তার কাজ আছে। কিন্তু নূরী কিছুই শুনতে রাজি নয়। অতঃপর তারা দুপুর পর্যন্ত থাকতে রাজি হলো। রাহী বলল রান্না তারা সবাই মিলে করবে। যেই কথা সেই কাজ। নূরী, সীমা ও রাহী মিলে রান্নাঘরে এসে রান্নার কাজ শুরু করলো। জয়, সুমন টিভি দেখে সময় কাটাতে লাগল। বিয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত নূরী রান্নাঘরে খুব একটা আসেনি। কেননা কাজের মেয়েই সবকিছু করে। এই বাড়িতে আসার পর যেদিন নূরী রান্না করার জন্য রান্নাঘরে এসেছিল, সেদিনই আসাদ বলেছিল, “এসব যদি তোমার কাজ হতো তবে ওকে রাখতাম না। যাও, তুমি রুমে যাও।” সেই থেকে নূরী আর রান্নাঘরে আসে না। তাই কোথায় কি আছে তা সে ভালো করে জানে না। রাহী বলল, “কিরে তোর রান্নাঘর অথচ তুই কিছুই জানিস না।” নূরী কিছু বলার আগেই সীমা বলল, “কি যে বলিস না বোকার মতো। কাজের মেয়ে থাকতে ও কেন আসবে রান্নাঘরে? ও তো শুধু অর্ডার করবে। আর ওমনি সব চলে আসবে।” সীমা হেসে উঠলো। সেই সাথে রাহীও। না চাইতেও নূরী হাসলো। বন্ধুবান্ধবদের সাথে নূরী একটা সুন্দর বিকেল অতিবাহিত করলো। অনেকদিন পর মন খুলে কথা বলল, গল্প করলো। সময়টা যে কোন ফাঁকে চলে গেছে তা কেউই বুঝতে পারেনি। সূর্যটা একটু ঢলে পড়তেই নূরীর বন্ধুরা বিদায় নিলো।

রাতে বাসায় এসে আসাদ সবার সামনেই এই নিয়ে নূরীকে খুব বকাঝকা করলো।
- এটা বাসা নাকি আড্ডাখানা? এত কিসের আড্ডা? বন্ধুরা এসেছে। চা-নাস্তা করে চলে যাবে ব্যস। ভবিষ্যতে যেন এসব আর না দেখি।
নূরী শুধু মাথা দুলালো।
ঝলমল চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে নূরী। চাঁদের যেমন কোনো নিজস্ব আলো নেই, সূর্যের আলোতে আলোকিত। তেমনই এই বাড়িতে নূরীরও কোনো অস্তিত্ব নেই। এমনটাই সে অনুভব করে। এই বাড়ির কাজের লোকদেরও একটা অস্তিত্ব আছে। তারা যদি একদিন কাজে না আসে তবে ঘরের রুটিন এলোমেলো হয়ে যায়। কিন্তু নূরীর অস্তিত্ব কি? আজ যদি সে মারাও যায় তবুও কোনো তফাত্‍ তৈরি হবে বলে মনে হয় না। এমন সব চিন্তাভাবনার মাঝে হঠাত্‍ আসাদ এসে তার পাশে দাঁড়ালো।
- এখানে বসে আছ কেন? চলো ঘুমাতে যাবে।
- তুমি যাও। আমার একটু পরে আসছি।
- সময়মতো না ঘুমালে শরীর খারাপ করবে। চলো তো।
- এখন ঘুম আসছে না।
- শরীর খারাপ নাকি? ডাক্তার ডাকবো?
নূরী চোখ তুলে আসাদের দিকে তাকালো। রাতের আসাদ আর দিনের আসাদের মধ্যে এক বিস্তার তফাত্‍ আছে। যা সে শুরু থেকেই অনুভব করেছে। কিন্তু নূরী চায় এই আসাদটাই সারাক্ষণ থাকুক। কিন্তু সূর্যের আলোতে এই আসাদ যেন কোথায় অদৃশ্য হয়ে যায়।

বাত্‍সরিক হিসাব মিলাচ্ছে আসাদ। তার সাথে আছে বেশ কয়েকজন একাউন্টিং ডিপার্টমেন্টের কর্মী। আসাদের চোখেমুখে রাগ ও ক্ষোভ ফুটে আছে। কিছুতেই তার হিসাব মিলছে না। কিভাবে যেন তিন কোটি টাকার অমিল পাচ্ছে। কিন্তু সমস্যাটা কোথায় তা খুঁজে বের করতে পারছে না। ম্যানেজাররাও বিফল। নূরী অনেকক্ষণ ধরেই তাদেরকে দেখে যাচ্ছে। গরমিল কোথায় তা দেখার জন্য সে এগিয়ে এসে একটা কাগজ হাতে নিলো। ওমনি আসাদ চেঁচিয়ে উঠলো। বলল, “তুমি এখানে কি? যাও ভেতরে যাও।” নূরী ভয়ে কেঁপে উঠলো। দ্রুত রুমে চলে এলো। তার মনটা কান্নায় ফেটে যেতে চাচ্ছে। এই বুঝি স্ত্রীর মর্যাদা?
লোকজন সব চলে গেছে। হিসাব মিলেনি। তাই লোকসানের খাতে অংকটা চলে গেছে। রাতের খাবার শেষে আসাদ ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু নূরীর ঘুম আসছে না। এতগুলো টাকার হিসাব কেন মিলছে না? অনেক ভাবনার পর নূরী উঠে এলো। চাবি দিয়ে ড্রয়ার খুলে কাগজপত্র নিয়ে বসলো। প্রায় তিন ঘন্টা ঘাটাঘাটির পর আস্তে আস্তে নূরীর চোখে সমস্যা গুলো ধরা পড়লো। যেকোনো ম্যানেজারের পক্ষে এটা খুব সহজ কাজ। অথচ আসাদের ম্যানেজাররা কেউই হিসাব মিলাতে পারেনি। হতে পারে তারা এটা ইচ্ছে করেই করেছে। নূরী লাল কলমের দাগ দিয়ে ভুলগুলো চিহ্নিত করে দিলো।

চলবে ………

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.