নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাহাড়ের প্রতিধ্বনী

মমতাজ-কলি

ভাল করে বাঁচতে চাই

মমতাজ-কলি › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুর্বৃত্তি ইতিহাস রচনায়

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:০৪

দুর্বৃত্তি, সন্ত্রাস ও ধোকাবাজী শুধু বাংলাদেশের রাজনীতি, প্রশাসন ও অর্থনীতিকেই গ্রাস করেনি, সবচেয়ে বড় দুর্বৃত্তি হয়েছে দেশটির ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে। যেদেশের রাজনীতি, প্রশাসন, বুদ্ধিবৃত্তি, শিক্ষাব্যবস্থা ও বিচারব্যবস্থার সবচেয়ে বড় কীর্তি হলো দেশটিকে বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশের মাঝে দুর্বৃত্তিতে পাঁচবার প্রথম স্থানে পৌঁছে দেয়া, সেদেশে ইতিহাস রচনায় সততা ও সুবিচার স্থান পাবে সেটি কি আশা করা যায়? বরং ইতিহাসের পৃষ্ঠাগুলো অতি ভয়ংকর দুর্বৃত্তদের মিথ্যা কাহিনীতে পূর্ণ হবে সেটিই কি কাঙ্খিত নয়? মহান নবীজী (সাঃ)র হাদীসঃ “মিথ্যাচারিতা হলো সকল পাপের মা”। আর প্রতিটি দুর্নীতিই তো পাপ। ফলে যেখানে প্রচণ্ড দুর্নীতি বা দুর্বৃত্তি আছে, বুঝতে হবে সেখানে প্রচণ্ড মিথ্যাচারও আছে। এবং মিথ্যার জরায়ু যেখানে যত বিশাল,ততই বিশাল আকারে প্রসব হয় দুর্নীতি ও পাপাচার। বাংলাদেশ দুর্নীতিতে যেভাবে ৫ বার বিশ্বের প্রথমস্থান অধিকার করেছে সেটি তো দুর্নীতির জরায়ু অতি বিশাল হওয়ার কারণেই। সে মিথ্যাচারিতারই স্বাক্ষর হলো বাংলাদেশের ইতিহাসের বই। আলোচ্য নিবদ্ধে সে ভয়ংকর মিথ্যাচারিতার কিছু উদাহরণ পেশ করা হবে।

মিথ্যুকদের জন্য আল্লাহতায়ালার শাস্তিটাও যে অতি ভয়ানক -সে প্রমাণও কি কম। মিথ্যার সাথে আযাবও আসে -সে হুশিয়ারিটা তো মহান আল্লাহর।মিথ্যুকদের দেশ মাত্রই তাই আযাবের দেশ। অতীতে মিথ্যুকদের সাথে আল্লাহতায়ালার আচরণটি কীরূপ ছিল তা থেকে তাই শিক্ষা নিতে বলা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে বহুবার বলা হয়েছে,“ফাসিরু ফিল আরদ, ফানজুর কাইফা কানা আ’কিবাতুল মোকাজ্জীবীন” অর্থঃ “অতঃপর তোমরা পৃথিবী ভ্রমন কর এবং দেখ যারা মিথ্যুক ছিল তাদের পরিণতিটি কি হয়েছিল”।প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশে কি আযাব কম? ফিরাউন-নমরুদ-হিটলার-মুজিব-হাসীনাদের স্বৈরাচারি শাসন নিজেই তো মহাআযাব।এমন আযাবে মানুষ সভ্য ভাবে বাঁচবার অধিকার হারায়। মানুষ তখন গুম হয়, বন্দী হয় এবং বন্দী হয়ে রিমান্ডে যায় ও লাশ হয়। এমনকি নেতারাও লাশহয়ে সিঁড়িতে পড়ে থাকে। আইন-শৃঙ্খলা তখন হাওয়ায় হারিয়ে যায়। আযাব আসে দুর্ভিক্ষের বেশে। আসে ঘুষ ও সস্ত্রাসের বেশে। আসে বিশ্বজুড়া অপমানের বেশে। দেশ তখন “ভিক্ষার তলাহীন ঝুলি”, “দূর্নীতিতে বিশ্বে প্রথম” এরূপ বিশ্বজুড়া নানা কুখ্যাতি পায়। তখন জলোচ্ছ্বাস, প্লাবন ও ঘুর্ণিঝড় আসে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন কেড়ে নিতে। মুজিবামলে ৩০ হাজার রাজনৈতীক নেতাকর্মী লাশ হয়েছিল। দুর্ভিক্ষ ডেকে আনে লাশ বানানো হয়েছিল আরো কয়েক লাখ মানুষকে। কোরআনে বর্নিত আদ-সামুদ, মাদায়েনের অধিবাসী এবং ফিরাউনের বাহিনীর উপরও আযাব এসেছিল। কিন্তু সে সব আযাবের কোনটিতে কি এত মানুষ লাশ হয়েছিল?

বাড়ীতে আগুণ লাগলে এবং সে আগুন না থামালে একে একে সবগুলো ঘরই পুড়ে যায়। তেমনি দেশে দূর্নীতি ঢুকলে সেটি শুধু রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্যে ও অফিস-আদালতে সীমিত থাকে না। প্রবেশ করে প্রতিক্ষেত্রে এবং ধ্বসিয়ে দেয় প্রতিটি প্রতিষ্ঠান। আগুন নেভানো এবং দূর্নীতি নির্মূল ইসলামের তাই শ্রেষ্ঠ ইবাদত। আল্লাহর উপর ঈমান আনার পরই মু’মিনের উপর অলংঘনীয় হুকুমটি হলো “আমারু বিল মা’রুফ ওয়া নিহিয়ানিল মুনকার” অর্থাৎ ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং দুর্বৃত্তির নির্মূল। মু’মিনের জীবনে তখন দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে জিহাদ শুরু হয়। অথচ বাংলাদেশে সে দুর্বৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদ হয়নি, রোধের চেষ্টাও হয়নি, বরং লাগাতর বাড়ানো হয়েছে। মুসলমান হওয়ার অর্থই হলো আল্লাহর প্রতিটি হুকুমের আনুগত্য। কিন্তু সে আনুগত্য “ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং দুর্বৃত্তির নির্মূল” পালনে হয়নি। আল্লাহর আনুগত্য শুধু মসজিদের চারদেয়ালের মাঝে নামায-রোযাতেই সীমিত হয়ে আছে। ফলে সমগ্র দেশ অধিকৃত হয়ে গেছে দুর্বৃত্তদের হাতে। “ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা এবং দুর্বৃত্তির নির্মূল” -মহান আল্লাহর এ হুকুমটিকে শুধু কোরআনেই রয়ে গেছে। অফিস-আদালত, রাজনীতি ও অর্থনীতি ও শিক্ষা-সংস্কৃতির অঙ্গণে এ মিশন প্রতিষ্ঠা পায়নি। এমন কি প্রচণ্ড ধোকাবাজি হয়েছে সত্যকে সত্য,মিথ্যাকে মিথ্যা এবং দুর্বৃত্তকে দুর্বৃত্ত রূপে জানার ক্ষেত্রেও। ফলে ভয়ংকর দুর্বৃত্তরা নির্বাচিত হচ্ছে দেশের নেতারূপে।

মানব সভ্যতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞানটি চিকিৎসা, রসায়ন বা প্রকৌশল বিজ্ঞান নয় বরং সেটি ইতিহাস বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের এ শাখাটি মানুষকে সবচেয়ে গুরুত্বপূণ ছবকটি দেয়, দেয় সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা রূপে জানার সামর্থ। দেয়, সমাজের দুর্বৃত্ত কীটদের চেনার কান্ডজ্ঞান। সামর্থ দেয় তাদের অনুসৃত পথ পরিহারের। ফিরাউন-নমরুদ-হিটলার-মুজিব যে অতি স্বৈরাচারি দুর্বৃত্ত এবং তাদের দর্শন ও রাজনীতি যে ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের জন্য ভয়ানক বিধ্বংসী -সেটি অন্য কোন বিজ্ঞানের বই পড়ে জানা যায় না। সে জন্য ইতিহাসের বই পড়তে হয়। তেমনি হযরত মূসা (আঃ), হযরত ঈসা (আঃ) এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যে মহান আল্লাহর মহান রাসূল এবং মানবের শ্রেষ্ঠ বন্ধু -সেটিও ইতিহাসের শিক্ষা। ইতিহাস তো এভাবেই মানুষের চলার পথে সঠিক ও বেঠিক এ দুটো পথই দেখায়। বাঁচায় জাহান্নামের আগুণ থেকে। পবিত্র কোরআনে তাই পদার্থ, চিকিৎসা, রসায়ন বা প্রকৌশল বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা হয়নি। বরং তুলে ধরা হয়েছে হযরত আদম (আঃ) থেকে হযরত মুহম্মদ (সাঃ) অবধি মানব জাতির অতিশিক্ষণীয় নির্ভূল ইতিহাস। বার বার বর্ণিত হয়েছে ইতিহাসের নানা পর্বে নানা মানুষের সফলতা ও বিফলতার কারণগুলোও। তুলে ধরা হয়েছে হযরত নূহ (আঃ), হযরত ইব্রাহীম (আঃ), হযরত লুত (আঃ), হযরত সালেহ (আঃ), হযরত শোয়েব (আঃ), হযরত মূসা (আঃ), হযরত ঈসা (আঃ)এর ন্যায় শ্রেষ্ঠ মানুষদের সাথে দুর্বৃত্তদের আচরন এবং তাদের ভয়াভয়ানক পরিণতি। মহান আল্লাহতায়ালা চান চিন্তাশীল মানুষগুলো ইতিহাসের এশিক্ষা নিয়ে দিবারাত্র চিন্তাভাবনা করুক ও শিক্ষা নিক। কম্পিউটার, রেলগাড়ি, উড়োজাহাজ, রেডিও-টিভি, পারমাণবিক শক্তি -এসবের আবিস্কারে শত শত বছর দেরী হলেও শ্রেষ্টতম সভ্যতার নির্মাণে আজ থেকে চৌদ্দশত বছর পূর্বেও কোন সমস্যা হয়নি। কারণ বিজ্ঞানের এসব নব্য আবিস্কার জীবনে সম্ভোগ বাড়াতে সহায়ক হলেও মানবিক গুণে বেড়ে উঠার জন্য অপরিহার্য নয়।এক্ষেত্রে জরুরী হলো,কোনটি ন্যায়, কোনটি সত্য এবং কোনটি জান্নাতের পথ সেটি চেনার সামর্থ। চাই সিরাতুল মোস্তাকীম তথা বা রোডম্যাপ। আজ থেকে চৌদ্দ শত বছর আগেই মুসলিমগণ সেটি পেয়েছিল। মহান নবীজী (সাঃ) সে পথটি স্বহাতে দেখিয়ে গেছেন, এবং মু’মিনদের মাঝে সে সামর্থও সৃষ্টি করেছেন। ফলে মানব বেড়ে উঠেছিল মহানমানব রূপে এবং তারা গড়ে তুলেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতা।

মিথ্যাচারি দুর্বৃত্তদের অপরাধ স্রেফ মানবতা ধ্বংসী অস্ত্র আবিস্কার বা রক্তাক্ষয়ী যুদ্ধবিগ্রহ নয়, বরং সবচেয়ে বড় অপরাধটি সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায় বিচারের সামর্থ কেড়ে নেয়ায়। সে লক্ষ্যে দুর্বৃত্তদের টার্গেট শুধু দেশের অর্থভাণ্ডার, প্রশাসন, ব্যবসা-বানিজ্য ও রাজনীতি নয়, বরং ইতিহাসের বই। বাংলাদেশে তাই মিথ্যা ইতিহাস লিখতে বিনিয়োগ হচ্ছে সরকারি কোষাগারের শত শত কোটি টাকা। অতীতে এরূপ মিথ্যাসেবীরা রাম, রাবন, হনুমান,অসুর, গনেশ,মনসার নামে কত আজগুবি কল্পকথাই না শিখিয়েছে। সেসব মিথ্যার গায়ে আবার ধর্মের লেবাসও পড়িয়েছে। কল্পিত কেচ্ছাকাহিনীর সে বইগুলোকে ধর্মগ্রন্থ রূপেও প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। এভাবে গরুছাগল ও শাপশকুনকে ভগবানের আসনে বসিয়েছে। প্রচারের শক্তি বাংলাদেশের সেক্যুলারিস্টরাও বুঝে। কারণ তাদেরও তো পুজনীয় কেউ চাই। গরুছাগল ও শাপশকুন যদি পুজনীয় হতে পারে তবে তাদের নেতাই বা কম কিসে? তেমন একটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাংলার ইতিহাসে তারা সীমাহীন মিথ্যাচার ঢুকিয়েছে। স্বৈরাচারি বাকশালী দুর্বৃত্তকে দেয়া হয়েছে সর্বকালের সর্বশ্রষ্ঠ বাঙালীর খেতাব। ফলে যে প্রক্রিয়ায় অতীতে নমরুদ-ফিরাউনের ন্যায় দুর্বৃত্তগণ স্রেফ নেতারূপে নয়, ভগবান রূপেও প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল এবং হত্যা-যোগ্য গণ্য হয়েছে হযরত ইব্রাহীম (আঃ), হযরত মূসা (আঃ)এর মহান নবীগণ -সেটিই নেমে হচ্ছে বাংলাদেশে। ফলে দুর্বৃত্তদের নেতা বা নেত্রী হওয়ার পাশাপাশি হত্যা ও জেল-জুলুম নেমে এসেছে নবী-রাসূলদের অনুসারিদের উপর। - ফিরোজ মাহবুব কামাল

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.