নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চক্ষে আমার তৃষ্ণা

না বলা কথা... [বি:দ্র: এই ব্লগটি কাউকে না পড়ার জন্য অনুরোধ করিছ। এটি একান্তই ব্যক্তিগত ব্লগ। ধন্যবাদ। ]

পপকর্ণ

স্বার্থপর মানুষ

পপকর্ণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্ব রেকর্ড: লাখো কন্ঠে সোনার বাংলা

২৬ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:২১

২৭ মার্চ ২০১৪ বুধবার বিকেল ৩:২১ এয়ারটেল অফিস পিঙ্কসিটি গুলশান- ২ ঢাকা



প্রিয় মৃন্ময়ী,



গতকাল ২৬ মার্চ ছিল বাংলাদেশের ৪৩তম স্বাধীনতাদিবস। দিনটিকে উদযাপন করতে সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। একই সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় নতুন এক বিশ্ব রেকর্ড গড়ার উদ্যোগ নেয়- 'লাখো কন্ঠে সোনার বাংলা'।



গতকাল জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে লাখো মানুষের কন্ঠে ধ্বনিত হয় রবীন্দ্রনাথ-রচিত আমাদের সুমধুর জাতীয় সঙ্গীত- আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি...। জাতীয় প্যারেড ময়দানের প্রবেশদ্বারে সংযুক্ত স্বয়ংক্রিয় যান্ত্রিক গণনা অনুসারে লোক হয়েছিল দুই লাখ ৫৪ হাজার ৬৮১ জন। এতেই গত বছরের ৬ মে সাহারা গ্রুপের আয়োজনে এক লাখ ২২ হাজার লোকের একসঙ্গে জাতীয় সংগীত গাওয়ার ভারতের রেকর্ডটি ভেঙে নতুন বিশ্ব রেকর্ড হওয়ার কথা। তবে চূড়ান্ত ফল জানতে অপেক্ষা করতে হবে সপ্তাহ দুয়েক।



মানুষের সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়ে যাবার কথা। কেননা, ময়দানে যন্ত্র সংযুক্ত প্রবেশদ্বার ছিল ১৬০টি। লোকজনের চাপে এর মধ্যে ১১টি ভেঙে যায়। পরে এসব দ্বার দিয়ে যাঁরা প্রবেশ করেছেন, তাঁরা গণনার আওতায় আসেননি। এ ছাড়া নয়টা ৪৯ মিনিটে গেট বন্ধ করে দেওয়ার পর সামনের রোকেয়া সরণি থেকে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এবং বিজয় সরণি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে দিয়ে বিমানবন্দর সড়কও ছিল লোকজনে ঠাসা।



এখানে আরো একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন। জাতীয় প্যারেড ময়দানের চূড়ান্ত পর্বে গাওয়া জাতীয় সংগীতের সঙ্গে সারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকেও সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ কণ্ঠ মিলয়েছেন। এমনকি পথচলতি ট্রেনগুলো এই সময় যেটি যেখানে ছিল থেমে যায়। যাত্রীরা আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতে কণ্ঠ মেলান। সে হিশেবে আরো একটি বিশ্ব রেকর্ড হয়েছে বলা যায়। আমি নিজে বাসায় বসে অনুষ্ঠানটির সরাসরি সম্প্রচার দেখেছি। জাতীয় সঙ্গীতের সময় দাড়িয়ে যাই। চোখ আনন্দে টলমল করছিল। শরীরের প্রতিটি লোম দাড়িয়ে গিয়েছিল। শিহরিত হচ্ছিলাম পুরোটা সময়।



ব্যক্তিগতভাবে একটি আফসোস রয়ে গেল। আমি এই বিশ্ব রেকর্ডের চাক্ষুষ সাক্ষী হতে পারলাম না, প্যারেড গ্রাউন্ডে অংশগ্রহণ করতে পারলাম না। মূলত আমার আলসেমি এর জন্য দায়ী। আগের রাত্রে দেরিতে ঘুমানোর কারণে ঘুম থেকেই উঠি সোয়া দশটার দিকে। আরেকটি বিষয় আমাকে বেশ পীড়া দিয়েছে। আমি জানতাম না যে, জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ড মূলত তেজগাঁয়ে অবস্থিত পুরাতন বিমান বন্দর। আমার বাসা থেকে মাত্র ২০ মিনিটের পথ। এত বছর ঢাকায় অবস্থান করার পরও এমনি একটি তথ্য না জানা আমার চরম উদাসীনতা বৈ অন্য কিছু নয়।



বরাবরের ন্যায় এবারো একটি অংশ যথারীতি সরকারের এই উদ্যোগের তীব্র সমালোচনা করে। তাদের প্রধান যুক্তি- এই রেকর্ড গড়ে লাভ কী হবে? ৫০ কোটি, মতান্তরে ৯০ কোটি, টাকা উন্নয়মূলক কোনো কাজে ব্যয় করা যেতো না? দেশপ্রেম কি দেখানোর বিষয়? ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি এসব সমালোচনাকে পাত্তা দেইনা। কেননা, এরা নিজেরা কোনো ভালো কাজের উদ্যোগ নেয় না। কিন্তু যখন কেউ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে, তখন 'গেল গেল' রব তোলে, নানা খুঁত খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। আমি যদি চরম ভালো কোনো উদ্যোগও গ্রহণ করি, তখনো কোনো একটি পক্ষ উদ্দেশ্যমূলক সমালোচনা করবেই। সুতরাং এসব সমালোচনাকে পাত্তা দেয়ার কিছু নেই। সর্বোপরি সকল সমালোচনাকে পিছনে ঠেলে ইতিহাস এই অভূতপূর্ব ঘটনাকেই মনে রাখবে।



২.



তারেক রহমান খালেদা-জিয়ার বড়পুত্র। প্যারোলে মুক্তি নিয়ে লন্ডনে বসবাস করছেন। চারদলীয় জোট সরকারের সময় তিনি 'মি: টেন পারসেন্ট' নামে কুখ্যাতি পেয়েছিলেন। 'হাওয়া ভবন' ছিল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার দ্বিতীয় কেন্দ্র।



স্বাধীনতাদিবস উপলক্ষ্যে লন্ডনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তারেক জিয়া। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি তার বাবা জিয়াউর রহমান। তিনি দাবি করতেই পারেন। তিনি এও দাবি করতে পারেন তিনিই বাংলাদেশের সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি। B-)



বিএনপির ইতিহাস বিকৃতির ইতিহাস নতুন নয়। তাদের মাথায় একটা পোকা ঢুকানো হয়েছে। তা হলো জিয়াকে বঙ্গবন্ধুর সমান্তরাল করতে হবে। সেই নীলনকশা বাস্তবায়নে নানা কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করে বিএনপি। ইচ্ছেকৃতভাবে পাঠ্যবইয়ে সংযুক্ত করা হয় যে, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক, তার আহ্বানেই বাংলার মানুষ মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। যেন জিয়ার আহ্বানই মুখ্য, বঙ্গবন্ধু গৌণ। এখন আবার তারেক জিয়া দাবি করেছেন জিয়া বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয় মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যমগুলো সরগরম। চলচ্চিত্রকার মাসুদ আখন্দ লিখেছেন, খালেদা জিয়া রাতে খান বলে সকালে বের হন না। আর তারেক জিয়া না খেয়ে সকালে বের হন না। কেউ কেউ নিজেকে দেশের রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেছে। একজন লিখেছেন, জিয়া দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি আর তারেক জিয়া লন্ডনের প্রেসিডেন্ট--- একই কথা।



আচ্ছা, বিএনপির এসব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপকৌশলের কোনো সফলতা আছে কি? আছে। একদল ছাগলের পাল এসব বিশ্বাস করতে শুরু করেছে এবং ইতোমধ্যে অনলাইনে তারেকের কথা প্রতিধ্বনি শুরু করেছে। এরা চাঁদে সাইদীকে দেখতে পায়, এরা জিয়াকে ঘোষক বানিয়ে দেয়, এরাই আবার জিয়াকে জিয়াকে রাষ্ট্রপতি দাবি করে।



সমস্যাটা হল বিএনপির সচেতন সমর্থকরা খালেদা-তারেকের এসব কর্মকাণ্ডে ব্যাপক বিব্রত হন! অসহায়বোধ করা ছাড়া এদের বিশেষ কিছু করার থাকে না।



(গতকাল রাত্রে লেখাটি লিখতে বসেছিলাম। কিন্তু কেন যেন বাসার টেবিলে বসে আমার মধ্যে কোনো লেখা আসে না। অদ্ভুত!)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.