নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সাধারণ মানুষ।

মহিউদ্দিন হায়দার

এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।

মহিউদ্দিন হায়দার › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেহ রহিবে না বন্ধী, কাহারো উঠেছে ডঙ্কা বাজি”

০৮ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:০৮


বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। বর্তমান বিশ্বে নারীরা শিক্ষায়, জ্ঞানে কর্মে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। অবশ্য সব দেশে নারীর অধিকার এখনো সুনিশ্চিত হয় নি। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী হওয়া স্বত্বেও নারীর অধিকার নারীর প্রগতি শুধু কথার মাঝেই সীমাবদ্ধ হয়ে আছে। এখনো সারা বিশ্ব জুড়ে নারী অবহেলিত,নিগৃহিত ও নিপীড়িত। অথচ বিশ্বময় নারী সমাজের পশ্চাদপদতা নিরসনে, নারীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা এবং নারী পুরুষের সমতা ভিত্তিক সমাজ নির্মাণের লক্ষ্যে এখনো নারীকে দিবস পালন করতে হয়। অধিকারে দাবীতে রাস্তায় নামতে হয়। নারীর জন্য এখনো সমতাভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠে নি পরিপূর্ণ ভাবে।
সমতাভিত্তিক সুষ্ঠু সমাজ একান্তভাবে নির্ভর করে নারী এবং পুরুষের সঠিক দৃষ্টিভঙ্গীর উপর। আমাদের মনে রাখতে হবে নারী যেমন পুরুষ হতে পারে না তেমনি পুরুষ কখনো নারী হতে পারে না। উভয়ের রয়েছে পরস্পর বিরোধী দেহাবয়ব,আকার আকৃতি, শক্তি ও যোগ্যতা। শিক্ষা ও পরিবেশ ইত্যাদি দ্বারা এই পার্থক্য অতিক্রম কখনো সম্বব নয়। মানব সত্তায় জন্মগতভাবে যে গুণাবলী ও যোগ্যতা রয়েছে মানুষ কেবল তারই লালন ও বিকাশ সাধন করতে পারে। নারী ও পুরুষ প্রশিক্ষণ ও চেষ্টা সাধনার মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত শক্তি ও যোগ্যতার প্রবৃদ্ধি সাধন করতে পারে মাত্র। নতুন কোন যোগ্যতা সৃষ্টি করার সাধ্য কারো নেই।
বিখ্যাত ফরাসি চিন্তাবিদ আলেক্সিম ক্যারেল তার বই “Man the Unknown” এ লিখেছেনঃ পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে পার্থক্য তা মৌলিক পর্যায়ের। তাদের দেহের শিরা উপশিরা,স্নায়ু সবকিছু ভিন্নরূপ বলেই তাদের পার্থক্য বিদ্দমান। নারীর ডীম্বকোষ থেকে রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয় তার প্রভাব নারী দেহের প্রতিটি অংগে প্রতিফলিত হয়। নারী ও পুরুষের স্বভাবগত ও মনস্তাত্বিক ভিন্নতার কারনও একই।
উনবিংশ শতকের বিশ্বকোষে লিখিত হয়েছিলঃ নারী ও পুরুষের যৌন অঙ্গের পার্থক্য কে যদিও খুব একটা বড় পার্থক্য বলে মনে হয়, কিন্তু এদের পার্থক্য কেবল এই দিক দিয়ে নয় বরং নারীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত সব ক’টি অংগ প্রত্যঙ্গ পুরুষ থেকে ভিন্ন, যে অংগ বাহ্যত পুরুষের মতো মনে হয় তাও ভিন্ন।
উক্ত আলোচনা থেকে একথা প্রতীয়মান হয় যে নারী ও পুরুষের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য বিদ্যমান। এই পার্থক্যর কারনেই প্রত্যেকেই স্ব স্ব যোগ্যতা ও প্রতিভা অনুযায়ী কাজের ক্ষেত্র বাছাই করে নেবে সেটাই ইনসাফের দাবী।
এই জন্যই প্রকৃতি নারী ও পুরুষের মধ্যে তাদের যোগ্যতা এবং স্বভাব অনুযায়ী কর্ম বন্টন করে দিয়েছেন। একজন ইঞ্জিনিয়ার কে যেমন রোগীর চিকিৎসা করতে দেয়া হয় না, তেমনই একজন ডাক্তার কে শিল্প কারখানার কাজে লাগানোর চিন্তা অবান্তর। একজন ডাক্তার বড় নাকি একজন ইঞ্জিনিয়ার বড় এ প্রশ্ন যেমন অবান্তর তেমনই সমাজে পুরুষের প্রধান্য বেশী নাকি নারীর এই প্রশ্ন ও অযৌক্তিক। এখানে যে যার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ।
নারী এবং পুরুষ মিলে গঠিত হয় সমাজ। সমাজে এক অংশের প্রতিনিধি নারী ,অন্য অংশের প্রতিনিধি হচ্ছে পুরুষ ।শুধু পুরুষ যেমন একটা সমাজ গড়তে পারেনা তেমনই শুধু নারীর পক্ষেও সম্বব নয় একটা সমাজ গড়া। স্বয়ং স্রষ্টাই নারী,পুরুষ কে একে অপরের পরিপূরক ও মুখাপেক্ষী বানিয়েছেন। এই মুখাপেক্ষিতা ও নির্ভরতা সামাজিক,যৌন এবং মনস্তাত্বিক সব দিক দিয়েই। সমষ্টিক জীবনের দাবী হলো একে অপরের সাথে সমান তালে চলবে। সামাজিক জীবনের সুষ্ঠুতা ও উন্নতি অগ্রগতি একান্তভাবে নির্ভর করে নারী পুরুষের সম্পর্ক সুষ্ঠু ও সঠিক হওয়ার উপর। আর এ সম্পর্ক যদি ভারসাম্যহীন হয় তাহলে সমাজ সর্বাত্মকভাবে ভাঙ্গন ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। সমাজ কে যদি একটা গাড়ীর সাথে তুলনা করা হয় তবে এই গাড়ির দুই চাকা নারী ও পুরুষ। দুটূই অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ অংশ। এর একটি চাকা যদি ছোট হয় কিংবা আস্তে চলে বা না চলে তবে গাড়ী কিছুতেই সামনে অগ্রসর হতে পারে না। ফুটবল খেলোয়ারগণ যে যার জায়গা থেকে বলকে গোল পোষ্টের দিকে নিয়ে যেতে স্বচেষ্ট হয় তেমনিভাবে নারী পুরুষ কে তার স্ব স্ব স্থান থেকে সমাজ কে উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে হবে।
যারা নারী সত্তাকে পরুষদের থেকে পৃথক ও স্বাধীন হয়ে দেখতে চাই তাদের তুলনা করা যায় সেই মুর্খদের সাথে যারা হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের মিলিত রূপ পানি থেকে যে কোন একটি কে ভিন্ন করে পেতে চায়; অথচ পানির অস্তিত্বই নির্ভর করে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের মিলনের উপর। এর একটা থেকে আর একটার বিয়োগ পানির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। পানির বেলায় যেমন হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের একটাকে অপর টা থেকে ভিন্ন এবং স্বাধীন করে দিয়ে পানি রাখা সম্বব হয় না তেমনই নর ও নারীর এক শ্রেণী থেকে অপর শ্রেণী কে পৃথক করে দিয়ে মানব সভ্যতার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার কথা কল্পনা করা যায় না। আবার পানিতে অক্সিজেন যেমন হাইড্রোজেনের কাজ করতে পারে না তেমনি হাইড্রোজেন পারে না অক্সিজেনের পরিপূরক হতে। অনুরূপ ভাবে সমাজে নর নারী কেউই একে অপরের কাজ দখল করে নিয়ে সুষ্ঠূ মানব সমাজ গড়তে পারে না।
সুতারাং আমরা যদি সুন্দর পৃথিবী গড়তে চাই ,সুস্থ জীবন যাপন করতে চাই, কল্যাণকর রাষ্ট্র গড়তে চাই তাহলে আমাদের নারীদের সঠিক মর্যাদায় প্রতিষ্টিত করতে হবে । শিক্ষায়, জ্ঞানে, কর্মে তাদের কেও ভাগী করতে হবে। নারী সমাজের উন্নতি না হলে দেশের উন্নতি যেমন সম্বব নয় তেমনই দেশের কর্মী পুরুষের আর্বিভাব সম্বব নয়। কারন মা যদি শিক্ষিত না হয় যদি নিজের কাজ এবং দায়িত্ব পালন করতে না পারে তার সন্তানও অলস, ভীরু এবং নিষ্ক্রিয় হবে। বর্তমান যুগ সাম্যের যুগ। তাই “কেহ রহিবে না বন্ধী, কাহারো উঠেছে ডঙ্কা বাজি”

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:১১

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
++++

২৯ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৩

মহিউদ্দিন হায়দার বলেছেন: অনিঃশেষ ধন্যবাদ প্রিয় বিজন রয়।

২| ০৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৩২

কাজী আসিফ বলেছেন: ভাল বলেছেন

২৯ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৪

মহিউদ্দিন হায়দার বলেছেন: আপনাদের অনুপ্রেরণা আমার লেখার সম্বল। অশেষ ধন্যবাদ প্রিয় কাজী আসিফ ভাইয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.