নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সাধারণ মানুষ।

মহিউদ্দিন হায়দার

এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।

মহিউদ্দিন হায়দার › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘পশ্চাতে টানিছ যারে, সে তোমাকে ঠেলিছে পশ্চাত।

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:০৬


মানুষের জীবনে ভাষার স্থান যে কতো বড় তা আমরা খুব কমই ভেবে থাকি। আমরা যেমন খাই দাই ওটা বসা করি ও হেঁটে বেড়াই, তেমনি সমাজ জীবন চালু রাখবার জন্য কথা বলি, নানা বিষয়ে নানা ভাবে। মানুষের সঙ্গে মানুষের সামজিকতা বজায় রাখতে হলে তার প্রধান উপায় কথা বলা, মুখ খোলা, আওয়াজ করা। একে অন্যর সঙ্গে সম্পর্ক যেমন হোক না কেন- শত্রুতার কি ভালোবাসার, চেনা কি অচেনার,বন্ধুত্বের কিংবা মৌখিক আলাপ পরিচয়ের; মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক স্থাপন করতে গেলেই মানুষ মাত্রই মুখ খুলতে হবে। কতগুলু আওয়াজ করতে হয়। এই আওয়াজ গুলুই মানুষের পরিচিতির অনেক অর্থবোধক চিহ্ন বহন করে যেমন তার বাবা মা, বন্ধু বান্ধব,বংশ,পরিবার, পরিবেশ, সমাজ,শিক্ষা ও রুচির।
মানুষ সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে মানুষ কে সমাজে বসবাস করতে হয়। আর বসবাস করতে গেলেই মতের আদান প্রদান হবে একে অপরের সাথে খুব স্বাভাবিক ভাবে। এই মতামত আদান প্রদানে কারো সাথে নিজ মতের মিল, কারো সাথে মতের অমিল হতে পারে এটাই স্বাভাবিক।
একটা মানুষ সমাজের ভেতর দিয়েই ছোট থেকে বড় হয়। বড় হতে হতে জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে অনেক কিছু শেখে এবং দেখে। এই শেখা এবং দেখার প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই একজন মানুষের মতামত প্রকাশের ক্ষমতা জন্মায়। জন্মগত ভাবে স্বাধীন হিসেবে মানুষটি চাই নিজের মতামত প্রকাশ করতে। পৃথিবীর প্রতিটি সুস্থ্ মানুষের জন্যেই একথাগুলো প্রযোজ্য। সমাজে সবার মতামত এক রকম হতে হবে এরকম কোন কথা নেই। একেকজনের দৃষ্টিভঙ্গি একেকরকম। কারো কাছে অনুপ চেটিয়া একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী আবার কারো কাছে তিনি একজন সন্ত্রাসী।
দৃষ্টিভংঙ্গীর পার্থক্য কিংবা মতভেদ এই পৃথিবীর মানুষের জন্য একেবারে বাস্তব একটা ব্যাপার। এটা মেনে নিয়েই আমাদের পৃথিবীতে চলতে হবে। যদি কারো সাথে আমাদের মতের অমিল হয় তবে সেটাকে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবেই মোকাবেলা করা উচিত। কোন ভাবেই অশ্লীলতা কে দিয়ে মোকাবেলা করা উচিত হবে না। কারন পৃথিবীর কোন সভ্য মানুষ অশ্লীল হতে পারে না। মতানৈক্য হতেই পারে তাই বলে গালাগাল কিংবা অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করবেন সেটা কখনো সভ্য মানুষের পরিচয় হতে পারে না।
কারন কথায় আছে “ব্যবহারে বংশের পরিচয়” আপনার অশ্লীলতা আপনাকে আপনার জন্মপরিচয়,বাবা মা, বন্ধু বান্ধব, সমাজ ও শিক্ষার পরিচয় দিচ্ছে। একজন অসভ্য-অভদ্র মন্দ মানুষ যখন যুক্তিতে হেরে যায় তখন সে সাহায্য নেয় গালির। কারন গালির ভুমিকা হচ্ছে আলোচনার পথরোধ করা। আপনি কাউকে একটা যুক্তি দিলে তার একটা সম্ভাবনা থাকে সেই যুক্তিটা খন্ডানোর। কিন্তু যেই আপনি তাকে গালি দিলেন তখন তার খন্ডানোর আর কিছু থাকে না।
গালি দেয়া, অশ্লীল কথা বলা, অশ্লীলতা ছড়ানো আমাদের সমাজের এক মারাত্মক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এটি একটি মানসিক ব্যধিও বটে। বর্তমানে স্যোশাল নেটওয়ার্কও এর বাইরে নয়। বরং অনেকসময় দেখা যাচ্ছে অফলাইনের সভ্য মানুষটিই অনলাইনে এসে অসভ্য-অভদ্র-বর্বর আচরণ করছে। এসবই হচ্ছে কু-স্বভাবের অর্ন্তভুক্ত। গালিগালাজ করা কোনো সুস্থ মানসিকতার পরিচয় নয়। মুদ্রাদোষ বা অভ্যাসবশত অনেকেই কথায় কথায় গালি দেন, অনেকেই হাসি-তামাশা ও ঠাট্টাচ্ছলেও অন্যকে গালি দিয়ে বসেন এসবের কোনোটিই ঠিক নয়।
যুক্তি থাকলে শক্তির অপব্যবহার করে প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করতে হয় না। তেমনি আত্মমর্যাদা ও লজ্জাবোধ থাকলে কেউ প্রকাশ্যে কাউকে অমার্জিত ভাষায় কিছু বলতে পারে না। আত্মমর্যাদার কথা বললাম এ কারণে যে, কাউকে মন্দ কথা বললে আসলে বক্তার নিজেরই মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়। তিনি নিজেকেই হেয় করলেন অন্যকে অশ্লীল ও আপত্তিকর ভাষায় নিন্দা করে। তবুও তিনি ভ্রান্তিবশত মনে করেন, প্রতিপক্ষকে দু’কথা শুনিয়ে দিয়ে নিজে জিতে গেছেন এবং প্রতিপক্ষ পরাস্ত হয়েছে। কিন্তু মনে রাখা উচিত রবীন্দ্রনাথের এ কথাটি, ‘পশ্চাতে টানিছ যারে, সে তোমাকে ঠেলিছে পশ্চাতে।’

কাউকে অপমান করতে চাইলে একজন আরেকজনকে সুন্দর শব্দ ব্যবহার করে অপমান করেন। আপনি অপমান করেছেন ঠিকই তবে ভাষাগত সৌন্দর্যের ফলে অপমানটি বুদ্ধিভিত্তিক পর্যায়ে চলে গেছে। আপনি গালাগালি করে অপমান করতে চান তার মধ্যে আপনার কোন বীরত্ব নেই বরং এর মধ্যে আপনার অসহায়ত্ব আছে। আপনার মতামতের অসহায়ত্ব আছে।

ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের অত্যন্ত সতর্ক হওয়া উচিৎ। যদি আপনার কারো লেখা একান্তই খারাপ লাগে। তবে আপনি সেই পোষ্ট থেকে একশ হাত দূরে থাকুন। দয়া করে গালাগালি করবেন না। আপনার একটা কথাই বলে দেবে আপনি কোথা থেকে উঠে এসেছেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.