![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Truth is everybody is going to hurt you: you just gotta find the ones worth suffering for
সারাদিন মুভি দেখে আর বই পড়ে সময় কাটাতে কাটাতে ভাবলাম, রুম থেকে বের হয়ে একটু আশে পাশে ঘুরে আসা যাক। একা ঘুরতে ঘুরতে আমি একটা ডিএসএলআর ক্যামেরার অভাব অনুভব করতে থাকলাম। কারণ শরতের আকাশ আর চারপাশের সবুজ (গাছপালা)-রূপালি (জলাশয়)- ব্যাস্ত শহরের নিস্তব্ধ কোলাহল মিলে প্রকৃতির যেসব পোর্ট্রেইট চোখের সামনে আসছিল, সেগুলো প্রতিটিই নয়নাভিরাম!
কিন্তু আমার মনে প্রশ্ন আসল, আমার আসলে এই অভাবটা অনুভব করা কতটা সমিচীন। এক. আমার মোবাইলে তো যথেষ্ট ভাল ছবিই উঠে! দুই. ডিএসএলআর ধারী হতে চাওয়া আমার জন্য তো বেশ বিলাসিতা! তিন. যখন ভিজিএ ক্যামেরার মোবাইল ছিল, তখন তো মনে হতো একটা ভাল ক্যামেরার মোবাইল মানেই অনেক কিছু!
এর উত্তর দিতে পারে এ্যাব্রাহাম মাসলো, তার হাইরার্কি অফ নিডস দিয়ে। কিংবা এর আরেকটা উত্তর হতে পারে, ডিএসএলআর এর প্রিভ্যালেন্স রেট। চারপাশে এতো এতো ডিএসএলআর যে, চারপাশ আমার ভেতরে এই চাহিদাটা তৈরী করছে!
.
কিন্তু হোয়াট এ্যাবাউট মাইন্ডফুলনেস? আজকে আমার মন মুহুর্তটুকুকে এনজয় করার চেয়ে ছবি তোলার প্রতি আর “আমি উমুক-উমুক জায়গা ঘুরসি” ফেসবুকে এই জিনিস হাইলাইট করার পিছনে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে!
ওয়েল, এটার উত্তর হতে পারে "হ্যাপিনেস অনলি রিয়েল হোয়েন শেয়ার্ড”।
কিন্তু এই হ্যাপিনেস শেয়ারিং কিভাবে আমাদের ক্ষতি করছে, সেটা নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক-
.
একটা ফেনোমেনন আছে, FoMO : fear of missing out.
প্রথমত, এটা হচ্ছে আপনার সেই অনুভূতিটা “আমি কোন কিছু মিস করে গেলাম না তো!” যেটার কারণে আপনি বার বার ফেসবুকে আসেন!
দ্বিতীয়ত, এটা হচ্ছে আপনার সেই অনুভূতিটা যখন আপনার বন্ধুরা আপনাকে ছেড়েই কোন কিছু উপভোগ করে এবং সেটা অনলাইনে পোস্ট করে! “আমাকে একবার বলতেও তো পারত! এভাবে ইগনোর করল!”
তৃতীয়ত, এটা হচ্ছে আপনার সেই অনুভূতিটা যখন অন্যের অনলাইন এ্যাক্টিভিটি দেখে আপানার মনে হয় “আমার জীবনটা কি পানসে! মানুষের জীবন কত মজার! কতকিছু হয় ওদের জীবনে! আর আমার!?”
.
এমতাবস্থায় আপনি যদি অন্য সবার মতন মুখ বাঁকা করে ছবি (সেল্ফি) না তুলেন, আপনার হাতে যদি একটা সেল্ফি স্টিক না থাকে, আপনি যদি রেস্টুরেন্টে গিয়ে নিজের চেয়ে খাবারের ছবি বেশি না তুলেন, তবে আপনার নিজেকে সমাজের বহির্ভুত মনে হবে। কারণ এগুলো অলরেডি সোশ্যাল নর্মসের কাতারে চলে গেছে (অন্তত আপনার চোখে)!
আপনি যদি এসব না করেন, তবে আপনি ধীরে ধীরে ডিপ্রেশনে চলে যাবেন। আর আপনি যখন এসব করবেন, তখন আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা আপনার সেই বন্ধুটি যার পক্ষে হরহামেশা কিংবা কখনই ওসব রেস্টুরেন্টে যাওয়া পসিবল না, সে ধীরে ধীরে ডিপ্রেশনে চলে যাবে।
আপনি জায়গায় জায়গায় ঘুরে (কিংবা না ঘুরেও) চেক-ইন দিবেন, কারণ আপনার অন্যান্য বন্ধুরা এতো-এতো জায়গায় ঘুরে। সুতরাং আপনিও তাদেরকে দেখাতে চান যে, আপনিও কতো-কতো জায়গায় ঘুরেন। তাদের মত চেক-ইন না দিলে আপনি হাতশাগ্রস্ত হয়ে পড়বেন। আর আপনার এসব চেক-ইন দেখে আপনার সেই বন্ধুটি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বে, যে কিনা এতোসব জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার সামর্থ্য রাখে না!
.
আর জেনে রাখুন, ওয়ার্ল্ড হেল্থ অরগানাইজেশন বলেছে- বিশ্বে ডিজএবিলিটি বা আনপ্রোডাক্টিভিটি’র এক নম্বর কারণ কোন শারীরিক রোগ-বালাই বা বিকলাঙ্গতা না, কারণটা হলো ডিপ্রেশন।
অর্থের (টাকা) উল্লেখ না থাকলে অনেক ক্ষেত্রেই আমরা সমস্যার মাত্রাটা বুঝতে পারি না। ২০১০ সালের এক হিসেবে এ্যামেরিকায় সে বছর ২১০.৫ বিলিয়ন ডলার শুধু ডিপ্রেশন জনিত কারণে খরচ হয়েছিল।
অর্থ সুখ দেয়। দ্বিমত করব না। তবে সকল ক্ষেত্রে না। নিজেকে জানুন। নিজেকে চিনুন। সমাজের চাপে নিজের চাহিদা তৈরী করবেন না। নিজের, একান্ত নিজের প্রয়োজনে আপনার চাহিদা তৈরী করুন। নিজের বাউন্ডারি বুঝতে শিখুন। প্রত্যেকেরই সীমাবদ্ধতা আছে। সীমাবদ্ধতা থাকা দোষের কি?
আচ্ছা, উপরের এসব কথার অর্থ কিন্তু এটা না যে- আমি অনলাইনে আপনার এক্টিভিটি দিতে নিষেধ করছি। আর আমি নিষেধ করারই বা কে! আমি নিজেই তো আজ কোথায় কোথায় ঘুরেছি, এসব নিয়ে হয়তো ফেসবুকে লিখব; “হয়তো”! আমি শুধু বলতে চাচ্ছি, “কোন নেশাই ভাল নয়”! স্মোক করা, ড্রিংক্স করা, এলএসডি নেয়া তো খারাপ না (!! ); কিন্তু এসবের উপর ডিপেন্ডেন্ড হয়ে যাওয়া খারাপ!
আপনি এটা যেনে চমকে যেতেও পারেন, আবার নাও যেতে পারেন যে- সেল ফোন এডিকশন (শুধু সেলফোন না; যেকোন ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট) দূর করার জন্য সেল ফোন উইথড্রওয়াল সিম্পটমস আর হিরোইন উইথড্রওয়াল সিম্পটমস একই ধরনের। এসব সিম্পটমের মধ্যে খিঁচুনীও রয়েছে! এটা জেনে আমি অবাক হইনি, ভয় পেয়েছিলাম!
সুতরাং ড্রাগস আর ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট হলো ব্রাদার্স ফ্রম ডিফারেন্ট মাদার্স!
২| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৫০
নিরীহ_প্রাণী বলেছেন: "নিজেকে জানুন। নিজেকে চিনুন। সমাজের চাপে নিজের চাহিদা তৈরী করবেন না। নিজের, একান্ত নিজের প্রয়োজনে আপনার চাহিদা তৈরী করুন। নিজের বাউন্ডারি বুঝতে শিখুন।"
ভাল লাগিয়াছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:০০
নিরীক্ষক৩২৭ বলেছেন: আমি এই মাসের শুরুতে ফেসবুক ব্যবহার করা বাদ দিয়েছি। মনে হচ্ছে না তেমন কিছু মিস করছি।
now life has some less bullshit