নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিনুল

নিজেকে সম্মান করুন অপরের সম্মান পাবেন।

মিনুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনুগল্পঃ ক্লাসটি হলো না

২৭ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৪২

আষাঢ়ের আকাশ। একটু আগেও বেশ পরিচ্ছন্ন ছিল। কোথা থেকে যেন মেঘগুলি উড়ে এসে আসন পেতে বসল ভার্সিটির সীমানায়। তারপর ঝুম বৃষ্টি। মাহিনের সকাল নয়টার ক্লাসটি হলো না। প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীই চায় মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হোক বা স্যার-ম্যাডামরা অসুস্থ থাকুক। এতে করে ঘন্টাখানিকের জন্য হলেও তো প্রাণখোলা আড্ডা জমানো যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের এই এক সুবিধা অতি অল্প টাকায় বন্ধুদের সাথে খাতির জমানোর কাজটি সারা যায়। ডাকসু, টি.এস.সি ক্যাফেটেরিয়ায় গরম গরম প্রতিটি লাল চা এক টুকরা তাজা লেবু সহ এক টাকা, সিঙ্গারা দুই টাকা, সমুচা তিন টাকা,পেটিস(চিকেন) পাঁচ টাকা। আর খাবার পানির তো কোন চিন্তা নেই। সবসময় ফ্রি বিশুদ্ধ পানি। হাকিম চত্বর আর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার এর সামনে তেলে ভাজা পাকুরা পাঁচ টাকা। এখানে অবশ্য কাপ প্রতি লাল চা চার টাকা, দুধ চা ছয় টাকা। ক্লাসটি যেহেতু হলো না মাহিন আর রিফাত ডাকসুতে সকালের নাস্তা সেরে ফ্রেন্ডস বুক কর্ণারে বই কেনার উদ্দ্যেশ্যে কলাভবনের সামন হয়ে নীলক্ষেতের দিকে পা বাড়ায়। ততক্ষণে আকাশ সাবেক হয়ে গেছে। বৃষ্টি থামলেও বাতাসে গাছের পাতার দফায় দফায় বৃষ্টি এখনো থামেনি। দুজনই একই বিভাগে পড়ে। সেই প্রথম বর্ষ থেকেই দুজনের মাঝে বন্ধুত্ব। দিন যায় ওদের বন্ধুত্ব যেন আরো গাঢ় হতে থাকে। হয়তোবা তারা একই গল্প-কবিতা পড়ে,একসাথে নাস্তা করে,ক্লাসে যায়,কেনাকাটা করে এজন্য তাদের অলক্ষ্যেই এই আত্নিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো মাহিন আর রিফাত দেখতে অনেকটা একই রকমের। দুজনের গায়ের রঙ হালকা ফর্সা। উচ্চতাও এক। এজন্য অনেক সময় দুজনকেই বিপদে পড়তে হয়। অন্যান্য বন্ধু-বড় ভাইয়েরা মাহিনকে রিফাত আর রিফাতকে মাহিন ভেবে গুলিয়ে ফেলে। অনেকে অবশ্য দুজনকে একসাথে দেখলে জমজ ভাবে। মল চত্বর পেরিয়ে তারা আই.ই. আর এর পূর্ব গেট পেরিয়ে এগোতে থাকে। আই ই আর এর গোল চত্বরের সম্মুখে সিড়ির মধ্যে এক জোড়া খালি পায়ের প্রতি চোখ নিবদ্ধ হয় মাহিনের। পা দুটি মাহিনের কাছে অনেক চেনা মনে হয়। সত্যি ভুল করেনি মাহিন । এ যে তার এক্স গার্ল ফ্রেন্ড সোহার পা। দুজনের চোখে চোখ পড়তেই কেমন যেন আঁতকে ওঠে দুজনই। থতমত খেয়ে যায় মাহিন। এই তো কয়েকদিন আগেও ঐ খালি হাত-পা জোড়ার সাথে তার কোন দেয়াল ছিল না। দুজন দুজনার পাশে ছায়ার মত ছিল। মাহিনের ভালোবাসায় কোন কমতি ছিল না। কিন্তু কে জানত সোহার ভালোবাসার মাঝে একটা হিসাব-নিকাশ ছিল। সোহার দুধসাদা হাতের আঙ্গুলের ফাঁকে এখনো মনে হয় মাহিনের আঙ্গুলের ছাপ লেগে আছে। সেদিন তো তারা একই রিক্সায় বৃষ্টিতে ভিজল। সন্ধ্যার আবিরের সাথে দুজনের অধর এক হয়ে নেমে এলো নিকষ কালো রাত্রি। রিফাত বিষয়টি ঠিকই আঁচ করতে পারে। সোহা অনেকটা না চেনার ভান করেই ঝুঁকে পড়ে পাশে বসে থাকা ছেলেটির উপর। মাহিন শুধু মনে মনে এটুকুই ভাবলো আমার যদি একগাদা টাকা থাকতো সোহা আমাকে ভালোবাসুক আর না বাসুক আমার পাশে বসে থাকতো। মাহিন ভুলেই গেছিল তারা কোন দিকে যাচ্ছিল। রিফাত হ্যাচকা টান মেরে মাহিনকে নীলক্ষেতের দিকে নিয়ে চলল।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জুন, ২০১৪ রাত ৩:২৬

নাহিদ রুদ্রনীল বলেছেন: শুরুটা ভালই ছিল, শেষটি এমন হল কেন? সামনে আরও ভাল কিছুর প্রত্যাশা। শুভ কামনা :)

২৯ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:১৭

মিনুল বলেছেন: ধন্যবাদ নাহিদ রুদ্রনীল ভাই আপনার সুন্দর মন্ত্যব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।

২| ৩০ শে জুন, ২০১৪ রাত ১:২০

এহসান সাবির বলেছেন: বেশ!!

০২ রা জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৪৫

মিনুল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই এহসান সাবির।

৩| ৩০ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালোই।

০২ রা জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৪৭

মিনুল বলেছেন: নেক ধন্যবাদ মাহবুব ভাই।ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.