নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বহুদিন আগে কোন এক বারান্দায় শেষ বিকেলের আলোয় আলোকিত উড়ন্ত খোলা চুলের এক তীক্ষ্ণ হৃদয়হরনকারী দৃষ্টি সম্পন্ন তরুনীকে দেখে ভেবেছিলাম, আমি যাদুকর হব। মানুষ বশীকরণের যাদু শিখে, তাকে বশ করে নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দিব সারাটি জীবন।

কাল্পনিক_ভালোবাসা

একদিন সব হাসির ময়নাতদন্ত হবে, ফরেনসিক রিপোর্টে লেখা থাকবে - সবই মিথ্যে।

কাল্পনিক_ভালোবাসা › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাল্পনিক ভালবাসা।

১৮ ই জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৩৯

আজ সকাল থেকে প্রচন্ড ব্যস্ত। মাত্র ছয় মাস হলো নতুন অফিসে জয়েন করেছি। এই ছয় মাসের মধ্যে এই প্রথম এতো ব্যস্ততা। ঠিকভাবে দুপুরের খাওয়াও হয়নি। একে তো নিজের ডিপার্টমেন্টের কাজের চোটে প্রান যায় যায় অবস্থা, এর মধ্যে যোগ হয়েছে আরো এক উপদ্রপ, নিয়াজ সাহেব। তিনি দুপুর থেকে এসে আমার রুমে বসে আছেন। তার ডির্পাটমেন্টের ঈদ কার্ড আমাকে দিয়ে ডিজাইন করাবেন। আমি বার বার অনুরোধ করে

বলেছি, ‘স্যার আপনি আপনার রুমে চলে যান, আমি এই কাজটি শেষ করেই আপনাকে ফোন দিচ্ছি।’। কিন্তু কোন লাভ হচ্ছে না।



আমি এই মুহূর্তে একটা জরুরী ফাইল দেখছি, এটা শেষ করেই ভেবেছিলাম নিয়াজ সাহেবের কাজটা করব। কিন্তু ভদ্রলোক বড়ই বিরক্ত করছেন। আমাকে কেউ কোন কথা বার বার বললে কিংবা অনুরোধ করলে সেটা করতে আমার ইচ্ছা করে না। তারপরও অসীম ধৈর্য নিয়ে আমি উনার সাথে শান্তভাবে কথা বলছি। কিন্তু আমার কোন কথাই উনার কানে যাচ্ছে বলে মনে হয় না। প্রতি দশ মিনিট অন্তর অন্তর তিনি চায়ের অর্ডার দিচ্ছেন, আর

বলছেন, ‘ভাই আমার কাজের কতদূর হলো? আর কতক্ষন লাগবে?’।

ফ্লোরের পিয়নরাও তার উপর যথেষ্ট পরিমানে বিরক্ত। পিয়নদের সাথে তার ব্যবহার অতি বাজে । আর তিনি আমার পরে এই অফিসে জয়েন করেছেন। যেখানে আমি তাদেরকে আপনি বা তুমি করে বলি সেখানে উনি তুই তুকারি করেন।



ভদ্রলোক এমনিতে বেশ ভালো, ক্যালকেশিয়ান। সম্প্রতি তার স্ত্রী এবং কন্যা কোলকাতায় চলে গেছেন। কারন বাংলাদেশে নাকি এখন আর কম খরচে থাকা সম্ভব না। অফিসে আসার পথে গাড়ীতে এই নিয়ে আমরা প্রায়

প্রতিদিনই মোটামুটি একটা ত্রিশ মিনিটের একটা লেকাচার শুনি।



যাইহোক, আমি চুপচাপ মন দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু কাজের মাঝে তার অপ্রয়োজনীয় কথা এবং স্থুল রসিকতা অত্যন্ত বিরক্তি সৃষ্টি করছে। যেমন কফি খাবার সময় আমার কাপ থেকে একটু কফি পড়ে গিয়েছিলো। আমি তাড়াতাড়ি টিস্যূ পেপার দিয়ে মুছার চেষ্টা করছি। এমন সময় নিয়াজ সাহেব বলে উঠলেন, ‘কি ব্যাপার জাহিদ সাহেব, এইভাবেই কি যেখানে সেখানে পড়ে যায় নাকি?’। বিকট হাসি দিয়ে বললেন, ‘হা হা, তাহলে তো ভাই সমস্যা। বিয়ের পর তো বউ থাকবে না।’



আমি প্রথমে বুঝতে পারি নাই উনি কি বুঝাতে চেয়েছেন, তারপর যখন বুঝলাম তখন প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হলো।



এই সব কি ধরনের কথা। আমি উনার ইয়ার দোস্ত না।অনেক কষ্টে রাগ লুকিয়ে রেখে, হাসি মুখে বললাম, ‘জ্বী স্যার, ঠিকই বলেছেন, আপনাকে দেখে বুঝতে পারছি, আপনার অভিজ্ঞতার ভান্ডার বিশাল বড়। ভাবী মনে হয় এই কারনেই কোলকাতায় চলে গিয়েছেন। আপনি তো দেখি শুধু খরচের কথা বলেন। যাই হোক ব্যাপার না। শুনেছি কলকাতায় নাকি এই সব চিকিৎসা ভালো হয়। বাংলাদেশ থেকে খরচও কম। গিয়ে ভালোমত চিকিৎসা করাবেন।’



আমার এই উত্তর মনে হয় তিনি আশা করেননি। উনার চেহারা দেখে আমার তাই মনে হলো। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘স্যার কি টয়লেটে যাবেন? স্যরি স্যার। আমার টয়লেটে কিছুদিন ধরে পানি নেই।’



তারপরের দৃশ্য - নিয়াজ সাহেব ঝড়ের বেগে রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন।





সব কাজ শেষ করে বের হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হয়ে আছে। কিন্তু অফিস থেকে বের হয়েই আমার মনটা ভালো হয়ে গেল। বেশ চমৎকার একটা বাতাস। একটা ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব। একেই সম্ভবত বলে মাতাল হাওয়া। পেটে একটু দানাপানি দিয়ে, আয়েশ করে একট সিগারেট ধরালাম তারপর সোজা একটা রিকশা নিয়ে বাসার দিকে যাত্রা করলাম। সাধারনত জ্যামের কারনে আমি রিকশা করেই বাসায় ফিরি। অফিস থেকে ফেরার সময় সিএনজি ড্রাইভাদেরকে সম্ভ্যাব সকল সর্ম্পকের (বাবা, ভাই, চাচা, মামা, খালু, নানা, দাদা ক্ষেত্র বিশেষে শালা) দোহাই দিয়েও বনানী থেকে গ্রীনরোড আনা সম্ভব না। আর বাসে তো কথাই নেই। মানুষের ভীড় ঠেলে যদি কোনভাবে উঠাও যায়, জ্যামের মধ্যে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা আটকে থাকতে হয়। মানুষের ঘামের গন্ধের তখন মারা যাবার অবস্থা হয়। তাই যেদিন মনে করি আমার শাস্তির দরকার আছে, সেদিন বাসে করে আসি। আর না হলে আজকের মতো রিকশা করে বাসায় ফিরি।



ব্যাক্তিগতভাবে, রিকশা বেশ ভালোই লাগে আমার। আশেপাশে দেখতে দেখতে ও বাতাস খেতে খেতে যাওয়া যায়। প্রতিদিন এমন আবহাওয়া থাকলে ভালোই হত। আমার মতে, এই ধরনের আবহাওয়ায় সকল প্রেমিক প্রেমিকাদের রিকশায় করে ঘুরে বেড়ানো বাধ্যতামূলক করা উচিত। কারন এই ঠান্ডা এলোমেলো বাতাস অন্তরের কালিমাগুলোকে দূর করে দেয়। এই

বাতাসে থাকে বিশেষ ভালোবাসার গন্ধ, যা পাশাপাশি বসে অনুভব করতে হয়। এই বাতাসে ভালোবাসা থাকে, যা একে অপরের হাত ধরে নিতে হয়। আমিও নিচ্ছি। যদিও তুমি আমার পাশে এখন নেই, কোথায় আছো এই

মুহূর্তে জানি না। তোমাকে নতুন করে পাব বলে কল্পনায় সাজিয়েছি নতুন পৃথিবী। তারপরও মনে হচ্ছে তোমার স্পর্শ পাচ্ছি। তুমি যেন ঠান্ডা বাতাস হয়ে আমাকে ছুঁয়ে দিচ্ছ। বাতাশের শব্দে আমি যেন শুনতে পাচ্ছি তোমার সেই প্রান কেড়ে নেয়া হাসি। উফ! কি অদ্ভুত সুন্দর তুমি!

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৯:৪৫

যাযাবর৮১ বলেছেন: :) :) :) :) :) :) :) :)

ভালু হৈচে ভাইজান ++++++



জ্বলুক প্রাণ

প্রাপ্তি নয় ত্যাগ নয়
নয় কোন সুখ কিংবা দুঃখ্‌
দীনতা নয় হীনতা নয়
নয় কোন দান প্রতিদান
শুধু এক ঝলকে জ্বলুক
দুটি হ্নদয়ের দুটি প্রাণ।

এই কামনা রইলো :-B

১৮ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:২০

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: ধন্যবাদ। বরাবরের মতনই সেই রকম কবিতা।
নিজের প্রশংসার আনন্দ কি উপভোগ করবো, আপনার কবিতার প্রশংসা কিভাবে করি সেই চিন্তায় আছি।।

২| ১৮ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৫৭

নীলঞ্জন বলেছেন: ভালো লাগলো জাহিদ ভাই।

তবে নিয়াজ সাহেবদের মতো লোক সবজায়গাতে খুঁজলেই পাওয়া যায় একটা দুইটা।

শুভ কামনা রইল।

শুভরাত্রি।

১৯ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১২:৫৬

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: হা হা হা। জাহিদ আমার নাম নয়। আমার গল্পের ছেলেটির নাম। :)

৩| ২১ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১১:১০

রাহি বলেছেন: কেমন যেন শেষ হয় নাই শেষ হয় নাই মনে হচ্ছে...

২৬ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৫৫

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: রবি ঠাকুর বলেছিলেন, শেষ হইয়াও যা শেষ হইবে তাহাই ছোট গল্প। :)

৪| ২৯ শে জুলাই, ২০১২ রাত ২:৩৬

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
গল্প টা বেশ লাগলো।
বিস্তৃতিতে বেশ কাব্যিক ছোয়া ছিলো।

৫| ২৯ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ১:৫৪

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

৬| ২৫ শে মে, ২০১৩ রাত ২:৩৯

ফারজানা শিরিন বলেছেন: দারুন !

৭| ২৫ শে মে, ২০১৩ রাত ২:৫৩

বাংলার হাসান বলেছেন: মাত্র ছয় মাস হলো যাক তাহলে এখনো চার মাস বাকী আছে। :P :P :P


খুব চমৎকার হইছে। অবশ্য এটা নতুন কিছু না। বরাবরই আপনার লেখা দুর্দান্ত।

৮| ০৭ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:০৮

লেজকাটা বান্দর বলেছেন: ব্যাক্তিগতভাবে, রিকশা বেশ ভালোই লাগে আমার। আশেপাশে দেখতে দেখতে ও বাতাস খেতে খেতে যাওয়া যায়। প্রতিদিন এমন আবহাওয়া থাকলে ভালোই হত। আমার মতে, এই ধরনের আবহাওয়ায় সকল প্রেমিক প্রেমিকাদের রিকশায় করে ঘুরে বেড়ানো বাধ্যতামূলক করা উচিত। কারন এই ঠান্ডা এলোমেলো বাতাস অন্তরের কালিমাগুলোকে দূর করে দেয়। এই
বাতাসে থাকে বিশেষ ভালোবাসার গন্ধ, যা পাশাপাশি বসে অনুভব করতে হয়। এই বাতাসে ভালোবাসা থাকে, যা একে অপরের হাত ধরে নিতে হয়। আমিও নিচ্ছি। যদিও তুমি আমার পাশে এখন নেই, কোথায় আছো এই
মুহূর্তে জানি না। তোমাকে নতুন করে পাব বলে কল্পনায় সাজিয়েছি নতুন পৃথিবী। তারপরও মনে হচ্ছে তোমার স্পর্শ পাচ্ছি। তুমি যেন ঠান্ডা বাতাস হয়ে আমাকে ছুঁয়ে দিচ্ছ। বাতাশের শব্দে আমি যেন শুনতে পাচ্ছি তোমার সেই প্রান কেড়ে নেয়া হাসি। উফ! কি অদ্ভুত সুন্দর তুমি!

৯| ০৭ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:১১

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: শেষ পেরায় প্লাস !

১০| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২৩

ফাইয়াজ ইসলাম ফাহিম বলেছেন: দারুণ!

১১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৫৩

সনেট কবি বলেছেন: অনেক দিন পর অবশেষে খোঁজাখুঁজি করে কাল্পনিক ভালোবাসার সন্ধান পাওয়া গেল। গল্প দারুণ হয়েছে।

১২| ১৪ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৭

মোঃ জিদান খান (অয়ন) বলেছেন: তুমি যেন ঠান্ডা বাতাস হয়ে আমাকে ছুঁয়ে দিচ্ছ। দারুণ।

১৩| ২০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৫৩

অনল চৌধুরী বলেছেন: ১৩ মাসে আমার একটা লেখাও প্রথম পাতায় আসেনি।


অথচ বিজ্ঞাপনে বলা আছে ,৩ দিন পরই ভালো লেখা প্রথম পাতায় যাবে!!!

কিন্ত অামারগুলি যায় না।

১৪| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:৫১

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: উফ! কি অদ্ভুত সুন্দর...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.