![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি লাল নীল স্বপ্নের দেশে স্বপ্ন নিয়ে হাতড়ে বেড়ানো একটা মানুষ...
- আচ্ছা আপনি আমার জন্য এত্ত কিছু করেন কেন?
বাবুনির কথার কোন উত্তর দিলো না সূর্য, সামনে বিশাল আকাশের সাথে সন্ধি করেছে যেন সূর্যের দুচোখ।
- কি হল? উত্তর দিবেন না?
তুমি যে এত্ত কিছু বলছো হয়ত সেটা এত্ত বড় কোন কিছু না। আর উত্তর দিতে হবে এমন কোন কিছু চিন্তা করেতো কিছু করি নাই।
- তাহলে কি হিসাবে করেছেন?
অনেক কিছুরই তো কোন হিসাব থাকেনা জীবনে। তারপর ও তো হয়ে যায়। হয় না?
- তাই বলে আজ আপনি সব কিছু মেনে নিবেন?
মেনে নেয়া না নেয়ার কিছু না। নিজের কাছে স্বার্থপর থাকতে ভালো লাগে। এক প্রকার পৈশাচিক সুখ পাওয়া যায়। আর এই স্বার্থপরতা সব কিছুই সময়ের প্রয়োজনে।
- সময়ের প্রয়োজন? বাহ! নিজেকে আর কত লুকাবেন আপনি?
যতদিন পারব।
- আড়াল হতে চান নিজের কাছ থেকেই? এত্ত সহজ না সূর্য।
সহজ কঠিন এর হিসাব এখানে হয় না বাবুনি। সহজ মায়া লুকানো কঠিন , আর কঠিন মায়া খুব সহজেই লুকানো যায়। আড়াল করা যায়।
- আপনার সাথে কথায় আমি জীবনেও পারি নাই। আর যুক্তিতর্কেও যাওয়ার ইচ্ছা আমার নাই।
রেগে যাচ্ছে বাবুনি, সামান্য একটু সময় নিলো সে। হয়তো নিজেকে শান্ত করলো।
চুপ করে আছে সূর্য। দিগন্তে অস্তগামী সূর্যের আভা ছড়িয়ে পড়েছে। সে আভায় অদ্ভুত আলোকিত হয়ে আছে চারিপাশ। সূর্য বুঝতে পারছে এ আলোর থেকেও বেশি আলো জমেছে বাবুনির চেহারায়। রেগে যাচ্ছে মেয়েটা। কন্যা সুন্দর আলোর আভা আর রাগ এ দুটা বিষয় এক হয়ে জ্বলছে সেখানে। একটা ব্যাপার সূর্য জানে; সুন্দরী মেয়েরা তাড়াতাড়ি রেগে যায়। রাগলে তাদের আরো সুন্দর লাগে। প্রকৃতি তাদের চারপাশ সুন্দর করে সাজিয়ে নেয় সবসময়, হয়তো সে কারনেই সুন্দরী মেয়েদের রাগ এতো বেশি। কিন্তু এ মেয়েটা খুব সহজেই রাগ সামলে নিতে পারে। রাগ সামলানোর জন্য কাউকে নোবেল প্রাইজ দেয়া হয়না। হলে এ মেয়েটা সেটা পেতো এটা সূর্য নিশ্চিত।
কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার মাথা তুললো বাবুনি। সূর্যের ঠিক পাশে এসে দাঁড়ালো, যতটা কাছে আসলে নিঃশ্বাসের শব্দ বুঝা যায় ঠিক তততা কাছে।
- আমি আপনার জন্য কিছু করতে চাই।
বিস্ময় দৃষ্টিতে তাকালো সূর্য। গভীর ভাবে না তাকালে কেউ বুঝতেও পারবেনা এ বিস্ময়ে একটা ভয় লুকানো আছে। ঝড়ের ভয়। বাবুনির আবেগের মাঝে যে ঝড় বিরাজমান সে ভয়। বাবুনির আবেগকে সূর্য ভয় পায়।
কি করতে চাও?
- জানিনা আমি সেটা, কিন্তু কিছু করতে চাই।
তোমার কিছুই করতে হবে না। সময়টা স্বার্থপর, স্বার্থপর সময়ে কারো জন্য কিছু করতে হয় না, করতে যাওয়া বোকামি। নিজেদের নিয়ে ভাবো।
- তবুও আপনি কিছু একটা বলেন।
পলক পরছেনা বাবুনির চোখে। এ চোখ কেড়ে নিতে পারে সহস্র সময়ের অবসাদ। তবুও ক্লান্ত দু চোখ তাকিয়ে আছে সূর্যের দিকে। কিছু একটা শুনবে বলে।
কি বলবে সূর্য। অনেক কিছু বলার থাকলেও এখন কিছুই বলতে ইচ্ছে করছে না। অনেক দূরে একসাথে হেঁটে আসার পর মাঝে মাঝে পিছনের পথটাকে বড্ড বেশি অচেনা মনে হয়। অচেনা মনে হয় সহযাত্রীকে। এখন দুরে আছি, তাই ফেরা সহজ; কাছের মানুষ কখনো ফেরে না.
তোমার বিয়ের পর কোন এক বিকালে তোমার বাসায় যাবো। ভাত খেতে যাবো। মাছের ঝোল দিয়ে ভাত। এটা পারবা?
চুপ করে আছে বাবুনি।
কি হল? ভাত খেতে চেয়ে কি পাপ করলাম।
- আপনি কি সারাজীবন এমনই থাকবেন? কখনো সিরিয়াস হবেন না?
সারাজীবনের কথা তো এখন বলতে পারবো না।
- এখন কি বলতে পারবেন?
চলো, তোমাকে পৌঁছে দেই।
- না আপনাকে আমার জন্য আর কিছু করতে হবে না। আমি একাই যেতে পারবো।
পিছন ফিরে না তাকিয়েও সূর্য বুঝতে পারছে জলভরা চোখ নিয়ে বাবুনি এগিয়ে যাচ্ছে বড় রাস্তার দিকে। এ মেয়েটা রাগ সামলাতে পারলেও কান্না লুকাতে পারেনা। যে মেয়ের রাগ যত বেশি সে মেয়ের কান্না তত বেশি। বাবুনির কান্না সূর্যের ভালো লাগে না। কিন্তু কিছু করার নেই।
একবার ভাবলো বাবুনিকে ডাকবে। জিজ্ঞেস করবে একটাই প্রশ্ন।
কেন? কেন এমন করলে বাবুনি?
কিন্তু এ মেয়েটাকে ডাকা ঠিক হবে না। তিল তিল করে বেড়ে ওঠা সূর্যের স্বপ্নগুলো কিছুক্ষণ আগের অস্তগামী সূর্যের সাথেই ডুবে গেছে। বাবুনিকে ডাকবে না সূর্য। পিছন ফিরে তাকাবেও না। যদিও জানে রিক্সায় ওঠার ঠিক আগে একবার সূর্যের দিকে তাকাবে বাবুনি।
অন্ধকার বাড়ছে। পরিচিত অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা এক অপরিচিত রাত নামছে শহরে।
৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৪
স্বপ্ন বাজীকর বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৬
বিপুল কুমার বিশ্বাস বলেছেন: যে মেয়ের রাগ যত বেশি সে মেয়ের কান্না তত বেশি। বাবুনির কান্না সূর্যের ভালো লাগে না। কিন্তু কিছু করার নেই।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০১
খেয়া ঘাট বলেছেন: রাগ সামলানোর জন্য কাউকে নোবেল প্রাইজ দেয়া হয়না। হলে এ মেয়েটা সেটা পেতো এটা সূর্য নিশ্চিত।
ভালো লেগেছে।