নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

খালেদা জিয়ার ১৩ দফা এবং রাজনীতির হালচাল

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:০৯

বেশ কয়েক মাস পর খালেদা জিয়া জনসমক্ষে এসেছিলেন গত ১৮ নভেম্বর আগামী সংসদ নির্বাচন কেমন করে ‘সুষ্ঠু’ হতে পারে তার ১৩ দফা একটি ফর্মুলা সাংবাদিকদের মাধ্যমে জাতির সামনে হাজির করতে। আসরটি বসেছিল তাঁর বাসভবনের পাশে একটি তারকাখচিত হোটেলে। এই অনুষ্ঠানে বেশ কিছুসংখ্যক নতুন সুধীও উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার আগমন, অবস্থান ও প্রস্থান অনেকটা নিষ্প্রভ ছিল। বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী কিছুদিন আগে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে মন্তব্য করেছিলেন, বিএনপিপ্রধান বর্তমানে মানসিক অবসাদে ভুগছেন। এটি স্বাভাবিক। এই বয়সে তাঁর নাতি-নাতনি পরিবেষ্টিত থাকার কথা। বাড়ির বউদের সেবা-যত্ন পাওয়ার দাবিদার। তা থেকে তিনি বঞ্চিত। প্রবাসে এক ছেলের মৃত্যু হয়েছে। অন্য ছেলে লন্ডনে আইনের দৃষ্টিতে পলাতক জীবন যাপন করছেন। দুজনের পরিবারই প্রবাসে। খালেদা জিয়া দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা অনেকটা একাকিত্বের অভিশপ্ত জীবন যাপন করেন। এই বয়সে এটি তাঁর হওয়া উচিত ছিল না। নিয়মিত দলীয় অফিসে এলে সময় কিছুটা ভালো কাটতে পারত। তাও সচরাচর হয়ে ওঠে না। তাঁর অনেক নিকটজনকে বলতে শুনেছি, তিনি দলের অনেক সিনিয়র নেতাকে তেমন একটা আস্থায় নিতে পারেন না। একজন নেতার কারণে নাকি কেউ এখন দলীয় নীতিনির্ধারণী সভায় মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুকতে পারেন না।
২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়ার দল বিএনপি ও তার মিত্ররা অংশগ্রহণ করেনি। কারণ তাঁর ধারণা ছিল, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারপ্রধান থাকলে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়। তিনি দাবি করছিলেন, নির্বাচনের সময় একটি অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় থাকবে। সাংবিধানিকভাবে এটি সম্ভব ছিল না। কারণ এ ধরনের সরকারব্যবস্থাকে এরই মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ও সংবিধানের মূল ধারণার পরিপন্থী ঘোষণা করেছিলেন। আদালত তাঁর মন্তব্যে বলেছিলেন, ‘সংসদ যদি চায় তাহলে আরো দুই মেয়াদে এই ব্যবস্থা চালু রাখা যায়।’ এই মন্তব্য রায়ের অংশ ছিল না এবং তা মানার কোনো বাধ্যবাধকতাও ছিল না। তার পরও সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং তা সংসদ গ্রহণ করেনি। সেই সংসদে বিএনপি ও তার মিত্রদের সদস্য ছিলেন। তাঁরা সেই আলোচনায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত ছিলেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি আর তার প্রধান মিত্র যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে এক অঘোষিত অন্তর্ঘাতমূলক যুদ্ধ শুরু করে ২০১৩ সাল থেকে। সেই যুদ্ধ অনেকটা একাত্তরে বাঙালিদের বিরুদ্ধে পরিচালিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর যুদ্ধের সঙ্গে তুলনীয়। এই যুদ্ধে দেশের জানমালের প্রভূত ক্ষতি হয়। শতিনেক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়। বাদ যায়নি অফিসফেরত কেরানি, স্কুলপড়ুয়া শিশু, পেশাদার ডাক্তার-প্রকৌশলী—এমনকি অবুঝ পশুও। তাদের বেশির ভাগের সঙ্গেই রাজনীতির কোনো সম্পর্ক ছিল না। খালেদা জিয়া এই যুদ্ধ পরিচালনার জন্য গুলশানে তাঁর দপ্তরে কমান্ড পোস্ট খুললেন। সেখানে তিনি ৯০ দিন অবস্থান করে সারা দেশে অবরোধের ডাক দিলেন। সেই অবরোধ আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে না নেওয়ায় তাত্ত্বিকভাবে তা এখনো বহাল আছে। মূল যুদ্ধ শুরুর আগে রিহার্সাল হিসেবে ২০১৩ সালের ৫ মে খালেদা জিয়া ঢাকা দখলের জন্য চরম হঠকারী উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠী হেফাজতকে মাঠে নামিয়েছিলেন। খালেদা জিয়ার যুদ্ধে শুধু যে দেশের জানমালের ক্ষতি হয়েছিল তা নয়, বিদেশে দেশের ভাবমূর্তিও কালিমালিপ্ত হয়।
জাতিসংঘের প্রতিনিধি অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো বাংলাদেশ সফরে এলেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য। আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ তাদের সমমনা দলগুলোর সঙ্গে তিনি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করলেন। বসলেন সুধীসমাজের সঙ্গে। বাদ গেল না ভূতপূর্ব বামপন্থীরা। শোনা গেল সব পক্ষ একটি সমাধানে পৌঁছেছেন। সবাই হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। অনেকটা বাড়া ভাতে পানি ঢালার মতো সব ভেস্তে গেল লন্ডন প্রবাসী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের কারণে। সেখান থেকে বার্তা এলো শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় রেখে কোনো নির্বাচন হবে না। তাদের দাবি মেনে অসাংবিধানিক অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করলেই শুধু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। নির্বাচনের দিকে এগোল সরকার। কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব হয়েছিল একজন শেখ হাসিনার দৃঢ়তা আর সাহসের কারণে। নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা অনেকটা নিজ দায়িত্বে খালেদা জিয়াকে তাঁর সরকারি বাসভবনে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। বললেন, আসুন, আমরা নির্বাচন বা অন্য যেকোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। অনুষ্ঠিত হোক এই নির্বাচন একটি নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে গঠিত সর্বদলীয় সরকারের অধীনে। প্রধানমন্ত্রী এও বললেন, সেই সরকারের যতজন মন্ত্রী চাইবে বিএনপি ও তার মিত্ররা, তাই দেওয়া হবে। উদারতার আর কোনো উত্কৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে না। খালেদা জিয়া সেই আমন্ত্রণে সাড়া তো দিলেনই না, উপরন্তু শেখ হাসিনাকে বেশ অপমানিত করেই টেলিফোন সংলাপের ইতি টানলেন। সেই নির্বাচনের আগেও খালেদা জিয়া তাঁর কল্পিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটি ফর্মুলা সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেছিলেন। বলেছিলেন অতীতে বিভিন্ন সময়ে যাঁরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন তাঁদের নিয়ে নির্বাচনকালীন একটি সরকার হতে পারে। খালেদা জিয়াকে যাঁরা শলাপরামর্শ দেন অথবা যাঁরা তাঁর বক্তৃতা-বিবৃতি লেখেন তাঁদের হোমওয়ার্কের যথেষ্ট ঘাটতি আছে। দেখা গেল, খালেদা জিয়া যাঁদের নিয়ে তাঁর কল্পিত সরকার গঠন করার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁদের অনেকেই জীবিত নেই। যাঁরা আছেন তাঁদের দু-একজন ছাড়া অন্য কেউ এমন একটি সরকারে থাকতে মোটেও ইচ্ছুক নন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে একজন গবেষক বাংলাদেশে এসেছিলেন নির্বাচন নিয়ে গবেষণা করবেন বলে। একপর্যায়ে তিনি আমার সঙ্গে কথা বলতে এলে প্রসঙ্গক্রমে তাঁকে বলেছিলাম, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে হয়তো সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে পারত না, কিন্তু তাদের পক্ষে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আসনে জয়ী হয়ে সংসদে একটি শক্তিশালী বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করা সম্ভব হতো। তাঁকে জানিয়েছি, এই নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি প্রমাণ করেছে তারা প্রচলিত অর্থে কোনো রাজনৈতিক দল নয়। তাদের বড়জোর একটা এলিট ক্লাবের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে, যেটি পরিচালিত হয় লন্ডন প্রবাসী একজন অপরিপক্ব রাজনৈতিক নাদান দ্বারা। সেই গবেষককে আরো বলেছি, নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি যে ঐতিহাসিক ভুল করেছে তার কারণে মুসলিম লীগের পথে তাদের যাত্রা আরো ত্বরান্বিত হবে। দলটির কর্মী-সমর্থক ছিল। নিষ্ঠাবান ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের অভাব ছিল। তাদের সঙ্গে এখানেই আওয়ামী লীগের তফাত। এক-এগারোর পর বর্ষীয়ান নেতা জিল্লুর রহমান নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও দলকে ধরে রেখেছিলেন। বিএনপিতে একজন জিল্লুর রহমানের অভাব ছিল। সেই কারণেই দলের শীর্ষ নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানকে তিনজনে চ্যাংদোলা করে এনে মান্নান ভূঁইয়া, সাদেক হোসেন খোকা, মেজর (অব.) হাফিজরা খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে নতুন বিএনপি গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
খালেদা জিয়া আগামী নির্বাচন নিয়ে যে পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন তা অনেকটা সেই নির্বাচনে না যাওয়ার একটা পূর্বপ্রস্তুতি। সংবিধানে বলা আছে, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। তিনি কারো সঙ্গে আলোচনা করবেন কি না তা একান্তভাবে তাঁর এখতিয়ার। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান করেছিলেন। খালেদা জিয়া এক অদ্ভুত ফর্মুলা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য, যা করতে গেলে হয়তো কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বলেছেন বিএনপি তো বটেই, যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত, মুসলিম লীগ, বঙ্গবন্ধু হত্যকারীদের দল ফ্রিডম পার্টি, নেজামে ইসলামসহ বিভিন্ন ধরনের হোন্ডা পার্টি (দুই সদস্যবিশিষ্ট পার্টি) তাদের সঙ্গেও নাকি আলাপ করতে হবে এবং শেষতক এমন একটি কমিশন গঠন করতে হবে যেটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এটি একটি অসম্ভব প্রস্তাব, কারণ কোনো কিছুই সবার কাছে সমানভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এখানে তো কয়েকজন মানুষের কথা বলা হচ্ছে। বিচারপতি সাহাবুদ্দীন সবার কাছে একজন ফেরেশতাতুল্য মানুষ। অথবা প্রয়াত বিচারপতি হাবিবুর রহমান। তাঁদের সমালোচকের সংখ্যাও কম নয়।
খালেদা জিয়ার প্রস্তাবের মারাত্মক বিপজ্জনক প্রস্তাব হচ্ছে নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা প্রদান। সেনাবাহিনী দেশের বেসামরিক আইন সম্পর্কে তেমন দক্ষ নয়। তাদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সেনা আইন সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন। সেনা আইনে কোনো সেনা সদস্যের বিচার হলে তাকে আইনি সহায়তা দেন সেনা আইনে পারদর্শী একজন সেনা কর্মকর্তা। আর দেশে যখন সেনাশাসন প্রবর্তিত হয় তখন অনেক ফৌজদারি মামলা নিষ্পত্তি হয় সেনা আইনে। তাহলে কি খালেদা জিয়া নির্বাচনকালে দেশে সেনাশাসন প্রবর্তনের কথা বলছেন? খালেদা জিয়া জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য সময় সেনানিবাসে কাটিয়েছেন। সেনা সংস্কৃতির অনেক কিছু তাঁর ভালো লাগাটা বিচিত্র কিছু নয়। তাই বলে যে ব্যক্তি দুবার দেশের বেসামরিক শাসনকালে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি হঠাৎ করে কী উদ্দেশ্যে সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনীর জন্য বিচারিক ক্ষমতা দাবি করেন? নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন মনে করলে নির্বাচনের সময় সিভিল প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সেনাবাহিনীর সহায়তা চাইতেই পারে। তারা তখন সিভিল প্রশাসনের অধীনে দায়িত্ব পালন করবে। সেদিকে চিন্তা না করে সেনাবাহিনীর জন্য বিচারিক ক্ষমতা চাওয়াটা সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার খালেদা জিয়ার একটি দুরভিসন্ধি বলে অনেকের ধারণা।
বিশ্বের যেসব দেশে গণতন্ত্রের চর্চা হয় সেসব দেশে নির্বাচন পরিচালনার জন্য এক ধরনের রাষ্ট্রীয় সংগঠন থাকে, যাকে নির্বাচন কমিশন বা অন্য কোনো নামে ডাকা হয়। নির্বাচনের সময় তাদের সব কর্মকাণ্ড সব সময় সমালোচনার ঊর্ধ্বে থাকে না। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নাম প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী। তা গৃহীত হলে রানি তা অনুমোদন করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে সহায়তা করার জন্য দুজন নির্বাহী থাকেন। ২০০০ সালের ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর নির্বাচন কমিশন নানা কারণে সমালোচিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রে একটি ফেডারেল নির্বাচন কমিশন থাকে। ফেডারেল কমিশন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করে এবং তা সিনেট কর্তৃক অনুমোদিত হয়। সদস্য থাকেন ছয়জন। গত কয়েকটি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পর সে দেশের নির্বাচন কমিশনকে কারচুপি রোধে ব্যর্থতার কারণে তুমুলভাবে সমালোচিত হতে হয়। ভারতের নির্বাচন কমিশনের গঠন বাংলাদেশের আদলে। টিএন সেশান ছাড়া কোনো নির্বাচন কমিশনই বিতর্ক এড়াতে পারেননি। সেশান একজন আমলা ছিলেন। বাংলাদেশে আবু হেনা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে (১৯৯৬-২০০০) বেশ সুনাম কামিয়েছিলেন। তিনি একজন আমলা ছিলেন। বিচারপতি সাদেক (২০০০-০৫) ও বিচারপতি আজিজ (২০০৫-০৭) বহু বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। আজিজের সময় এক কোটি ভুয়া ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছিল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিচারপতি সাত্তার পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের প্রধান দল হিসেবে জনগনের স্বীকৃতি লাভ করে। সাত্তার পরবর্তীকালে জিয়ার উপরাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন এবং জিয়ার মৃত্যর পর রাষ্ট্রপতিও হয়েছিলেন। কিন্তু এরশাদ ক্ষমতা দখলের জন্য তাঁর বুকে পিস্তল ঠেকালে তিনি মেরুদণ্ড সোজা রাখতে পারেননি। চেষ্টা করলে রাষ্ট্রপতি মনোনীত নির্বাচন কমিশন সব চাপ অগ্রাহ্য করে দায়িত্ব পালন করতে পারে। এমন উদাহরণ বাংলাদেশে আছে।
বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে নয়, সব সময়ের জন্য একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন প্রত্যাশিত। নিষ্ঠাবান ও দৃঢ়চেতা মানুষের অভাব নেই। রাষ্ট্রপতিকে তাঁদের মধ্য থেকে খুঁজে কমিশন গঠন করতে হবে। প্রয়োজনে তিনি যে কারো সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন। নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। সব সময় সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে সব সমালোচনার ঊর্ধ্বে রাখা বাঞ্ছনীয়। জিয়া সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করে সংবিধানকে অপমানিত করেছিলেন। সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে তিনি পেছনের তারিখ দিয়ে পদোন্নতি নিয়েছিলেন। এসবই ছিল সংবিধান আর সব নিয়মনীতির বাইরে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক তা কাম্য নয়। খালেদা জিয়ার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী কমিশন গঠন করতে হলে আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য কয়েক যুগ অপেক্ষা করতে হবে। তবে সুষ্ঠু ও সবার অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচনের জন্য একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন নিশ্চয়ই কাম্য।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.