নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

জামাতের অর্থের উৎস বন্ধ করতে হবে

২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৭:৩০

জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ৩৭৩ পৃষ্ঠার মূল তদন্ত প্রতিবেদনসহ ৯ হাজার ৫৫৭ পৃষ্ঠার নথিপত্র গত ২৭ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলির কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। ফলে দ্রুত এ তদন্ত প্রতিবেদন বা অভিযোগপত্র আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া হবে বলে আশা করা যায়। আর এ অভিযোগপত্র বা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর জামায়াতের বিরুদ্ধে বিচার করা হলে তা হবে বিশ্বে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো সংগঠনের বিরুদ্ধে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এ বিচার সমগ্র বিশ্বে সহজেই দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আর জামায়াতের বিরুদ্ধে এ ধরনের বিচার করার দাবিটি দেশপ্রেমী সকল বাঙালির এবং তা দীর্ঘদিনের দাবি। তদন্ত প্রতিবেদনে প্রাথমিকভাবে জামায়াত ও এর অঙ্গ-সংগঠনগুলোকে একাত্তরে নৃশংসতার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, জেনেভা কনভেনশন ভঙ্গ ও আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অপরাধ এবং এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা, সহযোগিতা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র। তদন্ত প্রতিবেদনে একাত্তরে জামায়াতের (হাইকমান্ড) পাশাপাশি দলটির তৎকালীন ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘ (বর্তমানে ছাত্রশিবির), শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী এবং জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জামায়াতের সহিংস আদর্শিক রাজনীতি ও একাত্তরে ভূমিকার পাশাপাশি বর্তমানে সংগঠনটির বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং ১২৭টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকা-ও ওই তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ধর্মের দোহাই দিয়ে তথা ধর্মের ধোঁয়া উড়িয়ে ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করেছিল। ধর্মের দোহাই দিয়ে তারা তখন লুণ্ঠন, হত্যা, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী বিভিন্ন তা-ব চালিয়েছে। ১৯৭১ সালে তারা যে ধরনের জঘন্য অপরাধ করেছিল, সেই অপরাধের শাস্তি দীর্ঘ সময়ও না হওয়ায় জামায়াত-শিবির অন্যান্য ইসলামী দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে এখন ঠিক একই ধরনের জঘন্য অপরাধ করে যাচ্ছে। ধর্মের দোহাই দিয়ে জামায়াত-শিবির ও হেফাজতে ইসলাম গত বছরের ৫ ও ৬ মে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশব্যাপী যে হামলা, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, তাতে বিস্মিত না হয়ে পারা যায় না। আবার গত বছরের ২২ ফেব্র“য়ারি জামায়াত-শিবির দেশের জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলে এবং শহীদ মিনার ভেঙে ফেলে রীতিমতো এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হেনেছে। আর গত বছরের ৫ ও ৬ মে জামায়াত-শিবিরের ছত্রছায়ায় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও ক্যাডাররা পবিত্র কোরান শরীফে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরমভাবে আঘাত হেনেছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছেÑ কোরআন শরীফে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া, মানুষ হত্যা করা, দেশব্যাপী তা-বলীলা চালানো কি শান্তির ধর্ম ইসলাম কখনও সমর্থন করে? নিশ্চয়ই না। আর যারা এ ধরনের কর্মকা- চালায় তারা কি সত্যিকার অর্থেই ইসলামের হেফাজতকারী বা তাদের হাতে শান্তির ধর্ম ইসলাম কতোটুকু নিরাপদ?

এতো কিছুর পরও রাষ্ট্র যদি চুপ করে বসে থাকে, তবে তা হবে চরম বোকামির পরিচয় দেওয়া। যদিও দেশের সংবিধানে এখনও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করার বিষয়টি উল্লেখ আছে কিন্তু যেহেতু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠনের মাধ্যমে এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর বার বার আঘাত আসছে, দেশে বার বার অরাজকতা ও অশান্তির সৃষ্টি হচ্ছে, দেশের জনগণ তাদের জীবন ও সম্পদ নিয়ে নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারছেন না এবং বহির্বিশ্বে এ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হচ্ছে; তাই রাষ্ট্রের উচিত হবে অবিলম্বে আইনের মাধ্যমে জামায়াত-শিবিরসহ বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক রাজনীতি দ্রুত নিষিদ্ধ করা। পাশাপাশি তাদের অর্থের বিভিন্ন উৎসও বন্ধ করা প্রয়োজন। প্রয়োজন অনলাইনের দিকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো। কারণ জামায়াত-শিবির বিপুল অংকের অর্থ বিনিয়োগ করেছে অনলাইনে মিথ্যা অপপ্রচার বা প্রোপাগা-া ছড়ানোর জন্য। এ জন্য দেশে-বিদেশে তাদের আলাদা অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ও আইটি বিশেষজ্ঞও রয়েছে।

বিশ্বমানচিত্রে বাংলাদেশই সম্ভবত একমাত্র দেশ, যেখানে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিদের পুনর্বাসন করা হয়েছে, রাষ্ট্রদূত, এমপি-মন্ত্রী পর্যন্ত বানানো হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিরা দেশের পতাকা উড়িয়ে দেশ পরিচালনা করেছে। পৃথিবীর আর কোনো দেশে এ ধরনের লজ্জার চিত্র সত্যিকার অর্থেই খুঁজে পাওয়া যাবে না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ১৯৭১ সালে দেশের চরম ক্রান্তিলগ্নে পাকহানাদার বাহিনীসহ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তথা আজকের জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশের স্বাধীনতা অর্জন করা যদি এ দেশবাসীর পক্ষে সম্ভব হয়, তাহলে কেন হেফাজত(!)সহ জামায়াত-শিবিরের অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করা সম্ভব নয়? কেন দেশের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির বার বার ঔদ্ধত্য আচরণ দেখতে হচ্ছে? দেশের বিরুদ্ধে কেন ও কীভাবে তাদের নীলনকশা নামক গভীর ষড়যন্ত্র বারবার বাস্তবায়িত হয়েই চলেছে, দিনে দিনে লাগামহীন পাগলা ঘোড়ার মতো কীভাবে তাদের ঔদ্ধত্য বেড়ে চলেছে? এসব প্রশ্ন আজ মুক্তচিন্তা ও গ্রগতিশীলতায় বিশ্বাসী সকলের মাঝে গভীরভাবে দেখা দিয়েছে।

এ কথা সকলেরই ভালোভাবে অনুধাবন করা উচিত যে, প্রকৃতপক্ষে জামায়াতে ইসলামীসহ ছাত্রশিবির মুখে ইসলামের কথা বললেও বাস্তবে এবং তাদের কাজেকর্মে তার প্রকৃত পরিচয় পাওয়া যায় না। তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে দেশে হত্যা, ধ্বংস আর ত্রাস ও অস্থিতিশীলতার রাজত্ব কায়েম করেছে এবং বর্তমানে তা করছে, যা ইসলামে সমর্থনযোগ্য নয়।

ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে ফায়দা হাসিল করার বিষয়টিও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে বেশ স্পষ্ট। এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ মিলে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। তখন নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ধর্মভিত্তিক কোনো রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেওয়া যাবে না এবং ধর্মভিত্তিক কোনো দল নির্বাচন করতে পারবে না।

যারা এ দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করাসহ এ দেশের অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছিল এবং করছে, যারা এ দেশে ধ্বংসলীলা চালিয়েছিল এবং এখনও চালাচ্ছে, যারা এ দেশের মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করতে চায় না, যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে রাজনীতি করে, যারা সন্ত্রাস ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার মধ্য দিয়ে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করাসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তিকে বিশেষভাবে ক্ষুণè করছে, যারা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, দোকানপাটসহ বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট করে মানুষকে নিঃস্ব ও অসহায় করে দিচ্ছেÑ তারা লাখো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এ দেশে রাজনীতি করার কোনোভাবেই অধিকার রাখে না। এ দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন বিসর্জনকারী লাখো প্রাণের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে, তাঁদের অবদানকে স্বীকার করতে এবং দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই অবিলম্বে জামায়াত-শিবিরসহ বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি তাদের অর্থ যোগানের বিভিন্ন উৎস ও প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ করাসহ তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা অত্যাবশ্যক। এ সবের পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজও দ্রুত সম্পন্ন করা প্রয়োজন। অন্যথায় যেসব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে লাখো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল এ দেশের স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল জনগণ কখনই ভোগ করতে পারবে না এবং স্বাধীনতার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকেও সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৫৫

রাজহংসী বলেছেন: মদীনার ইহুদীদের প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মহানুভবতা জানুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.