নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মতিলাল

আমি সাদা মনের মানুষ। ধর্ম বর্ণ আমার কাছে সমান

মতিলাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুন্দরী নারীর ‘শোনেন পার্টি’ থেকে সাবধান!

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:২৩

সন্ধ্যা তখন ৭টা। অফিসের কাজ শেষে হাসনাইন কেবল বের হলেন। বাসায় যাওয়ার জন্য রিকশা খুঁজছেন। ঠিক তখনই ডাকটি কানে এলো তার, ‘এই যে ভাই শোনেন...’। ফিরে তাকাতেই দেখলেন, এক সুন্দরী নারী তাকে ডাকছেন। পরিপাটি পোশাকে আবৃত বসে আছেন রিকশায়। মার্জিত চাহনী। কোলে তিন চার বছরের একটি শিশু।



কাছে এগিয়ে গেলেন হাসনাইন। নারীটির কণ্ঠে তখন প্রবল আকুতি, ‘ভাই আমাকে একটু হেল্প করেন। খুব বিপদে পড়ে আপনাকে ডেকেছি। রিকশা ভাড়া দেয়ার জন্য আমার কিছু টাকা দরকার। কাছে কোনো টাকা নেই।’



হাসনাইন বিব্রত। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। যেভাবে নারীটি কথা বলছে তাতে অবিশ্বাস করার কোনো কারণ খুঁজে পান না। আবার চারদিকে প্রতারণার এই সময়ে বিশ্বাস করাও কঠিন। হাসনাইনের কৌতুহল বেড়ে যায়।



কথা বলে জানতে পারলেন, নারীটি রাজধানীর বনশ্রীতে এক ফ্ল্যাটে থাকেন। স্বামী পরিত্যক্তা। পরিচিত একজনের কাছ থেকে পাওনা এক লাখ টাকা পেতে রিকশা নিয়ে বেরিয়েছেন নারীটি। কিন্তু নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে লোকটিকে আর খুঁজে পাননি। এমনকি তার মোবাইলও বন্ধ। বাধ্য হয়েই অপরিচিতি মানুষের কাছে হেল্প চেয়েছেন।



হাসনাইন পকেট থেকে দু’শ টাকা বের করে দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু কৌতুহল থামেনি। রিকশাটির পিছু নিলেন। খানিক পরের চিত্র দেখে হাসনাইনের চোখ তো চড়ক গাছে। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো। আরও কয়েকজন মানুষের কাছে গিয়ে আবারও দু’শ টাকা হেল্প চেয়ে বসলো সেই ‘অসহায়’ নারী। অবশ্য এবার আর আশানুরূপ সাড়া পেল না। কয়েকজন যুবক তাকে এড়িয়ে চলে গেল।



খানিক পরে একটি টহল পুলিশের গাড়ি দেখে দ্রুত রিকশাটি প্রধান সড়ক থেকে সরে পড়লো। কাকরাইলের একটি গলিতে ঢুকে পড়লো মুহূর্তেই। সেখানেও অন্য এক যুবকের কাছে একইভাবে হাত পেতে বসলো নারীটি। কিন্তু এরমধ্যেই হাসনাইনকে চোখে পড়ায় একটু অপ্রস্তুত হয়ে যায়। অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে সামলে নিয়ে অন্য অফার দিয়ে বসলো। বললো, ‘চলুন, আমার সাথে। আমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসবেন।’



এবার আর হাসনাইনের বুঝতে বাকি নেই। নারীটি ভয়ঙ্কর প্রতারণার জাল বুনেছে। এ জালে পা দিলে নির্ঘাত বিপদ। হাসনাইন দ্রুত সরে পড়লেন।



পাঠক, এটি নিছক গল্প নয়। শনিবার রাতে রাজধানীর কাকরাইলে ঘটে যাওয়া একটি বাস্তব ঘটনা। এ ঘটনার সূত্র ধরে পাওয়া গেছে আরও পিলে চমকানো তথ্য। রিকশাচালক বাবুল মিয়ার কাছ থেকে জানা গেলো, এ নারীটি একটি শক্তিশালী প্রতারক সিন্ডিকেটের সদস্য। মানুষের কাছ থেকে কৌশলে টাকা আদায়ের পাশাপাশি ফাঁদেও ফেলে তারা। সুযোগ বুঝে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে কেড়ে নেয় সবকিছু। কখনও কখনও হুমকি আর ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকে টাকা হাতিয়ে নেয় এ চক্রটি।



শোনেন পার্টি: এর আগে মলমপার্টি, অজ্ঞান পার্টি ইত্যাদি প্রতারক চক্রের সঙ্গে রাজধানীবাসী অনেক আগেই পরিচিত হয়েছে। এবার নতুন এ চক্রটির তারা নাম দিয়েছেন ‘শোনেন পার্টি’। অন্যান্য প্রতারক চক্রের সদস্যদের মতো এ চক্রটিও প্রতিনিয়ত মানুষকে ফেলছে প্রতারণার ফাঁদে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় রয়েছে এ চক্রটি। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোর পাশাপাশি এদের টার্গেট অভিজাত এলাকাও। সেখানকার মানুষকে ফাঁদে ফেলে মোবাইল, ল্যাপটপ, নগদ টাকা ছিনিয়ে নিচ্ছে সুকৌশলে।



অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ চক্রের সঙ্গে স্থানীয় সন্ত্রাসী, রিকশাচালক আর সুন্দরী নারীরা যুক্ত। সন্ত্রাসীরা নেপথ্যে থেকে পুরো তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করে। আর রাতের বেলা রিকশাচালক সুন্দরী নারীদের নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। শোনেন পার্টির নারীরাই মূলত মানুষদের কাছ থেকে অর্থ হাতানোর কাজটি করে থাকে।



বিভিন্ন কৌশল: শোনেন পার্টির সদস্যরা অবস্থা বুঝে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে। কখনো কখনো এ চক্রের সদস্যরা বোরখা পরে মানুষের সামনে হাজির হয়। কথার ছলে তারা নিজেদেরকে অভিজাত পরিবারের সদস্য হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করে। এসব করেই মানুষকে তারা ছলে বলে ধোকা দিয়ে হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের অর্থ।



কখনো কখনো এ চক্রের সদস্যরা নিজেদেরকে ঢাকায় নতুন এসেছে বলে দাবি করে। এসময় তারা বলে, টাকাসহ ব্যাগ হারিয়ে গেছে। সে অজুহাত দেখিয়ে সাহায্যের নাম করে অর্থ হাতায়।

সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে, তরুণ ও যুবকদের জন্য পাতা ফাঁদ। এ ফাঁদে ফেলে নিজেদের ফ্ল্যাট কিংবা নিরাপদ স্থানে নিয়ে গিয়ে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। এমন ঘটনা এখন প্রতিনিয়তই ঘটছে।



সাবধান: শোনেন পার্টির খপ্পরে পড়ার ঘটনা নেহায়েতই কম নয়। হরহামেশাই এসব ঘটনা ঘটছে। কেবল অর্থ খোয়ানো নয়, ওদের খপ্পরে পড়ে সম্মানের হানী হয়। রিকশাচালক জসিম এ পার্টির এক সদস্যের প্রসঙ্গে বাংলামেইলকে বলেন, ‘এই মাইয়ারে গত এক বছর ধইরা আমি দেখতাছি। টিকাটুলি, সায়দাবাদ, আরামবাগসহ বিভিন্ন জায়গায় ওরে দেহি রিকশা লইয়া ঘুইরা বেড়ায় আর মানুষরে ধইরা ধইরা এসব কাহিনী করে। ওর লগে আরও কয়েকটা সুন্দর সুন্দর মাইয়া আছে। ওগুলাও একই কাজ করে।’



জসিম আরও জানলেন, তার রিকশায় বেশ কয়েকবার এমন নারী চড়েছিল। ওদের কেউ কেউ রাস্তা থেকে পুরুষদের সঙ্গে নিয়ে বনশ্রী কিংবা শাহজাহানপুরে নিয়ে যায়। আবার কেউ কেউ মাঝে মাঝে রাস্তায় পুরুষদের সঙ্গে নাটকীয় ঘটনা ঘটিয়ে বসে। এতে করে অর্থ জরিমানা দেয়ার পাশাপাশি বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় উপকার করতে আসা অনেককেই।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:২৯

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনার পোস্টটি সবাইকে সচেতন হতে সাহায্য করবে। ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টের জন্য।

২| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩১

খেয়া ঘাট বলেছেন: শোনেন পার্টি--------------
বড় জটিল নাম।

৩| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৩

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এদের কারণে আজকাল আর কাউকে(সত্যিকারের অসহায়) সাহায্য করতে ইচ্ছে করে না। কেউ ডাকলে ১০০ হাত দূরে দিয়ে চলে যাই।

৪| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:০৪

মশিকুর বলেছেন:
সবার আরও সচেতন হওয়া উচিৎ

৫| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩১

রাজা খায় গাজা বলেছেন: ধন্যবাদ দিয়ে আপনাকে ছোট করলাম না....... স্যালুট আপনাকে এই বাস্তব অভিজ্ঞতা সবার সাথে শেয়ার করার জন্য।

৬| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫১

স্বপনচারিণী বলেছেন: ভয়ঙ্কর ঘটনা। সাবধান হতে হবে।

৭| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:১৬

লুলুপাগলা বলেছেন: আমি আরো একটা এমন ঘটনার কথা জানি। বাচ্চা সহ মহিলা, বাচ্চাটাও ট্রেনিং প্রাপ্ত, এমনি উপকার করতে আসা একজনের পায়ে ধরে বাচ্চাটা আব্বা আব্বা করে চিৎকার করতে থাকে। আশে-পাশের লোকজন জড়ো হলে বলে সে তার স্বামী, তাকে দেশে রেখে স্বামী ঢাকায় থাকে, তার কোন খোঁজ-খবর নেয় না, টাকা পয়সাও দেয়না। তাকে খুঁজতে সে ঢাকায় এসেছে। এবং এখন তাকে পেয়েছে, কিন্তু সে তার পরিচয় অস্বিকার করছে। তার সাথে আরো কিছু দালাল থাকে, তারা পাবলিক সেজে তখন হম্বি-তম্বি করে ফাদে ফেলে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়। সো....................... সময় থাকতে সাবধান।

৮| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৬

নক্‌শী কাঁথার মাঠ বলেছেন: এরকম কত "শোনেন" শুনলাম... ফিরেও তাকাইনা।

৯| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৬

ঢাকাবাসী বলেছেন: আসল হোক আর নকল, এসব আবেদনকারিনীর দিকে তাকানোই উচিত না। ঝটপট কেটে পড়াই ভাল।

১০| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:১৫

আমিনুর রহমান বলেছেন:



সচেতনমূলক পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।

১১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৪

আম্মানসুরা বলেছেন: এই সমস্ত ভণ্ড দের জন্য প্রকৃত বিপদ্গ্রস্থরা সাহায্য পায় না। এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

১২| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫১

শ্যামল জাহির বলেছেন: ৯১ সাল।
বাড়ি যাচ্ছি। ক্যান্টনমেন্ট হতে বি আর টিসি-তে গুলিস্তান নামি। সাথে মা। রাস্তা পাড় হয়ে অনেকটা হেঁটে গন্তব্য স্থানের বাস ধরতে হবে। বিরম্বনা।
মাজারের রাস্তাটা পার হতে যাব.. মুখঢাকা কালো রঙ্গের বোরকা পরিহিতা এক মহিলা পিছন দিক থেকে ডাক দেয় 'এই যে ভাই শুনুন!' সময় স্বল্পতা বা প্রয়োজন মনে করেনি তাই ডাক শুনিনি। রাস্তা পার হতেই হৈচৈ শুনতে পেলাম। লক্ষ্য করলাম- ঐ মহিলা বলছে, (এক ভদ্রলোককে ইঙ্গিত করে) ব্যাটা আমারে কুপ্রস্তাব করছে! কিছু পুরুষ ভদ্রলোককে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। লোকটি শুধু বলছে, আরে ভাই আমার কথাটা শুনুন! কেউ কথা শোনেনি। লোকটিকে ধরে নিয়ে কোথায় গেল জানিনা। আমি আর মা; আমাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালাম। বুঝতে আর বাকি রইলোনা কি ঘটছে !
আপনার লেখা পড়ে আবারও মনে পড়ে গেল সে ঘটনা।

১৩| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৫

ডট কম ০০৯ বলেছেন: লুল পুরুষদের জন্য অশনি সং কেত। হাহহাহহাহা

১৪| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২০

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: কি যে অবস্থা ! মানুষকে বিশ্বাস করাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে... :|

ধন্যবাদ সচেতন করার জন্য।

১৫| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০১

জানতে চায় বলেছেন: :-/

১৬| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৬

মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: এ দের কারনে কে সত্যিকারের বিপদে পরেছে আর কে ভাওতাবাজী করছে বুঝা যাচ্ছে না, তাই এমন দেখলেই ভাওতাবাজীর কথা মন হয়

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.