নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অস্তিত্বকে ছাড়তে নেই,ভুলতে নেই...

মৃত্তিকামানব

আজীবন মাটির মানুষ হয়ে থাকতে চাই।হিংসা, অহংকার,ভন্ডামী এই তিন শক্তিশালী শত্রুর বিরুদ্ধে জিততে চাই

মৃত্তিকামানব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডাকাতদর্শন

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩০


আমাদের ছোটবেলায় প্রতিদিন নিয়ম কইরা দিনের বেলায় চুরি হইত আর রাতের বেলায় ডাকাতি।ডাকাতরা বেবাক কিসিমের মুখোশ পইরা, অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হইয়া আইসা স্বর্ণালংকার, টাকাকড়ি থেকে শুরু কইরা শ্বশুরবাড়ি থেকে আসা পিঠাপুলি পর্যন্ত লুট কইরা লইয়া যাইত।

সেই সময় কালাইয়ার রুটির দোকানই ছিল যাবতীয় খবরের উৎস। কালাইয়ার রুটির দোকানই তখনকার সময়ের একমাত্র টেলিভিশন,স্থানীয় পত্রিকা, ফেসবুক।সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পাওয়া যাইত সেই রুটির দোকানে।গতরাতে কোন এলাকায় কার বাড়ীতে কিভাবে ডাকাতি হইছে,কি কি নিয়া গেছে এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য,উপাত্ত আমরা
সকাল বেলা রুটি আনতে যাইয়া রুটির সাথে বাড়ীতে নিয়া আসতাম।তারপর সারাদিন বাড়ীতে-গাড়ীতে-মাঠে-ঘাটে-হাটে ডাকাতদের নিত্যনতুন কীর্তিকলাপ আলোচিত হইত।সর্বত্র লোকমুখে ডাকাত এবং ডাকাতির এমনসব শৈল্পিক বর্ণনা শুইনা মনে হইত ডাকাতি যেন এক বিরাট শিল্প এবং একেকজন ডাকাত যেন বিরল প্রতিভার অধিকারী।ফলে আমার মনে ডাকাতদর্শনের এক অদ্ভুত ইচ্ছা জাগে।তারপর হঠাৎ প্রযুক্তির ধাক্কায় পাল্টে গেল জনজীবন।বাড়ীতে বাড়ীতে ডিশ লাইন,হাতে হাতে মোবাইল ফোন অভিশাপ হইয়া দাঁড়াইল নিখিল বাংলা ডাকাতদলের জন্য।রাতের বেলা মানুষ কখন ঘুমাইবে সে অপেক্ষা করতে করতে ডাকাতরাই একসময় ঘুমাইয়া যাইত।ফলে সেদিনের মত আর ডাকাতি করা হইত না।এভাবে আস্তে আস্তে হারাইয়া যাইতে লাগল ডাকাতির মত বিরাট শৈল্পিক কাজকারবার।ফলে ডাকাতদর্শনের সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য কোনটাই আমার হইল না।

বড় হইয়া এক বড় ভাইয়ের কাছে আমার ছোটবেলার সেই অদ্ভুত ইচ্ছার কথা জানাইয়া আফসোস করতেছিলাম।বড় ভাই কইলেন,আমি নাকি মানসিকভাবে অসুস্থ,আমার সুস্থতা দরকার। তাই তিনি আমারে পরামর্শ দিলেন,আমি যেন প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উইঠা প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ পরিদর্শন করতে যাই।তাইলে আমার মনে এ ধরণের আজে বাজে ইচ্ছা আর জাগ্রত হইবেনা।

বড় ভাইয়ের পরামর্শমত আমি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের পাশাপাশি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট হসপিটাল,
ক্লিনিক এসবও পরিদর্শন করলাম।বেশ কিছুদিনের মধ্যেই আমি হাতেনাতে ফল পাইতে লাগলাম।ডাকাতির মত একটি বিলুপ্তপ্রায় শিল্প এখনো টিকিয়া আছে দেইখা বেশ আশ্বস্ত হইলাম।অবশেষে আমার মানসিক দৈন্যদশা কাইটা গেল।আমি সম্পূর্ণরুপে সুস্থ হইয়া উঠলাম। ডাকাত দেখবার মত কোন ধরণের আজে বাজে ইচ্ছা আমার মনে এখন আর জাগ্রত হয়না।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩৮

শায়মা বলেছেন: হা হা ডাকাতির মত বিলুপ্তপ্রায় শিল্প এখনও টিকিয়া আছে! হা হা হা
ভাইয়া কালাই রুটি দিনাজপুর রংপুরে খায়। আর দিনাজপুর রংপুরের মাঝে ধুপুরঝাড়ি এলাকায় নাকি আগের দিনে অনেক ডাকু ছিলো। তুমিও কি সেই দেশ হতে এলে?

২| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০২

মৃত্তিকামানব বলেছেন: না। কালাইয়া আসলে ঐ রুটির দোকানের মালিক।তার একটা ভাল নাম আছে যেটা অনেক পরে জেনেছি।এলাকার লোকে কালাইয়া বলে ডাকে তার গায়ের রঙের কারণে। কালু,লালু এগুলো সেসময়ের প্রচলিত নাম।

৩| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ইয়ে মাঝেসাজে মুবাইল ফোন কোম্পানি গুলো ও ভিজিট কইরেন তাহলে এক্কেবারে ফিট ফীল করবেন।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১৯

মৃত্তিকামানব বলেছেন: ঐদিকের ডাকাতির খবর তো ঘরে বইসা বুইঝা যাইতাছি।
ডাকাতরা শিক্ষিত হইছেন নাকি শিক্ষিতরা ডাকাত হইছেন এই নিয়ে কনফিউশনে আছি বর্তমানে।

৪| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:২০

শোভন শামস বলেছেন: ডাকাতরা শিক্ষিত হইছে নাকি শিক্ষিতরা ডাকাত হইছে এই নিয়ে কনফিউশনে আছি

০১ লা অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৫

মৃত্তিকামানব বলেছেন: মুখোশের ভীড়ে মানুষ চিনা দায়।

৫| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:১১

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার বাড়ি কি রাজশাহী নাকি?

০১ লা অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৩

মৃত্তিকামানব বলেছেন: না।চট্টগ্রামে

৬| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪০

মা.হাসান বলেছেন: লেখা কালাইয়ের রুটির মতো উপাদেয় হইয়াছে। ডাকাতেরা এখনো ব্লগিং সাইট খুলেনাই এটাই রক্ষা। অবশ্য ব্লগিঙ সাইটে আয় নাই, খালি ব্যয় আছে, ডাকাতদের পোষাইবেনা, ওনারা আকাশ স্যাটেলাইটেরই ব্যবসা করুক।

০১ লা অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৭

মৃত্তিকামানব বলেছেন: ধন্যবাদ।

৭| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২২

জুন বলেছেন: আধুনিক ডাকাতদের দেখিয়া আগের দিনের ডাকাতের সাথে একটা তুলনামূলক আলোচনা করতে পারেন মৃত্তিকামানব। আমিও একবার থানায় ডাকাত দেখিয়াছিলাম। গ্রামবাসী তার দুই চোখ উপড়াইয়া নিয়াছে, সারা গায়ে বল্লমের খোচায় আহত, সরকারি ডাক্তার আসিয়া ব্যান্ডেজ বাধিয়াছে। আমরা যখন তাকে দেখতে গেলাম তখন সে মাটিতে বসিয়া কাচের গ্লাসে চা খাইতেছে আর ওসির সাথে গল্প করিতেছে। আপচুচ তার কপালে কালাইয়ের রুটি জোটে নাই :(
মজার লেখায় +

০১ লা অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৪

মৃত্তিকামানব বলেছেন: মসজিদে জুতা চোর পাইলেই আমরা হৈ হৈ রৈ রৈ কইরা গণবিপ্লব ঘটাই, আর বড় বড় চোর ডাকাতদের বানাই মসজিদের সভাপতি।

৮| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৮

করুণাধারা বলেছেন: আগের ডাকাত ভালো ছিল। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডাকাতি করত। আজকালকার ডাকাতরা বাড়িতে বসে থাকে, আমরা তাদের কাছে গিয়ে সর্বস্ব দিয়ে আসি...

মজার পোস্ট। +++

০১ লা অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৮

মৃত্তিকামানব বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য

৯| ০১ লা অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৩১

আহমেদ জী এস বলেছেন: মৃত্তিকামানব,



হা......হা........হা......... :D
ক'দিন আগে ব্লগে ভুত দেখার ছড়াছড়ি ছিলো। এবারে আপনি এলেন ডাকাত দেখা নিয়ে। তবে স্বীকার করতেই হবে - ভুতের চেয়ে আমাদের দেশে ডাকাতরাই সংখ্যায় বেশী।

সেইরাম একখানা পোস্ট হয়েছে!!!!!!

শেষে করুণাধারার মতোই বলতে হয় - আগের ডাকাতরাই ভালো ছিল। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডাকাতি করত। আজকালকার ডাকাতরা প্রাইভেট নামের ব্যবসা, শিক্ষা, সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের বাড়িতে বসে থাকে, আমরা তাদের কাছে গিয়ে সর্বস্ব দিয়ে আসি...

০২ রা অক্টোবর, ২০২০ রাত ২:৪৪

মৃত্তিকামানব বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.