নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঝিনুক নীরবে সহো,ঝিনুক নীরবে সহো ঝিনুক নীরবে সহে যাও, ভিতরে বিষের বালি, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
বাসা থেকে বেরোতেই LCBO মোড়ে দেখা ষ্টিফেনের সংগে।
ষ্টিফেন বিশেষ কোন মানুষ জন নন৷
আদ্যিকালের কুলীন ব্রাক্ষ্মণজনদের কাছে অচ্ছুত,
কানাডায় হোমলেস।
উনি কোথায় থাকেন আমি জানিনা। উনি কেনো হোমলেস এটাও জানিনা।
এসব খুব প্রাইভেট তথ্য, কানাডায় এসব কথা জিজ্ঞাসা করা যায়না।
সাড়ে তিন বছরের কানাডা জীবনে আমার তেমন কোন বাংলাদেশী বন্ধু নেই।
আক্ষরিক অর্থেই নেই। কেউ দাওয়াত টাওয়াত তেমন দেয় না, আর দিলেও আমি যাই না৷
সেখানে বসে শুনতে হবে
অজস্র সফলতার গল্প,খাওয়া দাওয়ার গল্প,ঘোরার গল্প,
বাংলাদেশের নিন্দা - এসব শুনা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হয় - রূপ,সজ্জা, অর্থ, প্রাচুর্য্য আমার চারিদিকে তখন ঝনঝন করবে৷
তাই আমি যাই না।
তবে ষ্টীফেনের মতোন আমার কয়েকজন ওয়াক ইন বন্ধু আছে, যাদের সাথে হয়ত আমার মানসিকতা রেঞ্জের ভেতরেই থাকে।
ষ্টীফেন হুইল চেয়ারে LCBO এর কোণায় বসে থাকে।
ভদ্রভাবে লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে,
How are you today? Have a nice morning
স্পেয়ার চেঞ্জ টেঞ্জ আছে কিনা এসব তেমন একটা বলে না।
আমি ক্যাশ লেস এই দেশে পকেটে খুচরা রাখি৷
মাঝে মধ্যে ভীষণ কাজে লাগে। এই যেমন মাঝে সাঝে গাড়ীর টায়ারের বাতাস ভরতে কিংবা ষ্টীফেনের সাথে গল্প করার শেষে হাত মিলানোর সময় আলগোছে একটা টুনি ( ২ ডলারের কয়েন) ভরে দেয়া৷
ষ্টীফেন তার চেয়ারের কম্বলের নীচে একটা হুইস্কির বোতল সব সময়েই রাখে৷ লোকজনকে গুড মর্ণিং দেয়ার সময়ে মাঝে সাঝে এক দু চুমুকও দিয়ে ফেলে।
আমি তারে হাসতে হাসতে বলি, তুমি একজন হ্যাপি হোমলেস। কানাডাতে হুইক্সি খাওয়ার চাইতে বিয়ার ওয়াইনের দাম কম৷ You must be a happy guy
ষ্টীফেনের চোখ ঘোলা সম্ভবত চোখে ছানিও পড়ে গেছে
বাম হাতে হুইস্কির বোতল, আর খালি ডান হাত ওপরে তুলে দিয়ে আমাকে হাসতে হাসতে জবাব দিলো
" এই যে জীবনটা পেয়েছি,দেখো ঈশ্বর আমাকে আজকেও সকাল টা দেখার সুযোগ দিয়েছেন৷
এক হাত খালি রেখেছেন, কিন্ত আরেক হাতে হুইস্কিও ভরে দিয়েছেন। এই শীতের সকাল, এই হুইস্কি, এই খালি হাত, এই হুইল চেয়ার - এই সব কিছুর জন্যই আমি লর্ডের কাছে কৃতজ্ঞ। Its a beautiful day, and I am greatful to him "
গভীর রাত্রে বাসায় ফিরে, ষ্টীফেনের আজকের কথা গুলো ভাবছি৷যাদের চিন্তার কাছে আমি মাঝে মাঝে খুব দরিদ্র আর অসহায় হয়ে যাই৷
আমার খুব করে মনে হয় এই যাপিত জীবন,প্রচুর সফলতা, প্রচুর ব্যর্থতা - আমিতো অনেক কিছুই পেয়ে গেছি৷ আর কতো?
শোভনাকে না পেয়ে জীবনানন্দ সারা জীবন হাহাকার করে গেলেন, বনলতা সেন লিখলেন,
কিন্ত এটাও কি সত্য নয়, শোভনা কিংবা সফলতা
জীবনে এসে গেলে অন্য হাহাকার উনাকে কবি জীবনানন্দ দাশ বানাতো না।
জীবনের এই সব জটিল প্যারাডক্সে আমি একা থাকলেই বিভ্রান্ত হয়ে যাই৷
আর বিভ্রান্ত হয়ে গেলে পাহাড়, নদী খুজি।
কারণ বিভ্রান্ত একজন মানুষ সব কিছুই খোজে,
শুধু নিজেকে ছাড়া।
২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:২৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: যে কোন ভাবেই হোক জীবনটা চলেই যাবে। মানুষের ভালো লাগুক বা না লাগুক।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৪
নিমচাঁদ বলেছেন: প্রতিটা মানুষের গল্প ভিন্ন এবং জীবনকে উপলব্ধি করার দৃষ্টি ভংগীও ভিন্ন
৩| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:১৫
বিজন রয় বলেছেন: আপনাকে ব্লগে দেখে ভাল লাগছে।
এই গল্পটি কি সত্যি কাহিনী?
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৭
নিমচাঁদ বলেছেন: আমি গল্প লেখক না । আমাদের সবার জীবনের ছোট ছোট টুকরো ঘটনাই একেক্টা গল্প। ষ্টীফেন প্রায়শই আমার বাসার মোড়ের কোণায় হুইল চেয়ারে বসে থাকে ।
৪| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৫২
নূর আলম হিরণ বলেছেন: মানুষ আসলে যত কম তার নিজের চাহিদা রাখতে পারে সে তত বেশি সুখী হতে পারে। যার চাহিদা যত বেশি সে জীবনে তত অসুখী।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৮
নিমচাঁদ বলেছেন: সত্য তবে জীবনের সব কিছুই মেনে না নিতে পারলে সেটা বেদনাদায়ক স্মৃতি
৫| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০২
শেরজা তপন বলেছেন: আহা অনেকদিন পরে আপনার লেখা- পড়ে বিমোহিত হলাম দাদা!
শেষের ক'টা লাইক তো নোট করে রাখার মত -চমৎকার।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪০
নিমচাঁদ বলেছেন: ব্লগ তো আসলে কিভাবে লিখতে হয় সেটাই জানিনা , কিন্ত জীবনের কিছু ডায়েরী তো লিখতেই ইচ্ছে হয় । বছর ত্রিশেক আগে অনেক ডায়েরী লিখতাম । বড় হবার সাথে সাথে সেই ডায়েরী আর লিখার মন হারিয়ে ফেলেছি ।যতৈ জয়ী হয়, একাকী রাত্রে ততৈ নিজেকে পরাজিত মনে হয়
৬| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩২
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: একজন সুখি,সন্তুষ্ট মানুষ ষ্টিফেন।
সন্তুষ্টির অপর নামই শান্তি।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪১
নিমচাঁদ বলেছেন: নোয়াখালির কমেন্ট জয়যুক্ত হোক
৭| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: স্টিফেনের সাথে আমার কিছু মিল আছে।
৮| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:১২
কামাল১৮ বলেছেন: আমি সাত বছর টরেনটোতে আছি।মেয়েদের বন্ধু বান্ধব আমার পরিচিত জন।কিছু আত্মিয় স্বজন আছে।আমার নিজের কোন হন্ধু নাই।মতের মিল না হলে বন্ধত্ব হয় না।স্কুল কলেজের বন্ধু সেটা অন্য জিনিস।
৯| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:২৩
নীলসাধু বলেছেন: অসাধারণ পোষ্ট।
আলাপ-কথা-গল্পমালা-সব মিলিয়ে দারুণ উপস্থাপনা।
ভাল লাগা রইল।
ভাল থাকবেন নিমচাঁদ ভাই।
১০| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:২৩
বাকপ্রবাস বলেছেন: দুই ঢোক গিলে ষ্টিফেনের জীবনটা কেটে যাক আনন্দে।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:১৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বড়ই আচানক ঘটনা।