![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি লাল নীল স্বপ্নের দেশে স্বপ্ন নিয়ে হাতড়ে বেড়ানো একটা মানুষ...
একটা কথা প্রচলিত আছে " ব্যক্তির থেকে দল বড়, দলের থেকে দেশ". কিন্তু এটা দেখে খুব কষ্ট লাগে যে ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতার জন্য আমরা নিজেরাই নিজেদের কিভাবে ক্ষতি করছি। ভয় হয় কোন চরম মূল্য না আমাদের এর জন্য দিতে হয়।
এই দেশ মাওলানা ভাসানির দেশ, এ দেশ এ কে ফজলল হকের দেশ। এ দেশ কানাই লাল শীল এর দেশ,এ দেশ আমার জীবনানন্দের দেশ। এ দেশের প্রতি পরতে পরতে মিশে আছে হাজার বছরের ভালোবাসা, ঐতিহ্য। আবহমান বাংলার রূপ, আবহমান বাংলার প্রকৃতি ও মানুষের সংহতিও এখানে লক্ষণীয়।
কষ্ট হয় এটা দেখে, যে ভাতৃত্তের বন্ধন আমাদের গর্ব সেটাই কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির কারনে আজ বিলুপ্তের পথে। সারা বাংলায় আজ রক্তের লহর, ভাই ভাইয়ের রক্ত নিচ্ছে কোন এক অদৃশ্য ইশারায়। অদৃশ্য ইশারাই বলব আমি। পিলখানা থেকে শুরু করে কাউয়ারচর পর্যন্ত যে রক্তের বন্যা বয়ে যায় তা শুধুমাত্র ব্যক্তি স্বার্থেই। নিকট ভবিষ্যতের রাজনৈতিক ধারা এবং আসন্ন নির্বাচন পূর্ববর্তী-পরবর্তি সহিংসতা আমাদের দেশটাকে কোথায় ঠেলে দেয় সেটা আল্লাহ্ ভালো জানেন। তবে এটা ঠিক যে দেশ আজ যে কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি তার জন্য কিন্তু সেই ব্যক্তিস্বার্থই শতভাগ দায়ী। সময় থাকতে সাবধান না হলে ৭৫, ৮৪, ৮৬, ২০০৯, ১/১১ বা তার থেকেও খারাপ কিছু এ দেশের ভাগ্যে আছে তার কোন সন্দেহ নাই। আর সেটা সাধারন মানুষের জন্য মোটেই ভালো কিছু বয়ে আনবে না।
আজ সংবিধান, দল, স্বার্থ, নির্বাচন এসব কঠিন কথা সাধারন মানুষের মনে কতটুকুই স্থান পায়? বাংলার অধিকাংশ মানুষ দু'বেলা ভাত তৃপ্তির সাথে খেতে পারলেই খুশি। আর সন্ধ্যা হলে টিভির সামনে বা চা স্টলে বা যেকোনো জায়গায় আড্ডা দিতে পারলেই এ জীবন যেমন তেমন। সবাই বলে গোল্ড ফিশের স্মরণশক্তি সব থেকে কম। আমি বলবো বাংলার সাধারন মানুষের স্মরণশক্তি গোল্ড ফিশের থেকেও কম। আমরা ভুলে যাই আমাদের সাথে কি হয়েছিলো। অতীত ভুলে যাই। ভুলে যাই আজ যারা ক্ষমতায় আছে বা নাই সবাই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। ভুলে যাই ১৯৭১,১৯৭৫, ১৯৮৪, ৮৬,৯১, ৯৬, ২০০১, ২০০৭-২০০৯, সারের জন্য অপেক্ষমান কৃষকের বুকের গুলি, পিলখানার ভাইদের বাঁচানোর জন্য অন্য সশস্র-সুসজ্জিত ভাইদের একটা নির্দেশের অপেক্ষার কাতরতা। আমরা সব ভুলে যাই। ...... শুধু মনে থাকে সানি লিয়ন... আর স্টার প্লাস, স্টার জলশা, জি বাংলা।
... ... কিন্তু কাদের সার্থে খুব সুক্ষ ভাবে আমাদের এসব ভুলিয়ে দেয়া হচ্ছে? ............... তা জানা হয়না আমাদের। এখানেও ব্যক্তি স্বার্থ। অদূর ভবিষ্যতের ব্যক্তি স্বার্থ।
আমরা আমাদের স্যাটেলাইট টেলিভিশন কে ওদের বাজারে ঢুকাতে পারছি না। ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে কোটি টাকা খরচ করে ওদের স্যাটেলাইট চ্যানেলে আমার দেশ কলুষিত করছি।
কুকির্তি,কুটচাল,সংসারে অনাসৃস্টি তৈরি করার জন্য হিন্দি সিরিয়াল একটি উৎকৃস্ট উপাদান।হিন্দি সিরিয়াল দেখলে আপনি অবশ্যই দাবার চাল দেওয়ার মত কুটচালে এক্সপার্ট হয়ে উঠবেন। পোষাকে অশ্লিলতার জন্য হিন্দি সিরিয়ালকে শ্রেস্ঠ পুরস্কার দেওয়া যেতে পারে। পরিকল্পিতভাবে আমাদের সামাজিক অবস্থা এবং নৈতিক ও আর্দশিক নীতিবোধ সমূহকে ধ্বংস করার জন্য একটি দল দীর্ঘদিন ধরে দেশে কাজ করছেন। আর তাদেরকে সহযোগীতা করে যাচ্ছে প্রশাসন ও মিডিয়াজগত।আজ সমাজে কোন মুল্যবোধের তোয়াক্কা করে না যুব সমাজ।
আবার অন্য দিকে তাকালে দেখা যায় আরও একটি মহল আমাদের যুব সমাজকে তিলেতিলে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এখানেও সেই ব্যক্তিস্বার্থ। গুটিকয় মাদক ব্যবসায়ীর কারণে দেশের যুব সমাজ বিপন্ন হবে, এটা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। "মাদক কে না বলুন" এই শ্লোগান আর সরকারের কাছে শুনতে চাই না । মাদক মুক্ত দেশ গড়তে দেশে কঠোর আইন ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে । তা না হলে আমাদের প্রজন্ম হবে প্রতিবন্ধী ।
মাদক আর অশ্লীলতা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এই দুই নেশার ছোবল। অসামাজিক কার্যকলাপ আর বেলেল্লাপনার কারণে অহরহ ঘটছে নানা সহিংস ঘটনা। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন অভিভাবকরা। রাস্তার পাশেই পাওয়া যাচ্ছে নেশার সামগ্রী, হাত বাড়ালেই অশ্লীল ভিডিও, সিডি আর পর্নোগ্রাফি। ঘরে বসেই মোবাইল সেটে দেখতে পাচ্ছে নানা কুরুচিপূর্ণ ভিডিও ও স্টিল চিত্র।
নেপোলিয়নের শিক্ষিত মা আর জাতীর গল্প আজ শুধু গল্পেই আছে। ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে যেয়ে আজ সামাজিক, রাজনৈতিক মূল্যবোধের যে অবক্ষয় দিন দিন হচ্ছে তার দিকে যদি আমরা দৃষ্টি না দেই তবে হয়ত খুব নিকট ভবিষ্যতেই আমাদের চরম খেসারত দিতে হবে।
এ দেশ শেখ মুজিবের দেশ, এ দেশ জিয়াউর রহমানের দেশ, এ দেশ এরশাদের দেশ, শেখ হাসিনার দেশ, এ দেশ খালেদা জিয়ার দেশ ... ... ... ... অনেক হয়েছে
... ... এ দেশটা আমার দেশ, আমার ভাইয়ের দেশ, আমার মায়ের দেশ।
সবাইকে ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.