![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বার্থপর মানুষ
২৯ ডিসেম্বর ২০১৪ রবিবার রাত্র ১:৪৮ ৩৫ প্লামরোজ টরন্টো ওন্টারিও
ফেসবুকে আমি ভালোই সময় দিতাম। আসক্ত বলা যেতে পারে। বাংলাদেশে থাকতে বাবা-মা-বড় ভাইর অনেক কথা শুনেছি শুধু মাত্রাতিরিক্ত ফেসবুক ব্যবহারের কারণে। এমনকি কানাডা আসার পর কাকারও কথা শুনতে হয়েছে। তারপরও ফেসবুক ব্যবহার বন্ধ করতে পারিনি; কাজের মধ্যে, ক্লাশের মধ্যেও নিয়মিত ফেসবুক ব্যবহার করতাম। অস্বীকার করার উপায় নেই মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট করেছি, ক্ষতিগ্রস্থও হয়েছি। বিশেষ করে কিছুক্ষণ পরপর ফেসবুক চেক করতে যাবার কারণে কোনো কাজে মনোযোগ ক্ষুণ্ণ হতো ভীষণ।
তাই হঠাৎ করেই একদিন মোবাইল থেকে ফেসবুক অ্যাপস আনইন্সটল করে দিলাম। তখনি ভাবছিলাম হয়তো দিন দুয়েক বড়জোর এভাবে চলতে পারি। তারপর ঠিকই ইন্সটল করে ফেলবো। কেননা, ফেসবুক ব্যবহার দীর্ঘদিনের অভ্যাসের ব্যাপার; যাপিত জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে।
কিন্তু অবাক বিস্ময়ে আবিষ্কার করলাম ইতোমধ্যে দিন বিশেক পার করেছি। এখন পর্যন্ত ফেসবুক অ্যাপস ইন্সটল করিনি মোবাইলে। শুধু ম্যাক থেকেই ব্যবহার করছি। আমার ধারণা এরকম আমি চলতে পারব। তারচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমাকে চলতে হবে; অন্তত আগামি এক বছর অর্থাৎ ২০১৫ সালটা।
জীবনে কোনো কিছুই অপরিহার্য না। যেসব মানুষদের অপরিহার্য ভাবতাম, তারাই সময়ের ব্যবধানে আমাকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছে যে, জীবনে কিছুই অপরিহার্য নয়; তাদেরকে আমি সারা জীবনের অংশ ভাবলেও আমি তাদের জীবনে শুধু একটি অধ্যায় মাত্র। বুকের মধ্যে গভীর বেদনা নিয়ে, মনের গহীনে তাদের প্রতি ভালোবাসা বজায় রেখেও জীবনকে এগিয়ে নেয়া যায়। অথচ কোনো এক সময় এসব বুঝতাম না। অনেক কিছুই মেনে নিতে পারতাম না। ভীষণ কষ্ট পেতাম। (এখনো পারিনা অবশ্য। বিশেষ করে কোনো প্রিয়জনের ইচ্ছেকৃত অবহেলা! যখন আচঁ করতে পারি, আমি ভুল জায়গায় অবস্থান করছি, ইচ্ছেকৃত অবহেলার শিকার আমি, তখন আমার সমগ্র নিয়ে চেষ্টা করি সেই প্রিয়জনের কাছ থেকে দূরে সরে যেতে, তা যতই কষ্টের হোক আমার জন্য। অবহেলার চেয়ে দূরে থাকা শ্রেয়। প্রিয়জনের প্রতি অন্তত শ্রদ্ধা বা ভালোবাসাটা বজায় থাকার সুযোগ থাকে।) সমস্ত জীবনটা থমকে গিয়েছিল। স্পৃহা-উদ্যম শব্দদ্বয় ভুলেই গিয়েছিলাম। জীবনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। নিতান্তই জীবনকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলাম টেনে নিতে হয় বলে! যদিও ফেসবুক আর মানুষের তুলনা চলে না কোনো পরিমাপকেই; তারপরও বলতে হয় সেসব মানুষদের তুলনায় ফেসবুক কিছুই না!
মাঝখানে চেষ্টা করেছিলাম ফেসবুক থেকে ডিঅ্যাক্টিভেটেড হয়ে যেতে। তিন-চারবার অচল করেও ছিলাম। কিন্তু ওভাবে থাকতে পারিনি। সচল করতে বাধ্য হয়েছি পুনরায়। কেননা, এই ফেসবুক হয়ে গেছে একমাত্র মাধ্যম যেখানে আমার মত 'অসামাজিক' মানুষের যোগাযোগ রক্ষিত হয় মানুষদের সাথে। অতএব, ফেসবুক থেকে এখনো সম্পূর্ণরূপে দূরে চলে যাবার সুযোগ নেই; তবে নেশাটা কাটাতে পেরেছি সেটাই বা কম কীসে, অন্তত আমার মতো আসক্তর জন্য!
এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন। আমার জীবনে অসাধারণ কিছু বন্ধু আছে। তাদের প্রতি আমি আজীবন দায়বদ্ধ। ওদের নি:শর্ত ভালোবাসা, প্রগাঢ় বন্ধুত্ব আমার জীবনের পরম প্রাপ্তি। ওদের নিয়ে লিখব কোনো একদিন।
(ফেসবুকে স্ট্যাটাস হিশেবে দিলাম লেখাটি।)
©somewhere in net ltd.