![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রকাশিত গ্রন্থঃ অসুখগুলো প্রাপ্তবয়স্ক, শাদা পরচুল অন্ধকার, মৌনমুখর বেলায়, শাহবাগের সাথে সংহতি
(প্রাককথনঃ এ বছরের ১৮ মার্চ, আমার লেখালেখির একদশক পূর্ণ হল। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এর অর্ধেকের বেশি সময় আমি এই ব্লগের সাথে যুক্ত ছিলাম ও আছি, গত মাসে ব্লগে লেখার ছয় বছর পূর্তি হল। সেই কারণেই আত্মজৈবনিক ও কবিতা বিষয়ক প্রবন্ধের শেষ অংশটি আজ দিচ্ছি। প্রথম অংশের লিংক এখানে - কবিতার সাথে দশটি প্রেম: কয়েকটি কথা (১ম পর্ব)। লেখাটি প্রকাশ হয়েছিল মহাপথ ডট কম এ। আশা করি সকলের ভাল লাগবে)
কবিতা ভাবনা ও প্রকরণে
কবিতা কি কিচ্ছুটি জানি না আগেই তো বললাম। তাই মনে যা আসে তাই শোনাতেই দেখি বন্ধুরা আরো আগ্রহ নিয়ে জেঁকে বসে আসে রাজ্যের সব প্রশ্ন নিয়ে। এসব প্রশ্ন যে একেকটা শেলের মত এসে বেধে, কী করে করি! কথা থামাতেই তরুণ এক বন্ধু বলে বসল, ভালো কবিতা কোনগুলো, খারাপই বা কোনটা? এ প্রশ্নটা ততটা খটোমটো নয় অন্তত আমার জন্যে। কেননা আমি বিশ্বাস করি জগতে যাই কবিতা বলে স্বীকৃত তাই ভাল কবিতা। খারাপ কবিতা বলে কিছু নেই, থাকতে পারে না। ওদের দিকে তাকিয়ে হেসে বলি, ভালো কবিতা কিংবা খারাপ কবিতা এই প্রশ্নটা খুব একটা যৌক্তিক নয়, এর চেয়ে বেশি যুক্তির- কবিতাটি কবিতা হয়েছে কিনা? কবিতা যদি সত্যি কবিতা হয়, তবে সে নিজের শক্তিতেই নিজেকে মেল ধরে অনাগত দিনের কাছে নতুন নতুন রূপে। ঠিক যেমন পেয়াজের প্রতিটি স্তর উন্মোচন করলে আরেকটি নতুন স্তর বেরোয়, ঠিক সে রকম করে। তাই ভালো কবিতা বলে আলাদা করে বিশেষায়িত করবার দরকার নেই। যে লেখা কবিতা, তা এমনিতেই ভালো।
কবিতার কবিতা হয়ে ওঠার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কবিতা রচয়িতার নিজে কবি হয়ে ওঠা। এ জন্যে প্রথমেই দরকার কবিতার ভাষা, ভাব ও ছন্দের বিবর্তন সম্বন্ধে কবিতা রচয়িতার স্পষ্ট ধারনা। আরো প্রয়োজন নিজের কাল, দেশ, সমাজ, রাজনীতি, জনরুচি, বিষয় ও আঙ্গিকগত ভাবনার পার্থক্যগুলোর প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা। অনেক সময় না থাকলেও কবিতা রচিত হতে পারে, তবে তা নিতান্তই ব্যতিক্রম। কবিতা রচনা করতে গিয়ে উপরের বিষয়গুলোতে সচেতন থেকেও কবি যদি সমকালীন সময়ের চর্চার চলমান জোয়ারেই শুধু ভাসেন তাহলেই যে কবিতা, কবিতা হয়ে উঠে ভাস্বর হয়ে উঠবে এমনটিও নয়। কবিতার নিজের বৈশিষ্ট্য, বক্তব্য, চিত্র ও দৃশ্য নির্মাণে কৌশলে যথাযথ ভাব বজায় রেখে কোন কবি যদি কবিতার দেশজ, বৈশ্বিক এবং সময়গত কাঠামো স্পর্শ করে যান, তবেই কবিতা প্রকৃত অর্থে কবিতা হয়ে উঠবে, এ কবিতা সব সময়ের, সব কালের। এ কাল হতে পারে সমসাময়িক, ভূতপূর্ব সময়ের বয়ান কিংবা আগামী দিনের কথকতা। সমাজ, রাষ্ট্র, দর্শন, ধর্ম এবং সর্বোপরি মানুষ- কবিতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ কাঠামো, এগুলোর যথাযথ মেলবন্ধনই কবিতার জন্ম দেয়, হতে পারে তা আকস্মিক কিংবা দীর্ঘদিনের সুচিন্তিত প্রচেষ্টায় নির্মিত।
একটি কবিতা সত্যিই কবিতা হয়ে উঠলে, তা অবশ্যই ভাল কবিতা; যেহেতু কবিতাকে ভালো দিয়ে বিশেষায়িত করা হচ্ছে। তবে সব শ্রেণীর মানুষের ভাল লাগবে বা সকলে একে গ্রহণ করবে এমন নয়। এ ক্ষেত্রে পাঠকের স্বাধীনতা ও অভিরুচি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে প্রকাশ-মাত্র পাঠক খুব গ্রহণ করলেও তা প্রকৃত অর্থে ভাল কবিতা হয়ে উঠবে এমন নয়। ভাল কবিতা যদি প্রকাশ-মাত্র গৃহীত নাও হয় একদিন না একদিন গৃহীত হবেই; এটাই কবিতার অন্তরের শক্তি।
কবিতা ও কবির জগত
ভালবাসার সাজমহলে যে রূপসীকে লুকিয়ে রাখি, তার নাম দিতে পারি ‘কবিতা’ । পায়ে তার আলতা নূপুরের শোভা দিতে কেটেছে কত বিনিদ্র রাত, হিসেব নেই। সে সময় একান্তই কবিতার, যার পরাবাস্তব পৃথিবীতে থাকি শুধু আমি আর কবিতা। কি আশ্চর্য সে জগৎ! আমি নির্মাণ করি এক অজানা পৃথিবী, স্বপ্ন যেন শিল্প এক, কাব্য এক চলমান ক্যানভাস। হঠাৎ যদি কোন ভাব মনতরঙ্গে দোলা দেয় তবে আঁচড় কাটি শক্ত সাদা অফসেটে। এরপর কেমন করে যেন চোখের সামনে অবয়ব নিয়ে হাজির হয়, কল্পমানবীর, যার শক্তি টেনে নিয়ে যেতে থাকে আমার কলমকে, অনেকটা যেন অন্ধকার সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে ঝুলে থাকা বাদুর শব্দের আশ্বাস পেয়ে খাবারের সন্ধানে বের হয়। শব্দগুলো আসতে থাকে, সাইক্লোনের মত, একের পর এক, আশাবাদী মন নিয়ে চালাতে থাকি বল্গাহীন মনের আলোটাকে।
এরপর, সময়টা অদ্ভুত! দিন কয়েক ধরে নিজের মনে মেতে থাকি আনন্দে, কি প্রবল অহংকার জাগে ওই ফাল্গুনে যে এসেছিল পৃথিবীর হাওয়ায় হাওয়ায় আগুন ধরাতে, আজ সে নিজেই আগুন হয়ে রেখে যাচ্ছে ছাপচিত্র মাটির কঠিন বুকে। কিন্তু প্রারম্ভের অযাচিত উচ্ছ্বাস থিতিয়ে এলে একটা অন্তব্য বোধ জেগে উঠতে থাকে, কেমন যেন রাশ টেনে ধরে, ভাবনা কাঁপায় তোমার কূলবধুর সাজসজ্জা তেমন করে হয়নি বোধহয়। উদ্দেশ্য ও অযাচিত স্বপনের যে ভ্রমণ, তাকে কবিতায় রূপ দিতে চলতে থাকে পরশুরামের কঠোর কুঠার। ভাঙাগড়ার এই খেলায় একসময় কবিতার জন্ম হয়, গড়ে ওঠে আট রঙা রংধনুর এক নতুন জগত।
কবিতার আধুনিক নির্মাণ ও দশকিয়া চিন্তারীতি
কবিতার প্রসঙ্গ ও আঙ্গিক কাঠামো নিয়ে আজকাল প্রায়ই ভাবি, বলা চলে কবিতা নিজেই ভাবতে বাধ্য করে। কবিতার রাজ্যে ’আধুনিকতা’ একটি চিরকালীন বিতর্কের বিষয়। আমার ঠিক জানা নেই আধুনিকতা বলতে আসলে কি বোঝায়। বিগত দেড়শত বছর ধরে ’আধুনিকতা’ বিষয়ক তর্ক চলে আসছে বাংলা সাহিত্যে। সেই তর্কে কার কি লাভ হয়েছে জানা মুশকিল, তবে তর্কগুলো একটা জিনিস আমাদের দেখিয়ে গেছে-প্রায় প্রতিটি তর্ক, ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের পরেই কবিতাকে নতুন করে দেখার চেষ্টা করেছেন কবিরা। আধুনিকতার তর্ক নিয়ে ভাবনা চিন্তা করতে গিয়ে গলদঘর্ম হয়েই রবিঠাকুর বলেছেন, ’কাজটা সহজ নয়, পাঁজি মিলিয়ে মডারন এর সীমানা নির্ধারণ করবে কে?’
সান্ধ্য-ভাষায় লেখা চর্যাপদের কবিতার ভাষা বাংলা আর আজকের মুক্তগদ্য নামের প্রায় গদ্য ধারার কবিতার ভাষা বাংলা এ দুয়ের বিস্তর ফারাক। এই ফারাকটুকু এক দিনে হয়নি। হাজার বছর ধরে একটু একটু করে হয়েছে, নতুন কবি এসেছেন, লিখেছেন, কালের গর্ভে হারিয়ে গেছেন কেউ। কেউ আবার রয়ে গেছেন চিরকালের প্রাসঙ্গিক হয়ে। তবে এ কথা সত্য মাইকেলী ক্লাসিক্যাল যুগ থেকে শুরু করে বিগত দেড় শতাব্দীতে কবিতার বদল ঘটেছে বারবার। আমার বিবেচনায় এই বদলই আধুনিকতা। দেখার নতুন চোখ, জানার নতুন মন কিংবা বলার নতুন ভঙ্গিমার নামই কবিতা আর আধুনিকতা। এ নতুন মহাকালের প্রেক্ষাপটে নতুন নাও হতে পারে, তবে সমকালের প্রেক্ষাপটে স্বভাষায় অনেকাংশেই নতুন হয়। বৃষ্টি কবিতায় সব সময়ই ছিল আনন্দের মুক্তির প্রতীক, বোদলেয়ার যখন বৃষ্টিধারাকে জেলখানার গারদের সাথে তুলনা করেন; তখন দেখার, ভাবনার আরেকটা চোখ খুলে যায় আমাদের। আবার মধ্যযুগের প্রেমিকের নারীর সৌন্দর্যের প্রতি আকৃষ্ট হবার কারণ হিসেবে শারীরিক সৌন্দর্য বর্ণনায় মনোযোগ দেখা যায়, তার বদলে যখন রবিঠাকুর লেখেন ’হৃদয়ে লাগিনু সুখের মত ব্যথা’ তখনই কবিতায় কবির দৃষ্টিভঙ্গিতে ঘটে বদল। এভাবেই বদলে যেতে থাকে কবিতা। পুরোনো দিনে পুরোনো ভাষায় রচিত হলেই কবিতা পুরোনো হয়ে যায় এমন দৃষ্টি সংকীর্ণতার পরিচায়ক। বরং কবির ভাবনা ও প্রকাশভঙ্গীই কবিতা ও কবিকে আধুনিক করে তোলে।
আধুনিকতা কবিতার ক্ষেত্রে একটি বিশাল দর্শন যা নিয়ে লেখা যায় হাজারো পাতা। ওদিকে আজ আর যাচ্ছি না তাই। ইদানীং আশে পাশে দশক চর্চা নিয়ে খুব কথা উঠেছে তাই ওই নিয়ে কিছু কথা বলি। অনেকে আছেন যারা মনে করেন আধুনিক কবিতা লেখার জন্যে দশকিয়া রীতি বুঝি খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে যে কোন একটি দশকের স্রোতে ঢুকানো কবি লেখকের অবশ্য কর্তব্য। এ ধারনাটি আমার কাছে কখনোই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি। কেননা বাংলা সাহিত্যে এই রীতির প্রবর্তন ত্রিশের দশক থেকে শুরু হলেও বিশ্ব সাহিত্যে দশকীয় রীতির এত ব্যাপক প্রচলন আছে কিনা জানা যায় না। বাংলা সাহিত্যে সমকালীন কবি লেখকেরা অনেকেই একে যে ভাবে দেখেন তাতে মনে হয় কবি বা লেখক হবার এটাই প্রধান শর্ত। একটা নির্দিষ্ট দশক ধরে চলতে হবে আপনাকে, সে দশকের সব কটি সংকলনে অংশগ্রহণ করা চাই। যদিও আমি বিশ্বাস করি যারা সৃষ্টিশীল কবি এতে খুব বেশি আশা যাওয়ার কিছু নাই তাদের। দশকিয়া ধারা আমার মতে মোটামুটি ব্যর্থ একটা জিনিস যা সাহিত্যে নতুন ধারা তৈরি বা বাকবদলের বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরতে পারেনি। কেননা দশ বছরের মত স্বল্প সময়ে কোন ভাষাতেই কবিতার আঙ্গিক বা কাঠামো বদলের নজির নেই। মগজের উপনিবেশ গত কারণে যাদের আমরা আমাদের সাহিত্যের পুরোধা মনে করি তাদের সাহিত্যের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে ভিক্টোরিয়ান এজ, ক্লাসিক্যাল এজ এভাবে প্রবণতা অনুযায়ী দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে ভাগ করে সাহিত্যের সুরবিচারে। বাংলা সাহিত্যে ত্রিশের দশক বলে যে আমরা রবিবলয়ের বাইরের প্রথম কণ্ঠস্বরকে চিহ্নিত করি, সেই ত্রিশের দশকের কবিদের কবি হিসেবে চিনতে সমর্থ হয়েছি মধ্য চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ দশকের সময়ে। অতএব আমার বিবেচনায় কবিদের জন্যে এটা তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।
এটা খুবই সত্যি-কবিতা কোন এক দর্শীয় চিন্তার বিষয় না, আর এখানেই এত বিভক্তি। দশকিয়া চর্চা কবির কাছে মূল্যহীন লাগলেও সমালোচক হিসেবে রবীন্দ্রনাথের পরবর্তী সময়ের সত্যিকারের কবির ফর্দ করতে গেলে কিন্তু দশকের কাছে আশ্রয় নিতে হয়। এর কারণ যারা দশকরীতি প্রচলন করেছিলেন তারাই কোন না কোন ভাবে একে গুরুত্বপূর্ণ করে গেছেন। রবীন্দ্রনাথের আমল পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যে যুগ সন্ধিক্ষণ, ক্লাসিক কিংবা রোম্যান্টিক ধারা প্রবল আকারেই ছিল। ওর থেকে নিজেদের পৃথক করতেই বুদ্ধবাবু ও তার সমমনা পাণ্ডবেরা করলেন ত্রিশের দশকের প্রচলন। তারা ভাল কি খারাপ করেছেন তার বিবেচনায় যাবার ইচ্ছে আমার নেই, আমার বিবেচনা নতুন একটা ধারা এলো. ওটাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই দশকের চর্চাও প্রায় আশি বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। একাডেমিক কিংবা সমালোচকরা এ চর্চা করুন সমস্যা নেই কিন্তু কবিদের এ চর্চা থেকে বেড়িয়ে আসা উচিত। কেন এ চর্চা বিগত দশক গুলো সর্বজন স্বীকৃত আলাদা কণ্ঠস্বরের জন্ম দিতে ব্যর্থ হয়েছে তথাকথিত কিছু কবি লেখকের দলবাজির চর্চা ছাড়া। আমরা অনেক সময় ভেবে দেখিনা দশকচ্যুত বলে যাকে অগ্রাহ্য করা হয় সে প্রকৃতার্থে তার দশকের সেরা কবি কিনা?
তাই আমার বিশ্বাস বিদ্যমান দশকচর্চা পদ্ধতিতে লাভের চেয়ে লোকসান বেশি। দশকের হরিদাস পালে একদল ভেড়া ঢুকে যায়, যাবেই- কেননা আগেও গিয়েছিল; এটা ঠেকাবার নয়। দলবদ্ধ হয়ে চলার চর্চা লেখকের নিজের শক্তি কমাতে যথেষ্ট যদিও এটাই এ অঞ্চলের কবি লেখকের একটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে দশকচর্চা এরপরও চলবে কেননা সমালোচনা সাহিত্যে অনেক আরামের জন্ম দিয়ে গেছে দশকীয় প্রবণতা। সমালোচনার নতুন কোন পদ্ধতি বা দৃষ্টিভঙ্গি না আসা পর্যন্ত একে ধারণ করে যাবেই আমাদের সাহিত্য। তবে কবির তা মান্য করার কিছু নেই বলেই মনে করি। ধরা যাক আজকে বাংলা কবিতার প্রধান চর্চা কেন্দ্র গুলো- কলকাতা, ঢাকা, আগরতলা, আসাম, রাজশাহীতে যে চর্চা, যে ভাষা, যে প্রকাশভঙ্গী মেনে লেখা হয় ওটাকে মানদণ্ড ধরে তালই মিলিয়ে গেলেই মহাকাল একজন কবিকে রাখবে তার সোনার তরীতে? আমার কখনোই তা মনে হয় না, তাই আমি বিশ্বাস করি কবিকে কবিতা লিখতে হলে, আধুনিক হতে হলে তার নিজের সুর নিজেই তৈরি করতে হবে। যা হবে একেবারেই আনকোরা, নতুন কোন আনন্দের মত, একদম জীবন্ত ।
কবিতার সাথে দশটি প্রেম
কবিতার সাথে নিত্য বসবাস আমার, যেমন ছায়ার সঙ্গে কায়ার। পালকের মতন আমার পাখিপ্রাণে মিশে থাকে অনুভব নাম নিয়ে শব্দ ও কবিতারা। আমি ওদের নিয়ে খেলি সারাটা দিন। সে কোন এক মৌনমুখর বেলায় শাদা পরচুল হাতে নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে কোন এক ফাগুনের সন্তান একদিন আবিষ্কার করেছিল অন্ধকার আসলে আপেক্ষিক! তার সেই ভ্রমণে কি সব ভাবনাচিত্র মাঝে মাঝে উড়ে আসে অদ্ভুত আবেগের শব্দ হয়। ওগুলোকেই সাজাতে থাকে সে যুবকরে মন, চলে শব্দবিন্যাস, আর মনে আসে যুবকরে সবচেয়ে বড় সত্য- কবিতা লিখব বলেই আমি হয়েছি আমার স্বপ্নের লিপিকার। কবিতাময় আমার জীবনে দীর্ঘ রাতগুলোতে, অসহ্য সুন্দর সকালে কিংবা রোদদুপুরের আবেশ ক্ষণে যেন পাশে থাকে কবিতারা, এই ভেবেই আমি লিখতে থাকি, আমার খেরোখাতায়। সময় জানে কোথায় গিয়ে থামবে এই চির অন্বেষণ।
১২ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪২
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: খুব বেশী কাঠামোবদ্ধ কবিতা পড়তে ভালো লাগেনা।
যে কবিতা কাঠামো'র নাম নিয়ে আমাদের সামনে হাজির হয় তা খুব বেশি ভাল লাগার কোন কারণ আছে বলে মনে হয় না। পৃথিবীর বেশিরভাগ মহৎ কবিতাই এক অর্থে কাঠামোবদ্ধ, যদি ছন্দের কথা ধরেন। অবশ্য কাঠামো বলতে আপনি কি বুঝাচ্ছেন সে এক প্রশ্ন।
কবিতা বিষয়টি অনেকেই সিরিয়াসলি নেন না এবং সেভাবে লেখেন ও না, তারপরেও অনেকে আছেন যারা আমার বিচারে বেশ বড়সড় কবি। আপনি কবি হবেন কিনা সেটা অনেকটা আপনার ব্যক্তিগত সিগ্ধান্তের জায়গা হলেও অনেক সময় নিয়তি যদি আপনাকে কবি করতে চায়, আপনি কবি হবেনই।
আমি সিরিয়াসলি লিখি সত্য এবং কবিতার জন্যে প্রচুর ত্যাগ স্বীকার করেছি এও সত্য, তবে কতদূর কি লিখতে পেরেছি তা নিয়ে সন্দেহে থাকি নিয়ত...
আদৌ কি হয় রেজওয়ান তানিম এর কবিতা। কে জানে।
২| ১২ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:০১
ইমন তোফাজ্জল বলেছেন: ভাল আলোচনা
১২ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:০৭
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: ধন্যবাদ, আপনার মতামতের জন্য।
স্বাগত জানাই আমার ব্লগে।
এই লেখাটির আগের অংশ পড়বার জন্য অনুরোধ রইল, আর প্রথম কমেন্ট করলেন বলে আমার একটা কবিতা আপনার জন্যে
বিষচুমু
রেজওয়ান তানিম
ঠোঁটে বিষের লিপস্টিক
মেখে নেয় প্রিয়ন্তিকা, আমাকে
চুমু খাবে বলে।
ওতো জানে না, আজকাল
বিষচুমু খেতে খেতে অদ্ভুত কেমন এক
এন্টিবডি তৈরি করেছে শরীর,
বিষের চুমু খেলেই এখন
শুধু নেশা ধরে!
মনে হয়,
মরে গেলেই ভাল হত!
দেখতে হত না
আরেকটা বিষমাখা সকাল।
৩| ১২ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:১৮
সোহানী বলেছেন: ভালোলাগলো... যদিও কবিতা তেমন বুঝিনা। বর্ষপূর্তিতে শুভকামনা।
১২ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৩০
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্যে
কবিতা বোঝা না বোঝা নিয়ে অনেকেই লিখেছেন। সেই লেখাগুলোর থেকে একটি লেখার কিছু অংশ এখানে শেয়ার করতে চাই। লিখেছেন সৈয়দ তানভীর আলম
হেলাল হাফিজ তাঁর ‘অশ্লীল সভ্যতা’ কবিতায় বলেছেন-
`নিউট্রন বোমা বোঝ
মানুষ বোঝ না!’
আজকাল যেখানে মানুষই বোঝা দুঃসাধ্য ব্যাপার সেখানে সব কবিতা বোঝা যাবে না এটাই হয়তো স্বাভাবিক। তাই বলে দুর্বোধ্যতার দায় শুধু কি কবির একার? পাঠকেরও নয়? অবশ্য অনেকে পৃথিবীর জটিল তত্ত্বগুলো বোঝেন, হিরোশিমা-নাগাসাকি বোঝেন, রাজনীতি বোঝেন, হেলেনের যে সৌন্দর্যে- প্রেমে ট্রয় নগরী ধ্বংস হয়েছিল তাও বোঝেন কিন্তু কবিতা বোঝেন না!
কবি কি কোনো ভিনগ্রহণের প্রাণী?
কবিতার পাঠক, আপনি কি মনে করেন কবি অন্য গ্রহ থেকে এসেছেন? কবি যে ভাষায় কথা বলেন, যে ভাষায় বায়ূ গ্রহণ করেন, যে রাস্তায় হাঁটেন, যে সমাজে বসবাস করেন সে ভাষা আপনার নয়? আপনি সে বায়ূ গ্রহণ করেন না? সে রাস্তায় আপনি হাঁটেন কিংবা সে সমাজে আপনি বসবাস করেন না? কবির কাছে কি আলাদা কেনো অভিধান আছে যে অভিধান আপনার কাছে নেই?
কবিতা না বোঝার দায় কি শুধু কবির একার পাঠকের নয়?
কোনো কোনো পাঠকের অভিযোগ- কবিতা বুঝতে হলে যদি কবির শরণাপন্ন হতে হয় কিংবা অভিধান খুলে বসতে হয় তাহলে কবিতা পড়ার কী দরকার? অথবা বর্তমান সময়ে কবিতাপাঠকের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে অনেকে কবিতার দুর্বোধ্যতাকে দায়ী করেন। আসলে কি তাই? অথবা এ দায় কি কবির একার শুধু?
পাঠক বুঝলেই তা কবিতা কিংবা না বুঝলে তা কবিতা নয়! তাই কি?
পাঠক হিসেবে একটি কবিতা আমি বুঝলাম না। এর জন্য আমি কবিকে দায়ী করলাম এই বলে যে, আপনি কী কবিতা লিখেছেন যা আমার বোধগম্য হলো না? পাঠক হিসেবে আমার এ কবিতা না বোঝার দায় কি শুধু কবির?
আসলে কি তাই? উত্তর হ্যাঁ অথবা না দুটোই হতে পারে কিংবা কিছু হ্যাঁ কিছু নাও হতে পারে। শুরুতে কতগুলো প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে পাঠকের কাছে। আশা করি যারা কবি ও কবিতা নিয়ে চিন্তিত তারা এ-সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবেন।
একজন পাঠক হিসেবে আমার ভাবনা:
কবিতা বোঝা এবং না বোঝা এ প্রসঙ্গে আমার ধারনা- বিষয়টি নির্ভর করে ব্যক্তির ওপর। সামগ্রিকভাবে না বোঝার দায় কবিতার কবিকে দিতে আমার সাহস হয় না অথবা সহসা কবির দিকে আঙ্গুল তুলতে দ্বিধা কাজ করে, পাছে অন্য পাঠকের কাছে পাঠক হিসেবে আমার দুর্বলতা প্রকাশ পায়। কেননা, কবি অভিধান খুলে কবিতা লিখতে বসেন না, তবে তার চর্চা করেন। কারণ কবির প্রচুর শব্দ প্রয়োজন। কবি তাঁর চোখ-কান খোলা রাখেন সবসময়। তিনি চলতি পথে, বাসে, ট্রামে, ট্রেনে, জলে-স্থলে, আকাশে-মাটিতে, বৃক্ষে, ডালে, পাতায়, বাতাসে, পাখির কূজনে সর্বত্র খুঁজে ফিরেন কবিতার শব্দ। কেননা, কবিকে নির্মাণ করতে হয় সে শব্দমালা যা প্রতিধ্বনিত হবে মানুষের অন্তরে।
যে কবিতা আমি বুঝতে পারি না সে কবিতা অনুভব করার চেষ্টা করি। বিভিন্ন চিত্রকল্প সাজিয়ে কবিতার শব্দগুলো অনুভব করার চেষ্টা করি, যদি এতেও ব্যর্থ হই, তাহলে নিজের অনুভব এবং কল্পনাশক্তির সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়ে নিজেকে বলি কবিতা বোঝার মতো প্রস্তুতি আমার ছিল না কিন্তু কোনোভাবেই কবিতার কবিকে দায়ী করি না,না বোঝার দায় চাপিয়ে।
প্রায়শই কবিকে বলা হয় সহজ-সরল শব্দে কবিতা লিখতে কিন্তু কবি কি কারও আজ্ঞাবাহী? কবি কি পাঠকের কথা ভেবে কবিতা লেখেন? এ প্রশ্নে হয়তো অধিকাংশের উত্তর হবে ‘কবি যদি পাঠকের জন্য কবিতা না লেখেন তাহলে কেন তা প্রকাশ করেন পাঠক সমাজে?’ খুব স্বাভাবিক এবং যৌক্তিক প্রশ্ন। কিন্তু একটু কী শরীর থেকে ‘পাঠক’ পদবী সরিয়ে ভাবতে বসবেন? যদি তা করতে পারেন তাহলে অনুভব করবেন কবি কখনোই পাঠকের কথা ভেবে কবিতা লিখতে বসেন না! কবি যখন লিখতে বসেন তার মস্তিকে পাঠকভাবনা থাকে না, থাকে কবিতার শব্দ,চিত্রকল্প, আত্মপীড়ন-দহন। তিনি এমন কিছু অনুভব করেছেন, দেখেছেন যা তাঁর ভাবনাকে বিদ্ধ করে রেখেছে। আর তাই তিনি যন্ত্রণাকাতর হোয়ে বসে যান কলম নিয়ে সে শব্দগুলোকে একটি অবয়বে গেঁথে দিতে। কবি নির্মাণ শেষে অনুভব করেন কবিতাটি হয়তো মানুষের কথা বলেছে, এই সমাজের কথা বলেছে। এই ভাবনা থেকে তিনি তাঁর কবিতাকে পাঠকের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে এর প্রকাশ করে থাকেন। পাঠকের ভাবনা-চিন্তা কবির সাথে মিলে গেলে পাঠক আবিষ্কার করেন কবিতাটি তার জন্য লেখা হয়েছে। যে কবিতাটি পাঠক বুঝলো না তার দায় কবির ওপর চাপিয়ে নিজেকে ভারমুক্ত করলেন। আর এ থেকে আমার সে ধারনা আরও মজবুত হয় যে কবি পাঠকের জন্য লেখেন না সবসময়।
৪| ১২ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:০১
হাসান মাহবুব বলেছেন: সোহানী বলেছেন: ভালোলাগলো... যদিও কবিতা তেমন বুঝিনা। বর্ষপূর্তিতে শুভকামনা।
১২ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৩৮
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: হাসান ভাই এ কি শুনাইলেন
কিছু কিছু সময় পোস্ট পড়ে মনে হয় কি কমু, শুকনা ভাল লাগল ছাড়া, এইরকম অনেক অনেক পোস্ট পইড়া মনে হয়। আপনার অনেক গল্প পইড়াই আমি কমেন্ট করি নাই, এইকারনে। আপনারও কি সেইরকম লাগতাছে ?
লাগলে কমেন্ট না দিলেও প্রবলেম নাই। আপনি আমার লেখা পড়েন এ এক বিরাট পাওয়া, ওইটা তো আমি পাইতেছি, এর বেশি কিছু চাওয়ার নাই
৫| ১২ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:২৩
বনানী খন্দকারউ বলেছেন: আমি ও লেখার চেষ্টা করি, জানিনা কতোটা কবিতার অবয়ব পায় ওরা
১৩ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:১৪
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: লিখতে থাকুন, আর নিজেকে বদলাতে থাকুন
কবিতা আপনার হবেই
কবিতার মূল চাওয়া, আপনার ভিতরের সবটুকু প্যাশন, ওইটা দিতে পারলে কবিতা আপনার বন্ধুজন
স্বাগত আমার ব্লগে। আপনার জন্যে একটি কবিতা
অদ্ভুত সহজ এই জীবনের রসায়ন,
জীবনের মানে এক চাক্রিক বন্ধন।
প্রান্তে জুড়ে কিছু মৌলিক প্রয়োজন-
নি:শ্বাস অক্সিজেন, নির্মল শস্যকণা
আর এইটুকু প্রেম; জীবন মানে শুধুই
শাদা কটা মুহূর্তের টুকরো দুটো ছবি
৬| ১২ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:৩৫
ডি মুন বলেছেন:
আপনার কবিতা-ভাবনা ভালো লাগল।
কবিতা আমার খুব পছন্দের একটি বিচরণক্ষেত্র। কবিতা আমাকে মুগ্ধ করে। বোধকরি সংবেদনশীল মানুষমাত্রেই কবিতাপ্রেমী।
তবে আমার মনে হয়, এখন কবিতার আবেদন অনেকটা কমে এসেছে। কবিতাপ্রেমী মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। তার মানে, শক্ত-মনের অধিকারী হয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজের মানুষেরা। এর ফলাফল খুব একটা ভালো নয়। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতাই কবিতার আবেদনকে ফিকে করে তুলেছে বলে মনে হয়।
এ কথা সত্য মাইকেলী ক্লাসিক্যাল যুগ থেকে শুরু করে বিগত দেড় শতাব্দীতে কবিতার বদল ঘটেছে বারবার। আমার বিবেচনায় এই বদলই আধুনিকতা। দেখার নতুন চোখ, জানার নতুন মন কিংবা বলার নতুন ভঙ্গিমার নামই কবিতা আর আধুনিকতা।
------------ আধুনিকতা ব্যাপারটাকে খুব সাবলীলভাবে তুলে ধরেছেন বলেছেন।
১৩ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫১
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: কবিতা নিয়ে আমার অনেক কয়েকটা প্রবন্ধ ও লেখা আছে। এই লেখাটির আগের অংশ পড়ে দেখবেন সময় করে আশা করছি।
আর কবিতার আবেদন কমে এসেছে কিনা এই বিষয়ে আমার ধারণা, আমাদের দেশে এখনো যত সংখ্যক লোক অন্তত একটা কবিতা পড়েছে, তার সংখ্যা বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বেশি। কোন দেশেই কবিতা আমজনতার বিনোদন নয়, কবিতার পাঠক খুব সীমিত সংখ্যক মানুষের মাঝেও সীমিত। এমন অনেক খ্যাতিমান লেখক/ কবির সাথে কথা হয়েছে, যারা জীবনেও কবিতা পড়েননি। জীবনের টানাপড়েন কবিতা পড়া কঠিন করে তুললেও সত্যি হচ্ছে এই, কবিতা পাঠের কষ্ট কেউ করতে চায় না।
যা হোক, এই বোধ হয় আমার লেখায় প্রথম কমেন্ট করলেন, আপনার জন্য ছোট্ট একটা কবিতা
তোমার লিপস্টিক আর আমার নিকোটিন
ভালবাসা বোধহয় উষ্ণতার মুগ্ধ আলপিন
৭| ১২ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৫০
গেম চেঞ্জার বলেছেন: সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় আমার মনোযোগ কবিতা থেকে সরে গেছে অধিক!! একটি কবিতার আবেদন কার কাছে কেমন হবে সেটা আসলে বলা যায় না যদিও কয় মাস আগেও বেশিরভাগ সময় কবিতাই পড়তাম বেশি। ব্লগে ইদানিং কবিতা কমেও এসেছে মনে হচ্ছে।
আমি বিশ্বাস করি কবিকে কবিতা লিখতে হলে, আধুনিক হতে হলে তার নিজের সুর নিজেই তৈরি করতে হবে। যা হবে একেবারেই আনকোরা, নতুন কোন আনন্দের মত, একদম জীবন্ত ।
এমনটি আমিও মনে করি। আঞ্চলিক শব্দকে মাধুর্যময় করে তুলতে পারলে সেটা মোটেও আন্ডারএস্টিমেট করার মতো কিছু না। কিংবা বিদেশি শব্দও যদি ব্যবহার করা হয় তাহলেও সেটা গ্রহণযোগ্য। তবে অবশ্যই যেন যথোচিত আবেদন সৃষ্টি করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
শুভকামনা রইলো তানিম ভাই!! একরাশ শুভেচ্ছা!!!
১৪ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:০৮
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: আঞ্চলিক শব্দকে মাধুর্যময় করে তুলতে পারলে সেটা মোটেও আন্ডারএস্টিমেট করার মতো কিছু না। কিংবা বিদেশি শব্দও যদি ব্যবহার করা হয় তাহলেও সেটা গ্রহণযোগ্য।
আন্ডারএস্টিমেট এর কোন সুযোগ নাই, কবিতা অনেক রকম বলেই। এই যে, আমি নিজেও লিখেছি আঞ্চলিক শব্দ নিয়ে। সৈয়দ হক এর পরাণের গহীন ভিতর পড়ে দেখবেন, ভাল লাগবে। এখানে রইল আমার একটা কবিতা তুই
তুই
কত ভাল যে তোরে বাসি,
কেমনে বুঝাই?
কিসের মায়ায় যে কাছে টানস !
বুঝবার পারি না।
প্রত্যুষ সকাল , উত্তপ্ত দুপুর কী নিশীথ রাইতে
তোরেই শুধু দেহি- কল্পনায়
ভাবনায় ,চিন্তায় আমার চাইর পাশে।
বুকের মইধ্যে আমার-
লেলিহান আগুনের সাগর।
নিশিদিন তৃষ্ণার হল্কা
লাগে আমার মাথায়, তপ্ত করোটিতে হঠাৎ-
ওঠে মিলনের সাধ, অতৃপ্ত কামনা
তোরে দেইখা।
যখনি চক্ষের সামনে আমার -
দাড়াস তুই
বুকে তোলস মরণের সুনামি
সেই ঢেউয়ে
ভাইসা যাই আমি-কল্পনার কূলে।
চাইয়া দেখ্ - ঐ অচিন পাখি হইয়া
তুই উইড়া বেড়াইতাছস-
আমার মনের আকাশে,
এধার হইতে ওধার , এপার হইতে ওপার।
সে আকাশ জুইড়া
আছস খালি তুই!
সেইখানের পূর্ণিমার চান্দ-জলন্ত সুরুজ;
একমাত্র তুই।
তোর কোমল আদর, আমারে করে পাগল।
আবার তোর তেজ-
আমার কেন্ যে উদ্দীপ্ত করে,
আমি নিজেই জানি না!
সত্যিই তুই রাজরাণী, আমার গরিব খানার-
রত্ন একটা, আমি তোর-
কেনা গোলাম। কেমন কইরা বল
বুঝামু তোরে
কত ভাল যে তোরে বাসি?
৮| ১২ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:২৬
শায়মা বলেছেন: ভালবাসার সাজমহলে যে রূপসীকে লুকিয়ে রাখি, তার নাম দিতে পারি ‘কবিতা’ । পায়ে তার আলতা নূপুরের শোভা দিতে কেটেছে কত বিনিদ্র রাত, হিসেব নেই। সে সময় একান্তই কবিতার, যার পরাবাস্তব পৃথিবীতে থাকি শুধু আমি আর কবিতা। কি আশ্চর্য সে জগৎ! আমি নির্মাণ করি এক অজানা পৃথিবী, স্বপ্ন যেন শিল্প এক, কাব্য এক চলমান ক্যানভাস। হঠাৎ যদি কোন ভাব মনতরঙ্গে দোলা দেয় তবে আঁচড় কাটি শক্ত সাদা অফসেটে। এরপর কেমন করে যেন চোখের সামনে অবয়ব নিয়ে হাজির হয়, কল্পমানবীর, যার শক্তি টেনে নিয়ে যেতে থাকে আমার কলমকে, অনেকটা যেন অন্ধকার সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে ঝুলে থাকা বাদুর শব্দের আশ্বাস পেয়ে খাবারের সন্ধানে বের হয়। শব্দগুলো আসতে থাকে, সাইক্লোনের মত, একের পর এক, আশাবাদী মন নিয়ে চালাতে থাকি বল্গাহীন মনের আলোটাকে।
এটাই কবিতা।
আর কবিতার সাথে প্রেম তাইনা?
১৪ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:১২
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: কবিতা যে কি ? কে বলতে পারে, আমার কবিতার সংজ্ঞা আমিই দিলুম। আপনি আপনারটা দেবেন হয়তবা। আপনার জন্যে একটা ইংরেজি কবিতা
অবনী বাড়ি আছো ? ।। শক্তি চট্টোপাধ্যায়
Abani Are You Home? ।। অনুবাদঃ সোহম দাশগুপ্ত
Neighbors sleep with doors shut tight
Sole me to hear the knocks of the night
"Abani, are you home?"
Here it rains all twelve months
Clouds graze like herd of cows
Wild green grass grow like parasite
Creeping on doors holding them tight-
“Abani, are you home?”
Midst receding pain in my half-worn heart
I drowse into sleep to glide through the night
But again I hear startling knocks of the night
“Abani, are you home?”
৯| ১৩ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:০৬
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: আধুনিক হতে হলে তার নিজের সুর নিজেই তৈরি করতে হবে।/ একমত।
কোন ছাঁচে কবিতা না বুনে। কবিতার বুননে ছাঁচ করা ভালো।
১৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৪৫
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্যে।
আপনার জন্য আমার কাব্যগ্রন্থ মৌনমুখর বেলায় থেকে একটা কবিতা
বিষাদ দিনের কথা
বিষাদের পপলার পাতাগুলো
অশ্রু লুকায়, ঝরে পড়ে
মুচমুচে পাঁপড় হয়ে , প্রতিটি
শীতের শিশির আসবার আগে ।
প্রাণের প্রাচুর্যে পূর্ণ হৃদয়,
নি:শেষ হয় একদিন, শুষ্কতার সঙ্গমে !
তার পরিণতি বিদ্যমান, ছোট্ট অথচ,
প্রবাহিত অর্থবহ জীবনে ।
সংজ্ঞাহীন একাকীত্বের
হিম সমুদ্রে, ডোবে যে বালক
আলেয়া করে না স্পর্শ তারে
অনাহূত জোছনার ছলে ।
১০| ১৩ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৩
জুন বলেছেন: কবি তানিম আমি যখন পোষ্ট পড়ে মন্তব্যগুলোতে চোখ বুলিয়ে নীচে নামছি আর মনের মাঝে হাতড়ে চলেছি কি লিখি তোমায়! ঠিক তখনই শায়মা যেন শান্তির জল নিয়ে আসলো। আমিও শায়মার মতই ঐ মন্তব্যটাই করতে চাই তানিম
+
১৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৪৬
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: শুভকামনা জানবেন।
দেশে ফিরবেন এই আশা করছি
১১| ১৫ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:০৩
ইমন তোফাজ্জল বলেছেন: আপনার ব্লগ আমি নতুন নই। অন্য একটা নিকে লিখতাম । এখন বাধ্য হয়ে নতুন নিক এ এসেছি । ওখানে আমার প্রায় ১৫০ টির মত লেখা ড্রাফট করা ছিল এখন এন্ট্রেন্স পাচ্ছি না ।
১৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৫৫
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: হা, এবারে ধরতে পেরেছি, আপনি বোধ হয় সোমহেপি। আপনার আগের আইডি ফেরত পাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। আ
আমি আপনাকে ইমেইল আইডি টা দিচ্ছি। [email protected]
ekhane ekta mail করুন। আর মেইলে এরকম লিখুন
প্রিয় সুধী,
আমার ব্লগ নিক .।.।.। । ব্লগে আমার নিক মোটামুটি ছয় বছর ধরে আছে এবং পুরনো বেশিরভাগ ব্লগারই আমাকে জানেন। আমার ইউজার নেম .।.।।। . যে ইমেইল আইডি ব্যবহার করে আইডিটা খুলেছি ওটা ইনভ্যালিড হয়ে গেছে, কোন ভাবেই উদ্ধার করা সম্ভব নয়। এখন আপনারা আমার ব্লগ নিক আবারও চালু করার ব্যবস্থা করলে কৃতজ্ঞ থাকব।
শুভকামনা
আর জাদিদ এর সাথে যোগাযোগ করুণ। আশা করি আগের আইডি উদ্ধারে সক্ষম হবেন
১২| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৪৪
ইমন শিহাব বলেছেন: ভাইয়া এতো ভালো কিভাবে লেখো তুমি???
১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:১৭
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: কি ভাবে ভালো লেখি ?
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষায় যদি বলি, এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
আর কবিতার ভাষায় সম্ভবত এই
কবিতার সাথে আমার আর জনমের বাসর।
১৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৮:৩৩
সৈয়দ আবুল ফারাহ্ বলেছেন: বিষচুমু খেতে খেতে অদ্ভুত কেমন এক
এন্টিবডি তৈরি করেছে শরীর, তারপর একসময়
তৈরী হয়েছে অন্যের শরীরে সংক্রমণের শক্তি - আকৃষ্ট করে
নতুন সৃষ্ট বিষের জ্বালায়
কাছে টেনে নেয়া। পাশে রেখে চিরদিন চলা।
১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৪৬
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
শুভকামনা জানবেন।
আহত পাথর বলে না কখনো, কোন ক্ষতে
কালো গোলাপটি ঝরে যায়, অসহ্য রৌদ্রের মদ পান করে।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:১৯
জেন রসি বলেছেন: কবিতা নিয়ে খুব সিরিয়াসলি ভাবিনি তেমন। কবিতার কাঠামো, গ্রামার, কিংবা কোন টাইপ কবিতা কিভাবে লিখতে হয় এসব নিয়ে স্কলাররা অনেক গবেষণা করে থাকেন। তবে আমি যখন কবিতা পড়ি তখন কবিতার তিনটা ব্যাপার আমাকে আকৃষ্ট করে। একটা হচ্ছে সহজবোধ্য ভাষা। কবিতার থিম এবং কিছু পাঞ্চ লাইন। খুব বেশী কাঠামোবদ্ধ কবিতা পড়তে ভালো লাগেনা। নিজে লেখার সময় কবিতার কবিতা হয়ে ওঠা নিয়ে খুব বেশী চিন্তিত থাকিনা। আমি কবিনা। তবে মাঝেমাঝে লিখতে ভালো লাগে। একটা ভালো এক্সপেরিমেন্ট। তবে আপনারা যারা সিরিয়াসলি কবিতা লেখেন, আপনাদের ডেডিকেশন কিংবা বিশুদ্ধ চর্চার ব্যাপারটা ভালো লাগে। যেমন কবিতা বিষয়ক আপনার এই পোস্টটি পড়তে ভালোই লেগেছে।
আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।