নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সাধারণ মানুষ।

মহিউদ্দিন হায়দার

এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।

মহিউদ্দিন হায়দার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘুরে এলাম সেন্টমার্টিন।

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:২৫

অনেক দিন ধরে ইচ্ছা পোষণ করছিলাম সমুদ্র দেখার। তার মানে এটা নয় কখনো সমুদ্র দেখিনি বরং অনেকবার সমুদ্র বিহার হয়েছে। তবুও মাঝে মাঝে ভীষণ ভাবে মনের মাঝে সমুদ্র কে অনুভব করি। তবে এবারের যাওয়া টা অন্য রকম ভাবে হয়েছে। কারন আমার সাথে একিভাবে সমুদ্র কে অনুভব করেছে আরো কিছু সমুদ্রপ্রেমিক তরুণ। গ্রুফের সদস্যরা হলো ঃ ওয়াহিদ, হায়দার,নজরুল,শাহা আলম,ডালিম,কাশেম,মানিক,মাসুদ ,আলী ও সাজ্জাদ।

সেদিন ছিল তেরই ফেব্রুয়ারি । আমরা এগারো জনের এক কাফেলা। স্থান চট্টগ্রাম শহরের সিনেমা প্যালেসে একত্র হয়েছি ।উদ্দেশ্য সমুদ্র দেখার উৎসবে যোগ দেয়ার জন্য যাবো সেন্টমার্টিন এবং কক্সবাজার সীবীচ। এস আলম বাস কাউন্টার থেকে টিকেট কেটে অধীর অপেক্ষা কখন বাস রওয়ানা হবে টেকানফের উদ্দেশ্য। অবশেষে সেই মাহেদ্রক্ষণ এলো রাত দেড়টায়। সবাই টিকেট অনুসারে যার যার সিটে গীয়ে বসলো। শুরু হলো যাত্রা। যাত্রাপথে বাসে কেউ ঘুমিয়ে পড়লো কেউ খুনসুটি তে মেতে উঠলো। কখন যে আমরা কক্সবাজার কোলাতলী স্টেশানে পৌঁছে গেলাম টেরই পেলাম না। এবার কক্সবাজার থেকে শুরু হলো টেকনাফের উদ্দেশ্য যাত্রা। গন্তব্য টেকনাফের দমদমিয়া জাহাজ ঘাটা। আমরা যখন টেকনাফের দম দমিয়া পৌছালাম তখন ভোর পাঁচ টা।


দমদমিয়া জাহাজ ঘাটায় আমরা প্রাতঃরাশ শেষ করে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার জন্য কেয়ারি সিন্দাবাদ জাহাজের টিকেট নিলাম, এরপর আবার শুরু হলো অপেক্ষা কারণ জাহাজ ছাড়বে সকাল সাড়ে নয়টাই, অপেক্ষা করতে করতে কখন বাংলাদেশের ভিবিন্ন জেলা থেকে আসা সেন্টমার্টিন ভ্রমনে যাওয়ার পর্যটকদের পদচারনায় জাহাজ কাউন্টার জনসমুদ্রে রূপ নিলো বুঝে উঠতে পারিনি।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর কাউন্টারে ঘোষনা আসলো নির্দিষ্ট টিকেট নিয়ে জাহাজে উঠার। জাহাজ কাউন্টার থেকে কমপক্ষে ১০০ মিটার হেটে যেতে হবে জাহাজে উঠার জন্য। আমরা সবাই যার যার টিকেট নিয়ে জাহাজে উঠলাম। দেখতে দেখতে সিন্দাবাদ কেয়ারি জাহাজের বিশাল পেট সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদের পদভারে ভরে উঠলো।
এবার জাহাজ ছাড়ার সময়। আমরা সবাই জাহাজে উঠেই সামনের ডেকে চলে গেলাম সেখানে গ্রুফ ছবি,সিঙ্গেল ছবি যে যার মতো ফটোসেশান করলো। যখন ক্যাপ্টেন জাহাজ ছাড়ার ঘোষণা দিলেন তখন ঘড়িতে সকাল পৌণে দমদমিয়া জাহাজ ঘাটায় আমরা প্রাতঃরাশ শেষ করে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার জন্য কেয়ারি সিন্দাবাদ জাহাজের টিকেট নিলাম, এরপর আবার শুরু হলো অপেক্ষা কারণ জাহাজ ছাড়বে সকাল সাড়ে নয়টাই, অপেক্ষা করতে করতে কখন বাংলাদেশের ভিবিন্ন জেলা থেকে আসা সেন্টমার্টিন ভ্রমনে যাওয়ার পর্যটকদের পদচারনায় জাহাজ কাউন্টার জনসমুদ্রে রূপ নিলো বুঝে উঠতে পারিনি।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর কাউন্টারে ঘোষনা আসলো নির্দিষ্ট টিকেট নিয়ে জাহাজে উঠার। জাহাজ কাউন্টার থেকে কমপক্ষে ১০০ মিটার হেটে যেতে হবে জাহাজে উঠার জন্য। আমরা সবাই যার যার টিকেট নিয়ে জাহাজে উঠলাম। দেখতে দেখতে সিন্দাবাদ কেয়ারি জাহাজের বিশাল পেট সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদের পদভারে ভরে উঠলো।
দশটা। শুরু হলো যাত্রা। নাফ নদীর ফেনীল জলরাশির বুক ছিড়ে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্য। নাফ নদীর নীলাভ জলরাশি একেবারে শান্ত অথচ কেয়ারি সিন্দাবাদ জাহাজের যাত্রীদের মন ছিল অজানা এক রোমান্টিকতায় চঞ্চল কবুতরের মতো উত্তাল। যাত্রীদের মধ্যে কেউ প্রথম সমুদ্র দেখার আনন্দে রোমাঞ্চিত, কেউ সামুদ্রিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে তম্ময় হয়ে বসে আছেন। সাথে আছে সামুদ্রিক গাংচীলের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। যাত্রীরা পাউরুটী আর চিপস জাহাজ থেকে ছুড়ে দিলেই একটাও পানিতে পড়তে দেবেনা। অসাধারণ দক্ষতায় ছো মেরে ঠোটে নিয়ে নেয় একেবারে পানির কাছাকাছি থেকে। সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে এই গাংচিল গুলু অন্যতম বিনোদনের উৎস হিসেবে আনন্দ দেয় পর্যটকদের কে। আমদের গ্রুফের সবাই সমুদ্র প্রেমে এতো মাতোয়ারা ছিল, অথচ রাতে দুইশত মাইল দীর্ঘ পথের নির্ঘুম জার্নির কোন ক্লান্তিই যেন এতোটুকু স্পর্ষ করতে পারেনি কাউকে।

নাফ নদীর একতীরে বাংলাদেশের টেকনাফ অন্য তীড়ে মায়ানমারের আকিয়াব উপকূল। পূর্বদিকে মায়ানমারের নাসাকা বাহিনীর পর্যবেক্ষন টাওয়ার ও কিছু প্যাগোডা দেখা গেল। পশ্চিম দিকে পাহাড়ের কোল ঘেষে টেকনাফ মহা সড়ক ।চারিদিকে যেন পরম মমতায় অপূর্ব নৈসর্গিক উপহার ছড়ানো। মূল টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনের দূরত্ব ৯ নটিক্যাল মাইল। আমরা যেহেতু দমদমিয়া থেকে যাত্রা শুরু করেছি। আমাদের পাড়ি দিতে হলো প্রায় ১৮ নটিক্যাল মাইল। এতে দুই ঘন্টার বেশী সময় লাগলো। নাফ নদী পাড় হয়ে বঙ্গোপসাগরে জাহাজ যেতেই শুরু হলো ঢেউয়ের ঝাঁকুনি। পৌণে দুই ঘন্টার মাথায় আমরা জাহাজ থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপ দেখতে পেলাম। একটু একটু করে দীপটি কাছে আসতে লাগলো। যখন দৃষ্টি সীমায় পরিষ্কার দেখা গেল আমরা অভিভূত। সবুজে ঢাকা নারিকেল বনের গ্রামের পাড়ে স্বর্ণালী সৈকত আকাশের সাদা মেঘ যেখানে মিলেছে সেখানে গাড় নীল জলরাশি মনজয়ী কামনা নিপাস্য উত্তাল ঢেউ আ্মি এ জীবনে দেখিনি।
আমরা পোঁছাতে যেহেতু দুপুর হয়ে গিয়েছে তাই দুপুরের খাবারে জন্য ঘাটের কাছে বাজারে গেলাম। হোটেলের সামনে টেবিলে থরে থরে সাজানো সামুদ্রিক মাছ। রূপচাঁদা, টেকচাঁদা , সুরমা,টোনা, সুন্দরী, কোরাল, লবস্টার, ছুরি নানা নামের মাছ। কিন্তু আমরা ভাত খেয়েছি মুরগী মাংস আর ভিবিন্ন রকমের ভর্তা দিয়ে।

দুপুরে খাওয়ার পর যেখানে ক্লান্তি ভর করার কথা আমাদের সবার মাঝে সেখানে সেন্ট মার্টিনের স্বচ্ছ আর নীল পানি দেখে আমাদের সব ক্লান্তি নিমিষেই দূর হয়ে গেল। যে যার মতো করে সাতার কাঠতে পানিতে নেমে গেল। সেন্ট মার্টিনে সৈকতে ইচ্ছামতো সাতার কাঠা যায়। তবে ভাটার সময় পানিতে না নামাই ভালো।


সেন্ট মার্টিন দ্বীপের দক্ষীণ দিকে প্রচুর পরিমাণে কেওড়ার ঝোপঝাড় আছে সেটা দূর থেকে দেখতে ভালো লাগে কাছে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও কিছু অবিবেচক মানুষের ইচ্ছামতো প্রাকৃতিক কর্ম সাধন করে পরিবেশ দূষন করে ফেলেছে যার জন্য আর কাছে যাওয়ার আর রুচী থাকে না । আরও আছে কিছু ম্যানগ্রোভ বন। অন্যান্য উদ্ভিদের মধ্যে রয়েছে শেওলা,সাগরলতা বাইনগাছ ইত্যাদি। সেন্টমার্টিনে বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবাল প্রচুর পাওয়া যায়। এর মধ্যে অ্যালগি সবচেয়ে জনপ্রিয়। ১৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী সহ রয়েছে অসংখ্য স্পঞ্জ,শীল কাকঁড়া ।এছাড়া আছে বাংলাদেশের প্রবাদপ্রতিম কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের বহুল আলোচিত “সমুদ্র বিলাস” বাড়ি ও কটেজ।
সব ঘুরে ফিরে দেখে যখন বিকেলে কক্সবাজারের উদ্দেশ্য জাহাজে ফিরলাম সূর্য্য পশ্চীম দিকে ঢলে পড়েছে। আর জাহাজে তখন অন্য পরিবেশ। আস্তে আস্তে নির্ঘুম রাতের ক্লান্তি আমাদের শরীরে বাসা বাধার কাজ শুরু করে দিয়েছে যার ফলশ্রতিতে জাহাজ টেকনাফের দমদমিয়া জেটিতে আসার আগেই অনেকেই নিদ্রাদেবীর কোলে ঢলে পড়েছে।
কিন্তু রেখে এসেছি সেন্টমার্টিনের সৈকতের বালুচরে অসাধারণ কিছু মুহুত্ব। যেটা জীবনের ভিবিন্ন বাকেঁ উকি দেবে হয়তো নস্টালজিক স্মৃতি হয়ে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.