![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখায় উল্লেখ আছে, ‘যাহাতে মনুষ্যত্বের অপমান হয় তাহা কখনোই উন্নতির পথ হইতে পারে না’। আরেক কবি বলেছেন ‘জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথায় কবে’। জন্মের অনিবার্য পরিণতি মৃত্যু। কারও সম্পর্কে একটি ভবিষ্যদ্বাণীই শতভাগ নির্ভুলভাবে বলা যায়, সেটা হল-আপনি মারা যাবেন। তারপরও কারও মৃত্যু সংবাদ শুনলে আমরা দুঃখ পাই, ব্যথিত হই। একজন মানুষ এই বিশাল পৃথিবীর জনারণ্যে মিশেছিলেন, কিন্তু এখন আর নেই। মৃত্যু তাকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। তার এই না থাকা কোথাও কোনো শূন্যতা প্রকৃত অর্থে তৈরি করে না, অথচ কারও না থাকার খবর শুনে আমাদের মধ্যে এক ধরনের শূন্যতা তৈরি হয়, আমরা বেদনা বোধ করি। তবে আজকাল এতো বেশি মানুষের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর আমরা শুনছি যে আমাদের মধ্যে মৃত্যু শোকের কাতরতা আর সেভাবে কাজ করছে না। ‘আমরা অল্প শোকে কাতর, অধিক শোকে পাথর’।
আমরাও বোধ হয় পাথর মানুষে পরিণত হতে চলেছি। অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হবে- এটাও যেনো একটি অবধারিত সত্য হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে। তাই নির্মল সেনের মতো এখন আর কোনো সাংবাদিক ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’ বলে আর্তি জানিয়ে কলাম লেখেন না। এমনকি আস্থাহীনতা এতোটাই প্রবল হয়েছে যে, ঘাতক চক্রের হাতে নির্মমভাবে খুন হওয়া সন্তানের পিতা ও পুত্র হত্যার বিচার চান না। যার প্রমাণ ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর নিহত দ্বীপনের পিতা আবুল কাসেম ফজলুল হকের আর্তনাদ। তিনি বলেছেন, হত্যাকারীদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। কারণ তিনি জানেন, হত্যার বিচার চাওয়ার কোনো মূল্য নেই। কেউ খুন হবেন, খুনিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবে, বিচার হওয়া তো দূরের কথা, একদিন সবকিছু আমরা ভুলে যাবো। এমনটাই এখন আমাদের দেশে হচ্ছে।
সর্বশেষ আমাদের পাথর অনুভুতিকে আরো বেশী শান দিয়ে পাথর বানানোর পথে আরো এক দাপ এগিয়ে দিয়ে গেলেন শ্রীপুরের হযরত আলী ও তার শিশুকন্যা। গরিব হযরত আলী এই সমাজে সম্মান নিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলেন। চেয়েছিলেন কন্যাশিশুর নিরাপত্তা। কিন্তু সমাজপতি, পুলিশ—সবাই তাঁকে হতাশ করেছে। বাবা-মেয়েকে ঠেলে দিয়েছে মৃত্যুর মুখে। একে আত্মহত্যা বলব, নাকি হত্যা?
বিচার না পেয়ে মেয়েকে নিয়ে জীবন দিয়ে সমাজ ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার প্রতি চরম ঘৃণা প্রকাশ করে গেলেন হযরত আলী। একই সঙ্গে চরমতম উপায়ে জানিয়ে দিলেন, বিচার পাননি তিনি। আত্মহত্যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এটি প্রতিবাদের ভাষাও হতে পারে না। কিন্তু এই আত্মহত্যার মধ্যে আমাদের জন্য একটি অপ্রিয় বার্তা তো লুকিয়ে আছেই। আমাদের সমাজে বিদ্যমান প্রকট বিচারহীনতার বার্তা।
হযরত আলীর স্ত্রী হালিমাকে সমবেদনা জানাতে গতকাল সোমবার শ্রীপুরে গিয়েছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। সেখানে গিয়ে তিনিও স্বীকার করেন, বাবা-মেয়ের আত্মহত্যার জন্য দায়ী বিচারহীনতার সংস্কৃতি। তিনি মন্তব্য করেছেন, এই ঘটনার মাধ্যমে হযরত আলী আমাদের চরম লজ্জা দিয়ে গেছেন।
লজ্জার অনুভূতি? সেও তো এখন ভোঁতা হতে চলেছে।
০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৫:২১
মহিউদ্দিন হায়দার বলেছেন: এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন রাজনৈতিক পরিবর্তন। গদবাধা পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি বাংলাদেশের জনগপণ কে কিছুই দিতে পারেনি ,শুধু হতাশা আর দারিদ্রতা ছাড়া। ধন্যবাদ প্রিয় আলপনা তালুকদার।
২| ০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৩
হাফিজ রাহমান বলেছেন: ভাই ! আপাতত মন্তব্যের যথার্থ শব্দ খোঁজে পাচ্ছি না। শুধু এতটুকু বলতে পারি, চরম সত্য কথাগুলো বলেছেন। তবে এ চরম বাস্তবতার বহিঃপ্রকাশে কারো কিছু যায় আসে না। এ যেনো উলু বনে মুক্তা ছড়ানোর মত হয়ে যাচ্ছে। ধন্যবাদ লেখককে যুগোপযোগী পোষ্ট দেয়ার জন্য।
০২ রা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪১
মহিউদ্দিন হায়দার বলেছেন: আমিতো বলেই দিয়েছি আমাদের অনুভূতি ভোতা হয়ে গেছে অনেক আগে থেকে। আমরা উলু বনে মুক্তা ছড়াচ্ছি, আপনি যথার্থই বলেছেন। যারা প্রশাসনে বসে আছে বড় বড় ডিগ্রি নিয়ে কিংবা জনদরদী রাজনীতি করে তারাই তো এই সব হত্যাকাণ্ডের পেছনের শক্তি। আমরা যদি এই সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই তাহলে সবার আগে রাজনৈতিক সংস্কার আনতে হবে। ধন্যবাদ প্রিয় হাফিজ রাহমান।
৩| ০২ রা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২১
চাঁদগাজী বলেছেন:
১ম ছবিতে, ২ পাশে অনেক ইডিয়ট দাঁড়িয়ে দেখছে; মৃতদেহগুলোকে ঢেকে দেয়ার মতো একজন লোকও নেই; ইডিয়টদের এলাকা?
০২ রা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৩
মহিউদ্দিন হায়দার বলেছেন: এরা অসহায় তথাকথিত জনদরদী রাজনীতিবিদের ইডিয়ট রাজনীতির কাছে। ধন্যবাদ চাঁদগাজী।
৪| ০২ রা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি বলছেন, অপ-রাজনীতির কারণে, ২ টুকরা কাপড় এনে মেয়েটা ও বাবার দেহগুলোকে ঢেকে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না? আমার মনে হয়, আপনার ভাবনার ২ পয়সা দামও নেই।
০৩ রা মে, ২০১৭ সকাল ৯:২৩
মহিউদ্দিন হায়দার বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ , আপনার মূল্যাবান মন্তব্যের জন্য।
৫| ০৩ রা মে, ২০১৭ ভোর ৫:৪৩
কেএসরথি বলেছেন: কতটুকু কষ্ট পাবার পর একজন মানুষ তার সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে লাফ দেন??!!!
০৩ রা মে, ২০১৭ সকাল ৯:২১
মহিউদ্দিন হায়দার বলেছেন: এই অনুভুতিটা আমরা সাধারণ মানুষ অনুভব করতে পারলেও আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনায় যারা আছেন এবং তাদের অনুসারীরা লাশের উপর এক টূকরো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখে দায়ীত্ব শেষ করতে চাই। অশেষ ধন্যবাদ কে এসরথি।
৬| ০৪ ঠা মে, ২০১৭ রাত ২:১৯
সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: কিছু বলার ভাষা অবিধানে নেই...
০৭ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৩
মহিউদ্দিন হায়দার বলেছেন: আমদের অভিধানে একটা শব্দ আছে ধর্য্য ধরে সহ্য করা। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা মে, ২০১৭ বিকাল ৫:১৩
আলপনা তালুকদার বলেছেন: প্রিয় দেশমাতৃকার এমন বিভৎস চেহারা দেখে দেখে আঁতকে উঠি রোজ!
এর অবসান চাই। যত শীঘ্র সম্ভব। এভাবে চলতে পারেনা। চলা উচিত নয়।