নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডিজিটাল বাংলাদেশের শুরু ১৯৯৬ সালেই

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০০

সেই ১৯৮৭ সাল থেকে ক্রমান্বয়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে করতে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে যখন জননেত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারলেন তখন তার আত্মবিশ্বাসও অনেকটাই বেড়ে যায়। তিনি তার প্রথম সরকার গঠনের পরই সবার ওপরে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে গুরুত্ব প্রদান করেন। আমি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করতে পারি যে, আমাদের ডিজিটাল প্রচারণায় শেখ হাসিনা কেবল সন্তোষ প্রকাশ করেননি, ১৯৯৭ সালে একদিন প্রধানমন্ত্রীর অফিসে আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমাকে ধন্যবাদ দিয়ে জানতে চাইলেন দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের জন্য তার সরকার কি পদক্ষেপ নিতে পারে। আমি তখন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি। ১৯৯৬ সালে বিসিএস কম্পিউটার শোতে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জিল্লুর রহমান এসেছিলেন। আমরা তার কাছে কম্পিউটারকে শুল্কমুক্ত করাসহ মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং অন্যান্য করণীয় নিয়ে দাবি পেশ করি। জিল্লুর রহমান সাহেব আমাদের সব দাবি মেনে নেয়ার কথা বলেছিলেন। তখন অর্থমন্ত্রী ছিলেন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। সেদিন শেখ হাসিনার সঙ্গে যখন কথা বলি তখন কিবরিয়া সাহেবও ছিলেন। নেত্রী তাকে আগেই বসিয়ে রেখেছিলেন। আমি নেত্রীকে অনুরোধ করলাম কম্পিউটারের ওপর থেকে শুল্ক ও ভ্যাট তুলে নেয়ার জন্য। তিনি আমার কথা শুনেই কিবরিয়া সাহেবের দিকে তাকালেন। কিবরিয়া সাহেব বললেন, আমাদের রাজস্ব আদায় অনেক কমে যাবে। তিনি হাসতে হাসতে বললেন, দেখুন অর্থমন্ত্রী তার দিকটাই দেখছেন। আমি নেত্রীকে বললাম, নেত্রী আপনি রাজস্ব দেখবেন, না দেশের ভবিষ্যৎ দেখবেন? আজ যদি কম্পিউটারের ওপর থেকে শুল্ক ও ভ্যাট তুলে নেন তবে দেশ সামনে যাবে- আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ ভালো করব। তিনি কিবরিয়া সাহেবকে শুল্ক ও ভ্যাট তুলে নেয়ার নির্দেশনা দেন। শেখ হাসিনার পরিবার থেকে ইতোমধ্যেই কম্পিউটারের ওপর থেকে শুল্ক ও ভ্যাট তোলার প্রস্তাব আসে। সেই থেকেই বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি প্রবেশ করে এক নতুন যুগে। আজ যারা বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের কথা বলেন তাদের ন্যূনতম কর্তব্য হচ্ছে একটু পেছনে ফিরে তাকানো। একটু স্মরণ করিয়ে দিতে পারি যে, ১৯৯৭ সালের শেষ দিকে আমরা বিসিএসের পক্ষ থেকে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সেমিনার করি যাতে মন্ত্রীবর্গ শুল্ক ও ভ্যাটহীন কম্পিউটারের অঙ্গীকার করেন। ৪ জানুয়ারি ১৯৯৮ দেশের সফটওয়্যারের ওপর থেকে শুল্ক তুলে নেয়া হয় ও ১৯৯৭-৯৮ সালের বাজেটে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারের ওপর থেকেও শুল্ক ও ভ্যাট তুলে নেয়া হয়।
২০০১ সাল পর্যন্ত আমার নিজের জন্য একটি অসাধারণ সময় ছিল এজন্য যে শেখ হাসিনা তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের সব প্রস্তাবনাকে কেবল গুরুত্বই দিতেন না- বাস্তবায়নে সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করতেন। প্রথম দু’বছর আমি বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি ছিলাম বলে তার অসাধারণ সমর্থনও আমি সেই সময়ে পেয়েছি। এই ছোট নিবন্ধে তার পাঁচ বছরের সময়কালের বিস্তারিত বিষয়াদি তুলে ধরা সহজ নয়। আমি কেবল তার তিনটি বড় কাজের কথা এখানে উল্লেখ করতে চাই। ১) প্রথমত, তিনি সেই সময়ে কম্পিউটারের ওপর থেকে শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার করেন। এই একটি কাজের জন্য বাংলাদেশের মানুষের হাতে হাতে কম্পিউটার আসার সুযোগ তৈরি হয়। দেশের রাজস্ব আয়ের চাইতেও সাধারণ মানুষের হাতে কম্পিউটার পৌঁছানো যে অনেক বেশি প্রয়োজনীয় সেটি তিনি এককভাবে অনুভব করেন। সেই সময়েই তিনি বিদেশে সফটওয়্যার রপ্তানি করার উপায় উদ্ভাবন করার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করেন যারা ৪৫টি সুপারিশ পেশ করে এবং তিনি ২০০১ সালের আগেই সেই সুপারিশসমূহের ২৮টি বাস্তবায়ন করেন। সেই সময়েই তিনি কম্পিউটার শিক্ষার দিগন্তটি উন্মোচন করেন ও সরকারি-বেসরকারি সব উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার শিক্ষার অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ সিট বাাড়নোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
২) দ্বিতীয়ত, তিনি মোবাইলের মনোপলি ভাঙেন এবং দেশের মোবাইল বিপ্লবের ভিত রচনা করেন। সেই সময়ে মুর্শেদ খানের সিটি সেল ফোনের দাম ছিল সোয়া লাখ টাকা আর আউটগোয়িং কল ১৪ টাকা ও ইনকামিং কল ১২ টাকা ছিল। ৩) তিনি সেই সময়েই অনলাইন ইন্টারনেটের বিষয়টিকেও স্থায়ী করেন।
২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয় আমাদের মতো স্বাধীনতার পক্ষের মানুষদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক সময় হয়ে দাঁড়ায়। সবারই জানা যে, ২০০১-এর নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগকে সরকারি দলের নির্যাতন থেকে বেঁচে থাকার লড়াইটাই আগে করতে হয়েছে। আমি নিশ্চিত দলটি আওয়ামী লীগ না হলে বা শেখ হাসিনা তার নেতৃত্ব না দিলে সেই সময়ে আওয়ামী লীগ টিকেই থাকতে পারত না। ২০০৫ সালের দিকে নেত্রী আমাকে আওয়ামী লীগের মিডিয়া টিম সমন্বয় করার দায়িত্ব দেন এবং লুৎফুজ্জামান বাবরের বিরুদ্ধে নির্বাচন করার জন্য বলেন। আমি মিডিয়া টিম সমন্বয় করতে রাজি হলেও নির্বাচন করতে রাজি হইনি। সেই সময়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার লেখার কাজ চলতে থাকে। মুহিত ভাই এই কাজের নেতৃত্ব দেন। তবে মূল কাজটা হতো নূহ উল আলম লেনিনের হাতে। সমন্বয়টা সে করত এবং নেত্রীর কাছে ইশতেহার সেই উপস্থাপন করত। আমার ওপর তথ্যপ্রযুক্তি অংশটা লেখার ভার পড়ে। আমরা ২০০৬ সালের নির্বাচনের জন্য ইশতেহার লিখি। ২০০৭ সালে আমি ডিজিটাল বাংলাদেশ ধারণা নিয়ে লেখালেখি করতে শুরু করি। ২০০৮ সালে যখন নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় হয় তখন ৬ ডিসেম্বর ২০০৮ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার শেষবারের মতো সম্পাদনা করা হয় যেদিন রূপকল্প ২০২১-এর আওতায় আমি ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কথা লিখি। সবাই জানেন নেত্রী ১২ ডিসেম্বর ২০০৮ সেই ইশতেহার ঘোষণা করেন এবং সাড়ে ৭ বছর ধরে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার অসামান্য নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। তার এই নেতৃত্ব কেবল আমাদের দেশের জন্য নয়, দুনিয়ার উন্নত দেশগুলোর জন্যও অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত। এজন্যই বারাক ওবামা কেনিয়াকে এবং নরেন্দ্র মোদি ভারতকে বাংলাদেশ থেকে ডিজিটাল রূপান্তর শেখার আহ্বান জানিয়েছেন। একই কারণে মালদ্বীপ আমাদের সঙ্গে চুক্তি করেছে এবং আমরা এখন নেপাল-ভুটানের ডিজিটাল রূপান্তরের কাজ করে দিচ্ছি। আমি মনে করি শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা করে জাতির জনকের নেতৃত্বে গড়ে তোলা দেশটাকে শত বছর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। আমরা যদি গত সাড়ে সাত বছরে তার সফলতার সব দিকে নাও তাকাই তবুও কেবলমাত্র তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ তথা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য তিনি বাংলার স্বর্ণকন্যা। আমরা তাকে ডিজিটাল কন্যাও বলতে পারি।
স্বর্ণকন্যা : বাংলাদেশে এখন নারীদের অবস্থান কতটা বদলেছে সেটি আমরা সবাই জানি। দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার ও বিরোধীদলীয় নেত্রীই কেবল নারী নন, প্রধান বিরোধীদলীয় নেত্রীও নারী। নারীরা এখন মোট শিক্ষার্থীদের শতকরা ৫৩ ভাগ। এই তথ্যগুলো বাংলাদেশের নারীদের পরিবর্তনের কথাই তুলে ধরে। অন্যদিকে মুসলিমপ্রধান পাকিস্তানসহ দুনিয়ার অন্য দেশগুলোতে নারীদের শিক্ষা গ্রহণ করাই অপরাধ। বাংলাদেশের এই নারীদের মাঝে বেগম রোকেয়া, সুফিয়া কামাল, নূরজাহান বেগম বা জাহানারা ইমামদের নাম আমরা স্মরণ করি। কিন্তু এই দেশে একজন মাত্র নারী জন্মেছেন যাকে আমি স্বর্ণকন্যা বলছি। আমি এটা বুঝি যে কোনো একটি কারণেই একজন মানুষকে এমন একটি অভিধা দেয়া যায় না। আমি শেখ হাসিনার সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করেই বলছি যে তিনি আমাদের স্বর্ণকন্যা। নারী বলে তাকে কন্যা বলছি। তিনি বস্তুত স্বর্ণ মানব।
আমি তার সবগুলো বিষয়কে এই নিবন্ধে তুলে ধরতে পারব না। বস্তুত তথ্যপ্রযুক্তি আমার বিষয় বলে শুধু এই বিষয়েই তার অসাধারণ ও অতুলনীয় ভূমিকাটি তুলে ধরতে চাই। এর আগে আমি উল্লেখ করেছি যে, শেখ হাসিনা হচ্ছেন দেশের প্রথম রাজনৈতিক দলীয় প্রধান যিনি তার দলকে তথ্যপ্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করেন। তিনি সেই কাজটি করেন আশির দশকে। এরপর তিনি ইতিহাস গড়েন নির্বাচন পদ্ধতিতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে তিনি প্রথম তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেন। সেই সময় তিনি তার নির্বাচনী প্রচারণা দলে একটি কম্পিউটার, একটি স্ক্যানার ও একটি মডেম সঙ্গে নিতেন এবং সেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভার ছবি ও খবর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতেন। এরপর তিনি ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করেন এবং মাত্র ৫ বছরে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির ইতিহাসটিকে আমূল পাল্টে দেন।
সবাই জানেন শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৮-৯৯ সালের বাজেটে কম্পিউটারের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করে। এর আগে ১৯৯৭ সালে মোবাইলের মনোপলি ভাঙা হয়। তারও আগে ১৯৯৬ সালে ভিস্যাট স্থাপন করার অনুমতি অব্যাহত রেখে দেশকে অনলাইন ইন্টারনেটে সংযুক্ত করে। আমি আশা করি এটিও সবাই স্মরণ করতে পারবেন যে, সেই সময় সরকার মানবসম্পদ উন্নয়নসহ তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের জন্য অসাধারণ উদ্যোগসমূহ গ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আইসিটি টাস্কফোর্স গঠন করার পর তারই সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন করে সেই সরকার পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশকে বিশ্বমানে দাঁড় করায়। সেই সময়ের জেআরসি কমিটির রিপোর্ট আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের অনন্য একটি দলিল। সেই দলিলের ৪৫টি সুপারিশের মাঝে সেই সরকার ২৮টি বাস্তবায়ন করে। আমি মনে করি যদি ২০০১ সালে আমরা পরাজিত না হতাম তবে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে অন্তত ৭ বছর আগে আজকের অবস্থানে পৌঁছাত। ২০০১ সালে বিজয়ী সরকার কেবল যে রাজনৈতিকভাবে দেশটাকেই ছিন্নভিন্ন করে তাই নয়, দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে গুঁড়িয়ে দেয়। শেখ হাসিনার সরকার যেসব ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেগুলোকে বিনষ্ট করে দেয়া হয়। ১৯৯৭ সালে শেখ হাসিনা কালিয়াকৈরের যে জায়গাটিকে হাইটেক পার্ক হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেটি তারেক রহমানের খাম্বা লিমিটেড জবরদখল করে রাখে। বেগম জিয়ার মন্ত্রী মঈন খানের দুর্নীতির খবর তো সবারই জানা।
আমি শেখ হাসিনাকে কেন আমাদের ডিজিটাল কন্যা বা স্বর্ণকন্যা বলছি তার একটি দৃষ্টান্ত দিতে চাই। ৬ আগস্ট ২০১৫ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের সভা চলছিল। চমৎকার আলোচনা হচ্ছিল। সভার শেষ সময়ে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম যে, দেশে ৪ কোটির মতো ছাত্রছাত্রীকে আপনি ল্যাপটপ নিয়ে ক্লাসে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আপনি জানেন যে আমরা এসব যন্ত্রপাতি শতভাগ আমদানি করি। এতে হাজার হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা বাইরে যায়। আপনি আমাদের এই বাণিজ্যটাকে পাল্টে দিন। আমরা আমদানিকারক থেকে উৎপাদক হতে চাই। আমার এই বক্তব্যের পর অনেকেই বললেন, দোয়েল ফেল করেছে। কেউ কেউ বললেন, বিদেশে বানালে দাম কম পড়ে। প্রধানমন্ত্রী সবার কথা শুনে স্পষ্ট করে বললেন, আপনাদের কথা শুনেছি। আমি আপনাদের সঙ্গে একমত নই। আমরা সবকিছু পারি। আমরা কেবল কম্পিউটার বানাব না, কম্পিউটার রপ্তানি করব।
এই বয়সে আমি অনেক দৃঢ়চেতা মানুষকেও দেখেছি। কিন্তু এমন আত্মবিশ্বাসী মানুষ আমি আর একটাও দেখিনি। সবাই যদি লক্ষ্য করেন তবে দেখবেন তিনি ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের হাল ধরে তার দল ও দেশটাকে ১৯৪৭-৭১ সময়কালের লড়াইয়ের মতো করেই ১৯৯৬ পর্যন্ত অত্যন্ত দৃঢ়চেতা নেতৃত্ব দেন। পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে কর্মচারীদের বেতন দেয়া পর্যন্ত তার আত্মবিশ্বাসী মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর খুনি থেকে যুদ্ধাপরাধীর বিচার বা জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ তো দূরের কথা তার দৃঢ়তার সমতুল্য কোনো মানুষকে এখনকার দুনিয়াতে পাওয়া যাবে না। বাঙালি হিসেবে শেখ হাসিনাকে নিয়ে গর্ব হচ্ছে এজন্য যে তিনি এই জাতির আত্মাকে পুনরুদ্ধার করেছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সময়কালে বাঙালি জাতিকে তার আত্মপরিচয় লাভের জন্য লড়াই করে একাত্তরে বাঙালিদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। দুর্ভাগ্যবশত ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে আমাদের সেই জাতিসত্তাকেও হত্যা করা হয়। শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে এসে জাতির জনকের লড়াইটার পরের স্তরটির নেতৃত্ব দেন এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়ে বাঙালি তার জাতিসত্তাকে পুনরুদ্ধার করে। এটি যেমনি করে আওয়ামী লীগের পুনর্জন্ম তেমনি করে বাঙালিরও পুনর্জন্ম। লক্ষণীয় যে, ১৯৭৫ সালের পর পাকিস্তানপন্থীরা ১৯৪৭ সালের ট্রাম্পকার্ড ধর্মকে ব্যবহার করেছে। শেখ হাসিনা তার বিপরীতে বাঙালি মুসলমানত্বকে এমন সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন যে, ধর্মভিত্তিক জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করা মুসলিম প্রধান দেশের মাঝে বাংলাদেশ শীর্ষ ভালো অবস্থান পেয়েছে। জাতীয় অগ্রগতির সূচকগুলোকেও যদি সামনে আনা হয় তবে শিক্ষা, দারিদ্র্য হ্রাস, স্বাস্থ্য, জিডিপি, মাথা পিছু আয় ইত্যাদি সব সূচকেই শেখ হাসিনার অর্জন দুনিয়াকে তাক লাগানোর মতো। ১৯৭৫ থেকে ২০০৮ অবধি যা অর্জিত হয়নি তারচেয়ে বহুগুণ বেশি অর্জন ২০০৯ থেকে ২০১৬ সময়কালে।
আমি যিদি ডিজিটাল বাংলাদেশের কয়েকটি সূচকের দিকে তাকাই তবে খুব সহজেই অনুভব করব যে আমাদের অগ্রযাত্রাটি কত বিশাল। ২০০৮ সালে ইন্টারনেট ব্যবহার করত ১২ লাখ মানুষ, এখন সেটি ৬ কোটির ওপরে। মোবাইল ব্যবহার করত তখন প্রায় সাড়ে ৪ কোটি এখন সেটি সাড়ে ১৩ কোটি। এখন প্রতিদিন গড়ে ৬০৬ কোটি টাকা মোবাইলে লেনদেন হয়। বস্তুত ২০০৯ থেকে শেখ হাসিনার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে যেসব অসাধারণ অর্জন করেছে তার বিবরণ খুব সংক্ষেপেও এখানে দেয়া সম্ভব নয়। বরং এই কথাটি বলা ভালো যে ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর কেবল ধারণা বা নীতিমালা নয়, এটি পুরো দেশের সব মানুষের একটি স্বপ্ন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.