নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার যে সব দিতে হবে সে তো আমি জানি- আমার যত বিত্ত, প্রভু, আমার যত বাণী আমার চোখের চেয়ে দেখা, আমার কানের শোনা, আমার হাতের নিপুণ সেবা, আমার আনাগোনা–

বনমহুয়া

আমি আর কতোটুকু পারি ? কতোটুকু দিলে বলো মনে হবে দিয়েছি তোমায়, আপাতত তাই নাও যতোটুকু তোমাকে মানায়।

বনমহুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভ্রান্তি-বিলাস (৪)

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:১০


ভার্সিটিতে পৌছলো যখন সামিরা তখন সকাল ১০টা বেজে ১০। পৌনে ১১টার ক্লাসটা হবে না বলে ওকে আগেই জানিয়েছে মিতি। এবং সঙ্গে এও জানিয়েছে যে তারা টি এস সি এর পুবদিকের মাঠে থাকবে। সামিরা গিয়ে সোজা হাজির হলো সেখানে। হঠাৎ ক্লাস ক্যানসেলের সিদ্ধান্তে একেবারে যেন পার্টি শুরু হয়ে গেছে। চটপটি, ঝালমুড়ি, চানচুর মাখা , জলপাই ভর্তা এমনকি চালতার আচার কি নেই সেখানে। সাথে চলছে ছেলেদের ধুমসে ধুমপানও। স্মোকিং এর ধোঁয়া এবং গন্ধ কোনোটাই সামিরা সহ্য করতে পারেনা। নিশ্বাস আটকে আসে। যদিও পার্থ চেইন স্মোকার তবে কি এক অজ্ঞাত কারণে আজ পার্থের হাতে কোনো সিগারেট নেই। এমনিতে সামিরা সঙ্গে না থাকলে এই চেইন স্মোকারের হাতে সিগারেট ছাড়া কেউই কোনোদিন কিছু দেখেনি। সেকেন্ড ক্লাসটা আছে একেবারে সেই ১টায়। অনেকদিন পর এত্তগুলো ফ্রেন্ড একসাথে যেন চারিদিক মুখরিত করে তুলেছে।

সামিরা গিয়ে বসে পার্থের পাশে। পার্থ চোখ তুলে তাকায় ওর দিকে। পার্থের চোখে তাকিয়ে চমকে ওঠে সামিরা। ভীষন বিমর্ষ আর রাত জাগার ক্লান্তি পার্থের চোখে। পার্থের কপালে হাত দিয়ে দেখে জ্বর টর এলো কিনা। তারপর জিগাসা করে-
- পার্থ তোমার কি শরীর খারাপ?
পার্থ বিমর্ষ কিন্তু নির্লিপ্তভাবে উত্তর দেয় - নাহ। শরীর ঠিকই আছে।
ওদিক থেকে রোমেল বলে ওঠে, সামিরা দেখো আমার জ্বর আসছে, অথচ সেই দিকে কারো খেয়াল নেই। অন্যদের কি কপাল। মেঘ না চাইতেই জলের মত জ্বর না হইতেই প্রিয়ার করতলের মায়াবী মধুর স্পর্শ। কি কপাল করে আসছিলাম রে একটা গার্ল ফ্রেন্ডও নাই বন্ধুও নাই। আমারে কেউ দেখে না , কেউ ভালোবাসেনা। সে কান্নার এ্যাক্টিং শুরু করে। সবাই এমনকি সামিরাও হেসে ফেলে রোমেলের কান্ড দেখে কিন্তু পার্থ গম্ভীর হয়ে থাকে।
সামিরার খুব খারাপ লাগে। পার্থের মন খারাপ এটা তার বুকের মধ্যে সুঁচ ফুটাচ্ছে। সে সবার সামনে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে। পার্থও একই চেষ্টা করছে সে বুঝতে পারে। মিতি সামিরাকে জিগাসা করে -
- কাল কোথায় ছিলি? সারাটাদিন ফোন অফ। আমি ফোন করে করে তোকে খুঁজে পাইনি। কান খাড়া করে রাখে পার্থ। সামিরা কি জবাব দেয় জানতে চায় সে। সামিরা নির্লিপ্ত ভাবে বলে-
- কাল ছিলো আমার একাকী দিন। মানে আমার একাকী বিলাসের একটা দিন । সারাদিন নিজের মত কাটালাম। নো ফোন, নো ফান, নো খানা, নো কারো ইচ্ছায় চলা, নো কারো হুকুম মানা। মিতি বাগড়া দেয় ,
-তোকে আবার কারো হুকুম মানতে হয় নাকি?
সামিরা বলে,
-মানতে হয় না বটে তবু বুঝিস তো একাকী বিলাসের একশো একটা শর্তের এক শর্ত এটা। তবুও কি শান্তি আছে? সন্ধ্যায় এসে হাজির হলেন বাড়িতে বড় কুটুম। মানে গ্রামে আমাদের একটা পাগলা কিসিমের আত্মীয় আছে। সে চায় সবার আদর পেতে। মানে তার চাওয়া সবাই তাকে মাথায় তুলে নাচুক। যদিও তিনিও আমরা গ্রামে গেলে আমাদের জন্য জীবন দেন তবুও আমাদের বাড়ি যখন আসে তখন----

-- সামিরা অনর্গল বলে চলে ওর একাকী বিলাসের একটা ফান-ডের কথা। পার্থ মন দিয়ে শোনে ওর প্রতিটি কথা। সামিরার মনেও পড়েনা যে এই দিনটি খুব স্পেশাল ছিলো তার কাছে কাল , মানে পার্থের জন্মদিন ছিলো গতকাল আর সামিরা পার্থকে নিয়ে নানা পরিকল্পনা করার পরেও কাল আসেনি। সে যেন বেমালুম ভুলেই গেছে।


রিফ্লেক্সন জার্নাল - ২৩.১০.২০১৫
রাত- ১২:০৩
সামিরা চৌধুরী


আজ পার্থকে দেখে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো। ও এমনিতে গম্ভীর থাকে প্রায়ই কিন্তু ওর ভাবলেষহীন নির্লিপ্ততায় ওকে কখনও বিমর্ষ বা দুঃখী মনে হয়নি আমার কাছে। পার্থকে এত্ত এত্ত ভালোলাগার এটাও একটা কারণ আমার। কারণ আমি ওর ভাবলেশহীন মুখের ভেতর থেকে ওকে আবিষ্কারের চেষ্টা করি। পার্থের হৃদয়টা যে কি দিয়ে বানানো আল্লাহই জানে। ওর হৃদয়ের কূল, কিনারা তল বা তীর কিছুই খুঁজে পাইনা আমি।

সবকিছুতেই এমন কিছু ব্যাখা দেয় সে যেন দুনিয়ার সবচেয়ে অবাস্তব অসম্ভব ব্যাপারটাও খুবই স্বাভাবিক ওর কাছে। অন্যরা যেসব ব্যাপারে আহা উহু করে মরে, যেন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেছে সেসবও খুব স্বাভাবিক ওর কাছে, শুধু তাই নয় ওর ভাবনাগুলোর যৌক্তিক ব্যাখ্যাও আছে যা শুনে আমি মুগ্ধ হই। আমি অবাক হয়ে যাই, আগে নানা রকম কষ্ট বা দুঃখ বা রাগের যেসব কারণ ছিলো আমার, পার্থের কাছে সেসবের খুব স্বাভাবিক ব্যাখা শুনে শুনে আমার কাছে সবকিছুই আজ সহজ হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে অবশ্য আমার সন্দেহ হয় যে ও মনে হয় আমার কোনো দোষই দেখতে পায়না। আমি ওকে এ কথা বলেছিও।একদিন বললাম, পার্থ আমার ধারণা তুমি কারো কারো ক্ষেত্রে ব্লাইন্ড। পার্থ হেসেছে। বলেছে তুমি নিশ্চয় ভাবো তোমার ক্ষেত্রে আমি ব্লাইন্ড। তুমি ভুল ভাবছো। তুমিও ভুল কিছু করলে বা বললে আমি তোমাকে ধরিয়ে দেবো।

পার্থের এমন সব অদ্ভুত বিহেভিয়ারগুলোকেই আসলে আমি ভালোবাসি। আমি মুগ্ধ হই ওর শান্ত শীতল এবং অন্যদের চাইতে একদম অন্যরকম ভাবনাগুলো দেখে। পার্থ সবার থেকে একদম আলাদা। একেবারে ভীষণ ভীষন স্পেশাল পারসন টু মি। এ্যান্ড দ্যাটস হ্যোয়াই আই লাভ হিম সো মাচ!

পার্থ আজ অস্বাভাবিক রকম চুপচাপ ছিলো। আজ ও গুনে গুনে কয়েকটা কথা বলেছে। আমি যখন ওকে ওর বাসার সামনে নামিয়ে দিলাম তার আগে ও এমন অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো? আমার ভীষণ মায়া লাগলো। আমি জানিনা পার্থর জন্য আমার এটা কি ধরণের মায়া? কি ধরণের ভালোবাসা। আমি যে ওকে এত ভালোবাসি আমার ধারণা সে কখনও সেটা বুঝতেই পারেনা। মাঝে মাঝে এত রাগ লাগে। তবুও যতবার যতখানি রাগ লাগে, ততবার ভালোবাসাটাই যেন ততখানিই ফিরে ফিরে আসে। ধ্যাৎ কিচ্ছু লিখতে ভালো লাগছে না আজ। আমার ভেতরটা ব্যাথায় ভেঙ্গে যাচ্ছে। সারাটাদিন মাথার ভেতরে পার্থর বিমর্ষ চেহারাটাই ঘুরছে। আমার এখন খুব ভালো একটা ঘুম প্রয়োজন।


১. ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:১২ ০
পার্থিব পার্থ বলেছেন: ফ্ল্যাশ ব্যাক
পার্থ দ্যা অনলি ওয়ান – ২৩ শে অক্টোবর

আজও বেশ অবাক হলাম। সামিরাকে যখন জিজ্ঞাসা করবো না করবোনা করেও জিজ্ঞাসা করলাম, সামিরা কাল তুমি আসলেনা কেনো? কাল আমার জন্মদিন ছিলো আর তুমি আসলে না? এটা কিভাবে সম্ভব? সামিরা আকাশ থেকে পড়লো! কাল তোমার জন্মদিন ছিল?আর আমি ভুলে গেলাম?দেখ আমার সাথে এভাবে মজা করবা না।তোমার জন্মদিন আমি কি ভুলে যেতে পারি বল?আমি সামিরার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলাম! সে কি আসলেই আমার জন্মদিন ভুলে গেছে?

আজ সকালে ক্যাম্পাসে আসবনা ভেবেছিলাম। কিন্তু কেমন যেন অস্থির লাগছিল। সামিরার সাথে খুব দেখা করতে ইচ্ছে করছিল। কেন যেন মনে হচ্ছিল ক্যাম্পাসে আসলে সামিরার সাথে দেখা হবে। তাই চলে আসলাম। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম।কিন্তু তাদের কথা, হাসি তামাশা কিছুতেই অংশগ্রহণ করতে পারছিলাম না।বারবার শুধু সামিরার কথা মনে পড়ছিল। সে কেন এমন করছে! বিষণ্ণ মনে বসে তাই ভাবছিলাম।

হঠাৎ করেই দেখলাম সামিরা আসছে।তাকে দেখে কেমন যেন আরও অস্থির হয়ে উঠলাম। হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল। নিজের উপরই বিরক্ত হলাম। দিনে দিনে এক হাস্যকর চরিত্রে পরিনত হচ্ছি আমি। সামিরা এসেই সোজা আমার সামনে দাঁড়ালো। তাকে খুব আনন্দিত মনে হচ্ছিল। তার মুখে সেই মায়াবী হাসি লেগে ছিল যা দেখলেই নিজেকে কেন যেন অপরাধী মনে হয় খুব। সে বলল, তোমার চেহারার এই অবস্থা কেন? রাতে ঘুমাওনি নাকি? কি উত্তর দিব কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না। বললাম, কিছুই হয়নি। কেন যেন সামিরার দিকে তাকাতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিলো বোকার মত চোখে পানি এসে যাবে। নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। একধরনের অভিমান আমার মধ্যে কাজ করছিল। ইচ্ছে হচ্ছিল এক দৌড়ে দূরে কোথাও চলে যাই, যেখানে গেলে সামিরা কখনো আমাকে খুঁজে পাবে না।কিন্তু আমি বসেই ছিলাম। বিষণ্ণ, ক্লান্ত, অভিমানী এবং বিভ্রান্ত এক হৃদয় নিয়ে।

একটু নিরালায় সামিরা যখন জানতে চাইলো, কি হয়েছে তোমার, বল? সামিরা আমার হাত তার হাতের মুঠোয় নিয়ে এমন ভাবে জানতে চাইল যেন সে কিছুই জানেনা তখন প্রচণ্ড অভিমান হলো। অভিমান নিয়েই বললাম কাল আমার সাথে এমন করলে কেন? সে বলল কি করলাম। তারপর সব শুনে সে যেন আকাশ থেকে পড়ল। কিছুতেই আমার কথা বিশ্বাস করতে চাইলনা। আমি নাকি তার সাথে মজা করার জন্য নতুন অভিনয় শুরু করেছি। নিজেকে সামলে নিয়ে চুপচাপ বসে ছিলাম। সামিরা বলল চেহারা এমন করে রেখেছ কেন?

তোমাকে কখনো এমন বিমর্ষ হয়ে থাকতে দেখিনি। এই মেয়ে খুব অল্পতেই কেঁদে ফেলে। দেখলাম তার চোখ ছলছল করছে।সব ভুলে নিজের উপরই প্রচণ্ড রাগ হলো আমার। অনেক কষ্টে মুখে হাসি ফুটিয়ে বললাম, চল! আমাকে বাসায় নামিয়ে দিবে!
সামিরা আমাকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল। আমি বাসায় ঢুকলামনা।ওর সামনে সিগারেট খাবনা ঠিক করেছিলাম। তাই ক্যাম্পাসে একটা সিগারেটও খাইনি। সামিরাকে বিদায় দিয়েই একটা সিগারেট ধরালাম। হঠাৎ আমার মনে হলো, সামিরা কয়েকদিন পরপর গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো আসলেই ভুলে যাচ্ছে। এখন মনে হচ্ছে সে আসলেই কাল আমার জন্মদিনের ব্যাপারটা ভুলে গিয়েছিল।

সামিরার কি কোন মানসিক সমস্যা হচ্ছে?হঠাৎ করেই একটা অজানা ভয় আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলল। আমি বুঝলাম এই মেয়ের খারাপ কিছু হলে আমি সহ্য করতে পারবনা। যেভাবেই হোক সামিরাকে আমি সুখী দেখতে চাই।কিন্তু আমি কি পারব? অস্থির লাগছে।আর কিছু চিন্তা করতে পারছিনা। মনে হচ্ছে কেউ যদি এসে আমায় ঘুম পাড়িয়ে দিত! কিন্তু আরেকটি নির্ঘুম রাত আমার জন্য জানু পেতে অপেক্ষা করছে।

মন্তব্য ৩৪ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৩৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:১২

পার্থিব পার্থ বলেছেন: ফ্ল্যাশ ব্যাক
পার্থ দ্যা অনলি ওয়ান – ২৩ শে অক্টোবর

আজও বেশ অবাক হলাম। সামিরাকে যখন জিজ্ঞাসা করবো না করবোনা করেও জিজ্ঞাসা করলাম, সামিরা কাল তুমি আসলেনা কেনো? কাল আমার জন্মদিন ছিলো আর তুমি আসলে না? এটা কিভাবে সম্ভব? সামিরা আকাশ থেকে পড়লো! কাল তোমার জন্মদিন ছিল?আর আমি ভুলে গেলাম?দেখ আমার সাথে এভাবে মজা করবা না।তোমার জন্মদিন আমি কি ভুলে যেতে পারি বল?আমি সামিরার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলাম! সে কি আসলেই আমার জন্মদিন ভুলে গেছে?

আজ সকালে ক্যাম্পাসে আসবনা ভেবেছিলাম। কিন্তু কেমন যেন অস্থির লাগছিল। সামিরার সাথে খুব দেখা করতে ইচ্ছে করছিল। কেন যেন মনে হচ্ছিল ক্যাম্পাসে আসলে সামিরার সাথে দেখা হবে। তাই চলে আসলাম। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম।কিন্তু তাদের কথা, হাসি তামাশা কিছুতেই অংশগ্রহণ করতে পারছিলাম না।বারবার শুধু সামিরার কথা মনে পড়ছিল। সে কেন এমন করছে! বিষণ্ণ মনে বসে তাই ভাবছিলাম।

হঠাৎ করেই দেখলাম সামিরা আসছে।তাকে দেখে কেমন যেন আরও অস্থির হয়ে উঠলাম। হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল। নিজের উপরই বিরক্ত হলাম। দিনে দিনে এক হাস্যকর চরিত্রে পরিনত হচ্ছি আমি। সামিরা এসেই সোজা আমার সামনে দাঁড়ালো। তাকে খুব আনন্দিত মনে হচ্ছিল। তার মুখে সেই মায়াবী হাসি লেগে ছিল যা দেখলেই নিজেকে কেন যেন অপরাধী মনে হয় খুব। সে বলল, তোমার চেহারার এই অবস্থা কেন? রাতে ঘুমাওনি নাকি? কি উত্তর দিব কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না। বললাম, কিছুই হয়নি। কেন যেন সামিরার দিকে তাকাতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিলো বোকার মত চোখে পানি এসে যাবে। নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। একধরনের অভিমান আমার মধ্যে কাজ করছিল। ইচ্ছে হচ্ছিল এক দৌড়ে দূরে কোথাও চলে যাই, যেখানে গেলে সামিরা কখনো আমাকে খুঁজে পাবে না।কিন্তু আমি বসেই ছিলাম। বিষণ্ণ, ক্লান্ত, অভিমানী এবং বিভ্রান্ত এক হৃদয় নিয়ে।

একটু নিরালায় সামিরা যখন জানতে চাইলো, কি হয়েছে তোমার, বল? সামিরা আমার হাত তার হাতের মুঠোয় নিয়ে এমন ভাবে জানতে চাইল যেন সে কিছুই জানেনা তখন প্রচণ্ড অভিমান হলো। অভিমান নিয়েই বললাম কাল আমার সাথে এমন করলে কেন? সে বলল কি করলাম। তারপর সব শুনে সে যেন আকাশ থেকে পড়ল। কিছুতেই আমার কথা বিশ্বাস করতে চাইলনা। আমি নাকি তার সাথে মজা করার জন্য নতুন অভিনয় শুরু করেছি। নিজেকে সামলে নিয়ে চুপচাপ বসে ছিলাম। সামিরা বলল চেহারা এমন করে রেখেছ কেন?

তোমাকে কখনো এমন বিমর্ষ হয়ে থাকতে দেখিনি। এই মেয়ে খুব অল্পতেই কেঁদে ফেলে। দেখলাম তার চোখ ছলছল করছে।সব ভুলে নিজের উপরই প্রচণ্ড রাগ হলো আমার। অনেক কষ্টে মুখে হাসি ফুটিয়ে বললাম, চল! আমাকে বাসায় নামিয়ে দিবে!
সামিরা আমাকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল। আমি বাসায় ঢুকলামনা।ওর সামনে সিগারেট খাবনা ঠিক করেছিলাম। তাই ক্যাম্পাসে একটা সিগারেটও খাইনি। সামিরাকে বিদায় দিয়েই একটা সিগারেট ধরালাম। হঠাৎ আমার মনে হলো, সামিরা কয়েকদিন পরপর গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো আসলেই ভুলে যাচ্ছে। এখন মনে হচ্ছে সে আসলেই কাল আমার জন্মদিনের ব্যাপারটা ভুলে গিয়েছিল।

সামিরার কি কোন মানসিক সমস্যা হচ্ছে?হঠাৎ করেই একটা অজানা ভয় আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলল। আমি বুঝলাম এই মেয়ের খারাপ কিছু হলে আমি সহ্য করতে পারবনা। যেভাবেই হোক সামিরাকে আমি সুখী দেখতে চাই।কিন্তু আমি কি পারব? অস্থির লাগছে।আর কিছু চিন্তা করতে পারছিনা। মনে হচ্ছে কেউ যদি এসে আমায় ঘুম পাড়িয়ে দিত! কিন্তু আরেকটি নির্ঘুম রাত আমার জন্য জানু পেতে অপেক্ষা করছে।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৩

বনমহুয়া বলেছেন: পার্থ?

ওয়েলকাম। :`>

২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৯

পার্থিব পার্থ বলেছেন: তুমি যেখানে.........

আমি সেখানেই আসব! আসতেই হবে!

উপায় কি বল?? :P :P

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২১

বনমহুয়া বলেছেন: তোমাকে দেখে অনেক খুশী হয়েছি পার্থ দ্যা অনলি ওয়ান। থ্যাংকস ফর কামিং।

৩| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২১

গেম চেঞ্জার বলেছেন: মন মনে নিজেকে পার্থ ভেবে লেখাটা পড়লাম। চালিয়ে যান। +।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৩

বনমহুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ গেম চেঞ্জার। সাথে থাকবেন।

৪| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৫

পার্থিব পার্থ বলেছেন: গেম ভাই, আপনি নিজেরে পার্থ ভাবলে আমি নিজেরে কি ভাবমু???

পার্থ দ্যা অনলি ওয়ান কিন্তু আমি নিজেই! ;)

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৭

বনমহুয়া বলেছেন: পার্থ থ্যাংকস ফর কামিং।

৫| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৮

গেম চেঞ্জার বলেছেন: ৪. ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৫ ০
পার্থিব পার্থ বলেছেন: গেম ভাই, আপনি নিজেরে পার্থ ভাবলে আমি নিজেরে কি ভাবমু???

পার্থ দ্যা অনলি ওয়ান কিন্তু আমি নিজেই! ;)



খাইছে!! তাইলে আর কি। আপনে প্রতিধ্বনি হয়ে পাহাড়ের গায়ে ঠেস খাবেন ফিরে ফিরে মিলিয়ে যাবেন নির্জন বাস্তবতায়।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৯

বনমহুয়া বলেছেন: এটা সত্যিই পার্থ। মানে লেখাটার পার্থ।

৬| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪

পার্থিব পার্থ বলেছেন: আমি এক সত্য, দুই সত্য, তিন সত্য!! :P

ধন্যবাদ মহুয়া আমাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য। :)

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৭

বনমহুয়া বলেছেন: পার্থ ডোন্ট ফরগেট। ইউ হ্যাভ ক্লাস এ্যাট ৬:৩০। যাও এখন।

৭| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২০

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: চমৎকার লেখা । চলুক ।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৬

বনমহুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ।

৮| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৬

সুমন কর বলেছেন: সাবলীল বর্ণনা।

ব্যক্তিগত কথোপকথন যাকে নিয়ে, সে মনে হয় চলে এসেছে.......

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:০০

বনমহুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন কর। তিনিও একজন রাইটার। সাথে গবেষকও।

৯| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:০৫

জুন বলেছেন: বন মমহুয়া আপনার লেখার বৈশিষ্টটুকু এই যেন মনে হয় সব কিছু চোখের সামনে ভেসে উঠছে। একেবারে নাটক কিম্বা সিনেমার মত।
নায়কের আগমনে লেখাটি অন্যমাত্রা পেল বন মহুয়া। এখন সামিরার অপেক্ষায় :)
চলুক। সাথে আছি।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১৫

বনমহুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ জুন। তবে সামিরা তো ছিলোই এবং আছেও। নায়ককে আজ ডেকে এনেছি। কিছু ব্যাপারে এইখানে লিখতে এসে প্রথমেই কিছুটা বিরক্ত হয়েছিলাম। আমার লেখা পড়বার জন্য ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১০| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:০৯

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: আপনার/আপনাদের লেখার হাত ভালো। শুভকামনা রইলো। :)

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১৭

বনমহুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। সাথে থাকবেন।

১১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৩৭

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: গল্পটায় অনেকগুলো ভাবে বিবরণ দেওয়া হয়েছ। কখনো তৃতীয় কেউ, কখনো পার্থ, কখনো সামিরা।
বর্ণনা ভঙ্গিটা খুবই সহজ। পড়তে মজা লেগেছে। [যদিও কয়েকটা বানান ভুল ছিল]

ভ্রান্তির খেলাটাও দারূন জমে উঠেছে।

পরের পর্বগুলোর অপেক্ষায় রইলাম। পুরোটা না পড়লে ভ্রান্তি-বিলাসের ভিতরই থাকা লাগবে।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:১৪

বনমহুয়া বলেছেন: আসলে এবারের পর্বে আমরা প্রথমে ঘটনার কিছুটা বর্ণন দিয়েছি। তার পরে উত্তম পুরুষে সামিরা তার সারাদিনের রিফ্লেশন জার্নাল লিখেছে। এরপর তো পার্থ দ্যা অনলি ওয়ান গল্পের নায়ক হাজির হলেন। তার সারাদিনের ফ্লাশব্যাকটাও জুড়ে দেওয়া হলো। ধন্যবাদ রক্তিম।

আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগছে। ভালো থাকবেন।

১২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:২২

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: গল্পের চেয়ে দেখি কমেন্টে বেশি নাটকিয়তা । #:-S

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৩৪

বনমহুয়া বলেছেন: তবে কমেন্টের নাটকই দেখুন।

১৩| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৫৬

পার্থিব পার্থ বলেছেন: ভ্রান্তির খেলা!

সবে মাত্র শুরু!

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৫৮

বনমহুয়া বলেছেন: পার্থ নাও ইজ ইওর টার্ন। কি হয়েছিলো এরপর বলো। সামিরার কথা বলো। তোমার কথা বলো।

১৪| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৪৫

পার্থিব পার্থ বলেছেন: বলার জন্যই আসলাম। বলব।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৩২

বনমহুয়া বলেছেন: সে জন্য স্বাগতম পার্থ। শুধু স্বাগতম না সুস্বাগতম।

১৫| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৪৮

জেন রসি বলেছেন: ইন্টরেস্টিং ব্যাপার মনে হচ্ছে। সাবলীল লেখা পড়তে ভালো লাগছে।চলুক। :)

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৩৩

বনমহুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ জেন রসি।

১৬| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫০

কিরমানী লিটন বলেছেন: জেন রসি বলেছেন: ইন্টরেস্টিং ব্যাপার মনে হচ্ছে। সাবলীল লেখা পড়তে ভালো লাগছে।চলুক।

সাথেই আছি সুন্দরের..।
সতত শুভকামনা ...

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১২

বনমহুয়া বলেছেন: সাথে থাকবার জন্য ধন্যবাদ কিরমানী লিটন।

১৭| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৩৩

প্রামানিক বলেছেন: অনেক ভাল লাগল। ধন্যবাদ।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:১২

বনমহুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিকভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.