![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পেশাদার ও নেশাদার লেখক, মাঝে মাঝে কবি
বইয়ের প্রচ্ছদে লাল রঙে লেখা আছে এভরি সাবজেক্ট অন আর্থ! তার মানে দুনিয়ার সব বিষয় এই একটি পেটমোটা বইয়ে ঠাঁই পেয়েছে। অবশ্য বিষয় তালিকাটি খুব একটা ছোট নয়। সময়, মহাশূণ্য, জীববিজ্ঞান, পৃথিবী, বিজ্ঞান-প্রযুিক্ত, মানবদেহ, ইতিহাস, দেশ, ব্যক্তি, যানবাহন, সঙ্গীত, নাটক, সিনেমা, খেলা সবই আছে এই একটি বইয়ে। অবশ্য কেমন করে আছে এবং কতটুকু সঠিকভাবে আছে তার গ্যারান্টি দেয়া যাবে না। একটিমাত্র উদাহরণই এ প্রসঙ্গে যথেষ্ট। বইটির ১৩৮ পৃষ্ঠায় লেখা আছে, ‘বাংলাদেশ সেপারেটেড ফ্রম পাকিস্তান ইন ১৯৭২’। বইটির নাম ‘হুইটকার’স ওয়ার্ল্ড অব ফ্যাক্টস’। রাসেল এস -এর লেখা এই বইটিতে অসংখ্য মজার তথ্য আছে, কিন্তু সেই সব তথ্য কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য তা ওই একটি উদাহরণ দিয়েই প্রমাণ করা যেতে পারে। তর্কের খাতিরে হয়তো মেনে নেয়া যেতো ১৯৭১ সালটি প্রিন্টিং মিসটেকের কারণে ১৯৭২ হয়ে গেছে, কিন্তু ‘সেপারেটেড’ শব্দটিও কি কোন ভুলে ছাপা হয়ে যেতে পারে! বাংলদেশ যে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়নি, বরং স্বাধীন হয়েছে তা কি জনাব রাসেল এসের অজানা, নাকি তিনি মানতে রাজী নন?
ইদানিং একটি ভাল প্রবণতা তৈরি হয়েছে, আম-আমড়ার মতো বইয়ের ফেরিঅলাও বেরিয়েছে। তারা গলায় টাই পড়ে রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় বই হাতে ঘোরে, ধনী লোকদের বুক সেলফের জন্যে তারা দামী দামী ইংরেজি বই বিক্রি করে। অবশ্যই যে কোন শ্রেণীর মাঝে বই পৌঁছে দেয়া একটা ভাল উদ্যোগ। কিন্তু এ পৌঁছে দেয়া স্রেফ আর দশটা ব্যবসার মতো করে দেখলে হবে না। পথে-ঘাটে একটা বই পৌঁছনোর আগে লক্ষ্য রাখতে হবে এই বইটি কতটুকু যথার্থ। একটা বইয়েরও তো দায়বোধ আছে! যাই হোক, এতো কথা বলার অর্থ, এই বই ফেরিঅলারদের হাত থেকে একটি হাজার টাকা দিয়ে আমিও কিনেছি ‘হুইটকার’স ওয়ার্ল্ড অব ফ্যাক্টস’ বইটি। এবং কিনে বিব্রত বোধ করেছি। াবব্রত এই কারণেই যে এই বইটি কয়েক বছর ধরেই নতুন নতুন সংষ্করণ হয়ে প্রকাশিত হচ্ছে, তাহলে এমন একটি ভুল রইলো কেন? কেনই বা বাংলাদেশের এজেন্ট এই বইয়ে তার দেশের সম্পর্কে যে পাঁচ-সাতটি লাইন লেখা আছে তা পড়ে দেখার প্রয়োজন বোধ করলেন না? এই বইয়ের ছবি নির্বাচন সম্পর্কেও আমার প্রশ্ন আছে। দেশ পরিচিতি অংশে ভারতের তাজমহল, ভিয়েতনামের ধানের ক্ষেত, মাদাগাসকারের বাওবাব গাছ, আর্জেন্টিনার গরুর হাট ইত্যাদির ছবি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ অংশে ছবি দেয়া হয়েছে ট্রাফিক জামের। আমাদের দেশে ট্রাফিক জাম হয় এটা সত্য, কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত আমাদের আছে, আমাদের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বিশ্বের সর্ব বৃহৎ, এ সব সত্য তথ্য কি কারো চোখে পড়বে না। আমার সংগ্রহেই পশ্চিমাদের লেখা অন্তত দুয়েক ডজন বই আছে পজেটিভ থিঙ্কিং আর পজেটিভ কমেন্টসের মাহাত্ব বর্ণনা করে লেখা। একটি উন্নয়নশীল দেশ সম্পর্কে লিখতে গিয়ে কি তারা এই উদারতার পরিচয় দিতে পারেন না?
২| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৪৮
ইসতিয়াক অয়ন বলেছেন: প্রথম-প্রথম এইগুলি দেখে মন ব্যথিত হত । পাঠকরা কেন জেনেশুনেই বিভ্রান্ত হয়ে এই ধরনের বই কিনে চলেছেন ? এখন আর এগুলি দেখে মন খারাপ হয় না । পৃথিবীতে এমন বই আসতেই থাকবে । এবং তা জনপ্রিয়ও হবে ... মার্কোপোলোর ভ্রমনকাহিনীর কথাই ধরা যাক । তিনি চীন ঘুরে ভ্রমনকাহিনী যেটি লিখলেন তাতে মজার মজার উদ্ভট সব তথ্য দিয়ে পাঠককে মুগ্ধ করে রাখলেন- অথচ চীনের বিখ্যাত ‘গ্রেট ওয়াল’ তার চোখেই পড়লো না । দানিকেনের কথাই ধরেন ! তাঁর বেস্টসেলার বই Gods from Outer Space পড়ে আমি যারপরনাই হতাশ হয়েছিলাম । লোকটা জেনেশুনে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে ... তারপরও আশার আলো হচ্ছেন হেকার সাহেবের বানী । জার্মান সমালোচক থিওডর হেকার একটা দামী কথা বলে গেছেনঃ
happily however, there are also books that talk like men..
ভাল থাকবেন ! লেখালিখিতে শুভকামনা !
৩| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০৯
এ্যাংগরী বার্ড বলেছেন: বাজে বই আছে বলেইতো ভাল বইয়ের পার্থক্যটা বুঝা যায়।
তবে 'আমরার মত' বই ওয়ালাদের আমি অনেক বড় ফ্যান!!! গুলশান আর সোনারগাও ট্রাফিক জ্যাম থেকে আমি মাঝেমাঝেই বই কিনি। অনেক বিখ্যাত বই পেয়ে যাই অনেক কম দামে। মাঝে মাঝে অবশ্য পাতা মিসিং থাকে
ধন্যবাদ সুচিন্তিত লেখার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:২২
রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: হুম। আম আমড়ার মত বইএর ফেরীওয়ালা।
. বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল তথ্য এ আর নতুন কি!