![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে জঘন্যতম হামলার পর মালির রাজধানী বামাকোতে একটি পাঁচতারা হোটেলে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এ হামলায় ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। প্যারিসে হামলা করেছিল আইএসের জঙ্গিরা আর মালির হামলার দায় স্বীকার করেছে আল্লকায়েদা সমর্থিত স্থানীয় একটি জঙ্গিগোষ্ঠী। এর আগে মিসরে রাশিয়ার যে যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়, সেখানেও আইএস বোমা পেতে রেখেছিল বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। কিছুদিন আগে লেবাননে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অর্ধশত মানুষ নিহত হয়েছে। নাইজেরিয়ায় বোকো হারামের হামলায় প্রতিনিয়ত নিরীহ মানুষ মারা যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব অনেকটাই জঙ্গি হামলামুক্ত ছিল, সেখানেও এ বছর পাঁচটি বোমা হামলায় বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। তুরস্কে শান্তি মিছিলে হামলার ঘটনায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। ইরাক ও সিরিয়া তো রীতিমতো মৃত্যুপুরী। মিসরেও হামলার ঘটনা বাড়ছে। বাড়ছে অন্যান্য আরব দেশেও। শুধু হামলা নয়, হামলার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে সমানতালে। আইএসের হামলার তালিকায় পশ্চিমা দেশগুলোর পাশাপাশি এশিয়ার বিভিন্ন দেশও রয়েছে। তাদের বিভিন্ন বিবৃতি থেকে জানা যায়, ভারত রয়েছে তাদের তালিকার ৬ নম্বরে। জাপানি নাগরিকদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই হত্যা করা হবে। আইএসের হুমকির মুখে মালয়েশিয়ায় পুলিশের পাশাপাশি দুই হাজারের মতো সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশও তাদের টার্গেট। এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভ‚তি ভুল পথে পরিচালিত করে জঙ্গিরা নিজেদের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে চায়। বাংলাদেশে সম্প্রতি বেশ কিছু জঙ্গি হামলার ঘটনাও ঘটেছে। তাই বাংলাদেশেও সতর্কতা অবলম্বন জরুরি হয়ে উঠেছে।
পৃথিবীর সব দেশের সব ধর্মের মধ্যেই উগ্র সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির কিছু মানুষ থাকে। তারই বহিঃপ্রকাশ দেখা গেছে প্যারিস হামলার পর ইউরোপ ও আমেরিকার কিছু দেশে। উগ্রবাদীরা এর জন্য পুরো মুসলিম জনগোষ্ঠীকে দায়ী করছে। কোথাও কোথাও পাল্টা হামলার উসকানি দেওয়া হচ্ছে। সাধারণভাবেই সেসব দেশের সংখ্যালঘু মুসলমানদের মধ্যে বিপদগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। সারা দুনিয়ার মুসলমানদের বিপদগ্রস্ত করে এই ধর্মান্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী কী অর্জন করতে চাইছে? ইসলামকে কেন তারা সারা দুনিয়ায় নিন্দিত করছে? পাশাপাশি মুসলমান অধ্যুষিত দেশগুলোকে কেন ধ্বংসের পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে? সম্প্রতি দিলি¬ জামে মসজিদের শাহি ইমাম সৈয়দ আহমদ বুখারিসহ সহস্রাধিক ভারতীয় ইমাম ও নেতৃস্থানীয় মুসলিম আইএসের এসব বর্বরোচিত হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, আইএসের নামে যেসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে, তার মধ্যে ইসলাম নেই, আছে কেবল অমানবিকতার এক দিশাহীন উৎসব। তাঁদের মতে, ইসলামের স্বার্থে জঙ্গিবাদের ভ্রান্তনীতি সম্পর্কে সাধারণ মুসলমানদের সতর্ক করা আজ ধর্মীয় নেতাদের এক বিশেষ দায়িত্ব হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশেও অনেক ইমাম ও ধর্মীয় নেতা একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা মনে করি, কোনো মুসলমানের ধর্মীয় অনুভ‚তিকে যাতে কোনো গোষ্ঠী ভ্রান্তপথে পরিচালিত করতে না পারে সে জন্য আমাদের দেশেও ধর্মীয় নেতাদের একইভাবে সচেতনতা সৃষ্টিতে এগিয়ে আসতে হবে। সম্পাদকীয়, দৈনিক কালেরকণ্ঠ
©somewhere in net ltd.